৫৯ বর্ষ ৩৩ সংখ্যা / ১ এপ্রিল, ২০২২ / ১৭ চৈত্র, ১৪২৮
মুষল-উত্তর পর্ব
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রাক্ কথন
ছত্রিশ বছর পর শ্রীকৃষ্ণের যদুবংশ ধ্বংস হবে। কবির কল্পনা অনুসারে মহাভারতের গল্পে যুধিষ্ঠিরের সিংহাসন লাভের পর এরকমই নাকি বলেছিলেন গান্ধারী। এই নিয়ে বেশ একটা জমজমাট পর্ব আছে। মৌসল অথবা মুষল পর্ব। যেখানে বলা হয়েছে, ওই সময় যদুবংশীয়রা অহংকারী হয়ে উঠেছিলেন, সুরাপানে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং নানারকম অন্যায় কাজ করতেন। এরপর একে একে বলরাম, শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যু। দুই যদুকুল বীর কৃতবর্মা আর সাত্যকির ঝগড়া ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত যদুকুলের মধ্যে। যা আর সামাল দেওয়া যায়নি। নিজেদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় প্রাণঘাতী হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি। মধ্যস্থতা করতে, বিবাদ মেটাতে ডাক পড়ে অর্জুনের। যদিও অর্জুনকে তড়িঘড়ি হস্তিনাপুর থেকে উড়িয়ে এনেও যদুবংশের পতন রোধ করা যায়নি। এরপরেই দ্বারকারও নাকি সলিল সমাধি ঘটে। শেষ হয়ে যায় যদুবংশ। দেশের বর্তমান আবহে গল্প, ইতিহাস, পুরাণ মিলে যদিও একটা পূতিগন্ধময় খিচুড়ি তৈরি হয়েছে। এই সবের মধ্যে কী পার্থক্য - সে বড়ো জটিল বিষয়। যাঁরা এই বিষয় নিয়ে চর্চা করেন তাঁরা অনেক ভালো বোঝাতে পারবেন। আমি নিতান্তই ওপর ওপর ঘুরে বেড়ানো মানুষ। তাই প্রথমেই মানে মানে ক্ষান্ত দিলাম।
এ যুগে কোনও গান্ধারী ছিলেন কিনা জানিনা। অথবা তিনি এ ধরনের কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন অথবা অভিশাপ দিয়েছিলেন কিনা তাও জানা নেই। তবে হাল আমলে ছত্রিশ এখনও না পেরোলেও মেঘে মেঘে বেলা হয়েছে বেশ কিছুটা। মানুষের অবস্থাও অনেকটা সাড়ে বত্রিশ ভাজার মতো। গরম কড়াইতে সারাক্ষণ পটপট করে ফোটা আর নিস্ফল আক্রোশে তিড়িং বিড়িং লাফানো ছাড়া বিশেষ কিছু করার নেই। ভাজা শেষ হলে প্যাকেট করে বেচে দেওয়া হবে। লে লে বাবু ছ’আনা দরে। চাল চুরি, খাল চুরি, ডাল চুরি, মিড ডে মিল চুরি, ত্রিপল চুরি, ত্রাণের টাকা চুরি, পুকুর চুরির দাপটে ঘোর কলিতে চুরির অষ্টোত্তর শতনাম লিখে ফেললে মন্দ হয় না। ‘মন্ডা’ ক্লাবের সেক্রেটারি সুকুমার রায় ক্লাবের মুখপত্র ‘সাড়ে বত্রিশ ভাজা’তে তো কবেই মজা করে লিখেছিলেন – “কেউ বলেছে খাবো খাবো, কেউ বলেছে খাই, সবাই মিলে গোল তুলেছে, আমি তো আর নাই।” এখন হলে হয়তো লিখতেন, কেউ খাচ্ছে গিলে গিলে, কেউ খাচ্ছে চেটে, কেউ খাচ্ছে চুমুক দিয়ে, কেউ খাচ্ছে ঘেঁটে। মাফ করবেন সুকুমার।
।। এক ।।
২১ মার্চ সন্ধেবেলা। কলকাতা পুরসভার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ড। খাস কলকাতাতে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামীর উপর হামলা চালায় তৃণমূলেরই আর এক গোষ্ঠী। আক্রান্তের নাম সুশীল কুমার শর্মা। তিনি স্থানীয় কাউন্সিলর নিবেদিতা শর্মার স্বামী। সুশীলকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ ওঠে শেখ রাজা ও তাঁর ছেলে ওয়াসিমের বিরুদ্ধে। শেখ রাজা আমান মহল্লা কমিটির বাসিন্দা। যারা সকলেই তৃণমূলের সদস্য, সমর্থক।
জানা গেছে, ওইদিন সন্ধ্যায় ওই ওয়ার্ডে বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র কর্মীসভা ছিল। সেখানেই সুশীল কুমারের অনুগামী পক্ষের সঙ্গে আর এক পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়, পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতেই হামলা চলে। বচসা থেকে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি, মারধর। স্থানীয় কাউন্সিলর নিবেদিতা সাহার স্বামী সুশীল কুমারকে সরাসরি আক্রমণ করেন অন্য গোষ্ঠীর লোকজন। তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। মারধরের পর তাঁর জামা কাপড় ছিঁড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
।। দুই ।।
মার্চের প্রথম সপ্তাহ। স্থান বর্ধমান পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ড। পুরভোটের ফলাফল সদ্য প্রকাশিত হয়েছে। সেদিনই আতঙ্কে আত্মঘাতী হলেন ১৭ বছরের কলেজ ছাত্রী তুহিনা খাতুন। যার পরিবার তৃণমূল সমর্থক। তুহিনার বাড়ি যেখানে, সেই ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের হয়ে ভোটে জেতেন শেখ বসিরুদ্দিন ওরফে বাদশা, যিনি এলাকায় দাগি তোলাবাজ হিসেবে পরিচিত। তুহিনার পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটে জেতার পরই এলাকায় বোমাবাজি শুরু করেন বাদশা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাসাতে থাকেন। তুহিনার বাড়িতেও যান বাদশা। সেইসময় বাড়িতে তুহিনা ও তাঁর দুই বোন ছাড়া কেউ ছিল না। এর কিছুক্ষণ পরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তুহিনার। জানা যায়, প্রায় প্রতিদিনই তুহিনা ও তাঁর দুই বোনকে উত্যক্ত করতেন বাদশা। ভোটে জিতলেই ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছিল তুহিনাকে। আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি তুহিনার বাড়ির পাশে একটি দেওয়ালে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তিন মেয়ের একটি কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন বাদশার অনুগামীরা। এর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তুহিনার বাবা জুনাই শেখ, যিনি নিজেও শাসকদলের কর্মী। জুনাই শেখের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্থানীয় অন্যান্য তৃণমূল নেতারাও। কিন্তু কার্টুন মোছেননি বাদশা। বরং হুমকি আরও বাড়ে এবং যার পরিণতিতে তুহিনার আত্মহনন।
।। তিন ।।
গত ২৫ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ২০২০-২১ অর্থবর্ষের অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বা সিএজি। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের কোষাগার থেকে বিভিন্ন এনজিও-কে ২৭,০৪৮ কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। এবং ‘অন্যান্য’ বলে আরও কিছু ক্ষেত্রে খরচ করা হয়েছে ১০,৮৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট ৩৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য সরকার। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘২০২০-২১ আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার আয়ের প্রায় ২৬.২৪ শতাংশ এমন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা বাবদ দিয়েছে, যাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য কোনো যথার্থ ব্যবস্থাপনা নেই সরকারের। আবার এই ২৬.২৪ শতাংশের ৮০.৯০ শতাংশ গেছে বিভিন্ন এনজিও এবং অন্যান্যদের কাছে। যারা সরকারের কাছে দায়বদ্ধই নয়। যারা অডিটের আওতাতেই আসেনা। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।’’ রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬-২১ অর্থবর্ষে বিভিন্ন এনজিও-কে সরকারি কোষাগার থেকে মোট ১ লক্ষ ৬ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই এনজিও-গুলোর অধিকাংশই শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের নামে।
।। চার ।।
মার্চ ২৯; কয়লা পাচারকাণ্ডে সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার তলব করলো ইডি। স্ত্রী রুজিরার পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়ের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকেও তলব করেছে ইডি। এর আগেও একাধিকবার কয়লা পাচারকাণ্ডে তলব করা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি হাজিরাও দিয়েছেন। গত সপ্তাহেই দিল্লিতে ইডি-র সদর দপ্তরে হাজিরা দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্র অনুসারে, ছ’জন আধিকারিক প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বস্তিবোধ করেন তিনি। কিছু প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন বলেও জানা গেছে। এরপর ফের ২৯ মার্চ তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়।
গত সপ্তাহে হাজিরা দেওয়ার আগেও ইডি’র সমনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু তাঁর আরজি খারিজ করে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আরজি খারিজ হতেই কয়লা পাচার মামলায় ইডির হাজিরা এড়িয়ে যান অভিষেক। জানা গেছে, ব্যক্তিগত কারণে তিনি দিল্লিতে ইডির কার্যালয়ে হাজিরা দিতে পারেননি। তাঁর আইনজীবী ই-মেইল মারফত ইডি আধিকারিকদের বিষয়টি জানিয়ে দেন। প্রসঙ্গত, গত দু’বছর ধরে কয়লা ও গোরু পাচার কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের একাধিক প্রভাবশালী নেতা, নামজাদা ব্যবসায়ী, পুলিশ কর্তার। বিএসএফ আধিকারিকেরও নাম জড়িয়েছে। তদন্ত করছে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই। গত লোকসভা ভোটের আগে হঠাৎই নাম জোড়ে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাদ যাননি তাঁর স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
।। পাঁচ ।।
গোরু পাচার কাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরে নাম জড়িয়েছে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। কখনও নির্বাচনী ব্যস্ততা, কখনও শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বার বার হাজিরা এড়িয়ে গেছেন তিনি। গত ৭ মার্চ তাঁকে চতুর্থবার তলব করা হয়। ১৪ মার্চ বেলা ১১টায় নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে বলা হয়। গ্রেফতারের আশঙ্কায় রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুব্রত। কিন্তু বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গেল বেঞ্চ অনুব্রতর রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ করে দেন। এর আগে নির্বাচনী হিংসা সহ বিভিন্ন ঘটনায় তিনি শারীরিক অসুস্থতার দোহাই দিয়ে, এসএসকেএম-এর উডবার্ন ওয়ার্ডে ভরতি হয়ে সিবিআই-এর তলব এড়িয়ে গেলেও গত ২৯ মার্চ কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে – ‘রক্ষাকবচ’ পাবেন না তিনি। অর্থাৎ সিবিআই তদন্তের স্বার্থে তাঁকে তলব করলে যেতেই হবে।
।। ছয় ।।
সম্প্রতি ফের আলোচনায় উঠে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ছোটো আঙারিয়া। সেখানকার স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ ২০১৩ থেকে ২০১৮ সময়কালে সরকারি জমির পাট্টা পেতে গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষর কাছে টাকা জমা দিয়েছিলেন প্রায় ৬০ টি পরিবার। টাকার পরিমাণ বেশ কয়েক লাখ। যদিও দীর্ঘদিন কেটে গেলেও কোনও গ্রামবাসীই জমির পাট্টা পাননি। বিএলআরও দপ্তরও এই বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি। বলা বাহুল্য কোনও গ্রামবাসীই টাকা ফেরত পাননি। তাঁরা অবশ্য প্রশাসনের কাছে কোনও অভিযোগ না করে অভিযোগ জানিয়েছেন ব্লক স্তরের তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। গ্রামবাসীদের আরও বক্তব্য, প্রায় পাঁচ বছর তাঁরা ভয়ে কোথাও কোনও অভিযোগ জানাননি। তাঁদের এখন বক্তব্য, পাট্টা যদি না পাওয়া যায় তাহলে অন্তত তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক।
।। সাত ।।
গত ২৮ মার্চ বাসন্তী থানার ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোরিয়া গ্রামে তৃণমূল কর্মী ফারুক সরদারের বাড়ি কেঁপে ওঠে বোমা বিস্ফোরণে। বিস্ফোরণের জেরে তৃণমূল কর্মীর বাড়ির চাল উড়ে যায়। আগুন লেগে পুড়ে যায় পুরো বাড়ি। যে বিস্ফোরণে গুরুতর আহত তৃণমূল কর্মী ফারুকের মৃত্যু হয় হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ওই বাড়িতে প্রচুর বোমা মজুত করা ছিল। যে ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, বগটুই গণহত্যার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন দশ দিনের মধ্যে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করবেন। বীরভূমের অনুব্রতর মতো দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতা সওকত মোল্লা পুলিশের সাহায্যে এখন তথ্য ধামাচাপা দিতে নেমে পড়েছেন। এটাই রাজ্যের অবস্থা। যেখানে কেউ নিরাপদ নয়, এমনকী পুলিশও নিরাপদ নয়। বেআইনি লেনদেনের কারবারের টাকায় বোমা বন্দুক জড়ো হচ্ছে।
।। আট ।।
গত দু’মাসে স্কুলে শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত চারটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। যে নির্দেশ রাজ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি সামনে এনেছিল। যদিও ডিভিশন বেঞ্চ এই সবকটি নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এছাড়াও এসএসসি’র তৎকালীন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহার সম্পত্তির হিসেব চেয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই নির্দেশেও স্থগিতাদেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার ৩০ মার্চ এই মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, কাদের সুবিধা পাইয়ে দিতে বারবার সিঙ্গল বেঞ্চের হাত বেঁধে দিচ্ছে ডিভিশন বেঞ্চ? শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। তাঁর মতে, কিছু জনকে সুবিধা পাইয়ে দিতে তাঁর দেওয়া সিঙ্গল বেঞ্চের সমস্ত রায়ে স্থগিতাদেশ দিচ্ছে ডিভিশন বেঞ্চ! কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সুবিধাভোগী কারা?
সংহারের ইতিকথা
এরকম ভাবার কোনও কারণ নেই যে, এই ধারাবিবরণীতে সব ঘটনাই লিখে ফেলা গেছে। এর বাইরেও বিগত কয়েক বছরের বহু ঘটনা আছে। বহু হত্যা, বহু লুটপাট, বহু ধর্ষণ, বহু হানাহানি, বহু লুটপাটের ঘটনা আছে। পুরুলিয়ার ঘটনা আছে, পানিহাটির ঘটনা আছে, বগটুই-এর ঘটনা আছে। খেলা মেলা উৎসবের আড়ালে তিলে তিলে রাজ্য ধ্বংসের কথা আছে। “মনে কর শেষের সে দিন ভয়ঙ্কর;...” অতএব সাধু সাবধান...।