৫৮ বর্ষ ২০শ সংখ্যা / ১ জানুয়ারি ২০২১ / ১৬ পৌষ ১৪২৭
চলমান কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে বামপন্থী ও কংগ্রেস দলের সংহতি সমাবেশ কলকাতায়
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কেন্দ্রের সর্বনাশা কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দেশব্যাপী যে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়েছে, তার সাফল্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত এরাজ্যেও আন্দোলন জারি থাকবে। ২৯ ডিসেম্বর কলকাতায় ১৬টি বামপন্থী ও সহযোগী দল এবং কংগ্রেস দলের যৌথ অবস্থান ও সমাবেশ কর্মসূচি থেকে এই আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে। মাসাধিক কাল ধরে চলতে থাকা দুর্বার কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে, বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার ও অত্যাবশ্যক পণ্য আইন সংশোধনের দাবিতে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগাতার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এদিন রানি রাসমণি রোডে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অবস্থান বিক্ষোভ ও জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই কর্মসূচি থেকে এরাজ্যের তৃণমূল সরকার বাজপেয়ী সরকারের অনুসৃত আইনের মডেলে ২০১৪ সালে যে জনবিরোধী কৃষিপণ্য বিপণন আইন চালু করেছে তা বাতিলের পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যের মতো এরাজ্যেও কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন বাতিলের প্রস্তাবগ্রহণ সহ কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় বিধানসভায় বিল পাশ করানোর দাবি জানানো হয়েছে।
এদিনের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র, পার্টি নেতা মহম্মদ সেলিম, আরএসপি’র সর্বভারতীয় সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য, সিপিআই’র রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জি, বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বিমান বসু বলেন, কৃষি আইন বাতিল ও বিদ্যুৎ বিল বাতিলের দাবিতে কৃষকদের অবস্থান বিক্ষোভ ৩৩ দিনে পড়েছে। এর মধ্যে ৩৩ জন কৃষক শহিদ হয়েছেন। এই কৃষকদের ব্যারিকেড করে, জলকামান দিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা হয়েছিল। পরে প্রশাসন বুঝতে পেরেছে এভাবে কৃষকদের প্রতিহত করা যাবে না। আজ কৃষক বিক্ষোভ গোটা দেশে ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, কৃষকেরা কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ বিল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন। কেন্দ্র যে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধন করেছে তা হয়েছে কর্পোরেটদের স্বার্থে। অবিলম্বে এই আইন সাজূয্যপূর্ণ করতে হবে। আজ জিনিসপত্রের দাম, পেট্রোল-ডিজেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কোভিড-১৯-এর সময়কে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রের সরকার নির্বিচারে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। এরাজ্যের তৃণমূল সরকারও একই কাজ করে চলেছে। এসবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমাজের সমস্ত অংশের মানুষকে শামিল করতে হবে। তিনি বলেন, দিল্লিতে যে কৃষকদের লড়াই-আন্দোলন চলছে, তার সাফল্য না আসা পর্যন্ত আমাদের লড়াই জারি থাকবে। দিল্লির সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে বিক্ষোভরত কৃষকদের ওপর যদি হামলা হয়, তাঁর প্রতিবাদে আমাদের এখানেও জেলায় জেলায় বিক্ষোভ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সূর্য মিশ্র বলেন, দিল্লিতে কৃষকেরা যে অবস্থান করছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বলছে কৃষকেরা নাকি রাস্তা আটকেছে, কিন্তু ঘটনাটা ঠিক উলটো। সরকারই কৃষকদের আটকে দিয়েছে। এই আন্দোলনের মূল কথা কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ বিল বাতিল করতে হবে। এই দাবিতে ৫০০-র বেশি কৃষক সংগঠন যৌথভাবে সংযুক্ত কিষান মোর্চা গড়ে তুলেছে, তারা বলছে কেন এই আইন বাতিল হওয়া উচিত। আর কেন্দ্র যে বিদ্যুৎ বিল এনে আইন করতে যাচ্ছে, তাতে প্রায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার কোটি টাকা কৃষকদের কাছ থেকে লুঠ হবে। এতে আমি-আপনি কেউই বাদ যাব না।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে বৃহৎ অংশ কৃষকেরাই। তাঁরা চাষবাস করেন, মাছ ধরেন। নতুন কৃষি আইনে তাঁরা আর কৃষক থাকতে পারবেন না। বড়ো ও মাঝারি কৃষক যদি চাষ করতে না পারেন তাহলে ছোটো কৃষক পারবেন কী করে? যে হারে চাষের খরচ বাড়ছে, তাতে চাষবাস তাদের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাছাড়া চাষের জমিও থাকবে না তাদের হাতে। স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ ছিল কৃষকদের ফসলের লাভজনক দাম দিতে হবে। নতুন আইনে তা আর থাকবে না। কর্পোরেটরা যে দাম দেবে তাই নিতে হবে। ওরা যেভাবে দেশের রেল, বিমানবন্দর, প্রতিরক্ষা, ব্যাঙ্ক, বিমা, মাটির তলার সম্পদ তেল-কয়লা ইত্যাদি নিচ্ছে, তেমনি কৃষকের জমিও চলে যাবে ওদের হাতে।
তিনি বলেন, কৃষকেরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। অথচ সাধারণ ক্রেতাদের বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে। দেশে যে অবস্থা তৈরি হতে যাচ্ছে তাতে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের ভাণ্ডারে ১০ কোটি টন খাদ্যশস্য আছে। অথচ দেশের ৬ জন মেহনত করা মানুষের মধ্যে ১ জনকে একবেলা খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। কেন্দ্রের সরকার চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, আলুর মতো সামগ্রীকেও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। সরকার এখন মজুরদারদের বলছে তোমরা মজুত করো।
সূর্য মিশ্র এরাজ্যের সরকারের কৃষক বিরোধী ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, ওরা ২০০৪ সালের বাজপেয়ী সরকারের আমলের কৃষিপণ্য বিপণন আইনের খসড়ার মডেলে ২০১৪ সালে আইন করে। আমরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি, বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানিয়েছি। কিন্তু সরকার শোনেনি। এরাজ্যের সরকারও কেন্দ্রের মতোই কৃষিপণ্যের বাজার কর্পোরেটদের হাতে খুলে দিতে চেয়েছে।
তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কৃষি আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করছেন, কিন্তু যখন বিধানসভা ডেকে এই আইনের বিরুদ্ধে সর্বসম্মত প্রস্তাব নিতে বলা হচ্ছে, তা তিনি শুনছেন না। সংসদের অধিবেশন না হওয়ায় যেমন সাংসদরা তাঁদের মতামত ব্যক্ত করতে পারছে না, তেমনি এরাজ্যেও বিধানসভা ডাকা হচ্ছে না। এরা সরকারে রয়েছে বলেই আজ রাজ্যে বিজেপি’র বাড়বাড়ন্ত।
তিনি বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনায় যে কথাগুলো বলা হয়েছে, তার সবগুলোই আজ বিজেপি জমানায় আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু কৃষি নয়, দেশের সমস্ত ক্ষেত্রই আজ আক্রান্ত। দেশ অটুট থাকবে কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধে আমাদের বিকল্পের লড়াই। আমাদের এই বিকল্প প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই লড়াইয়ে কৃষক-শ্রমিক-মধ্যবিত্ত-ছাত্র-যুব- মহিলা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে।
সমাবেশে সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, বর্তমানে কেন্দ্রে একটি দালালদের সরকার চলছে। ওরা বাজেট করছে চেম্বার অব কমার্স, দেশি-বিদেশি কর্পোরেটদের সাথে বৈঠক করে। অথচ কৃষকদের জীবন জীবিকা, কৃষকের ফসল, জমি নিয়ে যখন সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তখন কৃষকদের সাথে আলোচনা করছে না। ওরা কর্পোরেটদের স্বার্থে কৃষি আইন করেছে। এখন চাপ পড়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছে। ভারত একটা কৃষিপ্রধান দেশ। অথচ কৃষকদের সাথে আলোচনা না করেই কৃষি আইন করা হলো।
তিনি বলেন, আজ গোটা দেশে গণতন্ত্র হরণ করা হচ্ছে। করোনার অজুহাতে সংসদের অধিবেশন বাতিল করা হলো। এরাজ্যেও বিধানসভার অধিবেশন বাতিল করা হয়েছে। তাই সংসদ বা বিধানসভায় যদি কোনো ফয়সালা না হয় তাহলে রাস্তাতেই সিদ্ধান্ত হবে। অল্প সময়ের ব্যবধানে দু’টো ধর্মঘট সফল হয়েছে। মোদী সরকার যদি ভেবে থাকে যা ইচ্ছা তাই করবে - তাহলে মানুষেরও অধিকার আছে সেই সিদ্ধান্তকে বদলে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেবার।
গণবণ্টন ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দেওয়া, কৃষিপণ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা, খেত খামার ইত্যাদি আদানি-আম্বানিদের হাতে তুলে দেওয়া, ইলেকশন বন্ডের নামে কোটি কোটি টাকা বিজেপি’র ফান্ডে যাওয়া - এ সমস্ত বিষয় তুলে ধরে বলেন, আমরা ক্ষুধা, বেকারি, অত্যাচার ও মুনাফাখোরদের থেকে স্বাধীনতা চাই। অনেক লড়াই করে যে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন হয়েছিল তা অটুট রাখতে হবে।
তিনি বলেন, মোদী বলেছিলেন তিনি নাকি কৃষকের আয় দ্বিগুণ করে দিয়েছেন। এটা শুনে মমতা ব্যানার্জি বলেন, তিনি নাকি তা তিনগুণ করে দিয়েছেন। এটা যদি সত্যি হতো তবে এই প্রবল ঠান্ডার মধ্যে কৃষকদের আজ অবস্থান করতে হতো না। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের এই সমস্ত জনবিরোধী নীতি ও পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের যে লড়াই তা প্রতিটি গ্রামেগঞ্জে, শহরে ছড়িয়ে দিতে হবে। দিল্লিতে কৃষকদের যে লড়াই তা গোটা দেশের লড়াই। সমাজের সমস্ত অংশের মানুষের অংশগ্রহণে এ লড়াই আরও শক্তিশালী হবে।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী একের পর এক বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে প্রতারক-মিথ্যাবাদী বললে কম বলা হয়। নোটবন্দির ফলে দেশের ৩০০ লোকের মৃত্যু হলো। তিনি বলেছিলেন, কালোটাকা উদ্ধার করবেন। কালো বাজারিদের গ্রেপ্তার করবেন। কিন্তু কিছুই করতে পারেননি।
তিনি বলেন, সারা দেশের কৃষকরা সফল ধর্মঘট করেছেন। আর এখানে রাজ্য সরকার এই ধর্মঘটকে ভাঙতে পুলিশ লেলিয়ে দিচ্ছেন। এভাবে তিনি ভণ্ডামি করছেন। উনি মোদীর সাথে হাত মিলিয়ে এসব করছেন। আমরা আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু মোদী সরকার কৃষকদের ঠেলে দিচ্ছে আত্মহত্যার দিকে। আজ কৃষকরা যে আন্দোলন করছে, সেই লড়াইয়ে আমাদের সর্বতোভাবে থাকতে হবে।
কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, মোদী ভুলতথ্য দিয়ে বলছেন, বামপন্থী ও কংগ্রেস নাকি কৃষকদের জন্য কিছুই করেনি। দেশে শ্রমিক-কৃষকদের পবিরর্তন করেছে কংগ্রেস, আর দেশব্যাপী কৃষক আন্দোলন একমাত্র করেছে বামপন্থীরা। মোদী ও তাঁর সহযোগী শিল্পপতিরা বলছেন, আমরা রিফর্ম আনছি। কিন্তু জমিতে ফসল বাড়ানো এবং সাধারণ মানুষের কাছে পণ্যে সহজে পৌঁছে দেওয়া - রিফর্মে তা হচ্ছে না। শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদনের হার কমছে। রাহুলগান্ধী-সীতারাম ইয়েচুরিরা দাবি জানিয়েছিলেন মানুষের হাতে নগদ টাকা পৌঁছে দিতে। তা দেওয়া হয়নি। আজ সরকারের সৌজন্যে কর্পোরেটরা কৃষি ও কৃষকের জমি দখল করতে চাইছে। আমরা স্পষ্ট ঘোষণা করতে চাই, দেশের মাটিতে যে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেই আন্দোলনের সমর্থনে আমরাও এরাজ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের পথে অগ্রসর হব।
সমাবেশে সিপিআই’র রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি বলেন, মোদী সরকার দেশকে কার্যত বিক্রি করে দিতে চাইছে। সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্তক্ষেত্রকে বেসরকারিকরণ করছে। কৃষকেরা ফসলের দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করছেন। স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ফসলের লাভজনক দাম, কৃষিঋণ মকুবের দাবিতে কৃষকেরা আন্দোলন করছেন। কেন্দ্রের সরকার যে কৃষি আইন করেছে তাতে কৃষককে নিঃস্ব করে দেবে। কেন্দ্রের এই আইনের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ কৃষক অবস্থান-বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন। এই আইন প্রত্যাহার না হওয়া আন্দোলন জারি থাকবে। আমরা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও এই আন্দোলনের পাশে রয়েছি।
ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা হাফিজ আলম সইরানি বলেন, অনেক লড়াই-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এসেছে। দেশে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এখন যেন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র থেকে শাসনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছে। এই ব্যবস্থায় শুধু বি ডি ও থেকে ডি এম এবং পুলিশ মিলিটারি থাকবে। দেশে আজ যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতে গরিব সাধারণ মানুষ সুষ্ঠুভাবে বাঁচতে পারবে না। কৃষকেরা এই অবস্থা ভালোভাবে বুঝতে পারছে। আজ কৃষকেরা যে লড়াই করছে, সেদিকে তাকিয়ে আছে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ। এ লড়াইয়ে কৃষকরাই জয়ী হবে।
আর এস পি নেতা মৃন্ময় সেনগুপ্ত বলেন, মোদীর ‘জিজিটাল ইন্ডিয়া’ দেশের মানুষের খাবার জোটাতে পারবে না। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই মানুষের পেটে লাথি মারার আইন করব এটা চলতে পারে না। দেশের মানুষের অধিকার আছে সেই আইন পালটে দেবার। এদেশে দেনার দায়ে কৃষক আত্মহত্যা করছে। গত ৪ মাসে ৭০ লক্ষ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য পচিয়ে নষ্ট করেছে কেন্দ্রের সরকার। এই সরকারের মতো দেশদ্রোহী সরকার আর কেউ নয়। ওরা মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই।
এদিনের সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মনোজ চক্রবর্তী (কংগ্রেস), মিহির বাইন (আরসিপিআই), বর্ণালী মুখার্জি (সিপিবি), বেচু দলুই (পিডিএস), আশিস চক্রবর্তী (এমএফবি), সোমা নন্দী (এলজেডি), নজরুল ইসলাম (এনসিপি)। সভা পরিচালনা করেন সিপিআই(এম) নেতা কল্লোল মজুমদার। এদিন অবস্থান ও সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) নেত্রী রেখা গোস্বামী, কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ, শুভংকর সরকার, আরএসপি নেতা অশোক ঘোষ, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন নেতা কার্তিক পাল, পিডিএস নেতা সমীর পূততুণ্ড প্রমুখ।
এদিন দীর্ঘ সময় ধরে চলা অবস্থান ও সমাবেশে শিল্পীরাও গান কবিতার মাধ্যমে কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত করেন এবং কৃষকদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান। সঙ্গীত পরিবেশন করেন ভারতীয় গণনাট্য সংঘের অঙ্গীকার শাখা সহ সৌমিক দাস, অভিজিৎ ঘোষ, অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়, সপ্তক, বিপ্রকাশ মণ্ডল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন বিবি চ্যাটার্জি এবং সরিৎ দত্ত।