৫৮ বর্ষ ২০শ সংখ্যা / ১ জানুয়ারি ২০২১ / ১৬ পৌষ ১৪২৭
ভিত্তি বদলে গেলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
“মুলো জিনিসটা পাড়বার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। কখনও টেনে ছেঁড়া উচিত নয়। ওতে মুলোর ক্ষতি হয়। তার চেয়ে বরং একটা ছেলেকে গাছের ওপরে পাঠিয়ে দিয়ে ডালপালা ধরে নাড়তে দিলে ভালো হয়। খুব কষে নাড়া দরকার। ঝাঁকি পেলেই টপাটপ মুলোবৃষ্টি হবে, তখন কুড়িয়ে নিয়ে ঝাঁকা ভরো…”।
আমি নই। বহুদিন আগে শিব্রাম চক্কোত্তি লিখেছিলেন ‘আমার সম্পাদক শিকার’ গল্পে। সরষে বীজ ছড়িয়ে ধান বা শশা চাষের উন্নত কৃষি পরিকল্পনা তিনি দেখে যেতে পারেননি। তবে গল্প অনুসারে ‘কৃষিতত্ত্ব’ নামক কৃষি কাগজের সম্পাদক হবার পর তাঁর একের পর এক ইনোভেটিভ কৃষি আইডিয়ায় রাতারাতি কাগজের বিক্রি বেড়েছিল হু হু করে। ‘নৌকোর পাটাতনে পাট কাঠের ব্যবহার’ কিংবা ‘তক্তপোষে কীভাবে ধানকাঠ ব্যবহৃত হয়’ তা মানুষ জানতে পেরেছিল তিনি সম্পাদক হবার পরেই। ঠিক তেমনই সিঙ্গুরে ৮০ শতাংশ হয়ে যাওয়া কারখানা, বাংলার শিল্পস্বপ্ন, ভবিষ্যৎ ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে সেই জমিতে সরষে বীজ ছড়িয়েও ধান শশা ফলানোর সার্কাস রাজ্যের মানুষ ‘তিনি’ মুখ্যমন্ত্রী হবার পরেই দেখেছেন। বামফ্রন্টের দেখানো স্বপ্ন - কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ-এর বদলে চোখে সরষে ফুল দেখার সেই শুরু। গত কয়েক বছরে রাজ্যের মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়েছে - মিথ্যে আমাদের ভিত্তি, বিপর্যয় আমাদের ভবিষ্যৎ।
২০০৬ থেকে ২০২০। সময়টা খুব কম নয়। প্রায় ১৫ বছর। এই ক’বছরে রাজ্যের মানুষ ক্ষমতা দখলের নাটক, মাওবাদীদের বিশেষ কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চাওয়া, টালার ট্যাঙ্কে বিষ মেশানো, বামফ্রন্টের নেতাদের বিরুদ্ধে জনসভায় অভিযোগের ফাইল, ধরনামঞ্চে বামবিরোধী সমস্ত শক্তির একত্র অবস্থান, অনশন নাটক সবই দেখেছে। রাজ্যে সরকার বদলের পর ‘বদলা নয় বদল চাই’ কীভাবে বদলে দিতে হয় তা দেখেছে। আর দেখেছে কীভাবে তিলে তিলে স্বপ্ন ভাঙতে হয়, কীভাবে একটা গোটা রাজ্যকে রসাতলে পাঠাতে হয়, কীভাবে তোয়ালে মুড়ে ঘুষ নিতে হয়, তোলাবাজি করতে হয় তাও। এই ক’বছরেই মানুষ দেখেছে ২০০৬-এর শিল্পতাড়ুয়া, তৃণমূলের আন্দোলনে পাশে থাকা, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া বিজেপি’র হঠাৎকরে ২০১৯-এ শিল্পবন্ধু হয়ে ওঠা। দলবদলের পর একদা তৃণমূল, বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের মনে হয়েছে ‘সিঙ্গুর আন্দোলন ভুল ছিল’। ধরনামঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনাথ সিংয়ের ছবিটা খুব সহজেই পাওয়া যায়। যে প্রসঙ্গে সেই সময় মহম্মদ সেলিম বলেছিলেন - “মুকুল, মমতা আগে রাজ্যের মানুষের কাছে ক্ষমা চাক। রাজনাথ সিং, আদবানি, সুষমা স্বরাজ - বিজেপি’র সবাই সেইসময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। এটা কোনো গাড়ি কারখানার বিষয় ছিল না। এটা ছিল গোটা পূর্বভারতে অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আসার প্রশ্ন। ...আমরা তখনই বলেছিলাম রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনার ভ্রূণ হত্যা করা হলো। সেই ভ্রূণ হত্যার জন্য দায়ী এঁরা উভয়েই। আজকে যে রাজ্যে শিল্প হচ্ছে না তারজন্য রাজ্যের হাজার হাজার বেকার যুবক যুবতীর কাছে এঁদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
সিঙ্গুর নিয়ে এতগুলো কথা নতুন করে বলার কোনো দরকার ছিল না। কিন্তু ভূতের মুখে রাম নাম-এর মতো ভোটের মুখে শিল্প গুল্প শুনে ‘ঘুড়ায় যহন হাসতাসে’ তখন ইতিহাসটা আরও একবার খুঁচিয়ে দেওয়া দরকার। আমরা যদিও সবই জানি, বুঝি তবু আমাদের স্মৃতি তো বড়োই দুর্বল। অনেকটা সোশ্যাল মিডিয়ার ভারচুয়াল ওয়ালের মতো। একটা বিষয় বুঝে ওঠার আগেই পরবর্তী বিষয়ের ঢেউ। আঙুল আর স্ক্রলের ধাক্কায় হাবুডুবু খেতে খেতে তিলে তিলে ডুবে যাওয়াই যেখানে একমাত্র পরিণতি।
গত ২৪ ডিসেম্বর রাজ্যে একাধিক শিল্প প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর ঘোষণায় এবার তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প ও সিঙ্গুরে শিল্পপার্ক। সিঙ্গুরে নাকি শিল্পপার্ক হবে। ‘কৃষি ও শিল্প হাত ধরাধরি করে চলবে। ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের উদ্যোগে তৈরি হবে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। এখান থেকে কৃষকরা নিজেদের ফসল বিক্রি, প্রক্রিয়াকরণ ও রফতানি করতে পারবেন। সেজন্য সিঙ্গুরে ১১ একর জমি ছোটো ছোটো প্লটে শিল্পপতিদের দেওয়া হবে।’ এখন নাকি জমি ঘেরা চলছে।
অথচ, গত ১০ বছরের তৃণমূল রাজত্বে হুগলি জেলাতে ছোটো ও মাঝারি শিল্পের জন্য কোনো পার্ক তৈরি হয়নি। যে ১১ একর জমির কথা এখন মুখ্যমন্ত্রী বলছেন সেই জমিও বামফ্রন্ট আমলেই অধিগ্রহণ করা। গাড়ি কারখানার অনুসারী শিল্পের জন্য। সেই জমিতেই এক শিল্প ধ্বংসকারীর নতুন শিল্পনাটক। যে প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন - “দুধের স্বাদ ঘোলে মেটে না। ঘোলটাই তৈরি করতে পারবেন না। শিল্প হলো না। যুবকের কর্মসংস্থান হলো না। না হলো শিল্প, না হলো চাষ। বাঙলার সর্বনাশ করেছেন।”
সেই সিঙ্গুর!!! যে সিঙ্গুরে ডিনামাইট দিয়ে কারখানার শেড গুঁড়িয়ে জমি ফেরতের পর সরষে বীজ ছড়ানোর ফোটোসেশন হলেও ৬৯৫ একর কৃষিজমিতে কোনো চাষ হয়নি। শতকরার হিসেবে ৭৪ শতাংশ জমি। ২০১৯-এর ১০ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় যা জানিয়েছিলেন তা মোটামুটি এরকম - চাষে আগ্রহ হারিয়েছে সিঙ্গুর এবং সেখানকার ৯৯৭ একরের মধ্যে ৬৯৫ একর জমি পতিত হয়ে পড়ে রয়েছে। অর্থাৎ ৭৪ শতাংশ জমিতে কোনো চাষ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি অনুসারে, জমি ফেরতের প্রথম বছরে চাষ হয়েছিল ৬৪১ একরে, দ্বিতীয় বছরে চাষ হয়েছে মাত্র ২৬০ একরে। চাষ করেছেন মাত্র ৭৯২ জন কৃষক। গাড়ি কারখানার স্বপ্ন দেখা যে সিঙ্গুরে মোট অধিগৃহীত জমির পরিমাণ ছিল ৯৯৭.১১ একর। জমির মালিক চিহ্নিত হয়েছিলেন ১৩,৪৯১ জন। এঁদের মধ্যে ক্ষতিপূরণ নিয়েছিলেন ১০,৮৫২ জন, অর্থাৎ ৮০.৪৩ শতাংশ মানুষ। ক্ষতিপূরণ নেননি ২,৬৩৯ জন বা ১৯.৫৬ শতাংশ অনিচ্ছুক। ৯৯৭.১১ একর জমির মধ্যে ক্ষতিপূরণ না নেওয়া অনিচ্ছুকদের জমি ছিল ১৫৭ একর এবং খাসজমি-রাস্তা সহ মালিকানাহীন জমি ছিল ১৬৯ একর (১৫৭+১৬৯=৩২৬ একর)। অধিগৃহীত জমির মধ্যে নথিবদ্ধ বর্গাদার ছিলেন ৩৩৬ জন। যার মধ্যে ২৪৯ জন বর্গাদার ক্ষতিপূরণ নিয়েছিলেন এবং ৮৭ জন ক্ষতিপূরণ নেননি।
পাপস্খালনে মরণকালে হরিনাম অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু তবু দায় নিতেই হয়। বাঙলার অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ ধ্বংসের চক্রান্তে হাতে হাত মিলিয়ে কারা শরিক হয়েছিল, আজ বাঙলার মসনদের স্বপ্ন দেখা বিজেপি’র সেদিনের ভূমিকা কী ছিল, সে কথা আজ দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। ল্যান্ডব্যাঙ্ক, শিল্প সম্মেলন, বিশ্ব বাংলা, বেঙ্গল লিডস, বিনিয়োগের গল্প শোনানো মাননীয়াকেই তো উত্তর দিতে হবে রাজ্যের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার দায় কার?
রাজ্যে নির্বাচনের মুখে সিঙ্গুরে শিল্পের টোপ দেওয়ার মতো স্বাস্থ্যসাথির টোপ দেওয়া রাজ্য সরকারকেই তো স্পষ্ট করতে হবে যেখানে রাজ্যের স্বাস্থ্যখাতে মোট বরাদ্দ ১২ হাজার কোটি টাকা, সেখানে রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশও যদি চিকিৎসা চান তাহলে খরচের ৫০ হাজার কোটি টাকা কোন্ খাত থেকে আসবে? নাকি সবটাই আরও এক ভাঁওতা? ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগের যে পরীক্ষা হয়েছিল সেই মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া চাকরিপ্রার্থীরা কবে চাকরি পাবেন তার জবাবও তো আপনাকেই দিতে হবে। রাজ্য নিয়ে অনেক কথা হলো। এবার একটু রাজ্যের বাইরেও চোখ রাখা দরকার। কারণ রাজ্যের রাজনীতি তো দেশের রাজনীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতিকে বাদ দিয়ে নয়। লক্ষ্য ঠিক করতে দুই রাজনৈতিক দলের চরিত্রই বোঝা দরকার। বিশেষ করে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার দৌলতে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের দুই সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীর মেকি যুদ্ধ দেখতে দেখতে দেশের খবর যখন আড়ালে চলে যাচ্ছে। যেমন আড়ালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে ১০৪ জন প্রাক্তন আইএএস অফিসারের বিস্ফোরক চিঠি। যে খোলা চিঠিতে তাঁরা সম্প্রতি লিখেছেন - ‘‘...যে উত্তরপ্রদেশ একসময় গঙ্গা-যমুনা সভ্য তার জন্য বিখ্যাত ছিল, সেই উত্তরপ্রদেশ এখন ঘৃণা, বিভাজন ও ধর্মান্ধতার রাজনীতির কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে এবং প্রশাসনের প্রতিষ্ঠানগুলো সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে ভেসে গিয়েছে।’’ মুখ্যীমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে উদ্দেশ্য করে স্বাক্ষরকারীরা ওই চিঠিতে আরও লেখেন, ‘‘গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে অল্পবয়সী ভারতীয়দের ওপর আপনার প্রশাসন একের পর এক নৃশংস অত্যা চার চালিয়েছে... সেই সমস্ত ভারতীয় যারা কেবল একটি স্বাধীনদেশে স্বাধীন নাগরিকের মতো জীবনযাপন করতে চেয়েছিলেন।’’ ধর্মান্তরণ প্রতিরোধ আইন প্রসঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা আরও লিখেছেন, ‘‘ধর্মান্তরণ প্রতিরোধ আইন... এই আইন সাধারণত সেই সমস্ত ভারতীয় মুসলিম পুরুষ ও হিন্দু নারীদের ওপরেই প্রয়োগ করা হচ্ছে, যারা নিজেদের স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। ...এলাহাবাদ হাইকোর্ট সহ একাধিক হাইকোর্ট এই ধরনের মামলায় স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়া সংবিধান প্রদত্ত মানুষের মৌলিক অধিকার। এই আইনের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশ সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করছে।’’ যদিও শুধু উত্তর প্রদেশ নয়। এই আইন পাশ হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্য প্রদেশেও। আর বিজেপি’র এই রমরমা বাজারেও পঞ্চায়েত, পুরসভা নির্বাচনে হরিয়ানা, কর্ণাটকে বিজেপি’র ভরাডুবি হয়েছে।চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষিত না হলেও ৩১ জানুয়ারি বেলা বারোটা পর্যন্ত কর্ণাটকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের গতিপ্রকৃতি অনুসারে বিজেপি’র দখলে ২৭,০৭৫ আসন। অন্যদিকে কংগ্রেস পেয়েছে ২৫,৮৬৮ এবং জেডিএস ১৫,৯১৬। যদিও এই নির্বাচনে জোট হয়নি তবু দুই বিরোধী কংগ্রেস এবং জেডিএস-এর মোট আসন ৪১,৭৮৪; যার ধারে কাছে নেই বিজেপি।
কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক আন্দোলন প্রসঙ্গেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ভূমিকার কথাও জানা দরকার। গত ৭ ডিসেম্বর এক ট্যুইট বার্তায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছিলেন, কৃষি আইন প্রণয়নের আগে “জুন ২০২০ থেকে ১.৩৭ লক্ষ ওয়েবিনার এবং ট্রেনিং চলেছে এবং যাতে ৯২.৪২ লক্ষ কৃষক অংশ নিয়েছেন।” কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও বারবার দাবি করা হয়েছে - তিন কৃষি আইন প্রণয়নের আগে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর সহ একাধিক বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই দাবি করেছেন। যদিও সম্প্রতি এনডিটিভি-র করা এক আরটিআই-এর উত্তরে জানা গেছে সরকারের কাছে এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। গত ১৫ ডিসেম্বর এই বিষয়ে জানতে চেয়ে আরটিআই দাখিল করে ওই সংবাদমাধ্যম। যার উত্তরে গত ২২ ডিসেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্য তথ্য আধিকারিক জানিয়েছেন - তাঁদের কাছে এই বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। কেউ তো একজন সত্যি বলছেন না। তিনি কে বা কারা? বিজেপি নেতৃত্ব নাকি আরটিআই আধিকারিকরা? ‘দেশদ্রোহী বামপন্থীরা’ অবশ্য এই মিথ্যে চালাচালির ঘটনায় সিনে নেই। কৃষক আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে তাদের দাবি খুব স্পষ্ট। এই আইন বাতিল করো এবং যে দাবিতে দিল্লি সীমান্তে গত ৩৫ দিন ধরে বিক্ষোভ চলছে।
বিষে বিষে নাকি বিষক্ষয় হয়। শেষ বছর বিশবিশ অনেক বিষ দেখেছে। হজম করেছে। এবার বিষে বিষে বিষক্ষয় হবে, নাকি ফুলে ফুলে ফুলক্ষয় তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সম্ভবত বি কম-এর সিলেবাসে অ্যামালগামেশন অ্যান্ড অ্যাবজর্পশন-এর অঙ্ক করানো হয়। রাজ্য রাজনীতিতে আপাতত অ্যাবজর্পশন প্রসেস চলছে। যেখানে দুই অথবা অধিক কোম্পানি কোনো বর্তমান কোম্পানির সঙ্গে মিশে যায়।এই দলবদলের উত্তেজনার কাছে অতীতের কলকাতা ফুটবলের দলবদলের উত্তেজনা নিতান্তই শিশু।একদলের তোলাবাজ অন্য দলে গিয়ে ঢুকেই পুরনো দলের কে তোলাবাজি করতো তা নিয়ে গলা ফাটাতে শুরু করছে। আর মানুষ দুই তোলাবাজের পুতুল নাচ দেখতে দেখতে মনকে আরও শক্ত করে। লক্ষ্যে অবিচল হয়। ভবিষ্যৎ পথ বেছে নেয়। লালঝান্ডার ডান্ডাটা আরও একবার শক্ত হাতে ধরে বলে ওঠে - ইনকিলাব জিন্দাবাদ।