৫৯ বর্ষ ৪৬ সংখ্যা / ১ জুলাই, ২০২২ / ১৬ আষাঢ়, ১৪২৯
চন্দননগরের ১৭নং ওয়ার্ডে জয়ী বামফ্রন্ট প্রার্থী
চন্দননগরে জয়ের পরে সিপিআই(এম) সমর্থকরা।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ২৯ জুন প্রকাশিত ৬টি পৌরনিগম ও পৌরসভার সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের ফলাফল থেকে স্পষ্ট তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি’র প্রতি মানুষের আস্থা কমছে। চন্দননগর, ঝালদা, পানিহাটি, ভাটপাড়া, দমদম এবং দক্ষিণ দমদম পৌরসভার একটি করে ওয়ার্ডে ভোট হয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল ৪টি ওয়ার্ডে জয়ী হলেও চন্দননগরে ৩৫ বছর পর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয় এল বামেদের। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী অশোককুমার গাঙ্গুলি, ঝালদার ২নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের প্রার্থী মিঠুন কান্দু। সর্বত্র তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে বিজেপি। অধিকাংশ ওয়ার্ডগুলিতে বামফ্রন্ট প্রার্থীরাই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন।
৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত চন্দননগর পৌর নিগমে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী গত ফেব্রুয়ারি মাসে মনোনয়ন দাখিলের পরেই প্রয়াত হন সেই কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়ে যায়। গত ২৬ জুন সেই ওয়ার্ডের নির্বাচন হয়েছে। প্রথম রাউন্ড থেকেই তৃণমূলের দখলে থাকা এই ওয়ার্ডটিতে সিপিআই(এম) প্রার্থী এগিয়ে থেকেছেন। সবশেষে ১৩০ ভোটে জয়ী হন বামফ্রন্টের প্রার্থী অশোক গাঙ্গুলি। তাঁর মোট প্রাপ্ত ভোট ১০১৮, দ্বিতীয় স্থানে থাকা তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৮৮৮। তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে বিজেপি। ফলে পৌরসভায় মোট দুটি আসন হলো বামফ্রন্টের, বাকি ৩১টিই তৃণমূলের। এদিন ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে লাল পতাকা নিয়ে সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকদের উচ্ছ্বাস দেখা যায় চন্দননগর জুড়ে। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে পুরভোটে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডেও জয়ী হয়েছিলেন বামফ্রন্ট প্রার্থী অভিজিৎ সেন।
জয়ের পর অশোক গাঙ্গুলি বলেন, অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই জয়। আমরা চন্দননগরবাসীর স্বার্থে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সচেতনতা থেকেই মানুষ বামফ্রন্টকে ভোট দিয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরে দুর্নীতিতে তৃণমূল জড়িত। মানুষ তার প্রতিবাদ করেছেন।
এদিকে ঝালদা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের প্রার্থী মিঠুন কান্দু। উল্লেখ্য এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কংগ্রেসের তপন কান্দু খুন হওয়ার কারণেই এই উপনির্বাচন। এখানে কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন নিহত তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দু। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছিল বামফ্রন্ট।
২৬ জুন উপনির্বাচন হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পানিহাটি, দমদম, দক্ষিণ দমদম এবং ভাটপাড়ার একটি করে ওয়ার্ডে।
চন্দননগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ের কারণ হিসাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, সাধারণ মানুষ সুযোগ পেলেই তৃণমূল এবং বিজেপি’র মেরুকরণের বাইরে বের হতে চাইছেন, সেটা চন্দননগর ও ঝালদার ভোটে স্পষ্ট হয়ে গেছে। উপনির্বাচনে চন্দননগর ও ঝালদার দু’টো ওয়ার্ডে তৃণমূল লুট করতে পারেনি, বাকিগুলোতে তৃণমূল লুট চালিয়েছে। ঝালদায় কংগ্রেস গতবারের থেকে অনেক বেশি ভোট পেয়েছে, ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে। চন্দননগরে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বামফ্রন্ট ভোট পেয়েছে ৫০.৪৭ শতাংশ।