৫৯ বর্ষ ৮ সংখ্যা / ১ অক্টোবর, ২০২১ / ১৪ আশ্বিন, ১৪২৮
মজুরি বৃদ্ধি ও বকেয়া মেটানোর দাবিতে জম্মুতে ধরনায় আশা শ্রমিকরা
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ জম্মুতে নিজেদের দীর্ঘদিনের বকেয়া দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য ন্যাশনাল হেলথ মিশনের সামনে একদিনব্যাপী ধরনায় বসলেন আশা (দ্য অ্যাক্রেডিটেড সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট) শ্রমিকরা। জম্মুর নাগ্রতায় আশা শ্রমিকদের ইউনিয়নের ডাকে এই ধরনা আয়োজিত হয় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের দপ্তরের সামনে গত ৪ সেপ্টেম্বর। আশা শ্রমিকরা ব্যাপক সংখ্যায় এই প্রতিবাদী ধরনায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিবাদী ধরনায় রাজ্যের সিআইটিইউ সাধারণ সম্পাদক ওম প্রকাশ উপস্থিত আশা শ্রমিকদের বলেন, এটা বাস্তব যে জম্মু-কাশ্মীরে কোভিড ১৯-এর প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে লড়াই করার কৃতিত্বের অনেকটাই রাজ্যের ১৪ হাজার আশা শ্রমিকদের, যারা নিঃস্বার্থভাবে এই কাজ করেছেন। এটা লজ্জাজনক যে, তাদের কাজকে দেশ স্বীকৃতি দেয়নি এবং তাদের বেতনও নিয়মিতকরণ করা হলো না, যেখানে এই আশা শ্রমিকদের অনেকেই কোভিড ১৯-এর সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে নিজেদের জীবন দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে বাঁচিয়েছেন। তিনি বলেন, আশা শ্রমিকরা নিজেদের জীবন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবন বাজি রেখে মানুষকে পরিষেবা দিলেও সরকার তাদের ন্যূনতম মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা বা পেনশন যা ৪৫ এবং ৪৬তম শ্রম সম্মেলনের সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও দিচ্ছে না। তাই আশা শ্রমিকদের তাদের দাবি আদায়ের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
আশা শ্রমিক ইউনিয়নের জম্মুর সম্পাদিকা অনু রাজপুত বলেন, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, সহ প্রায় সমস্ত রাজ্যগুলিতে সেখানকার আশা শ্রমিকরা ১০ হাজার টাকার বেশি প্রতিমাসে বেতন পান। জম্মু এবং কাশ্মীরের আশা কর্মীরা প্রতিমাসে পান মাত্র ২হাজার টাকা, যেখানে তাদের ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। তারা কোনো ছুটি পান না। এই আশা শ্রমিকদের সমীক্ষা করতে হয়, কোনো রোগের বা রোগীর খবর পৌঁছে দিতে হয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, তার জন্য চিকিৎসার সাহায্য পৌঁছে দিতে হয়, রোগীকে দেখভাল করতে হয়। সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীকেও নিরীক্ষায় রাখতে হয়। এসবই তাদের করতে হয় ভ্যাকসিন দেবার ডিউটির পরেও, যা করতে দিনের প্রায় ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়। সমাজের প্রান্তিক, দুর্দশাগ্রস্ত এবং দূরতম প্রান্তে থাকা মানুষের সঙ্গে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংযোগসূত্র হলেন এই আশা শ্রমিকরা। তিনি আশা শ্রমিকদের ন্যূনতম ২১ হাজার টাকা মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা, পেনশন, ইপিএফ, ইএসআই চিকিৎসার সুবিধা ইত্যাদি দেওয়ার দাবি জানান।
প্রতিবাদস্থল থেকে অন্যান্য বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে দৈনিক ভাতা, এবং কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত সহকর্মীদের জন্য ক্ষতিপুরণ দেবার দাবি জানান। আশা শ্রমিকরা রাজ্যপাল, প্রশাসন এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ডিরেক্টরকে তাঁদের দাবিসনদ দেন এদিন।