E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৮ সংখ্যা / ১ অক্টোবর, ২০২১ / ১৪ আশ্বিন, ১৪২৮

হতভোম্বল

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


লেখাজোখার এই এক মুশকিল। সবসময় যা ইচ্ছে হয় সেটাই লিখে ফেলা যায় না। বাক্ স্বাধীনতা আছে বলেই কি যা খুশি তাই বলে দেওয়া যায়? সেখানেও স্থান, কাল, পাত্র-বিবেচনা থাকে। নাহলে সবটুকুই অপাত্রে দান হয়ে যায়। আজ যেমন খুব পদাবলি কীর্তন নিয়ে দু’চার কথা বলতে ইচ্ছে করছে। ‘সখী কী আর বলিব আমি’ অথবা “কানুর পিরীতি, কুহকের রীতি, সকলি মিছাই রঙ্গ। দড়াদড়ি লৈঞা, গ্রামেতে চড়িয়া, ফিরয়ে করিয়ে সঙ্গ।। সই! কানু বড় জানে বাজি।” কিংবা কোনো ‘চিপ’ ‘চিপার’ ‘চিপেস্ট’ বিষয় নিয়েও লেখা যেত। কিন্তু চিত্ত যেহেতু নিতি নৃত্য করেনা তাই ‘তোয়ালের ক্রমবিবর্তন’-এর ইতিহাস নিয়েও কিছু লেখা যাবে না। অবস্থাটা বেশ জটিল সন্দেহ নেই। আমার এক অসমবয়সি বন্ধু সদ্য সদ্য দুটো শব্দ শিখেছেন। ‘হতভম্ব’ এবং ‘ঝেড়ে কাশা’। প্রয়োগও। যদিও আসল শব্দগুলো বেমালুম ভুলে মেরে দিয়ে তিনি নিজের মতো পারমুটেশন কমবিনেশন করে, নতুন শব্দ যোগ করে একটা বকচ্ছপ দাঁড় করিয়েছেন। আমাদেরও চারপাশের এইসব টুথপেস্ট, তোয়ালে, ডফলিওয়ালাদের ‘কেশে ঝাড়া’ দেখতে দেখতে ওই অবোধ শিশুর মতো ‘হতভোম্বল’ দশা।

আপনাদের মনে হতেই পারে সাতসকালে এসব আবার কী কথা! লেখার কি বিষয় কম পড়িয়াছে? চারপাশে প্রতিদিন কত শত ঘটনামালা। সেসব চোখে পড়েনা? মুশকিলটা এখানেই। থরে থরে লোভনীয় খাদ্য সাজিয়ে বসিয়ে দেওয়া হলে মাথা ঘুরে যেতে বাধ্য। নোলা সকসকিয়ে ওঠাতেও কোনো দোষ নেই। শরীর নিতান্ত বেজুত না হলে কে আর পায়েস ফেলে নিমপাতা চাখতে চায়। শরীরের বেজুত হয়ে পড়া চট করে মালুম পাওয়া যায়না। ঘুণ ধরার মতো। আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পরে মাথা থেকে পা। একসময় সবকিছু ঝাঁঝরা করে দিয়ে পড়ে থাকে কিছু হলুদ গুঁড়োর অবশেষ। ততদিনে সব শেষ। ভাবনা চিন্তা - কোনোটারই শক্তি থাকেনা। আসলে রসনা তৃপ্তি অথবা শরীর রক্ষা - এ লড়াই তো চিরদিনের। কোন্‌টা রক্ষা করতে হবে - সে সিদ্ধান্ত খাদ্যের নয়। একান্তভাবেই খাদকের। শিকার ধরতে টোপ দেওয়াই শিকারির কাজ। সে তার কাজ করবেই। রাহুমুক্ত নাটকের গানটা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। ‘টোপ গেঁথে ভাই ছিপ ফেলেছে, চার ফেলেছে পুকুরময়। ও কানা মাছ দেখনা চেয়ে বঁড়শি গাঁথা টোপের গায়’। টোপের লোভ এড়ানোটাই যুদ্ধ। লড়াই। সংগ্রাম। সেরকমই কী লেখা হবে সেটাও।

আমরা গত কয়েকদিনে কয়েকটা রাজনৈতিক দলবদল দেখেছি, এদল ওদলে কথা ছোঁড়াছুঁড়ি দেখেছি, ভবানীপুর দেখেছি, হাইকোর্ট দেখেছি, ভোটে জেতার উদগ্র বাসনা দেখেছি, কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ভারত বন্‌ধ দেখেছি। এমন আরও অনেক কিছু দেখেছি যা লেখার অর্থ শব্দের অপচয়। আবার এমন কিছুই গত কয়েকদিনে ঘটেছে যা আমাদের চোখ এড়িয়ে গেছে। সময়ের নিয়ম মেনেই খাওয়াতে চাওয়া খবরেই প্রতিক্রিয়া বেশি। বাকিগুলো স্ক্রলিং-এর সময় আঙুলের চাপে দ্রুত নজরের বাইরে চলে গেছে। আমাদের ডিজিটাল ডিভাইসের নিউজ ফিডে জটিল অঙ্ক অনুসারে সেই খবরই, সেই ধরনের খবরই বারবার চলে আসে যেখানে ‘হিট’ বেশি হয়। সেই শিকার, শিকারি এবং টোপের গল্প। আমরা বরং একটু অন্য কথা বলি। সেইসব কথা, যা নিউজ ফিডের হিসেব মেনে বারবার আমাদের চোখে ভেসে ওঠেনা।

ঘটনা-১

বিভ্রান্তিকর, ভুয়ো তথ্য, ফেক নিউজের কথা আমরা সকলেই জানি। কে ছড়ায়, কারা ছড়ায়, কেন ছড়ায় - সেটা এখানে বিষয় নয়। উদ্দেশ্য নিয়েই এই ধরনের খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিভ্রান্ত করতেই। যারা করেন, তারা জেনেবুঝে পরিকল্পিত ভাবেই করেন। ইদানীং সরকার এইসব নিয়ন্ত্রণে ভয়ংকর ‘কড়া’ হয়ে উঠেছে। যদিও শাসক এবং বিরোধী - দু’জনের জন্য নিয়ম হয়তো আলাদা। ‘কর্তারা’ জানেন।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকা গেছিলেন। বাইডেন সাহেবের সঙ্গে দেখা টেখা করেছেন। আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এরোপ্লেনে বসেও হাতে রাখা কাগজের নিচে আলো ফেলে কিছু একটা পড়ছেন সে ছবিও দেখেছি, খেয়েছি। এছাড়াও গত কয়েকদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও একটি ছবি ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায় মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’-এর প্রথম পাতায় অর্ধেকের বেশি জায়গা জুড়ে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি ছবি। ফাইল জাতীয় কিছু একটাতে সই করছেন তিনি। ছবির ওপরে হেডিংয়ে লেখা রয়েছে - ‘পৃথিবীর শেষ সর্বশ্রেষ্ঠ ভরসার স্থল’। শেষ দু-তিনদিনে ফেসবুক থেকে হোয়াটসঅ্যাপ, ট্যুইটার সর্বত্র ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়ে যায় এই ছবি। গল্পের শেষটুকু এর পরে...

ভাইরাল হওয়া এই ছবি নজরে আসে নিউইয়র্ক টাইমসেরও। বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ওই ছবি দিয়ে সংবাদপত্রের কমিউনিকেশন ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে জানানো হয়, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে, এটি সম্পূর্ণ ভুয়ো ছবি।’’ ওই ছবিকে “ফ্যাব্রিকেটেড ইমেজ” বলে জানিয়ে দেয় দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। এর আগে নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে তাঁর সরকারের সাফল্যের প্রচার করতে গিয়ে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি ছবি ব্যবহার করেছিল বিজেপি। এবার প্রধানমন্ত্রীর স্তুতি গাইতে আমেরিকার প্রথম সারির একটি দৈনিককে ব্যবহার করে ভুয়ো ছবি প্রচার করার অভিযোগ উঠলো বিজেপি’র বিরুদ্ধে। ক’দিন আগেই কলকাতার ব্রিজ বেমালুম যোগী আদিত্যনাথের সাফল্যের লিস্টিতে ঢুকে গেছিলো। প্রধানমন্ত্রীর আমলে গুজরাটের সাফল্যের প্রচারে বিদেশের ছবিও এর আগে দেখা গেছে। গত বছরের শেষদিকে কৃষক আন্দোলন নিয়ে বিজেপি’র ভুয়ো ট্যুইটকে ‘ম্যানিপুলেটেড মিডিয়া’ তকমা দিয়েছিলো ট্যুইটার। যদিও দেশের ডিজিটাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়া, ফেক নিউজ নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়া সরকার এসব বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে বলে কেউ জানেনা। রাজস্থানের কোটায় ২০১৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দলের সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের এক সভায় তৎকালীন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে পার্টির সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে ৩২লাখ সদস্য রয়েছে। আমরা চাইলেই যে কোনো খবর জনতার কাছে পৌঁছে দিতে পারি, তা সে ভুল খবর হোক বা ঠিক খবর’’। তিনি আরও বলেছিলেন - খবর ঠিক হোক বা ভুল হোক সেটা বিষয় নয়। সেটাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াটাই বিষয় এবং বিজেপি কর্মীদের সেই কাজটাই করতে হবে। অর্থাৎ এটাই বিজেপি’র ঘোষিত নীতি। সেসব কথা আপাতত থাক।

ঘটনা-২

উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরী জেলার দাউদপুর গ্রামের একটি স্কুল। এই স্কুলে তফশিলি জাতি ও উপজাতি পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য আলাদা আলাদা ব্যবস্থা। তাদের এঁটো থালা-বাটি অন্য কেউ ধুতে পারবে না। এমনকী উচ্চবর্ণের পড়ুয়াদের পাত্রের সঙ্গে তাদের পাত্র একসাথে রাখা যাবে না বলেও অলিখিত নির্দেশিকা রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা গরিমা রাজপুতের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হলেও তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। তাঁর স্বামী প্রবীণ রাজপুত জানান, এভাবেই স্কুল চলে এসেছে। ভবিষ্যতেও চলবে। জেলার মুখ্য উন্নয়ন আধিকারিক বিনোদ কুমার সরেজমিনে ওই স্কুল পরিদর্শন করেন। দেখা যায়, স্কুলের দুই রাঁধুনিও দলিত পড়ুয়াদের পাত্র পরিষ্কার করতে অস্বীকার করেন। এরপরেই বরখাস্ত করা হয় স্কুলের দুই রাঁধুনিকে। প্রধান শিক্ষিকাকে ট্রান্সফার করা হয়। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, সামনে নির্বাচন। তাই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা। রাজ্যের বহু স্কুলেই এই অবস্থা চলছে দীর্ঘদিন ধরে।

ঘটনা-৩

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দিল্লি হাইকোর্টে জানানো হয়েছে পিএম-কেয়ারস ফান্ড ভারত সরকারের কোনো তহবিল নয়। এই ফান্ডে প্রাপ্ত অর্থ ভারতের কনসোলিডেটেড ফান্ডে যায় না। এই ফান্ডের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

২০২০ সালের ২৮ মার্চ পি এম কেয়ারস ফান্ড তৈরি করা হয়। করোনা মোকাবিলায় আমজনতার কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নামে এই তহবিল গঠন করা হয়েছিল। এই দাতব্য ট্রাস্টের পুরো নাম প্রাইম মিনিস্টারস সিটিজেন অ্যাসিসটেন্স অ্যান্ড রিলিফ ইন এমারজেন্সি সিচুয়েশন ফান্ড। এর চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তহবিলের ঠিকানাতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ঠিকানা দেওয়া আছে। ওয়েবসাইটে নরেন্দ্র মোদীর ছবির সাথে জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভও রয়েছে। তহবিলের অছি পরিষদের সদস্য তালিকায় নাম রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীর।

সরকারের সমস্ত মন্ত্রকের কর্মী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মী, ব্যাঙ্কের কর্মীরা কয়েক কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন এই তহবিলে। তহবিলে অনুদান চেয়ে সরকারি খরচে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। যদিও এতো কিছুর পরেও কেন্দ্রের দাবি এই তহবিল ভারত সরকারের নয়। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আন্ডার সেক্রেটারি প্রদীপ কুমার শ্রীবাস্তব আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে জানিয়েছেন, সংবিধানে তৈরি কোনো আইনে এই তহবিল তৈরি হয়নি। বাজেট থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়না এই তহবিলে। স্বেচ্ছায় অনুদান জমা হয় এখানে। তৃতীয় পক্ষের কাছে এর তথ্য প্রকাশ করা অনুমোদিত নয়।

পি এম কেয়ারস ফান্ড নিয়ে বরাবর বিরোধীরা অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছেন। সিএজি (CAG) দিয়ে ট্রাস্ট অডিটের দাবি তুলেছেন তাঁরা। ফান্ডের টাকা কোথায় কত খরচ হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে একাধিকবার। যদিও কখনোই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০-র আগস্ট মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত ৫৫টি পিএসইউ-র কাছে আবেদন পাঠানোর পর ৩৮টি সংস্থা আরটিআই-এর উত্তর দিয়েছে। যেখান থেকে জানা গেছিল ৩৮টি পিএসইউ এই সময়ে পি এম কেয়ারস ফান্ডে ২,১০৫.৩৮ কোটি টাকা জমা দিয়েছে।

২০২০ সালের ২০ আগস্ট এক ট্যুইট বার্তায় পি এম কেয়ারস ফান্ড সম্পর্কে সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছিলেন - মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের উপসংহার অনুসারে কীভাবে এটা স্বেচ্ছাসেবী দান হতে পারে? পি এম কেয়ারস ফান্ডে কোনো স্ক্রুটিনি করা যাবে না। সরকারি কর্মচারীদেরও এই ফান্ডে টাকা জমা দিতে বলা হচ্ছে। ৩৮ টা পিএসইউ এই ফান্ডে ২,১০৫ কোটি টাকা দিয়েছে। কীভাবে এই ফান্ডকে সমস্ত অডিট, স্ক্রুটিনির আওতা থেকে বাদ রাখা হয়? বহু আপত্তি সত্ত্বেও আগামী দু’বছরের জন্য সমস্ত সাংসদদের এম পি ল্যাড থেকে ১০ কোটি টাকা করে পিএম কেয়ারস ফান্ডে জমা দেবার এক্সিকিউটিভ অর্ডার দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয় নিয়েও সাধারণের মনে বিশেষ নাড়াঘাঁটা নেই। বিরোধীদের হই-হট্টগোলের পরেও না মেইনস্ট্রিম মিডিয়া, না সাধারণ মানুষ - কেউই খুব একটা মুখ খোলেননি।

ঘটনা-৪

অযোধ্যার পরমহংস আচার্য’র নাম এদেশে কতজন জানেন জানা নেই। কিন্তু সম্প্রতি এই দেশের এক প্রথমশ্রেণির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আচার্য জানিয়েছেন আগামী ২ অক্টোবরের মধ্যে ভারতকে যদি হিন্দুরাষ্ট্র না ঘোষণা করা হয় তাহলে তিনি জলসমাধির মাধ্যমে মৃত্যুবরণ করবেন। তাঁর আরও দাবি, মুসলিম এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিতে হবে। তাঁর দাবি, এর আগেও নাকি এই দাবিতে তিনি টানা পনেরো দিন অনশন করেছিলেন। অমিত শাহর আশ্বাসে অনশন ভাঙেন। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সম্প্রতি জানিয়েছেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকই হিন্দু। তাদের পূর্বপুরুষ এক। হানাদারদের সঙ্গেই ইসলাম ধর্ম ভারতে এসেছিল। এটাই ইতিহাস। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই এই ধরনের দাবির বহর বাড়ছে। লক্ষ্য বোধহয় খুব স্পষ্ট এবং একমুখী।

অতঃপর

আমার অসমবয়সি বন্ধুর বক্তব্য অনুসারে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘কেশে ঝাড়া’ ক্রমশ বাড়ছে। ‘হতভোম্বল’ দশাও। আর আমাদের আরও দিশেহারা করতে, নজর ঘোরাতে রবীন্দ্রসংগীত থেকে মহালয়ার খোরাকে মজিয়ে রাখার হাজারো উপকরণ। ছুটে মরা ঝালমুড়ির পেছনে। এ এক অসম লড়াই। যা লড়তে হবে মানুষকেই। তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ভারত বন্‌ধের দিন দাঁতে দাঁত চাপা লড়াই বুঝিয়ে দিয়েছে - ‘প্রতিজ্ঞা প্রস্তুত ঘরে ঘরে, দানবের সাথে আজ সংগ্রামের তরে।’