E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬১ বর্ষ ৪ সংখ্যা / ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ / ১৪ ভাদ্র, ১৪৩০

৩১ আগস্ট গণআন্দোলনের শহিদ দিবসের সমাবেশে ক্ষুধা দারিদ্র্য বেকারি সহ সার্বিক অপশাসনের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সংগ্রামের ডাক


৩১ আগস্ট গণআন্দোলনের শহিদ দিবসের সমাবেশে বলছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ৩১ আগস্ট ধর্মতলার রাজপথ ১৯৫৯ সালের খাদ্য আন্দোলনের অমর শহিদদের স্মৃতিতে জনকল্লোলে উত্তাল হয়ে উঠলো। প্রতিকূল আবহাওয়াকে মোকাবিলা করে, প্রবল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ কলকাতা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় গ্র্যান্ড হোটেলের সামনের রাস্তা ভরিয়ে দিলেন। এই রাজ্য তথা দেশের সাধারণ মানুষ যেভাবে শাসকের জনবিরোধী নীতির শিকার হয়ে আরও কঠোর জীবনসংগ্রামের মুখোমুখি হচ্ছেন তার প্রতিবাদে লালঝান্ডা হাতে নিয়ে বামফ্রন্টের ডাকে সমাবেশে শামিল হলেন অগণিত মানুষ।

আমাদের রাজ্য তথা দেশের গণআন্দোলনের ইতিহাসের মাইল ফলক এই ১৯৫৯ সালের খাদ্য আন্দোলনের তাৎপর্য এখনও অম্লান। দু’বেলা পেট ভরে খাওয়ার অধিকার এখনও পায়নি দেশের কোটি কোটি মানুষ। এই তথাকথিত ‘অমৃতকালে’ বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের স্থান ১০৭তম। ২০১৪ সাল থেকে যে ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক শক্তি কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনা করছে তা ক্রমশ মানুষের সমস্ত অর্জিত অধিকার হরণ করছে। দেশের মাটি থেকে মহাকাশ পর্যন্ত করপোরেটদের অবাধ আধিপত্য নিশ্চিত করার কাজ করে চলেছে মোদি সরকার। কৃষক ফসলের দাম পায়না, শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি নেই, নেই কাজের নিশ্চয়তা। অন্যদিকে বেকারি বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে, মূল্যবৃদ্ধি আকাশছোঁয়া। আমাদের রাজ্যে এই সময়কালে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, আর্থিক সংকট ব্যপক আকার ধারণ করেছে। গণআন্দোলনের ওপর নেমে এসেছে আক্রমণ। শহিদের রক্তে ভিজেছে বাংলার মাটি, মায়ের কান্নায় বাতাস ভারি হয়েছে। এই সার্বিক অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে ৩১ আগস্টের জমায়েত।

সভার শুরুতে গণসংগীত পরিবেশনার পর সভাপতির ভাষণে বিমান বসু এই ঐতিহাসিক দিনটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে আজকের দিনের কঠিন চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন। শোষণ, বঞ্চনার যে অন্ধকার আমাদের গ্রাস করতে চাইছে তার বিরুদ্ধে আলোর সন্ধানে তীব্রতর গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এরপর বামফ্রন্টের অন্তর্গত দলগুলির পক্ষ থেকে সভায় বক্তব্য পেশ করেন নেতৃবৃন্দ। সিপিআই(এম)রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অতীতের সেই গৌরবদীপ্ত লড়াইয়ের ধারা বেয়ে বিভাজনের শক্তিকে এবং মুনাফাখোর করপোরেটের দালালদের প্রতিহত করার ডাক দেন।

এছাড়াও এদিনের সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিআই রাজ্য পরিষদের সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, আরএসপি’র রাজ্য সম্পাদক তপন হোর সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। প্রশাসনিক অসহযোগিতা, ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে এদিন বামপন্থীদের নেতৃত্বে যে নজরকাড়া সমাবেশ সংগঠিত হলো তা রাজ্যের রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা সংযোজিত করবে।