৬১ বর্ষ ৪ সংখ্যা / ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ / ১৪ ভাদ্র, ১৪৩০
সব মনে রাখা হবে
আকাশ কর
‘সব বিষয়ে রাজনীতি করবেন না’ - মিডিয়ার একাংশ, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিকদের অনেকাংশ এবং আরও অনেকের খুবই প্রিয় লব্জ। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ অবাক হয়ে দেখল, এক ছাত্রমৃত্যুকে কেন্দ্র করে টানা রাজনৈতিক যুদ্ধে মদত দিয়ে গেলেন তারাই যাদের এতদিন সব বিষয়ে রাজনীতি অপছন্দ ছিল। স্বপ্নের অকাল মৃত্যু দেখিয়ে দিয়ে গেল জেএনইউ থেকে যাদবপুরে উৎকট চিৎকার আর আইআইটি থেকে বালিগঞ্জ সায়েন্সে হিরন্ময় নীরবতার আড়ালে সেই একই রাজনৈতিক নক্শা।
রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ বছরের বেশি ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ। শেষ যারা ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে জিতেছিল, সময়ের নিয়মেই তারা আর ছাত্র নেই। অথচ রাজ্যের বেশিরভাগ কলেজের ইউনিয়ন রুম মুখ্যমন্ত্রীর ছবিকে পাথেয় করে দখল করে বসে আছে তৃণমূলী অ-ছাত্ররা। মোচ্ছব, তছরুপ সবই চলছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই পরিচালিত ছাত্র সংসদ অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি করে জানিয়ে দিয়েছে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইউনিয়ন তারা পরিচালনা করতে চায় না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ইউনিয়নও যা এসএফআই পরিচালিত, তারাও একই কথা বলেছে কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য দুটি ছাত্র সংসদ অর্থাৎ সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদ পরিচালনায় রয়েছে যথাক্রমে ডবলিউটিআই এবং ডিএসএফ বলে দুটি এসএফআই বিরোধী ছাত্রমঞ্চ। তারা এ বিষয়ে নিয়মরক্ষা করে দায় সেরে তৃণমূলের মতোই পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা ভোগ করছে। অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন, বাকিরা গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন এই বলে যে, যাদবপুরের ছাত্র সংসদ মানেই এসএফআই। কলা বাদে অন্য দুটি বিভাগে নিয়মিত জিতেছে এই সব ‘স্বাধীন’ ছাত্রমঞ্চ। কলা বিভাগেও অনেকবার জিতেছে তাদের কলা সংস্করণ ফ্যাস। শেষবার তাদের হারিয়ে জেতে এসএফআই। প্রেসিডেন্সিতেও এসএফআই-এর লড়াই এই একইরকমের সংগঠন আইসি'র বিরুদ্ধে। ফ্যাস ডিএসএফ, ডবলিউটিআই এবং আইসি'র তিনজন প্রাক্তন নেতার নাম বললে বিষয়টা বুঝতে সুবিধে হতে পারে। বিজেপি নেতা মোহিত রায়, তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তন্ময় ঘোষ এবং রাজন্যা হালদার টিএমসিপি'র নয়া পোস্টার গার্ল। মিডিয়ার ভাষায় এইসব ‘বাম-অতিবাম ছাত্র সংগঠন’ করে পরবর্তীতে সিপিআই(এম) বা অন্য বাম দলের নেতা হয়েছেন এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকী অতি-বাম নেতাও পাওয়া যাবে না। কিন্তু এইসব সংগঠন করে পরবর্তীতে তৃণমূল বা বিজেপি নেতা হয়েছেন এমন নাম গুচ্ছ গুচ্ছ। এইসব সংগঠনের সাথে মিশে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের হয়ে ‘নো ভোট টু বিজেপি’ প্রচার চালিয়েছে। পুরস্কারও মিলেছে হাতেনাতে। সেই সংস্কৃতি মঞ্চের নেতা সামিরুল ইসলামকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে তৃণমূল। এই সামিরুল, তন্ময় ঘোষেরাই যাদবপুরের কিছু প্রাক্তনীকে সঙ্গে নিয়ে নেমেছিলেন দেউচা পাচামির আন্দোলন ভাঙতে সরকারি কমিটির আড়ালে। ছত্রধর মাহাতোকে যাদবপুরে এনে সভা করানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে আক্রমণ বা পাম অ্যাভিনিউ অভিযান - নেপথ্যে এই এরাই।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের বাইরে যাদবপুর থানার গা-লাগোয়া মেইন হোস্টেল যেখানে র্যা্গিংয়ের ঘটনায় মৃত্যু ঘটেছে বগুলার ছেলেটির, সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সায়েন্সের ছাত্ররাই থাকে প্রায় ৭৫ শতাংশ। কাদের দাপট বেশি বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। নামমাত্র আর্টসের স্টুডেন্ট। এসএফআই’র শক্ত ঘাঁটি কলা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা অতীতেও নানাভাবে হেনস্তা হয়েছে এই হোস্টেলে। এসএফআই নেতার গলায় ছুড়ি ধরা হয়েছিল এখানেই। প্রশ্ন উঠতে পারে র্যা গিংয়ের ঘটনা জেনেও তাহলে কি চুপ করে বসেছিল এসএফআই? সংগঠন এবং সংগঠন পরিচালিত কলা বিভাগের ছাত্র সংসদ ২০১৯ সাল থেকে এই ঘটনা ঘটার আগের মাস পর্যন্ত টানা ডেপুটেশন দিয়ে জানিয়ে এসেছে হোস্টেলের কিছু তথাকথিত ‘বাবা’র এই প্রবণতার বিষয়ে। মিছিল, ঘেরাও বাদ যায়নি কিছুই। কানে যায়নি কর্তৃপক্ষের। রেজিস্ট্রার স্বপ্ন মৃত্যুর ৩ দিন পর ইউনিভার্সিটিতে আসার সময় পেলেও ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় যেতে দেরি করেন না। তারা সময় পায়নি রাগিংয়ের মতো সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর। এই সবের ফলশ্রুতি হলো বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের নির্মম মৃত্যু।
ঘটনা ঘটতে না ঘটতেই সুকান্ত মজুমদার এসএফআই- কে দায়ী করে ট্যুইট করে দিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিলেন ‘আগমার্কা মার্কসবাদীদের কাজ’, ‘সিপিএম’র ইউনিয়ন ছেলেটাকে মেরে ফেলল’। অথচ তাঁর পুলিশ তাকে আরও একবার মিথ্যেবাদী প্রমাণ করে গ্রেপ্তার করল একেরপর এক এসএফআই-সিপিআই(এম) বিরোধী ছাত্রমঞ্চের নেতাদের। তদন্তে উঠে এলো কীভাবে ছেলেটির মৃত্যুর পরে ঠান্ডা মাথায় এক এসএফআই কর্মীকে ফাঁসানোর জন্য নকল চিঠি লিখছিল এক অভিযুক্ত। মুখ্যমন্ত্রী জানতেন এই সবই। আমরা আশা করেছিলাম, সকলের অভিভাবক হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী বলবেন এখন কোনো রাজনৈতিক অভিযোগ পালটা অভিযোগ নয়, দোষীদের শাস্তি হোক, সবাই মিলে লড়ি র্যা গিংয়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু তা বললেন না। যাদবপুর, প্রেসিডেন্সিতে টিএমসিপি, এবিভিপি’র নাম করলে কেউ ফিরেও তাকায় না। তাই এইসব ছদ্মবাম নামের আড়ালে তৃণমূল-বিজেপি’র যৌথ মঞ্চের নেতারা যাদের পূর্বসূরিদের সাথে পুরোনো বন্ধুত্ব মমতা-শুভেন্দু’দের - তাদের বাঁচাতে এসএফআই’র ঘাড়ে দোষ চাপাতে একসঙ্গে নামল সেই পুরোনো জুটি। একজন এখন বিজেপি-তে অন্যজন এখনও তৃণমূলেই। দুজনের মুখেই ‘বাম-অতিবাম’ আঁতাতের কথা, অথচ নির্লজ্জের মতো ভুলিয়ে দিতে চাইছেন সেই অতি-বামদের বন্দুকবাহিনীকে সঙ্গে নিয়েই এই রাজ্যে বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়েছিল ওরা। তিলক টুডু, অভিজিৎ মাহাতোর সংগঠন এসএফআই-কে এত সহজে এক ব্র্যাকেটে ফেলে দেওয়া হবে মাওবাদীদের সঙ্গে?
এই সুযোগে, ‘প্লিজ রাজনীতি করবেন না’ বলে অভ্যস্ত সুশীল মিডিয়াও ঝাঁপিয়ে পড়ল যাদবপুর মানেই বাম, যাদবপুর মানেই মদ-গাঁজা স্বেচ্ছাচার - এই ভাষ্যকে প্রতিষ্ঠা করতে। একই সময়ে বালিগঞ্জ সায়েন্স থেকে অশোকনগর, নেতাজি শতবার্ষিকী কলেজে একইরকম ‘রাগিং’য়ের ঘটনা প্রাইম টাইমে থাকল না কোথাও। ২০২১ সালে মাত্র ১ বছরে সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৩,০০০ ছাত্রছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে (দিনে গড়ে প্রায় ৩৫ জন), ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সালের আজকের দিন অবধি আইআইটি’তে ৩৯ জন, এনআইটি’তে ২৫ জন, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ জন এবং আইআইএসইআর-এ ৪ জন আত্মহত্যা করেছে। এই সমস্ত তথ্য দিয়ে কেউ যদি বোঝানোর চেষ্টা করে যাদবপুর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়, র্যা গিংয়ের মতো অমানবিক মধ্যযুগীয় প্রবণতার বিরুদ্ধে লড়তে হবে সর্বত্র - সে যেন হয়ে উঠল সমাজের শত্রু। জেএনইউতে ঐশী ঘোষের মাথা ফাটিয়েছিল যারা তারাই তাদের পরিচিত টুকরে টুকরে গ্যাং, আরবান নকশাল ইত্যাদি শব্দ সহযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর। মিছিল করে এসে ক্যাম্পাসের সামনে স্লোগান তুলল - গোলি মারো ***কো। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে বিএড-এর শেষ পরীক্ষা দিয়ে ফেলা খাতায় কলমে প্রাক্তনী নেত্রীকে সভাপতি করে ইউনিট খুলে বসল তৃণমূল। রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর করে দিলেন আরএসএস’র অধ্যাপক সংগঠনের নেতাকে। ইসরো’র চন্দ্রযানকে পরিচালনা করার মতো মেধা এবং তৃণমূল-বিজেপি-কে উপেক্ষা করার মতো স্পর্ধা দেখাতে পারে যারা সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে প্যাঁচে ফেলে দখল করার যুদ্ধে নেমে পড়ল তৃণমূল-বিজেপি’র যৌথ বাহিনী। শুকিয়ে এলো স্বপ্নের মায়ের চোখের জল, নিভে গেল একসাথে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবিতে লড়াই। এতদিনের আশ্রিত বাম সেজে থাকা সমাজতন্ত্রবিরোধী আদতে বাম বিরোধী ছাত্রমঞ্চের ক্ষমতালোলুপ নেতাদের বাঁচাতে কিছুদিনের জন্য তাদের এদিক-ওদিক লুকিয়ে রেখে বামপন্থাকে কালিমালিপ্ত করার প্রয়াস। অথচ, স্বপ্ন মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম দিন থেকেই সরব এসএফআই। সবার আগে তাদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেছেন এসএফআই’র রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। দফায় দফায় সভা মিছিল হয়েছে কলকাতা, নদীয়া সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে র্যায়গিংয়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া সৌরভ চৌধুরীর সংগঠন ডবলিউটিআই’র হাতে আক্রান্ত হয়েছে এসএফআই নেতা। পুলিশের সামনে দিয়ে বহিরাগত গুন্ডাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে এসএফআই’র উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূলের বাহিনী, অথচ ক্যাম্পাসের বাইরে দিয়ে যাওয়া এসএফআই’র শান্তিপূর্ণ মিছিল আটকে আক্রমণ করেছে পুলিশ।
এইসব থেকে নজর ঘোরাতে এলো সিসিটিভি প্রসঙ্গ। কয়েকজন বাস্তবজ্ঞানহীন ছাত্রছাত্রীর ব্যক্তিগত মতামতকে সামনে রেখে গল্প বানানো হলো, এসএফআই নাকি সিসিটিভি লাগানোর বিরোধিতা করছে। যেন, সিসিটিভি লাগিয়ে ফেলতে পারলেই যাদবপুরে নেমে আসবে স্বর্গসুখ। পঞ্চায়েতের কাউন্টিং হলে যখন ব্যালট খেয়ে ফেলা হচ্ছিল তখন যেন সেখানে ছিল না ক্যামেরা। ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ যখন সপরিবার উড়ে যাচ্ছিলেন মিডল-ইস্টে এয়ারপোর্টে যেন ছিল না সিসিটিভি। এনআইটি থেকে আইজার এত র্যাড়গিং, আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে, যেখানে সেখানে কি নেই সিসিটিভি? রোহিত ভেমুলাকে মরতে হলো, নাজিব হারিয়ে গেল সেই তো সিসিটিভি’র সামনে দিয়েই। তা সত্ত্বেও প্রথম থেকেই এসএফআই’র সমস্ত নেতৃত্ব মিডিয়ায় কিংবা সভা সমিতিতে বলে এসেছে একটাই কথা তা হলো, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি নেই এমনটা নয়। প্রয়োজন হলে আরও ৫০টা লাগাতে হবে তবে সেটা ছাত্রছাত্রী সহ সব মহলের সঙ্গে কথা বলে, তাদের সঙ্গে নিয়ে এবং শুধু সিসিটিভি বসিয়েই যেন হাত ধুয়ে ফেলা না হয় নিরাপত্তার প্রসঙ্গে। তবুও সন্ধেবেলা টেলিভিশনে সঞ্চালিকার চিৎকার থামে আর না। অবশেষে, টিএমসিপি নেতার দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের মহামান্য বিচারপতিও বললেন ছাত্র-সংসদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তবেই তিনি রায় দেবেন সিসিটিভি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য যে কোনো প্রসঙ্গে। ব্যাস, আর কোনো কথা নেই। সিসিটিভি প্রসঙ্গ উধাও। ধীরে ধীরে উধাও হয়ে যাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা প্রসঙ্গই। টিআরপি বাড়াতে এসে যাবে নতুন ইস্যু, শাসক নেতারা পাবেন কলহের নতুন বিবাদ। কিন্তু ছেলেটি আর ফিরবে না বগুলার ঘরে। ছেলেটি আর ফিরবে না যাদবপুরের বাংলা বিভাগের ১নং ঘরের বারান্দায়। কলেজে কলেজে বহিরাগতদের দাপাদাপি, র্যা গিংয়ের মতো অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে এসএফআই তথা বামপন্থীদের টানা লড়াইকেও বিস্মৃত করে দেওয়ার চেষ্টা হবে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে একটি সাড়ে সতেরো বছরের ছেলের মৃতদেহ ব্যবহার করে কীভাবে রাজনীতির উনুন গরম করা হয়েছিল। এক মায়ের চোখের জল বিক্রি করে কীভাবে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ কয়েকজন অপরাধীকে সামনে রেখে অপদস্থ করতে নেমেছিল একটা গোটা প্রতিষ্ঠানকে। বামপন্থীদের বিপদে ফেলার সুযোগ পেলে কত দ্রুত জোটবদ্ধ হতে পারে সমস্ত বাম-বিরোধী অংশ। কলকাতার অভিমানকে অপমানে পরিণত করে মিথ্যের বেসাতি উপুড় করে কিভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল প্রগতি, গণতন্ত্র আর স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, মনে রাখা হবে। সবকিছু মনে রাখা হবে।
রাগিংয়ের মতো মধ্যযুগীয়, আদিম বর্বরতার বিরুদ্ধে ধৈর্য সহকারে যত্নশীল হয়ে লড়াইয়ের বার্তাটাই বোধহয় সবচেয়ে উপেক্ষিত হলো এই গোটা ঘটনাপ্রবাহে। রাগিংয়ের প্রবণতা একটি মানসিক ব্যাধি নাকি স্রেফ অপরাধ সে তর্ক চলবে - কিন্তু এর হাত থেকে যাদবপুর থেকে খড়গপুর সর্বত্র নবাগত ছাত্রছাত্রীদের রক্ষা করতে আসুন হাতে হাত ধরি। আর একটি ‘স্বপ্নেরও’ যাতে অপমৃত্যু না ঘটে।