৫৮ বর্ষ ৩৩ সংখ্যা / ২ এপ্রিল, ২০২১ / ১৯ চৈত্র, ১৪২৭
নির্বাচকদের দরবারে-৩
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
‘‘শুধু সিপিএম-কে দোষ দিলে হবে না। জনসাধারণের কমিটির নামে অনেক বিশৃঙ্খলা করা হয়েছিল। আটকে ছিল রাস্তা। পিরাকাটা, সাতপাটি এলাকায় অবরোধে আটকানো হয়েছিল। ভয় দেখানো হয়েছিল সেই সময়। বক্তা প্রাক্তন তৃণমূল, বর্তমান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (আনন্দবাজার ডিজিটাল, ৭ জানুয়ারি, ২০২১)। এখান থেকে উদ্ধৃতি দেবার কোনো ইচ্ছে ছিলো না। কিন্তু দুঃখের হলেও সত্যি যে বাজারে হাজারো সৎ মিডিয়া থাকলেও এখনও আমাদের বড়ো ভরসা গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ কলঙ্কিত করা বেশ কিছু চাটুকার মিডিয়া। বাজে কথা না বলে কাজের কথায় আসা যাক।
এটাকে স্বীকারোক্তি অথবা নিছক বিভ্রান্তি তৈরি করার নির্বাচনী কৌশল - কী বলা যেতে পারে জানিনা। তবে ঘটনাটা প্রায় তিন মাস আগের। নেতাই-এর ঘটনা সম্পর্কে এ কথাই বলেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই ঘটনার প্রায় তিন মাস পরে গত রবিবার ২৯ মার্চ শুভেন্দুবাবুর ছেড়ে আসা দলের সুপ্রিমো নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে বলে ফেলেন - ‘‘আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, পুলিশের পোশাক পরে অনেকে গুলি চালিয়েছিল। হাওয়াই চটি পরে এসেছিল। এবারেও সেসব কেলেঙ্কারি করছে। এই বাপ-ব্যাটার পারমিশন ছাড়া সেদিন পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারত না, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি।’’
তোড়ের মুখে ‘তাঁর’ মুখ দিয়ে এই কথা বেরিয়ে আসার পরদিনই যদিও তিনি ড্যামেজ কন্ট্রোলে কথা ঘোরানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর ঘিরে বামপন্থীদের উৎখাতের জন্য যে চক্রান্ত হয়েছিল, যে কথা বহুদিন ধরেই বামপন্থীরা বলে এসেছে বারেবারে - অবশেষে সেই চক্রান্তের তত্ত্বই প্রতিষ্ঠিত হলো আলাদা আলাদা সময়ে একদা একই দলে থাকা দুই নেতা নেত্রীর মুখ দিয়ে। বঙ্গ রাজনীতির এই দুই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা নেত্রী মাত্র তিনমাসের ব্যবধানে যখন প্রায় একই সুরে চক্রান্তের কথা বলে ফেলেন, তখন বোঝা যায় চক্রান্ত একটা ছিলই। আর তৎকালীন সময়ে যেহেতু দু’জনেই একই দলে ছিলেন - তাই আজ বিপক্ষ দলে থাকলেই কারোর অপরাধ কিছু কমে না। বরং নির্দ্বিধায় বলা যায় দুজনেই সেই কুটিল চক্রান্তের শরিক ছিলেন। এঁরা, এদের সহযোগীরাই বাংলার শিল্প সম্ভাবনা, বাংলার যুবকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন শুধুমাত্র রাজনৈতিক লাভের আশায়। তাইতো যে নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুরের মানুষকে গিনিপিগ বানিয়ে তিনি রাজনৈতিক সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে উঠেছেন আজ সেই নন্দীগ্রামেরই জায়গার নাম ভুলে গেছেন, নিহত দলীয় কর্মীর নাম ভুলে গেছেন। ঠিক এভাবেই সিঙ্গুরে তাপসী মালিক ব্যবহৃত হয়ে যাবার পর আজ তাঁর প্রয়োজন ফুরিয়েছে। প্রয়োজন ফুরিয়েছে রাজকুমার ভুলদের।
এই লেখাটা যখন আপনাদের হাতে পৌঁছাবে তখন রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটও হয়ে গেছে। ভোট হয়ে যাবে নন্দীগ্রামেরও। বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরোর ফেরে পরা নন্দীগ্রামে যুযুধান দুই প্রধান প্রতিপক্ষ যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় মত্ত। যদিও দু’জনেরই আক্রমণের লক্ষ্য প্রাথমিক পর্যায়ে হিসেবেই না রাখা বাম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখার্জি। তাই ১লা এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগের দিন বুধবার গভীর রাতেও নন্দীগ্রামের একাধিক জায়গায় চলছে বাম ভোটারদের হুমকি, শাসানি। সন্ত্রাস নন্দীগ্রাম এর আগেও অনেক দেখেছে। কিন্তু এ সন্ত্রাস একেবারেই অন্যরকম। আর দুই দলের এই সন্ত্রাসের মাঝে লড়াইয়ের মুখ হিসেবে উঠে আসা বাম প্রার্থীর মুখে বারবারই উঠে এসেছে মানুষের সমস্যার কথা, বেকার সমস্যার কথা, অর্থনীতির কথা, রুজি রোজগারের কথা। কারণ নির্বাচনী প্রচার মানে মিডিয়ায় রসালো দলবদলের গল্প নয়, অকথাকুকথার ফুলঝুরি, তুই বড়ো না মুই বড়ো নয় - সেই পার্থক্যের কথা এবার শুধু নন্দীগ্রাম নয়, রাজ্যের ২৯৪ আসনেই বলছেন সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা।
এবারের নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচারে এখনও পর্যন্ত যেভাবে রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা উঠে এসেছে ঠিক সেভাবেই বড়ো চোখে লাগছে মিডিয়ার নির্লজ্জতাও। এরাজ্যে যেমন সংবাদ পরিবেশন দেখে বোঝার উপায় নেই যে বিজেপি-তৃণমূল ছাড়াও আরও এক প্রবল প্রতিপক্ষ লড়াইয়ের ময়দানে আছে, প্রায় একইরকম ছবি অন্যান্য রাজ্যেও। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে আসামের কথা।
দ্য আসাম ট্রিবিউন, অসমিয়া প্রতিদিন, আমার অসম, নিয়মিয়া বার্তা, অসমিয়া খবর, দৈনিক অসম, দৈনিক যুগশঙ্খ এবং দৈনিক পূর্বোদয়। এখানে যে ৮ খবরের কাগজের কথা বলা হলো তার সবকটাই প্রকাশিত হয় আসাম থেকে। গত ২৭ মার্চ আসামে প্রথম দফায় ৪৭ আসনে নির্বাচন হয়ে যাবার পর ২৮ মার্চ এই কটা কাগজে বিজেপি’র এক বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। প্রতিটি কাগজের একদম ওপরে হেডলাইনের আকারে বিজেপি’র জয়ের পূর্বাভাস দিয়ে করা ওই বিজ্ঞাপন দেখে বোঝার উপায় নেই এটা কোনো খবর অথবা বিজ্ঞাপন। সাধারণ মানুষের যা দেখে বিষয়টাকে বিজ্ঞাপন নয়, খবর ভেবে বিভ্রান্ত হওয়াই স্বাভাবিক।
এর দায় রাজনৈতিক দলের অথবা সংশ্লিষ্ট খবরের কাগজের তা নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে। বিজেপি যেমন ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যেই ওই বিজ্ঞাপন দিয়েছে, তেমনই যে যে খবরের কাগজ ওই বিজ্ঞাপন ছেপেছে তারাও কী ছাপছে তা জেনেই ছেপেছে। ২৭ মার্চ সকাল ৭টা থেকে ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কিত কোনোপ্রকার পূর্বাভাস প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। এই বিষয়ে আসামের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলের অভিযোগ - ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধি আইনের অধীনে থাকা মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট, নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক নির্দেশনা এবং মিডিয়া পলিসির মারাত্মক লঙ্ঘন করেছেন বিজেপি’র নেতা ও সদস্যরা। নিজেদের পরাজয় অনিবার্য তা বুঝতে পেরে গোটা রাজ্য জুড়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে বেআইনি ও অসাংবিধানিক পদ্ধতি অবলম্বন করছে বিজেপি। এই ইচ্ছাকৃত, বিদ্বেষপরায়ণ বিজ্ঞাপন ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধি আইনের ১২৬(এ) ধারার স্পষ্ট লঙ্ঘন, যার শাস্তি দু’বছরের জেল এবং জরিমানা। এর পরেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কমিশন যার জেরে কোনো রাজনৈতিক দলকে নয়, ৮ খবরের কাগজকে নোটিশ পাঠিয়েছে।
পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী ডামাডোল, দলবদলের খেউড়, ভাঙা পায়ের নাটকের মধ্যেই আরও বেশ কয়েকটা ঘটনা এই সময় ঘটে গেছে। যার মধ্যে প্রথম সারিতে রাখা যায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিলগ্নিকরণ। এছাড়াও আছে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমিয়ে দিয়ে রাতারাতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়া। গত ২৭ মার্চ অসামরিক পরিবহণ মন্ত্রী হরদীপ পুরি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, “আমরা এয়ার ইন্ডিয়া-কে ১০০ শতাংশ বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লগ্নিকরণ, বিলগ্নিকরণ - এই দু’টো অপশন নয় কিন্তু। অপশন হলো বিলগ্নিকরণ অথবা তালাবন্ধ। এই দু’টোর মধ্যে যেকোনো একটা বেছে নিতে হবে। এয়ার ইন্ডিয়া প্রথম সারির সম্পদ, কিন্তু বাজারে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার দেনা রয়েছে এর। এই কঠোর সমালোচনা এবার বন্ধ করা উচিত আমাদের। এয়ার ইন্ডিয়ার নতুন কারো হাতে যাওয়া উচিত। ২০১৮ সালে এই সংস্থার ৭৬ শতাংশ অংশীদারি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। এবার পুরো ১০০ শতাংশই বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও গত মাসে পেশ হওয়া কেন্দ্রীয় বাজেটে এয়ার ইন্ডিয়া-কে পুনর্জীবিত করতে ২৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
গতকাল, অর্থাৎ ৩১ মার্চ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন কমানো হচ্ছে বিভিন্ন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের সুদ। যার মধ্যে ছিলো এনএসসি, পিপিএফ, কিষান বিকাশ পত্র, বিভিন্ন স্বল্প মেয়াদি সঞ্চয়, সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা প্রভৃতি। যদিও ১ এপ্রিল সকালেই তিনি আবার ট্যুইট করে জানিয়েছেন গতকালের ঘোষণা ভুলক্রমে করা হয়েছিলো। এখনই সুদের হারে কোনো বদল আনা হচ্ছে না। আগের সুদের হারই আপাতত বহাল থাকছে। এদিনের ট্যুইটে তাঁর বক্তব্য, “ভারত সরকারের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে ২০২০-২১ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে সুদের হার যা ছিল, সেই হারই অব্যাহত থাকবে। অর্থাৎ গত মার্চ পর্যন্ত যে সুদের হার ছিল তাই বহাল থাকবে। ভুলবশত জারি করা বিজ্ঞপ্তি তুলে নেওয়া হবে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়া হয়তো বা পাঁচ রাজ্যের ভোটের বালাইকে মাথায় রেখেই কিনা কে জানে?
রাজ্যে ভোটের আবহে বিজেপি যখন মানুষকে প্রবলভাবে ডবল ইঞ্জিন তত্ত্ব গেলাতে চেষ্টা করছে, তৃণমূলের থেকে বিজেপি কত ভালো বোঝানোর চেষ্টা করছে, আর কেউ কেউ তৃণমূলের মধ্যে লেসার এভিল খুঁজে পাচ্ছে সেই সময়েই দেশে একটা সমীক্ষা হয়ে গেছে নিঃশব্দে। যদিও দেশের বর্তমান কায়দা মেনে মেইনস্ট্রিম মিডিয়া সেই খবর করতে ভুলে গেছে। আইএএনএস-সি ভোটার স্টেট অফ দ্য নেশন, ২০২১ যে সমীক্ষা চালিয়েছে, তাতে যে তথ্য উঠে এসেছে তা অনেকটা এরকম। দেশের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রীরা বেশিরভাগই বিরোধী শিবিরের। আর অপছন্দের মুখ্যমন্ত্রীরা এনডিএ শিবিরের। গোটা দেশজুড়ে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের মতামত নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়। ওই সমীক্ষা অনুসারে - বিজেপি এবং শরিক দল দ্বারা পরিচালিত উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক এবং বিহারের মতো রাজ্যেও মুখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা তলানিতে। অপছন্দের মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় একেবারে উপরে আছেন উত্তরাখণ্ডের সদ্য প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী সিএম ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত। এরপরই আছেন হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টার। অর্থাৎ ডবল ইঞ্জিনের গল্প বিজেপি যতই এ রাজ্যের মানুষকে খাওয়ানোর চেষ্টা করুক, বিজেপি শাসিত রাজ্যেই ডবল ইঞ্জিন ফরমুলা কাজ করছে না। সেখানে মানুষ দ্রুত মুছে ফেলতে চাইছে বিজেপি-কে। আর ঠিক এই ভাষাতেই একথা জানিয়েছেন কেরালার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও। তাঁর বক্তব্য অনুসারে - গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কেরালায় খাতা খুলতে পারলেও এবার সেই খাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এই রাজ্যেও বিজেপি’র খাতা বন্ধ করার আসল লড়াই চালাচ্ছে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ-এর সংযুক্ত মোর্চা। যেখানে কোনো লেসার এভিল তত্ত্ব নেই। যাদের স্পষ্ট বক্তব্য - এই রাজ্যে বিজেপি’র ঢোকার পথ মসৃণ করেছে তৃণমূল। কাজেই বিজেপি-কে হটাতে গেলে প্রথম হটাতে হবে তৃণমূলকে। সম্প্রতি নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গে মমতা ব্যানার্জির স্বীকারোক্তির পর রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে জানান - গত এক দশকে পশ্চিমবঙ্গ সবদিক থেকেই পিছিয়ে পড়েছে। যুবদের কাজের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে। শিক্ষাঙ্গন কলুষিত, স্বাস্থ্য পরিষেবা গরিব মানুষের নাগালের বাইরে - কার্যত ভেঙে পড়েছে। দুর্নীতি, তোলাবাজি, সিন্ডিকেটরাজ রাজ্যবাসীর জীবনধারণ দুর্বিষহ করে তুলেছে। মহিলাদের নিরাপত্তা, সম্ভ্রম, আত্মনির্ভরতা সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্যে আজ বিপন্ন। বামফ্রন্টের সময় উন্নয়নের ভিত্তি একেবারে ধ্বংস হয়েছে এই দশ বছরে।... এই নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এক সন্ধিক্ষণ। বর্তমান অবস্থার অবসান ঘটাতেই হবে। আজ বাংলার মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। নতুন প্রজন্মের হাজার হাজার যুবক যুবতী শিল্প ও কর্মসংস্থানের দাবি নিয়ে পথে নেমেছে। ওরাই পারবে এই বিপদকে রুখে দিতে। বর্তমান পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে নতুন সরকার তৈরি করে ওরা পারবে বাংলার হৃত গৌরবকে ফিরিয়ে আনতে।... রাজ্যে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস-আইএসএফ স্বৈরতন্ত্র ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী জনগণের সংযুক্ত মোর্চা তৈরি করেছে। এরাই পারবে অন্ধকার থেকে রাজ্যকে বের করে আনতে। জনগণের স্বার্থে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাই এই শক্তিকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী করার জন্য সর্বস্তরের মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
দ্বিতীয় দফার ভোট আর কিছুক্ষণ বাদেই শেষ হয়ে যাবে। রাজ্যে এখনও ভোট বাকি ৬ পর্বের। ভোটের ফলাফল কী হবে তা এখনই বলা না গেলেও বাম তথা সংযুক্ত মোর্চার নেতা কর্মীদের মরণপণ লড়াই অবশ্যই ইঙ্গিতবাহী। ডবল ইঞ্জিনের ভ্রান্তি কাটিয়ে রাজ্য যত দ্রুত হাল ফেরাতে লালে ফিরবে ততোই রাজ্যের মঙ্গল, মানুষের মঙ্গল, বেকার যুবক যুবতীর মঙ্গল। তাই ফেরাতে হাল, ফিরুক লালই হোক আগামী ৬ পর্বের একমাত্র স্লোগান।