E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৪৬ সংখ্যা / ২ জুলাই, ২০২১ / ১৭ আষাঢ়, ১৪২৮

চোদ্দ কাহন

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


“ঘুম ভাঙতেই সেই এক বৈতালিকের দল। আর, রোজ সকালে সেই এক পুরুতঠাকুরের ধান দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ। আর আসতে যেতে দেখি, সেই বুড়ো কঞ্চুকীটা কাঠের পুতুলের মতো খাড়া দাঁড়িয়ে আছে দরজার পাশে। কোথাও যাবার জন্যে একটু পা বাড়িয়েছি কি অমনি কোথা থেকে প্রতিহারী এসে হাজির, বলে - ইত ইতৌ, ইত ইতৌ, ইত ইতৌ। সব্বাই মিলে মনটাকে যেন বুলি-চাপা দিয়ে রেখেছে।” সকালবেলা উঠে তাসের দেশ কেন মনে পড়ে গেল কে জানে? তবে মনে যখন পড়লোই তখন মনের সঙ্গেই কিছুটা সময় নাহয় চলা যাক। আসলে এমন একটা কিম্ভূতকিমাকার সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, সেখানে পা পিছলোনোটা বেশ মালুম পাওয়া যাচ্ছে। সেটা বৃষ্টির দোষ, নাকি রাস্তার, নাকি রোড ম্যাপের অথবা পথ খুঁজে নেবার জানা নেই। তবে দিনের শেষে বাস্তবের সঙ্গে আয় ব্যয়ের হিসেব মিলছে না এটাও সত্যি। রঙ পাল্টে পাল্টে চিড়িতন, হরতন, রুইতন, ইস্কাবনেদের রঙ বিরঙ্গী চটকদার খেলার সঙ্গে এঁটে ওঠা আপাতত বেশ কঠিন। বরং অনেক সহজ মাটির গন্ধ না চিনে ‘বৃহত্তম’ ‘ক্ষুদ্রতম’ তত্ত্বের গোলোকধাঁধায় একটা বড়ো অংশকে আটকে দেওয়া। লক্ষ্যটা স্পষ্ট। মূল খেলার বাইরে আরও একটা খেলা তৈরি করে দেওয়া। চিরকালের ঘোলা জলে মাছ ধরিয়েদের জন্য এর চেয়ে সহজ কোনো পথ আর কোথায়? তবে এটাও ঠিক - ‘গোপন কথাটি রবে না গোপনে’...। গোপন থাকে না।

আগের প্যারাতেই বললাম কিম্ভূতকিমাকার সময়ের কথা। ঘোর কলি এটাকেই বলে কিনা জানিনা। তবে এই সময়েই আমগাছে ফুল ফুটে তেঁতুল গাছে ফল ফলছে। আমরা দেখছি। দু’হাত তুলে সাধু সাধু রবে জয়ধ্বনিও দিচ্ছি। ভুয়ো ভ্যাকসিন এখন আমাদের গা সওয়া। ভুয়ো আধিকারিকরাও। শিক্ষক নিয়োগের লিস্টে ভুয়ো নাম ঢোকানোও। করোনা তো সেদিন এলো। তার অনেক আগে থেকেই ধাপে ধাপে হাত ধুয়ে ফেলার খেলায় আমরা বেশ ওস্তাদ হয়ে উঠেছি। সারদা, নারদ, টেট - কতকিছুই তো এই সময়ে এসেছে। গেছে। বিশেষ হেলদোল দেখা যায়নি। দামি বিদেশি ইঞ্জেকশন চুরি থেকে ভুয়ো আধিকারিক, ভুয়ো ভ্যাকসিনরাও এভাবেই যাবে। যতই ভুয়ো আধিকারিকের সঙ্গে প্রভাবশালীদের ছবি থাকুক, বা তাঁদের সঙ্গে ওঠাবসা থাকুক। গতবছর মার্চ মাসেই তো সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় প্রতারক, ভুয়ো আইএএস এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছিল। সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছিল সে। নিজেকে কলকাতা পুরনিগমের যুগ্ম কমিশনার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। প্রতারকের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে থানায় ডেকে জেরা করা হয়। তারপরেও তিনি বহালতবিয়তে নীল বাতি লাগানো গাড়ি চেপে ঘুরে বেড়িয়েছেন বিনা বাধায়। যাতায়াত করেছেন হর্তা কর্তাদের চেম্বারে। কোন আনুগত্যে এই অনুমতি? শানতারাস ডেকে নামফলক ভেঙে হাত ধুয়ে ফেলতে খুব একটা সময় লাগেনা। একটা ট্রান্সফার করে দিলেই ইঞ্জেকশন চুরি চাপা পড়ে যায়। তবে এই বক্তব্যটাও তো মন দিয়ে শোনা দরকার, উপলব্ধি করা দরকার যে - 'আমাদের আশপাশে বহু মানুষ ঘুরে বেড়ায় প্রতিদিন। কে বা কারা আশপাশে আসছে, সবসময় তাঁদের চেনা সম্ভব নয়। তাই ছবি দিয়ে বিচার করা সম্ভব নয়।' ‘কথা বলার সময় কেউ ছবি তুলে রাখতেই পারে’। রাম ঢাকতে শ্যাম, শ্যাম ঢাকতে যদু, তারপর মধু। এগুলো রাজনীতির কথা অথবা অরাজনীতির, গ্রেটার বিপদ নাকি লেসার আপদ ‘তাঁরা’ বলতে পারবেন। তবে যে যাই বলুন ঠিক বলেছিলেন একমাত্র রাজপুত্র। “...আমরা পড়েছি অসত্যের বেড়াজালে। নিরাপদের খাঁচায় থেকে থেকে আমাদের ডানা আড়ষ্ট হয়ে গেল। আগাগোড়া সবই অভিনয়...।” “ব্যাঙের আরাম এঁদো কুয়োর মধ্যে।”

আমার এক অসমবয়সি শিশুবন্ধু আছে। দিনকয়েক আগে আমাকে বেশ ধৈর্য সহকারে সে বোঝালো কীভাবে চন্দ্রবিন্দুর ‘চ’, বেড়ালের তালব্য ‘শ’, রুমালের ‘মা’ দিয়ে চশমা হয়। খুব ভালো করে শুনে বুঝলাম এই সরল ‘হ য ব র ল’ সত্যটা একটা শিশু যত সহজে বুঝে গেছে সেই সরল সত্যটা অনেক আগেই আমাদেরও বোঝা উচিত ছিলো। ‘ছিল একটা ডিম। হয়ে গেল দিব্যি প্যাঁকপ্যাঁকে একটা হাঁস। এ তো হামেশাই হচ্ছে।’ সত্যিই এই হওয়াতে মুশকিলের কিছু নেই। কিন্তু আমি বা আমরা এখনও সবটুকু বুঝে উঠতে পারিনি সেটা আমাদের ব্যর্থতা। এভাবেই তো একদলের সুপ্রিমো আরেক দলের দুর্গা হয়েছেন। বিজেপি'র ‘বি’, আরএসএস-এর ‘জে’, গ্রেটার-লেসারের ‘মূ’ আর তৃণমূল-এর ‘ল’ মিলে ‘বিজেমূল’ হওয়াটাও। আমরা ধরতেই পারিনি।

আবার তাসের দেশেই ফিরে যাই। ‘ছক্কা’ রাজপুত্রকে বলেছিলো - ‘অর্থ? অর্থের কী দরকার। চাই নিয়ম। এটা বুঝতে পার না? পাগল নাকি তোমরা!’ আর তাসদ্বীপ প্রদীপের সম্পাদক, তাসদ্বীপের কৃষ্টির রক্ষক ‘গোলাম’ রাজাকে জানিয়েছিলো - ‘হালকা হাওয়াতেই ঝড় আসে। ঝড় এলেই নিয়ম যায় উড়ে। তখন আমাদের পুরুত-ঠাকুর নহলা গোস্বামী পর্যন্ত বলতে শুরু করবেন, আমরা এগোব।’ এগোনোর চিন্তাটা যে বিষম গোলমেলে তা নিয়ে সন্দেহ। কেউ এগোতে চাইলে ভয় হওয়াই স্বাভাবিক। হালকা হাওয়াতে যেহেতু ঝড়ের পূর্বাভাস, ঝড় এলেই নিয়ম উড়ে যায় তাই ভয় হালকা হাওয়াকেও। ঝড়কে। প্যাঁচে প্যাঁচে নিয়ম হোক কড়া। তা সে ডিজিটাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ আইন, সিনেমাটোগ্রাফ (সংশোধনী) বিল, ২০২১ হোক অথবা কৃষি আইনের বিরোধিতায় কৃষক আন্দোলন। এ সবের প্রতিবাদই হালকা হাওয়া। ঝড়ের পূর্বাভাস। অতএব...

এই প্রসঙ্গে নতুন ডিজিটাল মিডিয়া আইন নিয়ে একটু শব্দ খরচ করা যাক। নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ডিজিটাল নিউজ পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন। আবেদনকারীদের পক্ষে বর্ষীয়ান আইনজীবী পি এস রমন জানান, এই আইনের দুটি ধারা মূলত ডিজিটাল নিউজ প্ল্যাটফর্মের জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করছে। ১৬ নং ধারাটি কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিবকে সহজেই ডিজিটাল ইনফরমেশন প্ল্যাটফর্মকে ব্লক করে দেওয়ার অধিকার দেয়। ভারতের নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইন আন্তর্জাতিক রীতিনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এই নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইন রাষ্ট্রসংঘ-এর মানবাধিকারের নিয়ম মেনে তৈরি হয়নি বলে মনে করছে রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশন অফিসের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে মহামারী ও কৃষক আন্দোলনের সময়ে এই নতুন নিয়মগুলো প্রণয়ন করা হয়েছে সরকারের নিজের উদ্দেশ্যে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার পাশাপাশি তথ্য আদানপ্রদান ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বাধীনতাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অধিকার সকলের সমানভাবে আছে। ভয় আসলে হালকা হাওয়াতেই। গোদী মিডিয়াকে ছাপিয়ে গিয়ে ডিজিটাল মিডিয়া যেভাবে বিভিন্ন ঘটনায় গঙ্গার পাড় খুঁড়ে কঙ্কাল তুলে আনছে তাতে ঝড়ের পূর্বাভাস তো থাকছেই।

হালকা হাওয়া প্রসঙ্গেই আরও একটা ঘটনার কথা বলা যেতেই পারে। ঘটনাটা গতকালের। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তের গাজীপুরে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বিজেপি কর্মীরা। পাল্টা আক্রমণে গেছেন কৃষকরাও। কৃষকদের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা তাঁদের আন্দোলন স্থলে ঢুকে মঞ্চের কাছে গিয়ে স্লোগান দিতে দিতে জিনিসপত্র ভাঙচুর করা শুরু করে। তাঁদের থামাতে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। সংযুক্ত কিষান মোর্চার মুখপাত্র জাগতার সিং বাজওয়া জানিয়েছেন, "বিজেপি কর্মীরা কৃষকদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে এবং ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নিজেরাই নিজেদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। সরকারের এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না। কৃষকদের বিক্ষোভ থামানোর জন্য এরকম কৌশল আগেও ব্যবহার করা হয়েছিল।" এর আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনের সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ‘দেশ কে গদ্দারোকো, গোলি মারো শালোকো’ স্লোগানের ভিডিয়ো তো একটু খুঁজলেই পাওয়া যাবে। ভয় আসলে হালকা হাওয়াকেই। ঝড়ের পূর্বাভাসকে।

১৭ মে এই রাজ্যেও একটা ঘটনা ঘটেছিলো। ওইদিন নারদ কাণ্ডে তিন তৃণমূল মন্ত্রী বিধায়কের গ্রেপ্তারির পর লকডাউনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্যের জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। বিক্ষোভ চলে নিজাম প্যালেসের সামনেও। গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে তৃণমূল কর্মীরা। দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় নিজাম প্যালেস চত্বরে। এই খবর পেয়েই নিজাম প্যালেসে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী। সূত্র অনুসারে, তিনি সিবিআই-কে জানান, তাঁকেও গ্রেপ্তার করতে হবে। না হলে তিনি নিজাম প্যালেস থেকে বেরোবেন না। এই ঘটনার পাশে বসিয়ে নিন গত দু’তিন দিনে ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের প্রতিবাদে, সকলের জন্য ভ্যাকসিনেশনের দাবিতে বামেদের বিক্ষোভের কথা। ১৭ মে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য কতজন তৃণমূল কর্মী আটক হয়েছিলেন জানা নেই। তবে গত কয়েকদিনে কসবা থানার সামনে, বিধাননগরে, কলকাতা কর্পোরেশনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে বেশ কয়েকশো বাম নেতা-কর্মী কিন্তু আটক হয়েছিলেন। রাজ্যের প্রশাসন তো একটাই। এটা বোধহয় প্রমাণিত, দিল্লি হোক বা কলকাতা, গ্রেটার হোক বা লেসার - সকলেরই ভয় সেই ‘হালকা হাওয়া’কে। ঝড়ের পূর্বাভাসকে। এটাকে আবার বিজেমূলী সৌহার্দ্য বলে দাগিয়ে দেবেন না প্লিজ। খুব দুঃখ পাবো তাহলে। এখনও ভীষণভাবে 'তাসের দেশ'-এই আছি। যেখানে রাজা ‘গোলাম’ সম্পাদককে আদেশ দিয়েছিলেন - সম্পাদকীয় ‘স্তম্ভের গর্জনে সবাইকে স্তম্ভিত করে দিতে হবে। এখানকার বায়ুকে লঘু করা সইব না।’ রাজার আদেশ শিরোধার্য করে আমাদের জন্য সম্পাদকীয়, উত্তর সম্পাদকীয় - সবই হাতে মজুত। কানে কলম গুঁজে প্রস্তুত ‘গোলাম’রা। স্তালিন-হিটলার, মুড়ি-মিছরি, বিজেমূল, সিপিএম-এর ভুল নিয়ে। আমরাও পড়ে পড়ে স্তম্ভিত হবার জন্য।

স্নেহ অতি বিষম বস্তুর মতো সৌজন্যও অতি বিষম বস্তু। আর রাজনীতিতে তো সৌজন্য বিষয়টাকে অস্বীকার করা কখনোই উচিত নয়। কে কাকে কখন ফুল পাঠাবেন আর কখন পাজামা পাঞ্জাবি, কখন একছুট্টে এয়ারপোর্টে গিয়ে শাড়ি দিয়ে আসবেন, কখন আমের ফুল পাঠাবেন, আর সেই ফুল ফের ঝুড়িতে ফিরে এলে তাকে আম করে আবার পাঠিয়ে দেবেন সেটা মানুষের রাজনৈতিক সৌজন্যবোধের ওপর নির্ভর করে। সকলের তো আর সেই সৌজন্য বোধ থাকেনা। আম আদমির জন্য দিনের শেষে কিছু নাই বা থাক ‘ওনাদের’ আম সৌজন্য বজায় থাকুক, ফুলে ফলে বেড়ে উঠুক। এবারও যেমন বাক্স ভরতি করে আম গেছে। ল্যাংড়া, হিমসাগর। গ্রেটার লেসারের অস্বস্তি কাটাতে আমস্বস্তি। এটাই তো সৌজন্য রক্ষার ‘নিয়ম’।

বেচারি মিডিয়া। এটাতো আর ‘ফিসফ্রাই’ নয় যে বিষয়টা নিয়ে ‘ইহা কী ধরণের সৌজন্য’ গোছের দু’চার কলম কড়া সমালোচনা করে দেবে।

বারবার ফিরে আসছে তাসের দেশ। মনে পড়ছে হরতনীর উপলব্ধি। “আমাদের শান্তিটা বুড়ো গাছের মতো। পোকা লেগেছে ভিতরে ভিতরে, সেটা নির্জীব, তাকে কেটে ফেলা চাই।” সময় দ্রুত বদলাচ্ছে। সব বাধা সরিয়েই। ‘তাসের দেশে সাগরপারের হাওয়া দিয়েছে খুব জোরে।’ আগামীর সে পথ অনেক বেশি বন্ধুর। মানুষ খুব শীগগির রাজামশায়ের দিকে আঙুল তুলে বলে উঠবে - ‘রাজাসাহেব, তোমার চতুর্থবর্গের শিশুবিভাগের ছাত্র নই আমরা।’ লড়াই শুরু হয়েছে ‘নিয়ম’-এর সঙ্গে ‘ইচ্ছে’র। ‘ভিতরে ভিতরে কী ঘটছে, সেটা কি তোমার চোখে পড়ে না। পুতুলের মধ্যে প্রথম প্রাণের সঞ্চার কি অনুভব করছ না। আমি তো শেষ পর্যন্ত না দেখে যাচ্ছি নে।’ সামনে বাঁধ ভাঙার সময়। বলার সময় - ‘শুকনো গাঙে আসুক, জীবনের বন্যার উদ্দাম কৌতুক; ভাঙনের জয়গান গাও। জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক’...