৬০ বর্ষ ৪২ সংখ্যা / ২ জুন, ২০২৩ / ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০
ভারতীয় দর্শন প্রসঙ্গে (তেরো)
শ্রীদীপ ভট্টাচার্য
ভারতীয় ভাববাদ বা অধ্যাত্মবাদ -
ভারতে বহু দিন ধরে একদিকে ভাববাদী মতাদর্শের প্রচার ও শ্রেণিশাসন অব্যাহত রাখতে উপনিষদ, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক, ধর্মসূত্র, পুরাণ, ভাগবত গীতা সহ অসংখ্য সাহিত্য কর্মকে ব্যবহার করা হয়।
● উপনিষদ শব্দের অর্থ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ভারতবিদ ম্যাক্সমুলার বলেছেন যে, এর প্রকৃত অর্থ, শিক্ষকের কাছে উপবিষ্ট হয়ে অর্থাৎ বসে নিবেদিত প্রাণে তাঁর বক্তব্য শোনা। উপনিষদ আলোচনায় ম্যাক্সমুলার বলছেন, ‘‘সংস্কৃত ভাষার ইতিহাস ও অসাধারণ গভীরতা স্পষ্টভাবে তুলে ধরে যে উপনিষদের অর্থ হলো অধিবেশন। ছাত্রদের নিয়ে অধিবেশ যেখানে ছাত্ররা তাদের শিক্ষকের থেকে সম্মানসূচক দূরত্বে অবস্থান করেন।’’ আবার গোপন নির্দেশ (Secret instruction)-এর জন্য শিক্ষাদান, এই কথাটিও অনেকে যোগ করেন। উপনিষদে শিক্ষাদানের সাথে এই ‘গোপন শিক্ষা’-র বিষয়টির প্রসঙ্গে খুব বেশি আপত্তি শোনা যায় না। এখানে গোপনীয়তা শব্দটি ‘নিষেধ’ এই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। উপনিষদের তত্ত্ব কেবলমাত্র সেই ধরনের ছাত্রদের দেওয়া হবে যার চূড়ান্ত নৈতিক ও বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটেছে, যিনি এই তত্ত্ব গ্রহণ করতে সক্ষম। শঙ্কর অর্থাৎ উপনিষদের মহান ভারতীয় ব্যাখ্যাকার মনে করেন যে ‘ষদ্’ শব্দ (যার অর্থ ধ্বংস করা) থেকেই ‘উপনিষদ’ শব্দের উৎপত্তি। মানুষের স্বাভাবিক অজ্ঞতা ধ্বংস করে প্রকৃত জ্ঞান উন্মোচিত করে সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে মুক্তির সন্ধান দেয় বলে তাকে উপনিষদ বলা হয়। তবে বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধান করে এবং উপনিষদের আলোচনা খতিয়ে দেখে বলা যায়, ‘গোপন শিক্ষা’ এই সংজ্ঞা সঠিকভাবেই উপনিষদকে ব্যাখ্যা করতে সমর্থ হয়েছে।
● উপনিষদকে বেদের শেষাংশ বলা হয়। তাই বেদান্ত নামেও উপনিষদকে অভিহিত করা হয়। (বেদ+অন্ত=বেদান্ত)। উপনিষদ চিরায়ত সংস্কৃত ভাষাতেই লিখিত। ভারতে হিন্দুদের অনেকের এরকমই বিশ্বাস রয়েছে যে, বেদই চূড়ান্ত সত্য। চরম সত্য এবং চূড়ান্ত বাস্তবতা যা সর্বজনের জন্য প্রযোজ্য, তা ব্যক্ত হয়েছে উপনিষদে।
● ১০৮টি উপনিষদের পরিচয় পাওয়া যায়। তার মধ্যে কয়েকটি প্রাচীনতম ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। এদের বলা হয় মুখ্য উপনিষদ। মোঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের ভ্রাতা দারাসিকো ৫০টি উপনিষদের অনুবাদ করেছিলেন। যদিও এটাই ধারণা করা হয় যে, ‘আরণ্যক’-এর পরিশিষ্ট হিসাবে ‘উপনিষদ’, আবার ‘আরণ্যক’ হলো ‘ব্রাহ্মণ’-এর পরিশিষ্ট। অথচ লক্ষ করা যায় - ‘ব্রাহ্মণ’-এ যে আলোচনা হওয়ার কথা তা ‘আরণ্যক’-এ আলোচনা করা হয়েছে, আবার ‘আরণ্যক’-র আলোচনা ‘উপনিষদ’-এ করা হয়েছে। বিকাশের ধারায় এই তিনটি সাহিত্য কর্ম একটিই সাহিত্য কর্মের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।
● প্রকৃতি জগৎ ও মানবসমাজ নিরন্তর পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই বাস্তবতারও পরিবর্তন নিরন্তর ঘটে চলেছে। আজ যা চূড়ান্ত সত্য, আগামীকাল তারও পরিবর্তন ঘটছে। সুতরাং বেদ ও উপনিষদ যথাক্রমে চরম সত্য ও চরম সত্যের ব্যাখ্যা উপস্থিত করেছে - এই দাবি কি কোনমতেই গ্রাহ্য হতে পারে?
● উপনিষদ প্রথম উপস্থিত হয় গদ্য আকারে। পরে তা কিয়দংশে পদ্য আকার গ্রহণ করে। প্রথম দিকের উপনিষদের ভাষাও প্রাচীনতর সংস্কৃত। প্রাচীনতম উপনিষদ খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ শতাব্দীতে লিখিত হলেও (কোনো কোনো গবেষক মনে করেন উপনিষদ আরও প্রাচীন, অন্তত ১০০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে) ভারতে ইসলাম ধর্মের প্রভাব প্রসারিত হওয়ার সময়কালেও পরবর্তী কয়েকটি উপনিষদ লিখিত হয়েছে।
● সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ উপনিষদ হলো সেইগুলি যেইগুলির উপর শঙ্কর (অর্থাৎ শঙ্করাচার্য) ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেইগুলি হলো যথাক্রমে - বৃহদারণ্যক, ছান্দোগ্য, ঐত্রেয়, তৈত্রেয়, ঈশা, কেনা, কথা, প্রশ্ন, শ্বেতাশ্বতর, মুণ্ডকা এবং মাণ্ডুক্য। তবে কৌষীতকী, মৈত্রিয়ানীও এই উপনিষদ গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত। প্রখ্যাত ভারত বিষয়ক গবেষক ‘উইন্টারনিৎস’ (Winternitz) উপনিষদের রচনাকালকে চারটি সময়ে ভাগ করেছেন। উপনিষদগুলির অন্তর্বস্তুগুলির মধ্যে এবং তাদের ব্যাখ্যার পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কয়েকটি উপনিষদে যেমন অদ্বৈতবাদী মতবাদ, ‘আত্ম’ (self)-ই হলো একমাত্র বাস্তব - এই বক্তব্যের উপর জোর দেওয়া হয়েছে, আবার বেশ কয়েকটি উপনিষদে যোগ অনুশীলন-এর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। তার সাথে সাধনা, শিব ও বিষ্ণুর ধর্মের উপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। দেহের ব্যবচ্ছেদের দর্শন (Philosophy of anatomy of the body)-এর উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। এগুলিকে যোগ উপনিষদ, শৈব উপনিষদ, বিষ্ণু উপনিষদ এবং শরীর উপনিষদ বলেও অভিহিত করা যেতে পারত। সমস্ত মিলিয়ে উপনিষদের মোট সংখ্যা ১০৮।
● দৈনন্দিন জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, প্রকৃতির শক্তির মুখোমুখি হতে এবং জন্ম, মৃত্যু, রোগ-ভোগের মতো অনিবার্য ঘটনার সম্মুখীন হওয়ার সময়ে মানুষের মনে যে মৌলিক দার্শনিক আবেদন বিকশিত হয় তারই প্রাথমিক আভাস বেদ-এ প্রতিফলিত হয়েছে। প্রাচীন ভারতীয় সমাজ বর্ণব্যবস্থার উপর নির্মিত শ্রেণিভিত্তিক সমাজে ব্রাহ্মণ্য কর্তৃত্বের উপর মনোনিবেশ করে নিয়মিত বৈদিক আচার-সংস্কার ও যজ্ঞানুষ্ঠানে গুরুত্ব আরোপ করেছিল।
● অবিরাম মন্ত্রোচ্চারণ, হাড়ভাঙা আচার অনুষ্ঠান মানুষের কাছে ক্রমশ বৈচিত্র্যহীন মনে হয়েছিল। ফলে জীবন কী, বিশ্ব কোথা থেকে এল, পারিপার্শ্বিক বিকাশের পেছনে শক্তি রহস্য ইত্যাদি মৌলিক দার্শনিক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার তাগিদ সে অনুভব করল।
● উপনিষদে এই ভাবনার প্রতিফল দেখা গেছে। দার্শনিক বিতর্ক বহু জনসমাগমে সমাবেশে পরিবেশিত হতে পারে। কিন্তু উত্তরসন্ধানী একজন হলে আলোচনা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গেই সম্ভব। পূর্বেই বলা হয়েছে এই জন্যই তো উপনিষদ। উপনিষদ শব্দের অর্থ হিসাবে এটা তো বলাই যায় যে, ব্রহ্ম কী, আত্মা কী, এই দুইয়ের মধ্যে সম্পর্ক কী, পুনর্জন্মের অর্থ কী - ইত্যাদি বহুবিধ প্রশ্নকে নিয়ে একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ আলোচনা। আধুনিক পণ্ডিতেরা বিষয়বস্তুর নিরিখে গুরুত্ব দিয়ে ১০৮টি উপনিষদের মধ্যে যে ১৩টি উপনিষদকে নথিভুক্ত করেছেন, সেগুলির প্রত্যেকটি কোনো না কোনো বেদের সম্প্রসারিত রূপ। পূর্বেই তো উল্লেখ করা হয়েছে যে, বেদে উত্থাপিত দার্শনিক প্রশ্নগুলির আলোচনা নিয়েই উপনিষদ, তাই তো একে বেদান্ত বলা হয়। লক্ষ করা যায়, ঋক্বেদ-এর সম্প্রসারিত রূপ ঐতরেয় ও কোষীতকী উপনিষদ, সামবেদ-এর সম্প্রসারিত রূপ ছান্দোগ্য ও কেন উপনিষদ, যজুর্বেদ-এর সম্প্রসারিত রূপ বৃহদারণ্যক, ঈশ, তৈত্তীরিয়, কণ্ঠ, মৈত্রেয়ী ও শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ, এবং অথর্ববেদ-এর সম্প্রসারিত রূপ প্রশ্ন, মুণ্ডক ও মাণ্ডুক্য উপনিষদ। কয়েকটি উপনিষদ পছন্দের প্রাণী, পাখি বা ঈশ্বরের নামে নামাঙ্কিত। পরবর্তীকালে ঐতিহাসিকেরা উপনিষদ রচয়িতাদের কয়েকজনের নাম চিহ্নিত করেছেন। যে নামগুলি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে সেগুলি হলো যথাক্রমে - মহীদাস ঐতরেয়, রাইক্য, সাণ্ডিল্য, সত্যকাম জাবালি, উদ্দালক, শ্বেতকেতু, ভরদ্বাজ, অজাতশত্রু, যাজ্ঞবল্ক্য, গার্গী, মৈত্রেয়ী ইত্যাদি। এখানে দুই মহিলার নাম যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। আবার সত্যকাম জাবালি ও উদ্দালক লোকায়ত দর্শনের ধারণাকে দ্বিধাহীনভাবে সমর্থন করেন। উপনিষদের বেশিরভাগ আলোচনা দুই ব্যক্তির প্রশ্নোত্তরমূলক সংলাপ। উপনিষদের জ্ঞানকে এমন এক উচ্চাঙ্গের সমৃদ্ধ বিষয় হিসাবে সমন্বিত প্রচার চালানো হয় যা আজকের সারস্বত সমাজেরও বোধাতীত - এই ধারণা সঠিক নয়। এই বিষয়ে ডঃ রাধাকৃষ্ণাণের মতামত প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেনঃ ‘‘উদ্বিগ্ন মানুষের আত্মার শান্তি ও স্বাধীনতা নিয়ে দার্শনিক সত্যে উপনীত হওয়া উপনিষদের পরম উদ্দেশ্য নয়। যদিও উপনিষদে সংলাপ ও বিতর্কের মাধ্যমে কিছু আধ্যাত্মিক প্রশ্নের কাজ-চলা সমাধান উপস্থাপন করা হয়েছে, উপনিষদগুলি আসলে জীবন বাস্তবতার অভিঘাতে দার্শনিক পরিশীলিত হৃদয়ের আবেগের স্ফূরণ হিসাবে দেখাই সঙ্গত। বাস্তবতার প্রকৃত স্বরূপ কী - সেই সত্য উপলব্ধি করার জন্য মানবমনের প্রচেষ্টা ও অস্থিরতা উপনিষদে প্রকাশিত হয়েছে। সুসঙ্গত দর্শন না হওয়ায়, যা কোনো একক লেখকের সৃষ্টি বা একই সময়কালের সৃষ্টি না হওয়ায় উপনিষদের মধ্যে এমন অনেক কিছুই রয়েছে যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অবৈজ্ঞানিক। কিন্তু সেটাই সব হলে উপনিষদের চর্চা আদৌ ন্যায্যতা পেত না। উপনিষদগুলিতে এমন মৌলিক বহু তত্ত্ব রয়েছে যেগুলি নির্ভরযোগ্য তো বটেই, তার সঙ্গে সন্তোষজনকও বটে। তথাপি এর নিজস্ব লঘু ত্রুটিগুলি অতিরঞ্জনের ফলে বড়ো প্রমাদে পরিণত হয়েছে।’’ দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের মতে উপনিষদগুলি অপরিমিত জ্ঞানের আধার। অর্থাৎ খুব উচ্চমানের দার্শনিক জ্ঞানের সন্দর্ভ নয় উপনিষদগুলি। প্রাথমিক পর্যায়ের দার্শনিক বিতর্ক এখানে রয়েছে। আত্মা ও ব্রহ্মের ধারণা তথা এর বিকল্প যুক্তি নিয়ে আলোচনা উপনিষদে রয়েছে।
● ‘‘তবে একটি বিষয় বলা যেতেই পারে যে, গুটিকয় মানুষ যেখানে দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা মুগ্ধ হয়ে এমন ধরনের দার্শনিক আলোচনায় অবসর যাপন যখন করতে পারেন সেখানে অবশ্যই সমাজে উদ্বৃত্ত সম্পদের অভাব নিশ্চিতভাবে ছিল না। বৃহদারণ্যক উপনিষদে একটি কাহিনি রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে - রাজা জনক ছিলেন এক ধনবান রাজা। আদর্শবাদী দার্শনিক ভাবনায় তিনি উচ্ছ্বসিত হয়ে ঋষি যাজ্ঞবল্ক্যকে সহস্র সহস্র গাভী দান করেন। দার্শনিক যাজ্ঞবল্ক্য কিন্তু এই বস্তুগত উপহারের প্রতি কোনো মহান উদাসীনতা দেখাননি।’’ (দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়)
● সেই সময়ে শাসকশ্রেণি উপনিষদের ভাববাদী ধারণাগুলি ব্যবহার করত, মায়া, ভ্রান্তি বা ব্রহ্ম সম্পর্কিত ধারণাগুলি একই গুরুত্ব দিয়ে আলোচিত হলে সাধারণ মানুষ শ্রমবিমুখ হতো, উৎপাদন বা বিতরণের মতো প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় কাজগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতো। যার ফলে উৎপাদিকা শক্তির বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হতো। জনগণের উপর আধিপত্য নিশ্চিত করতে শাসকশ্রেণি দার্শনিক ধারণা প্রচারে অন্য উপায়ের প্রয়োজন হয়েছিল।
● আমাদের আলোচনার সুবিধার্থে ব্রহ্মসূত্র বা বেদান্ত সূত্র সম্বন্ধে কয়েকটি কথা বলা প্রয়োজন। উপনিষদ দর্শনের ব্যাখ্যা করেছে ব্রহ্মসূত্র। এখানে উপনিষদের নানান মতের মধ্যে একত্ব বিধানের চেষ্টা করা হয়েছে। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, পূর্ব মীমাংসা মূলত জৈমিনির অবদান ও উত্তর মীমাংসা বদরায়নের অবদান। তবে পরবর্তীকালে ব্রহ্মসূত্র বিভিন্ন ব্যাখ্যাকার তাঁর মতো করে ব্যাখ্যা করেছেন। শঙ্কর, রামানুজ, ভাস্কর, মাধব, বল্লভ প্রমুখেরা তাঁদের মতো করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যদিও এই ব্যাখ্যাগুলির মধ্যে পার্থক্যও রয়েছে। শঙ্করের ব্রহ্মসূত্রের ব্যাখ্যা অদ্বৈতবাদী, আবার মাধবের ব্যাখ্যায় বহুত্ববাদ গুরুত্ব পেয়েছে। ব্রহ্মসূত্র উপনিষদের চিন্তাকেই উপস্থিত করেছে।
● দার্শনিক শ্রীকান্ত-র ব্রহ্মসূত্রের ব্যাখ্যায় তাঁর নিজস্ব ধর্ম (শৈব ছিলেন তিনি) প্রভাব বিস্তার করেছে। শ্রীকান্ত কিন্তু তাঁর ব্যাখ্যায় শঙ্কর বিরোধী ছিলেন। তাঁর শৈব দর্শনের ব্যাখ্যা থেকে উপলব্ধি করা যায় যে, ভারতীয় দর্শনে শৈব দর্শনের ধারও যথেষ্ট প্রাচীন। শৈব দর্শনের মূল বক্তব্য ছিল, শিব-ই সর্বোচ্চ অতীন্দ্রিয় দেবতা, তিনিই নাকি এই মহাবিশ্বের বস্তুগত কারণ।
(ক্রমশ)