বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার ঘটনাক্রম
১৫২৮ -
মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি অযোধ্যায় মীর বাঁকি বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেন।
১৮৫৩ -
বাবরি মসজিদ হিন্দু মন্দির ধ্বংস করে গড়ে উঠেছে বলে দাবি করে দু’সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটে। বিতর্ক শুরু হয়।
১৮৫৯ -
মসজিদের বাইরে ব্রিটিশ প্রশাসন প্রাচীর নির্মাণ করে অবাঞ্ছিত ঘটনা রুখতে। প্রাচীরের বাইরে রামলালার উপাসনা শুরু করা হয়।
১৮৮৫ -
মহন্ত রঘুবীর দাস ফৈজাবাদ জেলা আদালতে ওই বিতর্কিত কাঠামোর বাইরে একটি উপাসনাস্থল নির্মাণের অনুমতি চাইলে কোর্ট তা খারিজ করে দেয়।
১৯৪৯ -
বিতর্কিত কাঠামোর ভেতরে রামলালার মূর্তি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
১৯৫০ -
জনৈক গোপাল সিমলা বিশারদ জেলা আদালতে ওই রামলালা মূর্তি পূজা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। পরমহংস রাম চন্দ্র দাস আদালতে এক আবেদনে পুজো চালিয়ে যাওয়ার এবং মূর্তি ওখানেই রাখার অনুমতি চান।
১৯৫৯ -
নির্মোহী আখড়া আদালতে একটি আবেদন করে ওই কাঠামো স্থলের আইনি অধিকার চায়।
১৯৬১ -
উত্তরপ্রদেশের সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড ওই স্থলের দখল চেয়ে আবেদন করে।
১৯৮৬ -
স্থানীয় আদালত হিন্দু ভক্তদের উপাসনার জন্য ওই বিবাদিত কাঠামো খুলে দেবার রায় ঘোষণা করে।
১৯৮৯ -
এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত স্থলের স্থিতাবস্থা বজায়ে রাখার নির্দেশ দেয়।
অক্টোবর ১৯৯০ -
বাবরি মসজিদের দিকে এগোলে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ৫ করসেবকের।
৬ ডিসেম্বর ১৯৯২ -
বিতর্কিত মসজিদের পার্শ্ববর্তী স্থলে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতা-লাখো কর্মীরা জড়ো হয়ে করসেবা শুরু করেন। অভিযোগ, ওই নেতাদের প্ররোচনায় করসেবকরা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় বাবরি মসজিদ।
ডিসেম্বর ১৯৯২ -
দু’টি এফআইআর হয় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায়। একটি অজ্ঞাতপরিচয় করসেবকদের বিরুদ্ধে এবং অপরটি বিজেপি নেতা এলকে আদবানী, মুরলীমনোহর যোশী সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙার আগে উত্তেজক সাম্প্রদায়িক ভাষণ দেবার অভিযোগে। উত্তরপ্রদেশ সরকার মামলা সিবিআই-কে অর্পণ করার সময় শুধুমাত্র প্রথম এফআইআর হস্তান্তর করে। সিবিআই-এর বিশেষ আদালত গঠিত হয়। দু’টি এফআইআর একত্র করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই।
অক্টোবর ১৯৯৩ -
সিবিআই চার্জশিট ফাইল করে এলকে আদবানী সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে।
মে ২০০১ -
সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত এল কে আদবানী, মুরলীমনোহর যোশী, উমা ভারতী, বাল থ্যাকারে সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আদালতে চলা মামলা স্থগিত করে দেয়। দ্বিতীয় এফআইআর রাজ্য সরকার হস্তান্তর না করায় আইনি জটিলতার জেরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রত্যাহৃত হয় ফৌজদারি ধারা।
নভেম্বর -
২০০৪ সিবিআই এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ-এর কাছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে চলা আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়ার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে। হাইকোর্ট নোটিশ জারি করে।
মে ২০১০ -
হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে দেয়। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয় সিবিআইয়ের রিভিশন পিটিশনে কোনও সারবত্তা নেই।
ফেব্রুয়ারি ২০১১ -
হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে মসজিদ ধ্বংসের মামলায় হস্তক্ষেপের আবেদন জানায়।
মার্চ ২০১৭ -
সুপ্রিম কোর্ট বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়টি পুনরায় চালু (রিভাইভ) করার কথা বলে অযোধ্যার কাঠামো সংক্রান্ত বিতর্কের নিষ্পত্তি ঘটানোর জন্য।
এপ্রিল ২০১৭ -
নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দু’টি এফআইআর একত্র করে বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে মামলার নিষ্পত্তি ঘটানোর নির্দেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের ধারা যু্ক্ত করা হয় সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে। সুপ্রিম কোর্ট এলকে আদবানী, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতী সহ করসেবক এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাটি পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেয়। প্রতিদিন শুনানি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সিবিআইয়ের আবেদনের বিষয়টি সংরক্ষিত রাখে সর্বোচ্চ আদালত।
নভেম্বর ২০১৯ -
অন্য মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত জমির পুরোটাই রামলালার জন্য মঞ্জুর করে এবং সরকারকে মুসলিমদের মসজিদ তৈরির জন্য বিকল্প ৫ একর জমি দেবার নির্দেশ দেয়। বাবরি মসজিদ ভাঙার বিষয়টির আইন লঙ্ঘনের ভয়ঙ্কর ঘটনা বলে অভিহিত করে শীর্ষ আদালত।
আগস্ট ২০২০ -
প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী অযোধ্যায় ভূমি পুজোয় অংশগ্রহণ করেন এবং রাম মন্দির নির্মাণ শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্ট বাবরি মসজিদ ভাঙার মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য একমাস সময়সীমা বাড়ায়।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ -
সিবিআই-এর বিশেষ আদালতের বিশেষ বিচারক এসকে যাদব মসজিদ ধ্বংস সংক্রান্ত রায় দেন। ওই রায়ে এলকে আদবানী সহ জীবিত ৩২ জন অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করা হয়।