E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৮ম সংখ্যা / ২ অক্টোবর ২০২০ / ১৫ আশ্বিন ১৪২৭

পুরোহিতভাতা ও পুজো কমিটিগুলোকে ডোল দেওয়া প্রসঙ্গে

গৌতম রায়


পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগে ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের সরকারি কোষাগার থেকে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। শারদ উৎসবের ঠিক আগে তিনি ঘোষণা করেছেন, নথিবদ্ধ দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে রাজ্য সরকার যে দশ হাজার টাকা করে অনুদান দিত, সেটি পরিমাণ বাড়িয়ে এই বছর পঞ্চাশ হাজার টাকা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর আরও ঘোষণা, পুজো কমিটিগুলিকে পঞ্চাশ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে। পুজো কমিটিগুলিকে অনুমতি সংগ্রহের জন্যে কোনো খরচ করতে হবে না। দমকল বা পরিবেশ দপ্তরের অনুমতির জন্যেও কোনো টাকা দিতে হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতার সর্বশেষ সংযোজন, উৎসবে সরকারি স্বীকৃতি প্রাপ্ত সাংবাদিকদের দু’হাজার টাকা করে সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে।

মমতা ক্ষমতায় এসেই ওয়াকফের টাকায় ইমাম-মোয়াজ্জিনদের ভাতা দিতে শুরু করেছিলেন। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বিশেষ সম্প্রদায়কে অর্থ সাহায্যের বিষয়টিকে কোনোভাবেই অনুমোদন করে নি। সামাজিক, আর্থিক অবস্থানের ভিত্তিতে ছাত্রদের কিছু ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের ভাতা দিয়ে, সেটাকে সেই সম্প্রদায়ের প্রতি সরকারের দায়িত্ববোধের পরিচায়ক হিসেবে ব্যবহারের কোনো দৃষ্টান্ত এর আগে স্বাধীন ভারতে ছিল না। মমতা এক্ষেত্রে কেবল দৃষ্টান্তই স্থাপন করেন নি, ধর্মীয় মেরুকরণের বিষয়টিকে নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তীব্র করে দিয়ে, মোদীর কাজটাকে অনেকখানিই সহজ করে দিয়েছিলেন।

মুসলমান সমাজের মূল সমস্যা ধর্মের গহীনে নয়, ক্ষুধার অন্তরালে রয়েছে, এটাকে ক্ষমতায় এসেই অস্বীকার করেছিলেন মমতা। ’৪৭-এর দেশভাগের পর থেকে নানা আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং অবশ্যই রাজনৈতিক কারণে মুসলমান সমাজ কার্যত প্রান্তিক অবস্থায় চলে এসেছে ভারতে। চরম দারিদ্র্য, প্রথাগত শিক্ষার অভাব, কর্মহীনতা, ছাঁটাই, রাজনৈতিক বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক শয়তানির জন্যে তাঁদের অপরাধ জগতের সঙ্গে এক করে দেখা - এইসব নানা কারণে বেকারি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য - প্রতিটি কারণে মুসলমান সমাজ খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে। উন্নয়নের নামে নিজেদের জমি-জিরেতকে সেই ‘উন্নয়নের জঠরে’ সব থেকে বেশি বলি দিতে হয়েছে মুসলমানকে। ক্ষতিপূরণ তাঁরা প্রতিবেশি হিন্দুদের নিরিখে পেয়েছেন সবথেকে কম। কারণ, যথাযোগ্য স্থানে তাঁদের হয়ে যোগ্যলড়াই করার লোক প্রায় নেই-ই। এই অবস্থায়, মুসলমান সমাজের উন্নতি করতে হলে, তাঁদের জন্যে প্রথম এবং প্রধান বিষয় হলো, আধুনিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তিমুখী শিক্ষার সঙ্গে তাঁদের সর্বতোভাবে যুক্ত করা। দরকার তাঁদের কর্মসংস্থান। মুসলমান হওয়ার কারণে, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি বা বেসরকারি, কোনোস্তরেই চাকরি পেতে বা চাকরি পাওয়ার পর, ধর্মের কারণে তাঁদের বঞ্চিত না হতে হয়, তাঁরা যাতে অসুবিধার শিকার না হন, তার জন্যে সবদিক থেকে লক্ষ্য, নজর দেওয়া।

ক্ষমতায় এসেই সে পথে কিন্তু মমতা হাঁটলেন না। কয়েকটি ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে, মুসলমান সমাজের হকের ওয়াকফের থেকে সামান্য কিছু টাকা পাইয়ে দিয়ে, তিনি হিন্দু সমাজের ভিতরে যাঁরা ধর্ম নিয়ে একটু ভাবেন, অথচ সাম্প্রদায়িক নন, তাঁদের ভিতরে মুসলমানদের প্রতি সরকার বিশেষ পক্ষপাতিত্ব করছে - এই বিষ ঢুকিয়ে দিলেন। সেই বিষের ফলাফল হিসেবে ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের একটা বড়ো অংশের ভিতরে ক্রমে মুসলিম বিদ্বেষ তীব্র হতে থাকলো। সেই বিদ্বেষ শেষে ঘর বাঁধলো সাম্প্রদায়িকতার কোটরে। ফলে লাভবান হলো আরএসএস এবং তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র ১৮টি আসন আশাতীতভাবে পেয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রটিকে এইভাবে ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেই প্রস্তুত করতে শুরু করে দিয়েছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই উদ্যোগ কেন্দ্রে বিজেপি একক গরিষ্ঠতাতে ক্ষমতায় আসার অনেক আগেই সামাজিক মেরুকরণের কাজে আরএসএস, বিজেপি-কে অনেকখানি সাহায্য করেছিল।

রাজনৈতিক হিন্দুরা সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিতে মুসলমানদের বিরোধিতা করলেও, ইমাম-মোয়াজ্জিনদের ওয়াকফের টাকা থেকে ভাতা দিয়ে, তাঁদের আর্থ-সামাজিক জীবনের এতটুকু অদলবদল ঘটেছে এটা দেখাতে পারবেন না। কারণ, আধুনিক বিজ্ঞানমুখী শিক্ষা আর কর্মসংস্থান ব্যতীত সংখ্যালঘু মুসলমানদের সামাজিক পরিস্থিতির এতটুকু অদলবদল করা সম্ভব নয়। তেমনিই হিন্দু ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের পৌরহিত্যের পাশাপাশি অন্য কোনো কর্মসংস্থান, আর তাঁদের সন্তানসন্ততিদের আধুনিক শিক্ষার ভিতর দিয়ে অর্থনীতির মূল স্রোতে সংযুক্ত না করলে, তাঁদের সামাজিক অবস্থানের এতটুকু উনিশ-বিশ করা সম্ভবপর নয়। অথচ রাজ্যের কোনো অংশের মানুষদেরই কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে মমতার সরকার আজ পর্যন্ত একচুল ইতিবাচক অবস্থান নেয় নি। এই রাজ্যে শিক্ষিত বেকারেরাই যে কেবল এই রাজ্যে কোনোরকমের রোজগারের সংস্থান করতে পারেন না তাই নয়, প্রথাগত শিক্ষার বিশেষ সুযোগ যাঁরা পান নি, কায়িক শ্রমনির্ভর যাঁদের জীবিকা, এই রাজ্যে তাঁদেরও কোনো কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। কারণ, নতুন তো দূরের কথা, পুরনো কলকারখানাও কার্যত গত দশ বছরে এই রাজ্যে প্রায় ধ্বংস। ফলে এই লক ডাউনের সময়ে এ রাজ্য থেকে ভিন্‌ রাজ্যে কায়িকশ্রম-নির্ভর একটা বিপুল অংশের মানুষের দুর্দশা দেখলাম।

এই অবস্থায় পুরোহিতভাতা অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট খারাপ অবস্থার ভিতরে থাকা পুরোহিতদের কাছে নতুন কি আশার বাণী বয়ে আনবে? মাত্র এক হাজার টাকা ভাতাতে পুরোহিতদের কোন্‌ অর্থনৈতিক সমস্যার সুরাহা হবে? সবথেকে বড়ো কথা হলো, ভারতের সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে কোনো সম্প্রদায়কে অর্থনৈতিকভাবে কিছু পাইয়ে দেওয়ার কোনো সংস্থান নেই। হিন্দুদের জন্যেও নেই, মুসলমানদের জন্যেও নেই।

ইমাম-মোয়াজ্জিনদের যে ভাতা মমতা দিচ্ছেন, সেটা সরকারের টাকাতে দেওয়া হচ্ছে না। মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরাই যুগ যুগ ধরে তাঁদের সমাজের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্যে জাকাত, ফেরেত ইত্যাদির মাধ্যমে যে টাকা গচ্ছিত রেখেছিলেন ওয়াকফে, সেই টাকা থেকেই ইমামভাতা দিয়ে মমতা নিজের রাজনৈতিক মাইলেজ তুলছেন।

নিজের সমাজের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের আর্থিক পুনর্বাসনের জন্যে যে বাধ্যতামূলক করের সংস্থান ইসলাম ধর্মে আছে, তেমন কোনো সংস্থান আদৌ হিন্দুদের ভিতরে নেই। ফলে ওয়াকফের মতো কোনো গচ্ছিত টাকা হিন্দু সমাজের নেই, যেখান থেকে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পুরোহিতদের ভাতা দেবে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের নামে মন্ত্রগুপ্তির শপথ নেওয়া মমতার নেতৃত্বাধীন সরকার। তাহলে পুরোহিত ভাতার টাকাটা আসবে কোথা থেকে? তার কোনো দিশা এখনো পর্যন্ত মমতা দেন নি। তাঁর ঘুমন্ত অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও দেন নি। জনগণের করের টাকা থেকে একটি রাজ্য সরকার যদি কেবল ধর্মের ভিত্তিতে বিচার করে, বিশেষ একটি ধর্মের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের ভাতা দেন, তবে সেটি কতখানি সংবিধানসম্মত হবে, এটাও একটা গুরুতর প্রশ্ন। রাজ্য সরকারের টাকাটা মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য মন্ত্রীদের কারও ব্যক্তিগত টাকা নয়। একটা টাকা খরচ করতেও বাজেটের অনুমোদন দরকার। সেই বাজেট বিধানসভাতে অনুমোদন করাতে হয়।পুরোহিত ভাতা বা পুজো কমিটিগুলোকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে অনুদান, এগুলোর একটির পিছনেও বাজেট অনুমোদন নেই। বর্তমান রাজ্য সরকারের মেয়াদও শেষের দিকে। ফলে পূর্ণাঙ্গ বাজেট আনার মতো আইনি সংস্থানও তাঁদের নেই। তাহলে এই টাকা আসবে কোথা থেকে? বিপুল অঙ্কের টাকা ধার করে এই সংবিধান বহির্ভূত খরচ কি মেয়াদ শেষের মুখে কোনো রাজ্য সরকার করতে পারে?

একই কথা প্রযোজ্য দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে রাজকোষ থেকে এই বিপুল অঙ্কের টাকা দেওয়া প্রসঙ্গে। দুর্গাপুজোই হোক, বা ইদ, মহরম অথবা বড়দিন - এইসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কেন রাজকোষ থেকে অর্থব্যয় করা হবে? কোন্‌ খাতের অর্থ দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা দিচ্ছেন? নিশ্চিতভাবে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সরকারের রাজকোষ থেকে এইভাবে টাকা খরচের কোনো সংস্থান নেই। তাহলে কোথা থেকে টাকা আসছে? সিএজি-ই বা চুপ করে বসে আছে কেন? বেশ কয়েকবছর ধরেই তো রাজ্য সরকার তাদের পছন্দের দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে দশ হাজার টাকা করে দিচ্ছিল।জনগণের করের টাকা থেকে এইভাবে ধর্মীয় কাজে অর্থব্যয় করা সম্পূর্ণ সংবিধান বিরোধী। অথচ গত যে ক’বছর ধরে এই টাকার দানছত্র মমতা খুলে চলেছেন, সেই ক’বছরে সিএজি’র পক্ষ থেকে একটি শব্দও উচ্চারিত হতে আমরা দেখিনি।

ইমাম ভাতা, পুরোহিত ভাতা, দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে দেদার অর্থবিতরণ - এইসবের পিছনে একদিকে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা আর অন্যদিকে কিছু মানুষকে টাকা পাইয়ে দিয়ে, বিনিময়ে তাঁকে দলীয় আনুগত্যে প্রতিষ্ঠিত করা - এটাই হলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এইসব কর্মকাণ্ডের পিছনে এক এবং একমাত্র উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্যেই তিনি ক্লাবগুলিকে দেদার অর্থ বিতরণ করেছেন। এই বিতরণের পিছনে প্রকাশ্যে না বললেও, আসল উদ্দেশ্য যে যুবকদের একটা বড়ো অংশকে নিজের দলের পক্ষে পরিচালিত করা, সেকথা একজন বাচ্চা ছেলেও বোঝে। ভোট রাজনীতিকে নিজের এবং নিজের দলের পক্ষে প্রভাবিত করতে সংবিধানের তোয়াক্কা না করে, বিধানসভাকে পরোয়া না করে, আইনকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই যে কাজকর্ম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করে চলেছেন ধারাবাহিকভাবে, তা তাঁকে কতখানি মাইলেজ দেবে, তা সময়ই বলবে। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতাকে উস্‌কে দিয়ে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতাকে মমতা যেভাবে উস্‌কে দিলেন, তার মাশুল কেবল পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বা দেশের পূর্বাঞ্চলের মানুষদেরই দিতে হবে তাই নয়, গোটা ভারতের মানুষদেরই মমতার এই সুবিধাবাদী, নোংরা রাজনীতির চরম মাশুল দিতে হবে আগামী দিনে।

বাংলার রাজনীতিকে এভাবে অরাজনৈতিক বিষয়কেন্দ্রিকভাবে প্রাসঙ্গিক করে দেওয়ার যে রাজনীতি মমতা করে চলেছেন ধারাবাহিকভাবে, বিজেপি নেতৃত্ব গোরুর কুঁজে সোনা বা গোমূত্রে করোনা বিনাশের মতো কেবল অবৈজ্ঞানিকই নয়, অপ্রাসঙ্গিক যেসব কথাবার্তা বলছেন, সেগুলি সব একই সূত্রে গাঁথা। ইমাম, পুরোহিতভাতা বা সাংবাদিকদের ‘বকশিস’ - এই সবের ভিতর দিয়ে অরাজনৈতিক বিষয় ঘিরে মানুষ ভাবতে থাকুন, এটা যেমন মমতা চান, তেমনিই এটা দিলীপ ঘোষ বা তাঁর সমমতাবলম্বীরাও চান। মমতা চান না শিল্পায়ন ঘিরে তাঁর প্রকৃত অভিসন্ধি মানুষ বুঝুক। তিনি চান না সারদা, নারদা’র মতো ভয়াবহ আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে মানুষ সরব হোন। তাই মূল বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে, যাবতীয় বিতর্ক যাতে কেন্দ্রীভূত হয় কুনাল ঘোষ কবে, কখন মমতার প্রতি বিষোদগার করেছিলেন, সেই উদ্দেশেই কুনালকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত করেছেন মমতা। যাবতীয় আলোচনা সারদার দুর্নীতির থেকে ব্যক্তি কুনাল ঘোষে প্রতিস্থাপিত করাই হচ্ছে মমতার আসল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।

একইরকম অভিসন্ধি দিলীপ ঘোষ-দেরও। এনআরসি, এনপিআর থেকে দিল্লি গণহত্যা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দিতে কাফিল খান, সাফুরা জারগার, ভারভারা রাও, উমর খালিদ প্রমুখের উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস - এইসব থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতেই দিলীপবাবুদের নানা আজগুবি প্রসঙ্গের অবতারণা। যেমন কোভিড-১৯ জনিত কারণে অপরিকল্পিত লক ডাউনের সময় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্তৃক থালা বাজানো, প্রদীপ জ্বালানোর মতো অবাস্তব কর্মসূচির ভিতর দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছিল। এই মুহূর্তে কৃষি আইনের সংশোধনী ঘিরে সাধারণ মানুষ যাতে কোনো অবস্থাতেই সঠিক তথ্য জানতে না পারেন, সেজন্যে বিজেপি’র চেষ্টার ত্রুটি নেই। বিজেপি এবং মমতার উদ্দেশ্য কি কোনোরকম আর অস্পষ্ট থাকছে?