৬০ বর্ষ ৪ সংখ্যা / ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ / ১৬ ভাদ্র, ১৪২৯
৩১ আগস্ট গণআন্দোলনের শহিদ দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালিত রাজ্যে
৩১ আগস্ট সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে গণআন্দোলনের শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিমান বসু। রয়েছেন বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ১৯৫৯ সালের ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলন স্মরণে ৩১ আগস্ট দিনটিতে গণআন্দোলনের শহিদ দিবস হিসেবে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়েছে রাজ্যে। এদিন এই উপলক্ষে কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে বামপন্থী ও সহযোগী দলগুলির পক্ষ থেকে শহিদ স্মারকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। এদিন কলকাতা সহ রাজ্যের সর্বত্র খাদ্য আন্দোলন তথা গণআন্দোলনের শহিদ দিবস উপলক্ষে সিপিআই(এম) সহ বিভিন্ন বামপন্থী দলের আহ্বানে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়েছে।
এই উপলক্ষে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে শহিদ স্মারকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলনের ইতিবৃত্ত সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে যেভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে, তখন মেহনতি মানুষের সেদিনের সার্বিক ঐক্যের লড়াই সংগ্রাম এবং সাফল্যের দিককে আমাদের আরও বেশি করে স্মরণে রাখতে হবে। সেই লড়াই-সংগ্রামের ঐতিহ্যকে পাথেয় করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
সিপিআই(এম) সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, বর্তমানে দেশ ও রাজ্যজুড়ে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে মানুষকে যখন চরম বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, তখন ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলনের সেই লড়াই-সংগ্রামকে স্মরণে রেখে আবারও উত্তাল গণআন্দোলনের এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে বামপন্থীদেরই। তিনি বলেন, এরাজ্যে তৃণমূল আসার পর মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, জমির অধিকার সুরক্ষিত থাকছে না। তিস্তা প্রকল্পের মধ্য দিয়ে গোটা উত্তরবঙ্গের যে উন্নতি সাধনের চেষ্টা হয়েছিল, মমতা-মোদি সুকৌশলে সে প্রচেষ্টা বানচাল করে দিয়ে জমির ভাণ্ডার লুটের চেষ্টা চালাচ্ছে। তেভাগা আন্দোলনের সাফল্যের মধ্য দিয়ে কৃষক ফসলের যে অধিকার পেয়েছিল তা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে আদানি-আম্বানিদের হাতে সবটা তুলে দেওয়া হচ্ছে। বহু আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জোতদার, জমিদার, মজুতদারি ব্যবস্থাকে কোণঠাসা করেছিল বামপন্থীরা, সেই ব্যবস্থাকেই আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এসবের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান মহম্মদ সেলিম।
এদিন সিপিআই(এম) নেতা বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, রামচন্দ্র ডোম, রবীন দেব, শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সইরানি, আরএসপি নেতা মিহির বাইন, ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা শিবনাথ সিনহা, এমএফবি নেতা জয়হিন্দ সিং, বলশেভিক পার্টি নেতা প্রবীর ঘোষ সহ সিপিআই(এম) নেতা অনাদি সাহু, কল্লোল মজুমদার, দীপক দাশগুপ্ত, মানবেশ চৌধুরী, দিলীপ সেন, তরুণ ব্যানার্জি প্রমুখ নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা জানান।
এদিন কলকাতা ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা সহ বিভিন্ন জেলায় শহিদ দিবস শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে।