E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ১৬ সংখ্যা / ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ / ১৬ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮

‘মরবে ইঁদুর বেচারা’?

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


‘বাদুড় বলে, ওরে ও ভাই সজারু, আজকে রাতে দেখবে একটা মজারু।’ ‘সজারু’-র সঙ্গে ‘মজারু’ যে মেলানো যায় তা প্রথম চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেছিলেন সুকুমার। নাই বা থাকুক সে শব্দের কোনো অর্থ। ঠিক যেমন ‘হাঁসজারু’ বা ‘বকচ্ছপ’। তার মানে কী এই যে এরকম কিছু আদৌ নেই? আছে তো বটেই। মানলেও আছে। না মানলেও। আর এই তত্ত্ব বুঝতে কাক্কেশ্বর কুচকুচের জটিল অঙ্ক বোঝার দরকার নেই। সাদা চোখে বেমালুম ধরা পড়ে। ‘চামচিকে’ আর ‘পেঁচা’-দের প্রবল দাপটের দিনে একটু আধটু ‘মজারু’ খুঁজতে চেষ্টা করলেই খুঁজে পাওয়া যায়। খোলা চোখে ঠাওর না হলে ভাবা প্র্যাকটিস করতে হয়।

মজারু - ১

ভোটের আগের রাত থেকেই এলাকায় এলাকায় হুমকি, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দিনভর সন্ত্রাস, বেছে বেছে বাম পোলিং এজেন্টদের বুথে বসতে না দেওয়া, বিরোধী ভোটারদের বুথে পৌঁছনোর আগেই আটকে দেওয়া, শহরজুড়ে শাসকদল আশ্রিত বাহিনীর তাণ্ডব, রিগিং, একের পর এক বুথ দখল - সেদিনের সব ছবিরই কিছু কিছু ফুটেজ একটু খুঁজলেই পাওয়া যাবে। এমনকী এই সুযোগে বেশ কয়েকটা শ্লীলতাহানি, হার ছিনতাই-এর ঘটনাও ঘটেছিল। সাসপেন্ড হওয়া পুলিশ কর্মী তারক দাস বেশ দাপটের সঙ্গেই গাঙ্গুলিবাগান এলাকায় শাসকদলের পক্ষে ভোট পরিচালনা করান। সেদিনের সবকথা লিখতে গেলে অনেক জায়গা লাগবে। ধৈর্যচ্যুতি ঘটিয়ে লাভ নেই।

ওপরের সব ঘটনাগুলোই শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৫-র। সাড়ে ৬ বছর আগে যেবার শহর কলকাতায় শেষবারের মতো পুরভোট হয়েছিল। ভোটের পরদিন ১৯ এপ্রিল ‘এইসময়’ কাগজের হেডলাইন ছিল “ ‘অবাধ’ ভোটে অবাধ সন্ত্রাস”। গণশক্তির হেডলাইন ‘মহানগরে ভোট লুট’। দেওয়া নেওয়ার হিসেব নিকেশের ভিত্তিতে বিভিন্ন কাগজ বিভিন্ন রকম হেডলাইন করেছিল। তবে কোনো কাকু জেঠুই অস্বীকার করতে পারেনি যে ওই পুরভোটে অবাধ সন্ত্রাসের সাক্ষী ছিল শহর কলকাতা। ভোট পড়েছিল ৬২.৪২ শতাংশ। কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে গিরিশ পার্ক এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন এক পুলিশ সাব ইন্সপেক্টর জগন্নাথ মণ্ডল। যদিও তৎকালীন পুলিশ কমিশনার জানিয়েছিলেন ‘ভোট শান্তিপূর্ণ’। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ‘কলকাতার ইতিহাসে এত শান্তিপূর্ণ ভোট আগে কখনও দেখিনি’। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছিলেন, ‘একচ্ছত্র রিগিং করানোর জন্য শাসকদল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুষ্কৃতীদের কলকাতায় জড়ো করেছিল। মহিলাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। যেখানেই বামপন্থীদের ভালো ফলের সম্ভাবনা ছিল সেখানেই আক্রমণ হয়েছে৷’ তৎকালীন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, ‘বিরোধীরা যদি বুথে এজেন্ট বসাতে না পারে তা হলে আমরা কী করব।’ আর রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়-এর নির্বিষ বক্তব্য, ‘ভোটে হিংসা হয়নি এটা বলা যাবে না।’

মজারু - ২

৩ অক্টোবর, ২০১৫। এটাও প্রায় ৬ বছর আগের কথা। আসলে খামখেয়ালি শাসকের খেয়ালে চলা এই রাজ্যে নির্বাচনও এখন যেহেতু শাসকের ইচ্ছেতেই হয় তাই অনেকসময় হিসেব গুলিয়ে যায়। যাক সেসব কথা। ওইদিন ১৮ জন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছিলেন বিধাননগর পুরভোটে। যে ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গেছিল শাসকদলের তিন বিধায়কের নাম। সুজিত বসু, পরেশ পাল এবং অর্জুন সিং (এখন অবশ্য তিনি বিজেপি-তে)। দিনভর অবাধ ভোট লুটের ছবি তুলতে গিয়ে রেহাই পাননি কেউই। সারাদিন গুণগান গেয়ে চলার কারণে হাউসের মাঠে নেমে কাজ করা সাংবাদিকদের রেহাই দেয়নি শাসকদলের বাহিনী। এবিপি-র সাংবাদিক অরিত্রিক ভট্টাচার্যর রক্তাক্ত মুখের ছবি এখনও অনেকেরই মনে থাকার কথা। ২৪ ঘণ্টার দেবারতি ঘোষ, বিক্রম দাস, মিন্টু বসাক - এরকম আরও অনেক নাম আছে। পুলিশের সামনেই মহিলা সাংবাদিককে দেওয়া হয়েছিল ধর্ষণের হুমকিও। অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি করেন ক্যালকাটা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক অনিন্দ্য সেনগুপ্ত। নিন্দা করা হয় দিল্লি ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টস-এর তরফেও।

ভোট ছিল শনিবার। তার আগের রাত শুক্রবার থেকেই বিধাননগর জুড়ে শুরু হয়ে গেছিল তাণ্ডব। বিধাননগরের ৪১টি ওয়ার্ডেই শাসকদলের মদতে চলে অবাধ সন্ত্রাস। নির্বাচনের দিন ভোর হবার আগেই একাধিক বুথ ঘিরে ফেলেছিল তৃণমূলী বাহিনী। কিছু কিছু জায়গায় ভোট শুরু হয়ে যায় ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকেই। মাস কয়েক আগের কলকাতা পুরসভা ভোটের অনুকরণেই ভোটাররা পৌঁছতে পারেননি বুথ পর্যন্ত। যারা তাও সাহস করে ভোট দিতে বেরিয়েছিলেন অনেক জায়গাতেই তাঁরা আক্রমণের শিকার হন। অভিযোগ ছিল প্রায় ১৫ হাজার বহিরাগত সারাদিন দাপিয়ে বেড়িয়েছে বিধাননগর জুড়ে। রাজারহাট নিউটাউন পুরসভায় অধিকাংশ জায়গায় ভোট শেষ হয়ে যায় আটটা সাড়ে আটটার মধ্যেই। যে ভোট প্রসঙ্গে কবি শঙ্খ ঘোষ জানিয়েছিলেন, “নির্লজ্জ বর্বরতা তার শেষ সীমা ছাড়িয়েছে।” সমাজতত্ত্ববিদ আন্দ্রে বেতেই বলেন, “এ ভাবে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করা যায় না।”সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া ছিল, “অত্যন্ত লজ্জা ও বেদনার ঘটনা। সাংবাদিকদের প্রতি আমার পূর্ণ সহমর্মিতা আছে।”

মজারু - ৩

‘হিংসার পূর্ণগ্রাসে পঞ্চায়েত ভোট, বাংলা জুড়ে নিহত অন্তত ১৬’। ‘মৃত্যুর মিছিলে ভোট লুট’। ‘নিহত ১৯’। প্রথমটা আনন্দবাজার পত্রিকা। শেষের দুটো গণশক্তি। এটা ১৪ মে-র। ২০১৮। রাজ্যের শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচন। যে নির্বাচনে ৩৪শতাংশ আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। কোনো বিরোধী প্রার্থী ছিল না। ভোট হয়েছিল মাত্র ৬৬ শতাংশ আসনে। আনন্দবাজারে ১৫-মে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ‘এমন কোনও জেলা নেই, যেখান থেকে হিংসার খবর এল না এ দিন। গুলি, বোমা, বিরোধীদের উপরে হামলা, বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট, বিরোধী এজেন্টদের বার করে দেওয়া, প্রিসাইডিং অফিসারের দিকে বন্দুক তাক করা, ব্যালট ছিঁড়ে দেওয়া, ব্যালট বাক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া এবং একের পর এক খুন - গোটা দিন কাটল হিংসার এমন অবাধ উৎসবেই।’ যে ভোটের পর তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন - ‘কোথাও কোনও বড়ো গোলমালের খবরই নেই, ছোটোখাটো অশান্তি হয়েছে, সে সবের দায়ও বিরোধীদের।’ আর সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছিলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ আজ যে বর্বরতা দেখছে, তার নিন্দার জন্য কোনও কঠোর শব্দই যথেষ্ট নয়।… যে পরিমাণ হিংসা আজ দেখা গেছে, তাতে স্পষ্ট যে, তৃণমূল নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের অধীনে কোনও ভাবেই অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব নয়।’’ এই নির্বাচনের আগের রাতেই কাকদ্বীপে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল সিপিআই(এম) কর্মী দম্পতিকে।

২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২৭ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। মনোনয়ন জমা দেবার পরেও জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয় আরও ৭ শতাংশ আসনে। জেলা পরিষদের ৮২৫ আসনের মধ্যে ২০৩ আসনে, অর্থাৎ প্রায় ২৫ শতাংশ আসনে কোনো বিরোধী প্রার্থী ছিলনা। পঞ্চায়েত সমিতির ৯,২১৭ আসনের মধ্যে ৩,০৫৯ আসনে কোনো বিরোধী প্রার্থী ছিলনা। আর গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪৮,৬৫০ আসনের মধ্যে ১৬,৮১৪ আসনে ছিলনা কোনো বিরোধী প্রার্থী।

বিভিন্ন জেলায় মনোনয়ন জমা দেবার জন্য বিডিও অফিসের ধারে কাছে যেতে দেওয়া হয়নি বাম প্রার্থীদের। ২৩ এপ্রিল ২০১৮, আরামবাগে সিপিআই(এম) অফিসের সামনে জেলা পরিষদের এক মহিলা প্রার্থী এবং এক মহিলা নেত্রীর শাড়ি ধরে টানাটানি করে তৃণমূলী দুষ্কৃতীরা। এ সবের নেতৃত্ব দেন গোঘাটের জয়কৃষ্ণপুরের দাপুটে তৃণমূল নেতা সমর কোলে, কুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা, নকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামলী ঘোষ, অপর এক নেতা প্রদীপ রায়, বালিবেলার নেতা অরুণাংশু চট্টোপাধ্যায়, রঘুবাটীর শ্রীকান্ত চট্টোপাধ্যায়, মান্দারণ এলাকার নেতা তাসির আলি ও অন্যরা। সিপিআই(এম)-র এফআইআর-এ এই ছ’জনের নামই ছিল৷। এঁদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি। ‘টোটাল অ্যানার্কি গোয়িং ইন দ্য স্টেট’। এই ৭ এপ্রিলেই কলকাতার শিশির মঞ্চে রাজ্যের নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে এক বৈঠকে একথা জানিয়েছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিং। সেবার শুধুমাত্র মনোনয়ন পর্বেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত, রক্তাক্ত হয়েছিলেন একশোর বেশি বাম প্রার্থী, কর্মী, সংগঠক। নির্বাচন কমিশন, হাইকোর্ট - কারোর কোনো নির্দেশই মানা হয়নি সেবার।

এর আগে ২০১৩-র পঞ্চায়েত নির্বাচনেও প্রায় ১১ শতাংশ আসন বিরোধীশূন্য ছিল। সেবার ৮২৫ জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ১৩০ আসন বিরোধীশূন্য ছিল। পঞ্চায়েত সমিতির ৯,২১৭ আসনের মধ্যে ২,৩০০ আসন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮,৬৫০ আসনের মধ্যে ১৩,৫০০ আসন বিরোধী শূন্য ছিল।

মজারু - ৪

উত্তরপ্রদেশে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে এই বছরের জুন-জুলাই মাসে। রাজ্যের ৩০৫০ পঞ্চায়েতের মধ্যে সমাজবাদী পার্টি পায় ৮৪২টি। বিজেপি পায় ৬০৩টি। বিএসপি পায় ৩৪২টি, কংগ্রেস ৬৯ ও অন্য ছোটো দলগুলি পায় ১০৬টিতে জয়। ১০৮৮টি আসনে জয়ী হয় নির্দল। অথচ দেখা যায় অধিকাংশ জেলা পঞ্চায়েত সভাপতির পদ দখল করে বিজেপি। ৭৫টি জেলার মধ্যে ৬৭টিতে জয়ী বিজেপি। সমাজবাদী পার্টির ৫। যে ঘটনা প্রসঙ্গে সমাজবাদী পার্টির অভিযোগ - জেলা প্রশাসন জোর করে সমাজবাদী প্রার্থী ও অন্যান্য বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা করতেই দেয়নি। শুধু তাই নয়, সপা নেতাদের হেনস্তার পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলাও দায়ের করা হয়েছে। মূল অভিযোগ বিজেপি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে। ১০ জুলাই ছিল ব্লক প্রমুখ নির্বাচন। যার মনোনয়ন ছিল ৮ জুলাই। যেদিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ আসে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দেবার। গুলি চলে, মারধর হয়, রাস্তা অবরোধ হয়। বিরোধীদের আটকাতে যা যা করা যায় সব হয় এবং পশ্চিমবঙ্গীয় স্টাইলে এখানেও বিরোধী সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী মহিলাদের শাড়ি টেনে খুলে দেয় বিজেপি বাহিনী।

মজারু - ৫

গত ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরায় পুরসভার নির্বাচন ছিল। ২৬ নভেম্বর ত্রিপুরার কাগজ ‘ডেইলি দেশের কথা’র হেডলাইন ‘অবাধ ভোট লুট’। ভোটের আগেই আগরতলা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (এএমসি) এবং অন্যান্য ১৯টি শহুরে পুর ওয়ার্ডের ৩৩৪টি আসনের মধ্যে ১১২টি আসন বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নেয় বিজেপি। পশ্চিম ত্রিপুরার জিরানিয়া, রানির বাজার, মোহনপুর, বিশালগড়ের সাতটি নাগরিক সংস্থা এবং দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তির বাজার ও উদয়পুর এবং উত্তর ত্রিপুরার কমলপুরে ভোটের আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায় বিজেপি। বিরোধীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয় - ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্ব এবং তাদের গুন্ডাদের সহিংস আচরণ, হুমকি এবং চাপের কারণে তাদের অনেক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বা জমা দেওয়ার পর প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।

নির্বাচনের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে ভোটারদের নিরাপত্তা, ভোটদানের নিশ্চয়তা চেয়ে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন আগরতলা পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই(এম) প্রার্থী ফুলন ভট্টাচার্য। ভোটের দিন কয়েক আগে থেকেই ত্রিপুরাতে শুরু হয় অবাধ সন্ত্রাস। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানো। বিলোনিয়ায় অবাধ রিগিং ও বুথ দখল করে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার অভিযোগে এদিন সিপিআই(এম) কর্মী-সমর্থকরা এসডিএম অফিস ঘেরাও করেন। আগরতলা জুড়ে ভোট লুঠের অভিযোগ এনেছে সিপিআই(এম)। পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিজেপি’র পক্ষ থেকে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। বহু বুথেই ভোটারদের বলা হয় ভোট হয়ে গেছে। ফিরে যান। ত্রিপুরার পুরভোট সম্পর্কে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মানিক সরকার জানিয়েছেন - ‘ভোটের নামে চূড়ান্ত প্রহসন হয়েছে। তাই এই নিয়ে কোনো মতামত দেবার কিছু নেই। ত্রিপুরা ভারতের একটি অন্যতম অঙ্গরাজ্য কিনা তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষ এই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন। গত ৪০-৪২ মাস যাবত এখানে ফ্যাসিস্টসুলভ সন্ত্রাস চলছে। অবিরাম চলছে। এই সরকার আসার পর থেকে লোকসভা নির্বাচন সহ সমস্ত নির্বাচন চূড়ান্ত প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। যার সর্বশেষ নিদর্শন পুর নির্বাচন।’

শেষের কথা

সুকুমার দিয়ে শুরু করেছিলাম। সুকুমারেই শেষ করি। তিনি ব্যাকরণ মানি না বলেই ক্ষান্ত দিলেও ব্যাকরণ সবেতেই থাকে। ‘খেলা হবে’র নামে যে খেলা হচ্ছে তাও ব্যাকরণ মেনেই হচ্ছে। হাঁস এবং সজারু মিলে ‘হাঁসজারু’ গঠনের গোপন ব্যাকরণ প্রকাশ পেতে যত দেরি হবে ততই ক্ষতি। সুকুমারের ভাষাতেই বলা যায় - ‘জেনে রাখুন প্যাঁচা এবং প্যাঁচানি,/ভাঙলে সে ঘুম শুনে তাদের চ্যাঁচানি,/খ্যাংরা-খোঁচা করব তাদের খুঁচিয়ে -’ এই কথাটা বলব কবে চেঁচিয়ে!