E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৭ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ৩ জুলাই ২০২০ / ১৮ আষাঢ় ১৪২৭

কমরেড জলি কলের জীবনাবসান


নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের এক সময়ের বিশিষ্ট নেতা কমরেড জলিমোহন কলের জীবনাবসান হয়েছে সোমবার, ২৯ জুন সকালে। শতবর্ষ বয়সি কমরেড জলিমোহন কল ভারতের অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন এবং অবিভক্ত পার্টির কলকাতা জেলা কমিটির শেষ সম্পাদক ছিলেন। তবে কমিউনিস্ট পার্টি বিভাজনের পরে সিপিআই’র সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সক্রিয় রাজনীতি থেকে তিনি সরে গিয়েছিলেন। ২৯শে জুন, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিংহোমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এই বছরেই তিনি শতবর্ষে পদার্পণ করেছিলেন।

তাঁর মৃত্যুতে বামপন্থী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এবং সিপিআই(এম)’র পলিট ব্যুরো সদস্য বিমান বসু গভীর শোকপ্রকাশ করে বলেছেন, খুব অল্পবয়স থেকেই ওঁর সঙ্গে আলাপ পরিচয় ছিল। লকডাউনে উনি অসুস্থ থাকাকালীনও ফোনে কথা হয়েছে, ওঁকে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না। সিপিআই’র সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা বলেছেন, যে সকল কমিউনিস্ট অগ্রণীর অবদানে এদেশে গোড়ার দিনগুলিতে পার্টি ও আন্দোলন বেড়ে উঠেছে কমরেড জলি কল ছিলেন তাঁদের একজন। তাঁর মৃত্যুতে শুধু আমাদের পার্টিই নয় কমিউনিস্ট ও প্রগতিশীল আন্দোলনেরই ক্ষতি হলো। গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। সিপিআই’র রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি শোক জানিয়ে বলেছেন, কমরেড জলি কল, মণিকুন্তলা সেনদের মতো প্রজন্মের আন্দোলন ও ভূমিকা আমরা ভুলতে পারি না। সিপিআই’র প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদারও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

কমরেড জলি কলের স্ত্রী মহিলা আন্দোলনের নেত্রী মণিকুন্তলা সেন অনেকদিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন। অবিভক্ত পার্টিতে কমরেড জলি কল কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক ছিলেন ১৯৫৩ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত। দীর্ঘ এই শতায়ু জীবনে তিনি দেশ-বিদেশের এবং কমিউনিস্ট আন্দোলনের নানা ঘাত প্রতিঘাত দেখেছেন।

কমরেড জলিমোহন কলের জন্ম ১৯২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর। ১৯৩০-এর দশকে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়ার সময়ই তিনি কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হন। ১৯৪১ সালে পার্টির সদস্যপদ প্রাপ্তি। ১৯৫৩ থেকে ৬২ পর্যন্ত পার্টির কলকাতা কমিটির সম্পাদক। ১৯৫৮ সালে তিনি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু পার্টি ভাগের পর তিনি আর সক্রিয় রাজনীতিতে থাকেননি। জীবনের বহু ঘাত প্রতিঘাতের কথা তিনি তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘ইন সার্চ অব এ বেটার ওয়ার্ল্ড’ বইতে লিখে গিয়েছেন। জলি কল ‘ক্যাপিটাল’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।

তাঁর মরদেহ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বার্থে দান করা হয়েছে।