৫৭ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ৩ জুলাই ২০২০ / ১৮ আষাঢ় ১৪২৭
দুঃসময়ের চালচিত্র - ১
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
মরা হাতি লাখ টাকা। চিরন্তন প্রবাদ। কীভাবে বা কেন মরা হাতির দাম লাখ টাকা হয় ঠিক জানিনা। তবে মরা হাতি যে লাখ প্রোপাগান্ডার জন্ম দিতে পারে তা তো আমরা মে-র শেষ, জুনের শুরুতেই দেখে নিয়েছি। হাতি নিয়ে আদৌ কোনো হাতাহাতির দরকার ছিল বা ছিলনা সেটা প্রশ্ন নয়। ঘটনাটা একটু পুরনোও হয়ে গেছে। তবুও ‘হিং টিং ছট প্রশ্ন এসব মাথার মধ্যে কামড়ায়’। আর এক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, হাতি নিয়ে মন্ত্রী, সান্ত্রী মায় বাহিনীর এই হাতাহাতি, মাতামাতি কেন? বিষয় কি কম পড়িয়াছে? নাকি বড়ো বড়ো বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্যই ট্যুইটারে হাতির মৃত্যু নিয়ে ট্রেন্ডিং করানো হয়েছিলো। তারপর তো ট্যুইটার আবার ফিরে গেছে সেই ‘তালিবানি জামাত’, ‘লোকাস্ট অ্যাটাক’, ‘রিপাবলিক ডিফিটস সোনিয়া’ কিংবা ‘চীন কে কাল মোদী’ট্রেন্ডিং-এ। অথচ লকডাউনের দীর্ঘ তিন মাসের বেশি সময়ে একদিনও ট্যুইটারে পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে ট্রেন্ডিং হয়েছে কি? যতদূর মনে পড়ে – না। হয়নি। মাত্র চার ঘণ্টার নোটিশে অপরিকল্পিত লকডাউনের জেরে রাজ্যে রাজ্যে আটকে যাওয়া শ্রমিকদের নিয়ে, তাঁদের হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা নিয়ে, পথেই প্রায় দু’শোর বেশি শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে ভাবনার জন্য খুব বেশি সময় হয়তো পোড়া দেশের নেই।
একবারের জন্যেও ভাববেন না এভাবে হাতি হত্যাকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছি। হত্যা হত্যাই।মহাভারতের গল্পে ভীম যখন অশ্বত্থামা নামের হাতিকে মেরে ফেলেছিল, সেটাও হত্যাই ছিল। হাতির হত্যা হলেও হত্যা, আফরাজুল, পেহলুকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে মারা হলেও সেটা হত্যা। এইতো গত মাসখানেকের মধ্যে আসামে বেশ কয়েকটা মব লিঞ্চিং হয়ে গেছে। কোনো আলোচনা হয়েছে কি? হয়নি। দু-একখান ন্যাশনাল মিডিয়াতে কয়েক লাইন বরাদ্দ হয়েছে। ব্যাস। ওটুকুই। এসব ঘটনায় মহাভারতের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত বেশিরভাগ মানুষের মুখ থেকে অস্ফূটে ‘ইতি গজ’ ছাড়া আর কিছু বেরোয়নি।
আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সয়ে গেছে, যাচ্ছে, সইয়ে দেওয়া হচ্ছে অনেককিছুই। গুলিয়েও যাচ্ছে কিংবা গুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে। তাই হাতি নিয়ে যখন সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড়, কেরালার শিক্ষিতের হার নিয়ে ময়নাতদন্ত, হাতির হত্যা নিয়ে ঘৃণ্য, বিভাজনমূলক প্রোপাগান্ডা, হাতি হত্যার ঘটনায় কেরালার বাম-গণতান্ত্রিক সরকারের দৃষ্টান্তমূলক অবস্থানের কথা বেমালুম চেপে যাবার চেষ্টা, তখনই দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেছে আলু, পেঁয়াজ, ডাল, তেল সবকিছুই। আপনি হাতির মৃত্যু নিয়ে ভাববেন, নাকি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে, সেটা তো আপনাকেই ঠিক করতে হবে। করোনা মোকাবিলায় কেরালার উল্লেখযোগ্য সাফল্য তখন পেছনের সারিতে।
এই সময়েই,এক আরটিআই-এর উত্তরে গত ২৪ এপ্রিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে ৫০ জন ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির ৬৮,৬০৭ কোটি টাকা ঋণ মকুব করে দেওয়া হয়েছে। সে তালিকা এখন প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। যার প্রথম স্থানে আছেন গীতাঞ্জলি জেমস্ লিমিটেডের কর্ণধার মেহুল চোকসি, ঋণের পরিমাণ ৫,৪৯২ কোটি টাকা। চোকসির দুই সহযোগী কোম্পানি গিলি ইন্ডিয়া এবং নক্ষত্র ব্র্যান্ডস-এর ২,৫৫৬ কোটি টাকা।তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আরইআই অ্যাগ্রো লিমিটেড, যার ঋণের পরিমাণ ৪,৩১৪ কোটি টাকা। ডিরেক্টর সন্দীপ ও সঞ্জয় ঝুনঝুনওয়ালা। ৪,০৭৬ কোটি ঋণ নিয়ে তালিকায় তৃতীয় স্থানে যতীন মেহতার উইনসোম হীরা এবং জুয়েলারি কোম্পানি। রোটোম্যাক গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেডের ঋণের পরিমাণ ২,৮৫০ কোটি টাকা।পাঞ্জাবের কুদোস চেমি(২৩২৬ কোটি), রামদেব ও বালকৃষ্ণের রুচি সোয়া ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড (২,২১২ কোটি), গোয়ালিয়রের জুম ডেভেলপার্স প্রাইভেট লিমিটেড (২,০১২ কোটি টাকা)। আপনি করোনা আবহে যখন কাদের জন্য করোনা সংক্রমণ হলো ভেবে মাথা কপাল চাপড়াচ্ছেন, তখনই তো আপনার হুঁশ ফেরার আগেই এরকম কত কিছু হয়েছে।
দেশে পাঁচ দফার লকডাউন আর দু’দফার আনলক পর্বে মানুষ অনেক কিছুই দেখেছেন। ২৫ মার্চ থেকে যে অপরিকল্পিত লকডাউনের শুরু, দফায় দফায় বাড়িয়ে তা শেষ হয়েছে ৩০ জুন। প্রথম দফায় ২১ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১৯ দিন, তৃতীয় দফায় ১৪ দিন, চতুর্থ দফায় ১৪ দিন এবং পঞ্চম দফায় ৩০ দিন। মোট ৯৮ দিন। এরমধ্যেই ১ জুন থেকে শুরু হয়েছিলো আনলক ১ এবং ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে আনলক ২। ২৪ মার্চ রাত ৮টায় যেদিন চার ঘণ্টার নোটিশে লকডাউন শুরু হয়েছিল সেদিন দেশে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৫৬৪। ১ জুলাই সকালের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৫,৮৫,৪৯৩। ১ জুন এই সংখ্যা ছিলো ৩,৭৬,৩০৫। অর্থাৎ ১ মাসে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েছে ২,০৯,১৮৮।
লকডাউন সফল বা ব্যর্থ তা বলতে পারবেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এই সময়েই যেমন দেশে প্রায় ১৪ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা দুর্দশায় পড়েছেন, দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, ঠিক তেমনই এই সময়েই আমরা শুনেছি আত্মনির্ভরতার বাণী। আত্মনির্ভরতার প্রথম ধাপ হিসেবে দেশের ৪১টি কয়লা ব্লক নীলামে তোলা দেখেছি। রাজ্যসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দল ভাঙা, ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজের কথা শুনেছি। বারকয়েক প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, ‘মন কী বাত’ শুনেছি। ভারত চীন সীমান্ত সংঘর্ষে ২০ জন সেনা জওয়ানের মৃত্যুর কথা, ১০ সেনা জওয়ানের আটক হওয়া ও মুক্তির কথা, ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার কথাও শুনেছি। কিন্তু শোনা যায়নি, বাম সহ বিরোধীদের দাবি মেনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের হাতে টাকা দেবার কথা। গত ৩০ জুন বিহারের নির্বাচন মাথায় রেখে ‘ছট পুজোর’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ৮০ কোটি মানুষকে আগামী কয়েক মাস ৫কেজি চাল ও ১ কেজি ডাল দেবার ঘোষণা করলেও বরাদ্দ কেন বাড়ানো হয়নি সে প্রশ্ন সীতারাম ইয়েচুরি ছাড়া এখনও কেউ তোলেননি। এক ট্যুইট বার্তায় তিনি জানিয়েছেন – প্রতি মাসে ৪৩ লাখ টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ হয় ফুড সিকিউরিটি অ্যাক্ট অনুসারে। যদিও এপ্রিল মাসে দেওয়া হয়েছে ২৬ লাখ টন এবং মে মাসে ২৯ লাখ টন। একে প্যাকেজের প্রহসন নাকি প্রহসনের প্যাকেজ কোন্টা বলা হবে তা পরে ভাবা যাবে। তবে সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য অনুসারে - কী দারুণ প্যাকেজ! মানুষের নিজের টাকা, প্যাকেজ করে তাদেরই ফেরত দেওয়া হচ্ছে। মানুষের নিজের সঞ্চয় এবং আয়কর রিফান্ড দেওয়া কীভাবে উদ্দীপক হতে পারে?
এবার আসা যাক আত্মনির্ভরতার প্রথম ধাপ কয়লার ব্লক নীলামে। যে ৪১ টা কয়লা ব্লক বেসরকারি সংস্থার কাছে নীলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গত ১৮ জুন, সেই ৪১টা কয়লা ব্লকের মধ্যে ১১টা মধ্যপ্রদেশে, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড় ও ওডিশায় ৯টা করে এবং মহারাষ্ট্রে ৩টে। যার ৪৯ শতাংশ ছড়িয়ে আছে ঘন জঙ্গলে ঘেরা ‘নো গো জোন’ এর মধ্যে। প্রায় ৬ লক্ষ হেক্টর। এরমধ্যে আছে ছত্তিশগড়ের হাসদেও আরান্ড ফরেস্ট (১,৭০,০০০ হেক্টর)। যে কোল ব্লকে খনন শুরু হলে একদিকে যেমন জঙ্গল কাটা পড়বে অবাধে, তেমনই বাস্তুচ্যুত হতে হবে কমপক্ষে ৩০ হাজার স্থানীয় মানুষকে।একইভাবে ঝাড়খণ্ডের চাকলা ব্লকে প্রায় ৫৫ শতাংশ ঘন জঙ্গল। ছোড়িটাড় তিলাইয়াতে ৫০ শতাংশ জঙ্গল এবং সেরেগারাতে ৪০ শতাংশ জঙ্গল। মধ্যপ্রদেশের গোটিটোরিয়া কোল ব্লকের প্রায় ৮০ শতাংশ জঙ্গল। দুঃখের বিষয়, এক্ষেত্রে জীব বৈচিত্র্য নষ্ট, জঙ্গল ধ্বংস, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট, স্থানীয় অধিবাসীদের বাস্তুচ্যুতির প্রতিবাদেএখনো পর্যন্ত কোনো জোরালো ট্যুইটার ট্রেন্ডিং নজরে পড়েনি।
এতক্ষণ তো অনেক কথা শুনলেন। এবার একটু হাতির কথা না বললে হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি রেগে যাবে। তাই একটু হাতিকথা। হাতিসংখ্যানও বলতে পারেন।দেশে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকারি ভাবে হাতিশুমারি হয়। শেষবার হাতির গুণতি হয়েছে ২০১৭ সালে। যে পরিসংখ্যান অনুসারে ভারতে হাতির সংখ্যা আনুমানিক ২৭,৩১২। দেশের ২৩ টি রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক হাতি আছে কর্ণাটকে। ২০০৭ সালে দেশে হাতির সংখ্যা ছিলো আনুমানিক ২৭,৬৭০ এবং ২০১২ সালে ছিলো ৩০,০০০।
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে ২০০৯-১০ থেকে ২০১৬-১৭র মধ্যে ৬৫৫টি হাতিকে হত্যা করা হয়েছে। যার মধ্যে ৪৪টি হাতিকে বিষ খাইয়ে মারা হয়েছে, চোরাশিকারের বলি হয়েছে ১০১টি হাতি, ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছে ১২০টি হাতি এবং তড়িদাহত করে মারা হয়েছে ৩৯০ টি হাতিকে। অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো এই সংখ্যা চূড়ান্ত নয়। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ওই পরিসংখ্যান অনুসারেই ২০০৯-১০ সালে ৮৯টি হাতিকে মারা হয়, ২০১০-১১ সালে ১০৬টি হাতিকে মারা হয়, ২০১২-১৩তে ১০৫টি হাতিকে মারা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে প্রতি বছর মানুষ গড়ে ৮০টি হাতিকে হত্যা করে।
গত বছরের ২৮ জুন লোকসভায় কেরালার কংগ্রেস সাংসদ আন্টো আন্টোনিওর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে কেন্দ্রীয় পরিবেশ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানান হাতির আক্রমণে গত বছর ৪৯৪জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, শেষ পাঁচ বছরে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ২,৩০০ জনের। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত মৃত্যু সংখ্যা ২,৩৯৮। যার মধ্যে শেষ পাঁচ বছরে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছিলো পশ্চিমবঙ্গে - ৪০৩ টি হাতির।
আসলে বিষয়টা হাতি নয়। হাতি না হয়ে শুয়োর, ছাগল, ভেড়া হলেও প্রোপাগান্ডা তৈরি করা যায়। গোরু হলে তো কথাই নেই। এমনকি পঙ্গপাল হলেও। আর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে সেই প্রোপাগান্ডা মানুষের মনে গেঁথেও দেওয়া যায়। দেশে করোনাজনিত পরিস্থিতিতে যখন প্রায় সবকিছু স্তব্ধ তখনও তো প্রোপাগান্ডা থেমে থাকেনি। ট্যুইটার যাঁরা ফলো করেন তাঁরা দেখেছেন প্রতিদিন মূল লক্ষ্য এক রেখে বিষয় পালটে পালটে প্রোপাগান্ডার বহুরূপী ভেলকি। সেখানে কখনো তাবলিগি জামাত, কখনো পাকিস্তান, কখনো চীন। একসময় তো প্রতিদিন বিভিন্ন রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বলার সময় তাঁদের কতজনের তাবলিগি যোগ আছে তা জানানো হচ্ছিলো। তারপর চেষ্টা হলো অভিবাসী শ্রমিকদের জন্যই নাকি করোনা সংক্রমণ বাড়ছে নামক গল্প ছড়িয়ে দেবার! কিন্তু এই মানুষগুলোকে করোনা সংক্রমিত করলো কারা? দীর্ঘ দু’মাস ফুটবলের মতো একবার পুলিশ একবার প্রশাসনের কাছে বাড়ি ফেরার জন্য, একটু খাবারের জন্য মাথা কুটে মরতে বাধ্য করলো কারা? অশ্বত্থামাদের চিরকালই ভীমরা হত্যা করে। আর যুধিষ্ঠির নামক ব্যক্তিরা ‘ইতি গজ’ নামক মিথ্যে বলে চিরকালীন সত্যবাদী হয়ে থেকে যান।
একটু রবীন্দ্রনাথের শরণ নিয়ে শেষ করি। আজ ১৮ আষাঢ়, ১৪২৭। ১৮ আষাঢ়, ১৩২৬ –ঠিক ১০১ বছর আগে তিনি লিখেছিলেন – “…একদল লোক গ্রহিত উপায়ে বিদ্বেষবুদ্ধিকে তৃপ্তিদান করাকেই কর্তব্য বলে মনে করে, আর-এক দল লোক চাটুকারবৃত্তি বা চরবৃত্তির দ্বারা যেমন করে হোক অপমানের অন্ন খুঁটে খাবার জন্যে রাষ্ট্রীয় আবর্জনাকুণ্ডের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়। এমন অবস্থায় বড়ো করে দৃষ্টি করা বা বড়ো করে সৃষ্টি করা সম্ভবপর হয় না; মানুষ অন্তরে বাহিরে অত্যন্ত ছোটো হয়ে যায়, নিজের প্রতি শ্রদ্ধা হারায়।”