৫৭ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ৩ জুলাই ২০২০ / ১৮ আষাঢ় ১৪২৭
অবরোধের অন্তরালে
অমিতাভ রায়
দেশ অবরুদ্ধ। জনজীবন স্তব্ধ। অজানা অণুজীবের আকস্মিক আক্রমণে সমাজসভ্যতা সঙ্কটাপন্ন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নানারকমের নিয়মনীতি প্রয়োগ করা হচ্ছে। নিত্যনতুন নির্দেশনায় কমা তো দূরের কথা প্রায় প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে সংক্রমণ। দেশের মানুষ এখন নিজেকে নিয়েই ব্যতিব্যস্ত। অন্ন চিন্তা ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে কারো নজর নেই। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও রাষ্ট্র কিন্তু লক্ষ্যে অবিচল। রাষ্ট্রীয় সংস্থার বিরাষ্ট্রীয়করণ থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক সম্পদের লুণ্ঠন সমান গতিতেই হয়ে চলেছে। এই সর্বনাশী ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সংযোজন ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ। অসমের পূর্বপ্রান্তের দুই জেলা ডিব্রুগড় ও তিনসুকিয়ার ১১১ বর্গ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে আছে এই সংরক্ষিত বনাঞ্চল। কাছাকাছি রয়েছে দেশের প্রাচীনতম প্রাকৃতিক পেট্রোলিয়াম তেলের কুয়ো ডিগবয়। একটু দূরেই দুলিয়াজান। পেট্রোলিয়াম পরিশোধনের কারখানা। আর রয়েছে দেশের একমাত্র ব্রাউন কোল (বিশেষ ধরনের কয়লা যা কিছু নির্দিষ্ট শিল্পের একান্ত অপরিহার্য) খনি মার্ঘেরিটা। ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রধান বাসিন্দা হাতি। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য রকমের পশু-পাখি। এমনকি লুপ্তপ্রায় বেশ কিছু প্রজাতির প্রাণীর এখানে বসবাস।
ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। ডিব্রুগড় থেকে সড়কপথে মাত্র ৮০ কিলোমিটার। সংরক্ষণের ভেতরে রয়েছে সাজানোগোছানো অতিথিনিবাস। সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এই শান্ত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পর্যটকের পদচারণায় কোলাহল মুখর। এ বছর অবিশ্যি করোনা অণুজীবের দাপটে মার্চের প্রথম কয়েকদিনের মধ্যেই এই সংরক্ষণ জনশূন্য। তার কিছুদিনের মধ্যেই অবরুদ্ধ হয়ে গেল সারা দেশের জনজীবন। আর সেই অবসরে ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের সর্বনাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেল। জাতীয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পর্ষদের স্থায়ী কমিটি এপ্রিল মাসে সুপারিশ করেছে যে, ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রায় একশো হেক্টর জমি নর্থ ইস্টার্ন কোলফিল্ডসের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের সহযোগী নর্থ ইস্টার্ন কোলফিল্ডস অসম রাজ্যে কাজ করে। মার্ঘেরিটার ব্রাউন কোল খনিও নর্থ ইস্টার্ন কোলফিল্ডসের নিয়ন্ত্রণাধীন। তবে যে পদ্ধতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা খনির বিরাষ্ট্রীয়করণ শুরু হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে নর্থ ইস্টার্ন কোলফিল্ডসের ঐতিহ্যবাহী মার্ঘেরিটা বা জন্ম নিতে চলা ডেহিং-পাতকাই কয়লা খনি কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলা কঠিন। অসমের বর্তমান সরকার নিশ্চয়ই ঝাড়খণ্ড এবং ছত্রিশগড় রাজ্য সরকারের মতো কয়লা খনির বিরাষ্ট্রীয়করণের বিরোধিতা করবে না। ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রায় একশো হেক্টর জমিতে খোলামুখ (ওপেন কাস্ট) কয়লা খনি তৈরি করে নিয়মিত কয়লা তোলার বন্দোবস্ত করা হবে। কয়লা খনি চালু হলে এই একশো হেক্টরের গাছপালা আর থাকবে না। এখানকার পশু-পাখি অন্যত্র চলে যাবে। পরিবেশ পরিবর্তনের প্রভাবে হারিয়ে যেতে পারে বেশ কিছু প্রজাতি। কয়লা খনির কাজকর্ম অব্যাহত রাখতে এই এলাকায় গড়ে উঠবে ভারি ট্রাক ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি সাজসরঞ্জাম বহনকারী মজবুত পাকা সড়ক। গড়ে উঠবে দপ্তর আবাসন। বাড়বে জনসংখ্যা। যানবাহন চলাচল বেড়ে যাবে। সবমিলিয়ে কয়লা খনির জন্য নির্ধারিত প্রায় একশো হেক্টর জমির চরিত্র বদলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পালটিয়ে যাবে পারিপার্শ্বিক এলাকার পরিবেশ। দূষণের দাপটে উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্য ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের চিরায়ত চরিত্রের আমূল পরিবর্তন ঘটবে। ভারত সরকারের পরিবেশমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন জাতীয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পর্ষদের স্থায়ী কমিটির অধ্যক্ষ ও অন্যান্য সদস্যরা এইসব বিষয়ে অবশ্যই অবহিত। পরিবেশমন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী নিজেই স্থায়ী কমিটির অধ্যক্ষ। অরণ্য সংরক্ষণ বা ফরেস্ট কনজারভেশন আইন (১৯৮০) মেনে চলতে পরিবেশমন্ত্রক বাধ্য। এই আইনের আওতা থেকে কোনো প্রকল্পের জন্য সামান্যতম ছাড় পাওয়ার দরকার হলে সংসদে সংশোধনী প্রস্তাব পেশ করতে হয়। কিন্তু বর্তমান সরকার আইনকানুন, সংসদ কোনোকিছুই রীতি মেনে চলতে অভ্যস্ত নয়। ফলে জাতীয় অবরোধের সময় অনলাইনে স্থায়ী কমিটির বৈঠক তড়িঘড়ি সেরে নিয়ে জমি হস্তান্তর অথবা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া হলো। প্রাণীবিশেষজ্ঞ, উদ্ভিদবিজ্ঞানী, পরিবেশ বিভাগসহ বিভিন্ন মন্ত্রকের যে সমস্ত আধিকারিককে নিয়ে স্থায়ী কমিটি গঠিত তাঁদের মতামত অনলাইনের আলোচনায় কতটুকু গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়েছে তার কোনো হদিশ নেই। স্থায়ী কমিটিতে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি থাকেন। এই ক্ষেত্রে অসমের প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় আইন তো বটেই এমনকি অসমের রাজ্য আইন (অসম অরণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮১)-বিরোধী এই প্রস্তাবে কী করে সায় দিলেন তা বলা মুশকিল। অসম সরকারের অবিশ্যি এখন নিজের রাজ্য নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। প্রতিবেশী রাজ্য মণিপুরে দলীয় সরকারের অস্তিত্ব রক্ষার কাজ এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে নিজস্ব বিমানে প্রতিদিন গুয়াহাটি ইমফল যাতায়াত করতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে। এহেন মহান দায়িত্ব পালনের ব্যস্ততায় একটা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে ভাবনার অবকাশ কোথায়! ফলে অবরোধের অন্তরালে উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্য ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের মৃত্যুঘণ্টা নির্বিঘ্নে এবং নির্দ্বিধায় বাজিয়ে দেওয়া হলো। ভবিষ্যতে যদি কখনও এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ময়নাতদন্ত হয় এবং সুপারিশকে বিধিসম্মত হয়নি বলে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাহলে কি ফিরিয়ে আনা যাবে যুগ যুগ ধরে প্রকৃতির নিজের খেয়ালে গড়ে ওঠা ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ?
দেশের প্রান্তিক এলাকার খোঁজখবর এমনিতেই কম পাওয়া যায়। হঠাৎ করে বড়ো কোনো ঘটনা, বিশেষত দুর্ঘটনা ঘটলে সংবাদমাধ্যমের বিজ্ঞাপনের বন্যার মধ্যে একটু-আধটু ফাঁকফোকর ফাঁকা থাকলে সেইসব খবর প্রচারিত হয়। অন্যথায় নয়। সেই কারণেই হয়তো ডেহিং-পাতকাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংক্রান্ত এমন এক সর্বনেশে খবর হারিয়ে গেছে। একইভাবে হারিয়ে যাচ্ছিল অসমের তিনসুকিয়া জেলার বাঘজান তৈলকূপে আগুন লাগার খবর। দশ দিন ধরে জ্বলতে থাকা এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দু’জন কর্মী ও পাঁচজন গ্রামবাসী প্রাণ হারালেন। সাত হাজার গ্রামবাসীকে বাড়িঘর থেকে প্রাণ হাতে করে অস্থায়ী শিবিরে বাস করতে হচ্ছে। পাশের অভয়ারণ্যের অসংখ্য পশুপাখি আগুনে ঝলসে মরে গেল। কিন্তু খবর কোথায়? বাঘজান তৈলকূপে কিন্তু হঠাৎ করে আগুন লাগেনি। ২৭শে মে এখানে গ্যাস বেরনো শুরু হয়। খনি কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। বাঘজান তেলের খনি অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড-এর পেট্রোলিয়াম নিষ্কাশন কেন্দ্রগুলির অন্যতম। অয়েল ইন্ডিয়া আবার ‘নবরত্ন’ তকমা পাওয়া দেশের প্রথম সারির নয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অন্যতম। এবং ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক তেল খননকারী সংস্থা। উত্তর-পূর্ব অসমের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভূগর্ভস্থ তেল উত্তোলনের কাজে বহু দিন ধরেই অয়েল ইন্ডিয়া নিযুক্ত। অথচ গ্যাস নিষ্ক্রমণ শুরু হওয়ার পরবর্তী চোদ্দো দিনের মধ্যে সংস্থাটি তা বন্ধ করতে পারল না। কারণ এই কাজ সামলানোর জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ কিংবা প্রযুক্তি অয়েল ইন্ডিয়ার নেই। সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসতে সময় লেগেছে। বিশেষত, বিশ্বব্যাপী অবরোধের আবহে অসামরিক বিমানের চলাচল প্রায় বন্ধ। অবশেষে ৯ই জুন যখন তেলের কূপে আগুন লাগল তখন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা ছাড়া অয়েল ইন্ডিয়ার আর কিছুই করার ছিল না। আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে নিল রাষ্ট্রের সম্পদ। অথচ এই রাষ্ট্রই অদূর ভবিষ্যতে প্রাণ হারানো মানুষের পরিবার-পরিজনের কাছে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র চাইতে আসবে। ঘর হারানো হাজার সাতেক মানুষ কী করে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র দাখিল করবেন? রাষ্ট্র নিরুত্তর। ভারতের বড়ো বড়ো শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলি শিল্পের প্রয়োজনীয় সুরক্ষাব্যবস্থা এবং দুর্ঘটনা মোকাবিলার ব্যবস্থা-বিষয়ে মোটেও তৎপর নয়। তেলের কূপে দুর্ঘটনা তো অভাবনীয় বা অস্বাভাবিক নয়। দুর্ঘটনা নিবারণের যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি কেন? ২০০৫ সালে অয়েল ইন্ডিয়ারই ডিকম তেলের কূপে গ্যাস নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে আগুন ধরেছিল। পনেরো বছর পরে ফের সেই একই দুর্ঘটনাই ঘটল। আবারও প্রমাণিত হলো শিল্প নিরাপত্তার বিষয়ে প্রস্তুতির যথেষ্ট অভাব রয়েছে। বিশেষজ্ঞ, দক্ষ জনশক্তি সংস্থায় স্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হচ্ছে না। বিপদে পড়লে পরিস্থিতি সামাল দিতে বহিরাগত অস্থায়ী প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তিবিদদের নিয়োগ করা হচ্ছে। সংস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত প্রযুক্তির প্রয়োগ হচ্ছে না। স্থায়ী প্রযুক্তিবিদ নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড নিজের তেলের কূপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেমন ব্যর্থ ঠিক একইভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার ক্ষেত্রেও চূড়ান্ত ব্যর্থ। বাঘজানের কাছেই রয়েছে ডিব্রু-সাইখোয়া জাতীয় উদ্যান যা বেশ কিছু বিরল প্রজাতির প্রাণীর বাসভূমি। একটি বিশাল জলাভূমিও জীববৈচিত্র্যের কারণে সংরক্ষিত। সম্পূর্ণ এলাকাটি বিশ্বের ৩৫টি সর্বাধিক সংবেদনশীল প্রাণীবৈচিত্র্যময় অরণ্যের অন্যতম। তেলের কূপ থেকে একটানা চোদ্দো দিন ধরে নির্গত গ্যাস, এবং আগুন লাগবার পর উদ্গত ধোঁয়া ও উত্তাপ এই অঞ্চলটির যে ক্ষতি করল, তাহার পরিমাপ অসম্ভব। অরণ্য, তৃণভূমি, জলাভূমি আগুনের গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে। জলাভূমির উপরেও আগুন ছড়িয়েছে। অগণিত মাছ, ব্যাঙ ছাড়াও বিলুপ্তপ্রায় গাঙ্গেয় শুশুকও এই ধ্বংসলীলার শিকার। এই ক্ষয়ক্ষতি কি অনিবার্য ছিল? জাতীয় বন্যপ্রাণী পর্ষদের সভাপতি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। দূষণকারী শিল্প থেকে বন্যপ্রাণের সুরক্ষা পর্ষদের প্রধান দায়িত্ব। অথচ পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ সুরক্ষার বিধিগুলি উপেক্ষিতই থেকে যায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। বিরল প্রজাতির বিলুপ্তির অপূরণীয় ক্ষতি নিবারণের কোনো চেষ্টা হয় না। জাতীয় অবরোধের মধ্যেই ডেহিং-পাতকাই সহ বেশ কিছু অভয়ারণ্যের মধ্যে অথবা পরিসীমার বাইরে উন্নয়ন প্রকল্প শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই মনোভাব উদ্বেগজনক। শিল্পস্থাপন, খনিজ উত্তোলন, উন্নয়ন প্রকল্পের রূপায়ণ সরকারের দায়িত্ব। প্রয়োজনীয়ও বটে। কিন্তু অভয়ারণ্য ধ্বংস করার মূল্যে, মানুষের প্রাণের মূল্যে তা কেন করা হবে? নিরাপত্তা ও প্রকৃতি সংরক্ষণের বিধি মেনে শিল্প স্থাপন ও পরিচালনার অজস্র দৃষ্টান্ত তো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। নিয়মিত বিশ্ব পরিক্রমার সময় সেইসব প্রকল্প বোধহয় নজরে আসে না। বাস্তবসম্মতভাবে দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের বদলে রাষ্ট্রীয় সম্পদের বিরাষ্ট্রীয়করণ করাই যখন সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে যায় তখন সামগ্রিকভাবে দেশকেই খেসারত দিতে হয়। এবং জাতীয় অবরোধের আড়ালেও সেই প্রক্রিয়া সমানভাবে সক্রিয়।