৬০ বর্ষ ২৯ সংখ্যা / ৩ মার্চ, ২০২৩ / ১৮ ফাল্গুন, ১৪২৯
পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত গণতান্ত্রিক কাঠামো তত্ত্ব ও তথ্য
ঈশিতা মুখার্জি
[গ্রামবাংলার মাটিতে পঞ্চায়েত কি শুধু এক সরকারি প্রতিষ্ঠান? পশ্চিমবঙ্গে কবে শুরু হলো নির্বাচিত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা? কেন শুরু হলো এই ব্যবস্থা? এই ব্যবস্থার সাথে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ অর্থনীতি, সমাজনীতি কীভাবে যুক্ত? আমলাতান্ত্রিক প্রশাসনিক ব্যবস্থায় নির্বাচিত পঞ্চায়েতের স্থান কোথায়? রাজ্য সরকারের প্রশাসনের সাথে এর সম্পর্ক কী? গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা কতটা নির্ভর করে এই পঞ্চায়েতের উপর?
১৯৭৭ থেকে ২০২৩ - পশ্চিমবঙ্গের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা এক জায়গায় থেমে থাকেনি। দেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, প্রশাসনিক নীতির সাথে বদল হয়েছে এই ব্যবস্থাও।এ রাজ্যে যখন পঞ্চায়েত ব্যবস্থার সূত্রপাত তখন ছিল ভূমি সংস্কারের নীতি। আধা-সামন্ততান্ত্রিক, আধা-পুঁজিবাদী সমাজে বর্গা উচ্ছেদ নিষিদ্ধ করেছিল এই নীতি। কিন্তু দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি এক জায়গায় থেমে নেই। ২০২৩ সালে গ্রামবাংলার পঞ্চায়েত ত্রিশ বছরের নয়া-উদারীকরণের মধ্য দিয়ে গেছে।দেশের মধ্যে লুঠেরা পুঁজির রমরমা। প্রভাব এসে পড়েছে গ্রামবাংলার পঞ্চায়েত ব্যবস্থার উপর। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের পরে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। জমির লড়াই, গ্রামে জোতদারের বিরুদ্ধে লড়াইকে ভিত্তি করে যদি হয় বামফ্রন্ট সরকারের সূত্রপাত, সেই বামফ্রন্ট সরকারকেই উৎখাত করার জন্যই এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। ২০১১ সালের আগে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার নৈতিক ভিত্তি ২০১১ সালের পরবর্তী সময় পঞ্চায়েত ব্যবস্থার নৈতিক ভিত্তির সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী বললে কম বলা হয়; আগের ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার উদ্দেশেই বর্তমান ব্যবস্থা সবরকম প্রচেষ্টা করেছে। সেই জনবিরোধী ব্যবস্থার উত্থান ও অতীতের ব্যবস্থা ফিরে দেখা এই রচনার উদ্দেশ্য।]
পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে ২৩টি জেলা পরিষদ, ৩১৪টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ৩৩৪২টি গ্রাম পঞ্চায়েত। ২৩টি জেলার গ্রামীণ অঞ্চলে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থায় প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ত্রিস্তর প্রশাসনিক আঞ্চলিক স্বশাসন জারি করার কথা। প্রশাসনের উপরের স্তর থেকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণের সাহায্যে সরাসরি মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই স্বশাসন ব্যবস্থা কার্যকর হবে। এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গোড়া থেকেই ছিল মানুষের পঞ্চায়েত। কিন্তু লুঠেরা পুঁজিবাদ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল কংগ্রেস দল এবং কোটিপতি করপোরেটসর্বস্ব বিজেপি এই মানুষের অংশগ্রহণে বাধা দিয়েছে। এই দুটি দলই নীতিগতভাবেই গ্রামবাংলার মানুষের হাতে অধিকার তুলে দিতে নারাজ। গ্রামে তাদের শ্রেণিমিত্র হলো, যারা একসময়ে ছিল বড়োজোতের মালিক। আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক-অর্থনীতি বদলে যাওয়ায় মানুষের অংশগ্রহণে মানুষের পঞ্চায়েত একটু একটু করে ধ্বংস হয়ে গেছে।
পঞ্চায়েতের ভাবনা শুরু হয়েছিল বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনার ধারণা থেকে। ক্ষমতা, অর্থ এবং শাসন উপরের স্তর থেকে চুইয়ে চুইয়ে নিচে নামবে; এইভাবে আর্থিক বৃদ্ধির যে ধারণা ছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীতে দাঁড়িয়ে সৃষ্টি হয়েছিল বিকেন্দ্রীভূত মানুষের পঞ্চায়েতের ধারণা। মানুষের অংশগ্রহণ ছিল এই পঞ্চায়েত ভাবনার মূল কথা। সেই ধারণাকে বদল করে তৃণমূল কংগ্রেস এবং অন্য রাজ্যে বিজেপি যে ধারণা নিয়ে এল তা হলো আবার চুইয়ে চুইয়ে নিচে অর্থ এবং পরিকল্পনার নীতি। ত্রিস্তরের গুরুত্ব কমিয়ে তা শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ব্লকের প্রশাসনের মধ্যে আবদ্ধ রাখল। সরকার যেহেতু মানুষকে দয়ার পাত্র হিসেবে দেখতে শুরু করল এবং মানুষের কাজকে ব্যক্তিভিত্তিক প্রকল্পের মধ্যে বেঁধে দিল, তাই কমিউনিটি উন্নয়ন বা একযোগে গ্রামের সকলের জন্য প্রকল্প কমে যেতে শুরু করল। মানুষের পঞ্চায়েতের উপর এখানেই আঘাত এসে পড়ল।
ইতিহাসের দিকে ফিরে গেলে বলা যায়, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থার শুরু ১৯৭৮ সালে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর। ১৯৭৩ সালে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের আইন পাশ হয়, যা কার্যকর হলো বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে সফল নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। স্বাধীন ভারতে সংবিধানের ধারা মেনে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ভাবনা অনুযায়ী ১৯৫৭ সালে গঠিত বলবন্ত রাই মেহেতা কমিটি নির্বাচিত ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কথা প্রথম বলে। সেই কমিটি গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠান গঠনের কথা বলেছিল। কিন্তু সেই কাজ বহুদিন বাস্তবায়িত হয়নি। জনতা দলের সরকার ১৯৭৭ সালে অশোক মেহেতা কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি তার রিপোর্টে দেখায় যে, গ্রামীণ ভারতে নির্বাচিত পঞ্চায়েতিরাজ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। গ্রাম ভারতে তৃণমূলস্তরে প্রতিষ্ঠাও করা যায়নি। অশোক মেহেতা কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যে আইন পাশ করে এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের ডাক দেয়। অশোক মেহেতা কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী আরও দুটি রাজ্য কর্ণাটক এবং অন্ধ্র প্রদেশ এই আইন আনে। পশ্চিমবঙ্গ আইন গঠনের সাথে সাথেই নির্বাচনের ডাক দিয়েছিল।১৯৯২ সালে ৭৩তম সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে পঞ্চায়েতিরাজ প্রতিষ্ঠানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার এই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক কাঠামোয় গড়ে তোলে রাষ্ট্রক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের তাগিদ থেকে। গ্রামোন্নয়নের ভিত্তি ছিল ভূমি সংস্কার এবং অপারেশন বর্গা। গ্রামবাংলাকে বাস্তুঘুঘুদের হাত থেকে মুক্ত করে মানুষের হাতে গ্রামীণ অর্থনীতিকে ফিরিয়ে দেওয়ার তাগিদ ছিল সেদিন বামফ্রন্ট সরকারের। গ্রামবাংলায় কমিউনিটি উন্নয়নের ধারণা বা সঙ্ঘবদ্ধ উন্নয়নের ধারণা বিকেন্দ্রীভূত প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছাড়া সম্ভব ছিল না। ব্যক্তি উন্নয়নের ধারণা থেকে কমিউনিটি উন্নয়নের ধারণা ভিন্ন। গ্রাম এমনিতেই সেই সময়ে শহরের চেয়ে অনেক বেশি সঙ্ঘবদ্ধ ছিল। এই সঙ্ঘবদ্ধ উন্নয়নের সূচনা করে এ রাজ্যে গ্রামবাংলা। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচন পঞ্চায়েতি ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাকে এক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। ২০০৪ সালে রাষ্ট্রসংঘ স্বীকৃত রাজ্যের মানবোন্নয়ন রিপোর্ট জানিয়েছিল যে, নির্বাচিত পঞ্চায়েত ব্যবস্থা এবং মানুষের সঙ্ঘবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ উন্নয়নে মানুষের অংশগ্রহণ সবার উপরে স্থান পেয়েছিল।বামফ্রন্ট সরকারের এই প্রচেষ্টা বিশ্বের দরবারে আঞ্চলিক স্বপ্রশাসনের ক্ষেত্রে নজির সৃষ্টি করেছিল।
পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় মানুষের অংশগ্রহণ ছিল ভিত্তি। তাই গ্রামসমাজের পিছিয়ে-পড়া অংশের মধ্য থেকেই পঞ্চায়েতে নির্বাচিত হয়ে এসেছিলেন বহু মানুষ। সারণীতে পঞ্চায়েতে যাঁরা প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন প্রথম দিকে তার এক খতিয়ান দেওয়া হলো।
সারণী ১: পঞ্চায়েত সদস্যদের পেশাগত বিন্যাসঃ
পেশা | ১৯৭৮-৮৩ (শতাংশ) | ১৯৮৩-৮৮ (শতাংশ) | ১৯৮৮-৯৩ (শতাংশ) |
ভূমিহীন | ৬.৬ | ৫.৬ | ২৮.১১ |
ভূমিহীন এবং প্রান্তিক কৃষক | ২১.৮ | -- | ৩০.১৭ |
ক্ষুদ্র কৃষক | ৪২.৭ | -- | ৫৮.৩ |
মাঝারি কৃষক | ৬.৬ | -- | -- |
বৃহৎ জমির মালিক | ৪.১ | -- | -- |
অতি বৃহৎ জমির মালিক | ৪ | -- | -- |
অকৃষি শ্রমিক | ৩.৯ | ২.৩ | ২.৪ |
বেকার | ৭.৫ | ১৪.৭ | -- |
ছাত্র | ০.৬ | ০.৪৭ | -- |
শিক্ষক | ১৪.০ | ১৫.৩ | ৭.৯ |
ডাক্তার | ১.১ | ০.২৩ | -- |
দোকানমালিক | ১.৪ | ৬.৭ | ৯.৪ |
অন্যান্যরা | ১৪.২ | ৩.০ | ১.৫৭ |
সূত্রঃ পশ্চিমবঙ্গ মানবোন্নয়ন রিপোর্ট ২০০৪।
আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে এবং পঞ্চায়েতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা লিখিত আকারে প্রকাশিত হয়েছিল যা গ্রামের মানুষজনের মধ্যে প্রচার-আলোচনার জন্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে পঞ্চায়েতের যে যে কাজ বা দায়িত্বের কথা বলা হয়েছিল তা এইরকম -
● বন পরিচালনা এবং ভূমি সংস্কারের কাজ।
● জনস্বাস্থ্য, কমিউনিটি স্বাস্থ্য পরিকল্পনা, রোগ থেকে সুরক্ষা, এবং প্রচার।
● জমির ব্যবহার উন্নত করা এবং কৃষি পদ্ধতির উন্নয়ন।
● গ্রামে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পশুপালন, মাছ চাষ, দুগ্ধ ও হাঁসমুরগি পালন।
● সাক্ষরতা প্রচার এবং কর্মসূচি পরিচালনা করা এবং সার্বজনীন শিক্ষার দিকে এগনো।
● রেশন ব্যবস্থার উপর নজর রাখা।
● গোবর গ্যাস বা জৈব সারের ব্যবহারের উপর পরিচালনা এবং বিকল্প শক্তির ব্যবহার।
● বিদ্যুৎ চুরি আটকানো এবং মিটারের সঠিক রিডিং নেওয়া তত্ত্বাবধান করা।
● গ্রামীণ রাস্তা মেরামত এবং পুকুর ও জলাশয় পরিষ্কার ও সংরক্ষণ, মাঝারি সময়ের জন্য বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনা।
● নিজস্ব রাজস্ব আয়ের ব্যবস্থা করা।
● পিছিয়ে-পড়া জনগোষ্ঠী, তপশিলি জাতি, উপজাতি ও মহিলাদের উপর গুরুত্ব আরোপ।
● শ্রেণি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পঞ্চায়েত পরিচালনা করা।
এই তালিকা গ্রামের মানুষের কাছে তখন দেওয়া হয়েছিল। তার কারণ, গ্রামের মানুষ এই পঞ্চায়েত পরিচালনায় অংশগ্রহণ করবেন। তাই নির্বাচিত প্রতিনিধি যদি এই তালিকা অনুযায়ী কাজ করছেন কি না গ্রামের মানুষ নিজেরাই তা যাচাই করে নিতে পারবেন। গ্রামের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল পঞ্চায়েত পরিচালনা ব্যবস্থায় । পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি তো একা কাজ করতেন না; গ্রামের মানুষের মতামত সাপেক্ষে পঞ্চায়েত পরিচালনা করা হতো। এই ছিল পঞ্চায়েতের দৃষ্টিভঙ্গির সূত্রপাত।পঞ্চায়েতের কাজের ধরনেরও এটাই সূত্রপাত বলা যেতে পারে। সারণী ১-এ যে পেশাগত বিন্যাস উল্লেখ করা হলো, তা অসম্পূর্ণ কারণ, তা বিভিন্ন গবেষকের সমীক্ষা থেকে নিয়ে মানবোন্নয়ন রিপোর্টে লেখা হয়েছিল । এই পেশাগত বিন্যাস থেকে শ্রেণিগত বিন্যাসের ধারণা পাওয়া যেতে পারে। সারণী শেষ হয়ে গেছে ১৯৯৩ সালে অর্থাৎ ঠিক তার আগের বছর অর্থাৎ ১৯৯২ সালে দেশে চালু হয়েছে নয়া-উদারীকরণ নীতি।
পুঁজিবাদের এই পরিবর্তিত রূপে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার উপর বিশেষকরে বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনা এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের প্রশ্নটিতেই আঘাত এসে পড়ল। আঘাত এসে পড়ল মানুষের অংশগ্রহণের এই প্রাতিষ্ঠানিক রূপের উপর। আঘাত এসে পড়ল পরিকল্পনা তৈরির পদ্ধতির উপর। প্রশাসনিক স্তরে রাজ্য পরিকল্পনা পর্ষদ এবং তার ঠিক নিচে ছিল জেলা পরিকল্পনা পর্ষদ এবং ব্লক পরিকল্পনা পর্ষদ। পরিকল্পনা যেমন উপর থেকে রচিত হতো কিন্তু মানুষের অনুভব, তার চাহিদা, মানুষের পরিকল্পনা নিচের থেকে উপরে তুলে নিয়ে আসা হতো। এইভাবে পরিকাঠামো উন্নয়ন অর্থাৎ ব্রিজ, রাস্তা, স্কুল, হাসপাতাল অনেক সহজে এবং অঞ্চলে মানুষের সাহায্যে কম খরচে গঠন-পুনর্গঠন সম্ভব হয়েছিল। এই ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার সাথে নয়া-উদারীকরণের বাজারমুখী উন্নয়নের দ্বন্দ্ব স্বাভাবিক এবং যত সময় এগিয়েছে এই দ্বন্দ্ব ধীরে ধীরে আত্মপ্রকাশ করেছে।
(ক্রমশ)