৬১ বর্ষ ১২ সংখ্যা / ৩ নভেম্বর, ২০২৩ / ১৬ কার্তিক, ১৪৩০
কমরেড হরেকৃষ্ণ সামন্তের জীবনাবসান
প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা কমরেড হরেকৃষ্ণ সামন্তের জীবনাবসান হয় ২৮ অক্টোবর, শনিবার রাতে। বয়স হয়েছিলো ৮২। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন সিপিআিই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সহ পার্টির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ সহ প্রাক্তন দুই জেলা সম্পাদক দীপক সরকার ও তরুণ রায়।
২৯ অক্টোবর মেদিনীপুর শহরে প্রয়াত নেতার মরদেহ নিয়ে শোক মিছিলের পর চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য মরদেহ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দান করা হয়। এর আগে মেদিনীপুরে পার্টির জেলা দপ্তরে কমরেড হরেকৃষ্ণ সামন্তর মরদেহ নিয়ে আসা হলে পার্টির রক্তপতাকা ও মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। শ্রদ্ধা জানান দীপক সরকার, তরুণ রায়, তাপস সিনহা, গীতা হাঁসদা, পুলিন বিহারী বাস্কে, সেখ ইব্রাহিম আলি, ডহরেশ্বর সেন সহ পার্টি নেতৃবৃন্দ।
কমরেড হরেকৃষ্ণ সামন্ত এদিন ভোর রাতে নিজের বাড়িতে অসুস্থ বোধ করেন। দীর্ঘদিন তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় কোলাঘাটের আগেই মেছোগ্রাম মোড়ে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসায় সাড়া দিলেও বিকালে দ্বিতীয় বার হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর রাত ৮টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
কমরেড সামন্ত অর্থশাস্ত্র নিয়ে পড়ার সময় ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বামপন্থী আন্দোলনে শামিল হন। পেশায় শিক্ষকতা করতেন। সবং জুড়ে শিক্ষক হিসাবে পরিচিতি অর্জন করেন এবং কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্বে উঠে আসেন। তিনি সবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৩-৮৮ সাল পর্যন্ত। পরবর্তীকালে জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৩-৯৮।
কমরেড হরেকৃষ্ণ সামন্ত সিপিআই(এম)-এর জেলা কমিটির সদস্য সহ সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদকও ছিলেন।
অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় কৃষক আন্দোলন ও পঞ্চায়েতের মাধ্যমে গ্রামীণ বিকাশ, বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনা, গ্রামসভায় নীরব অংশের মানুষের সমস্যা যাতে অগ্রাধিকার পায়, বড়ো জলাশয় তৈরি করে মাছ চাষ ও কৃষিকাজে জলের ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছিলেন তিনি। স্বশাসিত মেদিনীপুর পরিকল্পনা পরিষদ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন কমরেড হরেকৃষ্ণ সামন্ত।