E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৪ সংখ্যা / ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ / ১৭ ভাদ্র, ১৪২৮

কৃষক হত্যার প্রতিবাদে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল


পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে কার্নালে সংযুক্ত কিষান মোর্চার মহাপঞ্চায়েত।

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ হরিয়ানার কার্নালে কৃষকদের ওপর পুলিশের নির্মম লাঠিচালনার বিরুদ্ধে এবং পুলিশের লাঠির ঘায়ে একজন কৃষকের মৃত্যুর প্রতিবাদে ১ সেপ্টেম্বর হরিয়ানা জুড়ে সিপিআই, সিপিআই(এম), এসইউসিআই(সি) এবং সিপিআই(এমএল)-র ডাকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচি সংগঠিত হয়েছে। বামপন্থীরা কার্নালের এসডিএম আয়ুষ সিনহার বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। হরিয়ানার বিজেপি সরকারের কাছের লোক বলে পরিচিত ওই আয়ুষ সিনহা আন্দোলনরত কৃষকদের লাঠির বাড়িতে মাথা গুঁড়িয়ে দেবার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। বামপন্থীরা হরিয়ানা সরকারের কাছে ওই আধিকারিককে কাজ থেকে বহিষ্কার ও তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবার দাবি করেছেন। পাশাপাশি পুলিশের নৃশংস হামলায় নিহত কৃষক সুশীল কাজলের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেবারও দাবি তুলেছে।

এদিকে গত ১ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন,হামলা, দমনপীড়ন চালিয়ে কৃষকদের আন্দোলন দমন করা যাবেনা। তিনি বলেছেন, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এমন আন্দোলন কখনও হয়নি। প্রায় ৫০০-র বেশি কৃষক সংগঠন সংযুক্ত কিষান মোর্চার(এসকেএম) আহ্বানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। দীর্ঘ ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন,বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল বাতিল ও ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে উত্তাল কৃষক আন্দোলন চলছে। আন্দোলন এমন আকার নেবে তা আগে কেউ ভাবতে পারেনি। মোদী সরকারের জনবিরোধী ও কৃষক বিরোধী নীতি খেত-খামারের সংগ্রামী হাতগুলিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে বাধ্য করেছে।

তিনি বলেছেন,আন্দোলনের তীব্রতা দেখে বিজেপি-আরএসএস-র হাঁটু কাঁপছে। মোদী সরকার অতীতে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে কৃষক আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করেছে। এবারে দমনপীড়ন চালিয়ে কৃষক আন্দোলন ধ্বংস করতে চাইছে। তিনটি কৃষি আইন বাতিল সহ কৃষকদের অন্য দাবিগুলি মেনে নিতে পারছেনা মোদীরা। কারণ দেশের বৃহৎ শিল্পপতি আম্বানি-আদানিরা এ নিয়ে কেন্দ্রকে চাপে রেখেছে। তাই দীর্ঘ সময়ের আন্দোলন, প্রায় ৬০০-র বেশি কৃষকের মৃত্যু দেখেও ওই কালা কানুন বাতিলে মোদী সরকার সম্পূর্ণ উদাসীন। উলটে হামলা চালাচ্ছে। ২৮ আগস্ট হরিয়ানার কার্নালে পুলিশের নির্মম লাঠির আঘাতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত কৃষক সুশীল কাজলের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে ২৬ আগস্ট উত্তরাখণ্ডে পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন আরও এক কৃষক।

হান্নান মোল্লা জানিয়েছেন, আগামী ৫ সেপ্টেম্বর এসকেএম'র আহ্বানে উত্তর প্রদেশের মুজফফরনগরে কৃষকদের মহাপঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হবে। এই বৃহৎ সমাবেশে ৪-৫ লক্ষ কৃষক সমবেত হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। মহাপঞ্চায়েত থেকে কৃষকরা আসন্ন কতগুলো রাজ্যে সরকার বদলের আওয়াজ তুলবেন। তিনি বলেন, কৃষকরা শুধু প্রতিবাদই করেন না, তাঁরা ভোটও দেন। কৃষক আন্দোলন ভারতের কৃষকদের নিজেদের পরিচয় সম্পর্কেন সচেতন করেছে। তাই বিশ্বাস, ২৫ সেপ্টেম্বর এসকেএম'র ডাকে ভারত বনধের দিনে গোটা দেশ অচল হবে।

কার্নালে পুলিশের লাঠির ঘায়ে রক্তাক্ত কৃষক।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট কার্নালের অদূরে বাস্তারা টোল প্লাজায় কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর রাজ্যের বিজেপি সরকারের পুলিশ বর্বরোচিত আক্রমণ চালায়। পুলিশের এই নির্মম লাঠির আঘাতে অন্তত দশজন কৃষক আহত হন। পরে আহত কৃষক সুশীল কাজলের (৫৫) হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়। তিনি ছিলেন কার্নালের রায়পুর জাত্তান গ্রামের বাসিন্দা। এদিন কার্নালের কাছে জাতীয় সড়কে বাস্তারা টোল প্লাজার কাছে কৃষকদের উপর পুলিশের নির্বিচারে লাঠিচালনার ঘটনা ঘটে। তাতেই অন্তত দশজন কৃষকের রক্ত ঝরে। এদিন জাতীয় সড়ক দিয়ে কৃষকরা বিজেপি'র সভাস্থলে কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনের প্রতিবাদ জানাতে যাচ্ছিলেন। বিজেপি'র সভায় সেই সময়ে উপস্থিত ছিলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার, বিজেপি'র রাজ্য সভাপতি ওমপ্রকাশ ধনকর প্রমুখ। বাস্তারা টোল প্লাজার কাছে কৃষকদের মিছিল পৌঁছালে পুলিশ তাঁদের উপর নির্মমভাবে লাঠি চালায়। লক্ষণীয় বিষয় হলো, ঘটনার সময় উপস্থিত কার্নালের এসডিএম আয়ুষ সিনহাকে সেখানে থাকা পুলিশ কর্মীদের উদ্দেশ্যে কৃষকদের 'মাথা গুঁড়িয়ে দাও' বলতে দেখা যায়। ঘটনার অব্যবহিত পরেই এই ভিডিয়ো সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। দেশ জুড়েই এই ঘটনার প্রতিবাদ শুরু হয়। সারা ভারত কৃষক সভা সুপ্রিম কোর্টের কাছে এই এসডিএম-র বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়। একই সঙ্গে কৃষকদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত হরিয়ানার শাসক দলের নেতাদের শাস্তিদানের দাবি করা হয়েছে। কৃষক আন্দোলনের কর্মী সুশীল কাজলের শহিদীবরণে গোটা দেশে সংগঠনের সব শাখাকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়।

সারা ভারত কৃষক সভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের জনবিরোধী কৃষি আইনের বিরুদ্ধে একেবারে সূচনাপর্ব থেকেই কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন সুশীল কাজল। হরিয়ানার বিজেপি সরকারের রক্তলোলুপ পুলিশের অত্যাচারে এই সংগ্রামী কৃষককে অকালেই চলে যেতে হলো। রাজ্য প্রশাসন কৃষক আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় হরিয়ানায় ৪০ হাজারের বেশি কৃষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছে। এমনকী আন্দোলনরত কৃষকদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মতো গুরুতর অভিযোগ পর্যন্ত চাপানো হয়েছে।

২৮ আগস্ট কৃষকদের শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর বিজেপি সরকারের পুলিশের নির্মম লাঠিচালনার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সিপিআই(এম)'র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কৃষকদের কাছে সরকারকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। আহত কৃষকদের বিনামূল্যে চিকিৎসার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। তিনি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, এটা সরাসরি বিজেপি সরকারের স্বৈরাচার। আমরা এর নিন্দা করছি। অন্নদাতাদের উপরে এইরকম ভয়ঙ্কর হামলা এই সরকারের ব্যর্থতাকে প্রকট করেছে। এখনো সময় আছে মোদী সরকার তিন কৃষি আইন বাতিল করো।

এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কংগ্রেসের রণদীপ সিং সুরজেওয়াল,স্বরাজ ইন্ডিয়ার সভাপতি এবং সংযুক্ত কিষান মোর্চার অন্যতম নেতা যোগেন্দ্র যাদব, হরিয়ানা ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (বিকেইউ)-এর চাদুনি শাখার প্রধান গুরুনাম সিং চাদুনি প্রমুখ।

হরিয়ানার কার্নালের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছে অল ইন্ডিয়া ল'ইয়ার্স ইউনিয়ন (এআইএলইউ)। এই সংগঠনের সভাপতি ও রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং প্রবীণ আইনজীবী ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পি ভি সুরেন্দ্রনাথ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সেদিনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনা বিজেপি সরকারের পূর্বপরিকল্পিত। স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ, লাঠি চালানোর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে কৃষকদের কোনোভাবে সতর্ক করা হয়নি। যা বেআইনি ও মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের লঙ্ঘন। এআইএলইউ কার্নালের এসডিএম'কে অবিলম্বে বরখাস্ত এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

এই বর্বরোচিত ঘটনার প্রতবাদে এদিনই হরিয়ানার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়। ফতেহবাদ-চণ্ডীগড়, গোহানা-পানিপথ, ঝিন্দ-পাতিয়ালা, আম্বালা-চণ্ডীগড় এবং হিসার-চণ্ডীগড় জাতীয় সড়কে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ফলে যান চলাচল থমকে যায়।

এদিকে এই ঘটনার উত্তাপের মধ্যেই ২৯ আগস্ট চণ্ডীগড়ের নুহ জেলায় কৃষক সংগঠন সমূহের মহাপঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচি আগে থেকেই ঘোষিত ছিল। এদিনের এই মহাপঞ্চায়েতের মঞ্চ কৃষকদের উপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার ধ্বনিত হয়। এই মহাপঞ্চায়েতে যোগ দেন সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতা রাকেশ টিকায়েত, দর্শন পাল সিং, যোগিন্দার সিং উগ্রাহণ, যোগেন্দ্র যাদব প্রমুখ শীর্ষ নেতৃত্ব। এই মহাপঞ্চায়েত কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের নয়মাস পূর্ণ হওয়ায় দেশের সংগ্রামী কৃষক সমাজকে অভিনন্দন জানায়।

২৮ আগস্ট কৃষকদের উপর বিজেপি সরকারের পুলিশের বর্বরোচিত লাঠিচালনার প্রতিবাদে হরিয়ানায় কৃষক আন্দোলন ক্রমশ তীব্র আকার নিচ্ছে। অবিলম্বে এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। পুলিশের লাঠি চালনার মূল অভিযুক্ত কার্নালের এসডিএম'র বিরুদ্ধে অবিলম্বে হত্যার মামলা করার দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা এই ব্যাপারে হরিয়ানা সরকারকে সময়ও বেঁধে দিয়েছেন। রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কৃষকরা জানিয়েছেন,৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কার্নালের এসডিএম'র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে সাত তারিখ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য মহকুমার সদর দপ্তর ঘেরাও করে রাখা হবে।

৩০ আগস্ট সংযুক্ত মোর্চার আহ্বানে ঘারুয়ান্দায় মহাপঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হয়। এই মহাপঞ্চায়েতের বিশাল সমাবেশ থেকে কৃষক আন্দোলনের শহিদ সুশীল কাজলের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা সরকারি ক্ষতিপূরণ দেবার দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে তাঁর পরিবারের এক সদস্যকে সরকারি চাকরি দেবার দাবি তোলা হয়। এছাড়া পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত ১০ জন কৃষকের চিকিৎসায় দু'লক্ষ টাকা করে সরকারি সহায়তার দাবিও করা হয়েছে এই মহাপঞ্চায়েত থেকে। এদিন সংযুক্ত কিষান মোর্চার (এসকেএম)পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে,যারা কৃষকদের নৃশংসভাবে মারলো তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উলটে আন্দোলনকারী ১০০ জনের উপর কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে আন্দোলনকারীদের ওপর থেকে বিনা শর্তে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে এসকেএম। এছাড়া কার্নালের এসডিএম'র বিরুদ্ধে অবিলম্বে হত্যার মামলা করার দাবি সহ ঘটনায় জড়িত সমস্ত পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সরকারি পদ থেকে সরিয়ে দেবার দাবিও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এই বিবৃতিতে হরিয়ানার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারের ভূমিকারও তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।

৩১ আগস্ট সারা ভারত কৃষক সভার এক প্রতিনিধিদল কার্নাল জেলার রায়পুর জাত্তান গ্রামে প্রয়াত সুশীল কাজলের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী সুদেশ দেবীর হাতে ১ লক্ষ টাকা সাহায্য তুলে দেন। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ পি কৃষ্ণপ্রসাদ, সংগঠনের হরিয়ানা জেলার সভাপতি ফুল সিং শেওখান্দ এবং সুমিত সিং প্রমুখ।

আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে সংযুক্ত কিষান মোর্চার ডাকে ভারত বনধ কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছে সিআইটিইউ।

এদিকে দিল্লি সীমান্তের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অংশেই কৃষক আন্দোলন ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ চলছে। এতে বিচলিত বিজেপি এবং সংঘ পরিবারের পেটোয়া দুষ্কৃতীরা কৃষক নেতাদের নানাভাবে হেনস্থা করছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর মুজফফরনগরে মহাপঞ্চায়েতকে ঘিরে জোরালো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

উত্তরাখণ্ড, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, মধ্যপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যে কৃষক আন্দোলন তীব্রতা ছড়াচ্ছে এবং এই সমস্ত রাজ্য থেকেও বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত হবার সংবাদ মিলছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও কার্নালে কৃষকদের উপরে হরিয়ানা পুলিশের নির্মম লাঠি চালনার প্রতিবাদ করেছেন।

গত ৩০ আগস্ট পুনেতে শস্য বিমার অন্তর্গত ক্ষতিপূরণের দাবিতে সারা ভারত কিষান সভার বিশাল কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাজ্য কৃষি কমিশনারের দপ্তরের সামনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে মহারাষ্ট্রের মারাঠাওয়াড়া ও বিদর্ভ অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার কৃষক যোগ দেন। এই সমাবেশে হরিয়ানায় বিজেপি-জেজেপি জোট সরকারের পুলিশের কৃষকদের উপরে নৃশংসভাবে লাঠি চালানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা করে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সভা থেকে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর এসকেএম'র ডাকা ভারত বনধকে সমর্থন জানানো হয়। সভায় এআইকেএস'র সভাপতি অশোক ধাওয়ালে, সংগঠনের রাজ্য সভাপতি কিষান গুজার, সম্পাদক অজিত নাওয়ালে, সিপিআই(এম) বিধায়ক বিনোদ নিকোলে প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রেখেছেন।