৫৯ বর্ষ ৪ সংখ্যা / ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ / ১৭ ভাদ্র, ১৪২৮
সত্যের পুঁজি যখন ফুরিয়ে আসে
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
‘মৃত্যু করে লুকাচুরি/সমস্ত পৃথিবী জুড়ি’
একটা অজুহাত। সামান্য একটা অজুহাতে কুড়ি বছরের যুদ্ধ। ‘দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না’ প্রবাদটা বড়ো চালু। আওড়ে যাই সকাল সন্ধে। উপলব্ধিতে আসে না কখনও। পঞ্চাশ, একশো, পাঁচশো, হাজার - ইতিহাস ঘাঁটতে বসলে দিন রাত দুই কাবার। পাতায় পাতায় চোখ বুলোতে বুলোতে ঝাপসা দৃষ্টি। বোধের ঘরে মরচে। ‘বদল নয়, বদলা’র খেলায় মত্ত দশ দিক। এক-এ চন্দ্র, দু-এ পক্ষ, তিন-এ নেত্র গোনা শেষ করার আগেই পাঁচে পঞ্চবাণ বিঁধে দেয় পঞ্চেন্দ্রিয়। অসাড় চোখ, কান, নাক, জিভ। চামড়াও মোটা হতে হতে এতটাই মোটা, জোরে কাটা চিমটি মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই অন্ধগলিতে ঢুকে যায় অনুভূতি। এ বড়ো কঠিন সময়। এ বড়ো জটিল সময়।
হাল্লা রাজার সেনাদের কাছে যতবারই জানতে চাওয়া হয় - ‘তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল’! উত্তর মেলে না। বেচারি সেনার দল। তাঁরা যুদ্ধ করে থোড়াই। মাইনে করা কর্মচারী। আদেশ পালনকারী মাত্র। ইন্দ্রজিৎরা তো অন্য কেউ। মেঘের আড়ালে। তাঁদের ছোঁয় কার সাধ্যি! সারা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ দমনের সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখানো। তারপর দায়িত্ব স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিয়ে দেশে দেশে মাধুকরীগ্রাসন। রাক্ষসরূপ ধারণ চলে পাটিগণিতের নিয়ম মেনে। ত্রাতা থেকে ত্রস্তকারী হতে কতটুকু আর সময় লাগে। বেবাক বোকা বনে যাওয়া মানুষ মাথা চুলকে ‘যুদ্ধবাজ’ বনাম ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত’র পরিসংখ্যান নিয়ে নাড়াঘাটা করে। পাংশু মুখে ‘ভবিতব্য’ ধরে নিয়ে লাশের হিসেব কষে। চোখের দেখা ভুলে গিয়ে না দেখতে পাওয়া অলীকেই আজও বহু মানুষ আস্থা রাখে। আর কিছু মানুষ সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলে ১ সেপ্টেম্বর যুদ্ধবিরোধী শান্তিমিছিল করে মানুষের চোখ খুলে দিতে চেষ্টা করে। বাঁচার স্বপ্ন দেখায়।
এত প্যাঁচ কষে লাভ নেই। দিনের শেষে অসম লড়াই লড়তে হবে সস্তার চীনা মাঞ্জার সাথেই। গলা, হাত যাই কাটুক না কেন। লড়ে যেতে হবে শেষ পর্যন্ত। জঙ্গলে বসে কাঁদলে আগামী দিনে শোনার গাছও থাকবে না। পা ফেলার জমি, তেষ্টা মেটানোর জলের আকাল শুরু হয়ে গেছে বেশ কিছুদিন। জলে কুমীর, ডাঙায় বাঘ, আকাশে চিল। এসব ডিঙিয়ে পোস্টট্রুথের যুগে এইবেলা স্পষ্ট কথা ‘পষ্ট’ করে বলে নেওয়াই ভালো। পরে আবার সময় যদি না মেলে। বলা তো যায় না। কোনদিন কোন শক্তির এদেশে সন্ত্রাসবাদ দমনের হাডুডু খেলতে ইচ্ছে হবে। একশো তিরিশ কোটির খোলাবাজার অতি বিষম লোভনীয় বস্তু। আকাশে তাই চিল শকুনের যানজট। কে বলতে পারে আফগানিস্তানের জাকি আনওয়ারির মতো আগামী দিনে মহাশূন্য থেকে টুপ টুপ করে এ দেশের মানুষকেও প্রাণ বাঁচাতে খসে পড়তে হবেনা! ‘অকম্পিত বুকে -’ “তোরে নাহি করি ভয়, এ সংসারে প্রতিদিন তোরে করিয়াছি জয়।’...” না বলতে পারলে নিস্তার নেই।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এখনও স্মৃতিতে। বিস্মৃতিতে যায়নি। নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, পেনসিলভেনিয়াতে সন্ত্রাসবাদী হামলায় সেদিন মৃত্যু হয়েছিল প্রায় তিন হাজার জনের। ভেঙে পড়েছিল ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। এই ঘটনার ঠিক সাত দিন পর, ১৮ সেপ্টেম্বর আমেরিকার পক্ষ থেকে হামলায় যুক্ত সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে শেষ করার শপথ নেওয়া হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই আফগানিস্তানে ঢুকে পড়ে মার্কিন বাহিনী। সেই শুরু। এরপর সময় পেরিয়েছে হাতে গুনে কুড়ি বছর। যে কুড়ি বছরে জর্জ ডব্লিউ বুশ থেকে বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়ে জো বাইডেন - রাষ্ট্রপতি বদলেছে চার বার। যুদ্ধ থামেনি। যে কুড়ি বছরে আফগানিস্তানে মৃত্যু হয়েছে বহু সৈনিকের। সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে মৃত্যু হয়েছে ২,৪৬১ জন আমেরিকান সৈন্যের। কুড়ি বছরে আমেরিকান বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ৩,৮৪৬ জন আমেরিকান কন্ট্রাকটরের মৃত্যু হয়েছে আফগানিস্তানে। এই কুড়ি বছরে মৃত্যু হয়েছে ৬৬ হাজার আফগান মিলিটারি ও পুলিশের। মৃত্যু হয়েছে ৪৭,২৪৫ জন সাধারণ আফগান নাগরিকের।
আমেরিকার হিসেব অনুসারে শেষ কুড়ি বছরে যুদ্ধের কারণে আফগানিস্তানে মোট মৃত্যু প্রায় ১ লক্ষ ৭৪ হাজার মানুষের। আমেরিকায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যুর বদলা আফগানিস্তানে প্রায় পৌনে দু’লক্ষ মানুষের বলি। যদিও আফগানরা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস করেছিল এমনটা নয়। যে লাদেন বাহিনী আমেরিকায় হামলা চালিয়েছিল তাদের আশ্রয় দিয়েছিল তৎকালীন আফগানিস্তানের শাসক তালিবানিরা। আর এত কিছুর পরেও সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার অভিযান চালাতে গিয়ে গত দশ বছর ধরে সেই সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে গোপনে, প্রকাশ্যে আলোচনা চালিয়ে শেষে তাদের হাতেই আফগানিস্তান তুলে দিয়ে হার স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে আমেরিকা। গত কুড়ি বছরে আফগানিস্তানে যুদ্ধ জারি রাখতে আমেরিকার খরচ ২,৩১৩ ট্রিলিয়ন ইউ এস ডলার। যুদ্ধু যুদ্ধু খেলা তো হলো কুড়ি বছর ধরে। সন্ত্রাসবাদ নির্মূল হলো কী! ব্যাপারটা অনেকটা নোটবাতিল করে সন্ত্রাসবাদের কোমর ভেঙে দেওয়া বা সব কালো টাকা ফিরিয়ে আনা গোছের।
ডেথ অ্যানিভারসারি অফ ম্যাথ
ট্যুইটারে একটা ভিডিয়ো খুব ভাইরাল হয়েছে। যার শিরোনাম - ‘ডেথ অ্যানিভারসারি অফ ম্যাথ’। ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল কানাডার টরেন্টোতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের এক ক্লিপিংস নিয়ে এই ভিডিয়ো। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলছেন, যদি আমরা অঙ্ক করার সময় এ স্কোয়ার প্লাস বি স্কোয়ার করি তো উত্তর কী আসে? যদি আমরা এ প্লাস বি ইন্টু স্কোয়ার ইন্টু ব্র্যাকেট স্কোয়ার করলে উত্তর কী আসে? উত্তর আসে এ স্কোয়ার প্লাস টুএবি প্লাস বি স্কোয়ার। এই এক্সট্রা টুএবি কোথা থেকে পাওয়া যায়? - সে দিনের পর থেকে নতুন এই ফরমুলা অনুসারে ‘এক্সট্রা টুএবি’ কোথা থেকে আসে তা নিয়ে অঙ্ক বিশেষজ্ঞদেরও সব হিসেব গুলিয়ে গেছে। তাঁরা আপাতত গবেষণায় ব্যস্ত মোদীমেটিক্স-এর এই নতুন তত্ত্ব নিয়ে। এসব জটিল বিষয় থাক।
আমরা বরং একটু জিডিপি নিয়ে আলোচনা করি। গত আর্থিক বছরের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে জোড়া লকডাউনের জেরে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছিল। অর্থনীতির সংকোচন হয় ২৪ শতাংশেরও বেশি। সেই হিসাবে এবার এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ২০.১ শতাংশ। সরকারের পক্ষ থেকে যাকে দাবি করা হয়েছে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর আশা বলে। একে ‘ম্যাসিভ’ বলে ট্যুইট করে আইটি সেলের প্রচারও শুরু হয়ে গেছে জোরকদমে।
অবশ্য যারা মোদীনমিক্স ছেড়ে ইকনমিক্স নিয়ে সামান্য নাড়াঘাঁটা করেন তাঁরা বলছেন - গত অর্থবর্ষে এপ্রিল-জুনে লকডাউনের ধাক্কায় জিডিপি (-)২৪.৪ শতাংশ হয়েছিল। এবার এপ্রিল-জুনে জিডিপি ২০.১ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু ২০১৯-২০ সালের এপ্রিল-জুন স্তরে তা পৌঁছতে পারেনি। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘উৎসব করার আগে মনে রাখা দরকার, এখনও আমরা কোভিডের আগের জায়গায় ফিরিনি।'
অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু গত ১ সেপ্টেম্বর এক ট্যুইট বার্তায় জানিয়েছেন, এই জিডিপি বোঝার জন্য সরল পাটিগণিতই যথেষ্ট। এপ্রিল থেকে জুন ২০২১ ভারতের ২০.১ শতাংশ অগ্রগতি খুবই খারাপ খবর। এপ্রিল থেকে জুন ২০২০-তে ভারতের জিডিপি পড়েছিলো ২৪.৪ শতাংশ। তার পাল্টা ২০.১ শতাংশ বেড়েছে। এর অর্থ এপ্রিল থেকে জুন ২০১৯ (অর্থাৎ দু'বছর আগের অনুপাতে) থেকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি আসলে (-)৯.২ শতাংশ।
বীজগণিতের ফরমুলায় এক্সট্রা টুএবি-র উৎপত্তি আবিষ্কার করা গণিতজ্ঞদের এই জটিল অঙ্ক না বোঝারই কথা। তাই তাঁদের মতো করে সহজ কথায় বলে দিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি। ওইদিনই এক ট্যুইট বার্তায় তিনি জানিয়েছেন - ‘দু’বছর আগের সঙ্গে তুলনা করলে ভারতের জিডিপি কমেছে (-)৯.২ শতাংশ। সাধারণ মানুষকে রেকর্ড হারে ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। খাদ্যশস্য, তেলের দাম আকাশছোঁয়া। রেকর্ড হারে কমানো হয়েছে কর্পোরেট ট্যাক্স। বেকারি অতি দ্রুত উচ্চহারে বেড়ে চলেছে। সরকারি ব্যয় কমেছে ৪১.৬ শতাংশ। নতুন বিনিয়োগ কমেছে ১৮ শতাংশ।’ তবে যতই সহজ করে বলা হোক, এসব জটিল বিষয় নিয়ে চর্চার থেকে আমাদের জন্য অঙ্কের মাস্টারস্ট্রোক ‘এক্সট্রা টুএবি কাহাসে আতা হ্যাঁয়’ তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করা বেশি সহজ। তাই মাননীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নিদান মেনে গুলি মারো ‘শালোকো’ - থুড়ি জিডিপিকো।
গোরু, ভাবাবেগ এবং...
মানুষের ভালো হলে দেশ ও দশের ভালো হবে কিনা তা নিয়ে কারোরই বিশেষ মাথাব্যথা নেই। তবে এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে, “গোরুর ভালো হলে দেশের ভালো হবে।’’ ১ সেপ্টেম্বর বুধবার এক মামলার শুনানিতে বিচারপতি শেখর কুমার যাদব তাঁর বারো পাতার নির্দেশে জানিয়েছেন, ‘‘বেদ, মহাভারতের মতো ভারতের প্রাচীন গ্রন্থ, যা ভারতীয় সংস্কৃতিকে সংজ্ঞায়িত করে এবং যার জন্য ভারত পরিচিত, সেখানে গোরুকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে গোরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করা উচিত এবং গো-রক্ষা হিন্দু সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকারের অংশ হওয়া উচিত। কারণ আমরা জানি যখন একটি দেশের সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসে আঘাত লাগে, তখন দেশ দুর্বল হয়ে পড়ে।’’
এই বছরের মার্চ মাসে বিজেপি শাসিত যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশের সম্ভল জেলার বাসিন্দা ৫৯ বছরের এক মুসলিম ব্যক্তিকে গোহত্যার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ব্যক্তির জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে আদালত জানিয়েছে, গোরু সম্পর্কে ভারতীয় সমাজে ভাবাবেগ রয়েছে। অভিযুক্তকে জামিন দিলে সামাজিক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারে। মুক্তি পেলে অভিযুক্ত আবার একই অপরাধ করবে বলে মত আদালতের। অবশ্য মানুষ নিয়ে ‘ভাবাবেগ’ অনুপস্থিত থাকলেও গোরু নিয়ে ভাবাবেগ এদেশে এই প্রথম নয়। এর আগে একাধিকবার গোরুকে জাতীয় পশু ঘোষণার দাবি উঠেছে। ২০১৯ সালে হিন্দু ধর্মগুরুদের এক সভাতে এই দাবি ওঠে। ২০১৭ সালে রাজস্থান হাইকোর্টের বিচারপতি মহেশ শর্মা এক মামলার শুনানিতে গোরুকে জাতীয় পশু ঘোষণার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। মানুষ নাকি গোরু - দামী কে? তার নিষ্পত্তি এখনও বোধহয় কোনো আদালতের মুখে শোনা যায়নি। গোরু অথবা মানুষ - কার মৌলিক অধিকার রক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত তাও এখনও পর্যন্ত বলেনি কোনো আদালত।
আদালতের কথাই যখন আলোচনায় এসে পড়ল তখন এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা বলেই ফেলি। গত ৩১ আগস্ট রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবতের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন সদ্য প্রাক্তন হওয়া দেশের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। নাগপুরে আরএসএস’র সদর দপ্তরে মোহন ভাগবতের সঙ্গে এই বৈঠক নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ সরগরম রাজনৈতিক মহল। কারণ হাতেগরম উদাহরণ সামনেই আছে। বোবদের ঠিক আগের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ অবসর নেওয়ার কিছুদিন পরেই বিজেপি’র তরফ থেকে রাজ্যসভায় মনোনীত সাংসদ হয়েছেন। যে ঘটনা তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করেছিল জাতীয় রাজনীতিতে। এবার কি তবে বোবদে? না। সে প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা। যদিও আরএসএস কর্মকর্তারা এই বৈঠকের কথা প্রকাশ্যে অস্বীকার করেছেন। তবে সূত্র মারফত জানা গেছে, মহল এলাকায় আরএসএস’র প্রধান কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেল চারটে থেকে পাঁচটার মধ্যে এই বৈঠক হয়েছে। নাগপুরেরই বাসিন্দা এস এ বোবদে। বহু বছর এই শহরেই তিনি প্র্যাক্টিস করেছেন। কিন্তু এর আগে কখনো তিনি আরএসএস সদর দপ্তরে যাননি বা মোহন ভাগবতের সাথে দেখা করেননি। এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্ঘ সদর দপ্তরে গিয়ে মোহন ভাগবতের সাথে দেখা করা নিছকই সৌজন্য ছিল কিনা তা বুঝতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
উপ - সংহার-এর পর
‘কালোয় ঢেকেছে আলো - জানে না তো কেউ’। তিনি কেন ঘুরেফিরে বারবার আমার লেখায় ঢুকে পড়েন জানিনা। তাঁর সৃষ্টিকে অস্বীকার করার ধৃষ্টতা যেন কোনোদিনই না হয়। যে যার মতো করে ‘তাঁর’ লেখাকে ব্যাখ্যা করতেই পারেন। আমার কাছে তাঁর ফেলে যাওয়া প্রতিটি অক্ষর, শব্দ, পঙ্ক্তি রক্তমাংসের, আজও জীবন্ত। শ্বাস প্রশ্বাস নেয়। আজকের বিশ্বতে সত্যিই তো আলো ক্রমশ ঢেকে যাচ্ছে কালোতে। আমরা কেউ বুঝছি। কেউ বুঝছি না। কেউ বুঝতে চাইছি না - পুরানো সঞ্চয় নিয়ে ফিরে ফিরে শুধু বেচাকেনা/আর চলিবে না। এখন সময় তাই নতুন করে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখার। সামনের দিকে তাকানোর। এবার “তুফানের মাঝখানে/নূতন সমুদ্রতীর - পানে/দিতে হবে পাড়ি।”