E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ২৫ সংখ্যা / ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ / ২১ মাঘ, ১৪২৮

চার পৌর নিগমের নির্বাচনে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২০১১ সালের পর থেকে রাজ্যে ভোট লুঠের যে ট্র্যাডিশন শুরু হয়েছে হালের কলকাতা পুরসভা নির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। বিগত দুটো পঞ্চায়েত নির্বাচন, পুরসভা নির্বাচন, লোকসভা অথবা রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন - কমিশন যতই কোনো ত্রুটি খুঁজে না পাক, কোনোক্ষেত্রেই নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে সে দাবি কেউ করতে পারবেন না। সে লুঠের সাক্ষী বিরোধী রাজনৈতিক দল, মিডিয়া এবং সাধারণ মানুষ।

ঠিক এই আবহেই আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি হতে চলেছে রাজ্যের চার পুরসভার নির্বাচন। আসানসোল, চন্দননগর, বিধাননগর এবং শিলিগুড়ি। এছাড়া ২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮টি পৌরসভার নির্বাচন হবার কথা। এই দুই পর্বের নির্বাচনের ফলাফল একই দিনে করার দাবি জানিয়েছে রাজ্য বামফ্রন্ট। ভোটের ফলাফল কী হবে সে বিতর্কে না ঢুকেও প্রশ্ন করাই যায়, অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হলে কী হতে পারে? শতকরার বিচার, আসনের বিচারই যে সবসময় শেষ কথা নয় তা অতীতেও বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। এমনকী এত অবাধ লুঠতরাজ, হাঙ্গামা, বুথ দখলের পরেও হালের কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের ফলাফল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারলে ফলাফল কী হতে পারে ! সমস্ত শতকরা আর আসনের হিসেব এদিক ওদিক হতে সময় লাগে কয়েক মুহূর্ত। হ্যাঁ। অবশ্যই যদি কমিশন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীরা দোলনায় বসে দোল খাবার পরিবর্তে নিজেদের কর্তব্য পালন করেন এবং মানুষের ভোট দেবার অধিকার যদি কেড়ে না নেওয়া হয়।

আসানসোলে ১০৬ আসনে, চন্দননগরে ৩৩ আসনে, বিধাননগরে ৪১ এবং শিলিগুড়ির ৪৭ আসনে নির্বাচন হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। এই নির্বাচন গত ১১ বছরের বাঁধাগতে হবে, নাকি মানুষকে বুথ পর্যন্ত পৌঁছাতে দেওয়া হবে তা জানতে ১২ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। দামাল ছেলেরা ‘খেলা হবে’ স্লোগান তুলে ইভিএম আগলে দাঁড়িয়ে থাকবেন কিনা তারও। আরও একবার রক্তাক্ত সাংবাদিকদের ছবি দেখতে হবে কিনা সে জবাব দিতে পারবে একমাত্র ১২ তারিখ।

যদিও হালের পুরসভা ভোটে সামান্য হলেও আশা জাগিয়েছে কলকাতা। শাসকের রক্তচক্ষু, হামলার প্রতিরোধ করেই দাঁতে দাঁত চেপে বহু বুথেই লড়ে গেছেন কমরেডরা। সেদিক থেকে এটাকে যদি প্রতিরোধের শুরু বলে ধরে নেওয়া হয়, তাহলে ১২ ফেব্রুয়ারি অন্য ছবিই হয়তো দেখা যাবে। প্রতিরোধ একদিনে শুরু হয়না। ধীরে ধীরে দানা বাঁধে। ১২ ফেব্রুয়ারি হোক প্রতিরোধের দিন। ভোট লুঠ আটকানোর দিন। লড়াই শুরুর দিন।