E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ২৫ সংখ্যা / ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ / ২১ মাঘ, ১৪২৮

সিপিআই(এম) মধ্যপ্রদেশ রাজ্য ষোড়শ সম্মেলন


সিপিআই(এম) মধ্যপ্রদেশ রাজ্য ষোড়শ সম্মেলন গত ১৬-১৮ জানুয়ারি ভুপালে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। প্রতিনিধি ও দর্শক মিলিয়ে সম্মেলনে ১৯৭ জন উপস্থিত ছিলেন। রাজ্য পার্টির প্রবীণ নেতা জে কে পিপ্পল পার্টির রক্তপতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের সূচনা করেন।

উদ্বোধনী ভাষণে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, দেশে দারিদ্র্য, বেকারি এবং ক্ষুধা বেড়েই চলেছে। মুদ্রাস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলছে। মোদি সরকার এই প্রতিটি বিষয়কে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণের লড়াই-সংগ্রামও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত চার বছরে শ্রমিকশ্রেণি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তিনটি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট সংগঠিত করেছে। গত এক বছর ধরে চলা কৃষকদের ঐতিহাসিক সংগ্রাম কেন্দ্রের সরকারকে দাবি মেনে নিতে বাধ্য করেছে। ছাত্র-যুব-মহিলাও ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই চালাচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদি ফের ক্ষমতায় আসার পর দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো, ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব, সামাজিক ন্যায় এবং কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ওপর আঘাত নামিয়ে এনেছে এবং তাকে ক্রমাগত দুর্বল করে চলেছে। বেআইনি আটক এবং গণতান্ত্রিক কার্যকলাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা বেড়ে চলেছে। সাংবাদিকদেরও দেশদ্রোহে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। মহিলা ও দলিতদের ওপর নির্যাতন ঘনীভূত হচ্ছে। করপোরেটের হাতে জমি তুলে দিয়ে আদিবাসীদের নিজ বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। দেশের সম্পদের লুট চলছে। বেসরকারিকরণ হচ্ছে যথেচ্ছভাবে। মোদি করপোরেটদের ১১ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে। আরএসএস’র লোকেদের রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করে রাজ্য সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করছে। ভারতকে একটা হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে। সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির প্যারেডে কেরালা সরকারের পাঠানো শ্রীনারায়ণগুরুর ওপর নির্মিত ট্যাবলো কেন্দ্রীয় সরকার বাতিল করেছে। তারা বলেছে, আদি শঙ্করাচার্যের ওপর ট্যাবলো হোক। কেন্দ্রীয় সরকার সব কিছুই করছে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে। কিন্তু ভারতের জনগণ স্বাধীনতা সংগ্রামে এই সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

সম্মেলনে রাজনৈতিক-সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী রাজ্য সম্পাদক যশবিন্দর সিং। এই প্রতিবেদনের ওপর আলোচনায় ৫৮ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। প্রতিনিধিদের আলোচনার ওপর জবাবি ভাষণ দেন বিদায়ী সম্পাদক। প্রতিবেদনটি সর্বসম্মতিতে সম্মেলনে গৃহীত হয়েছে। সম্মেলনকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য সুভাষিণী আলি এবং পার্টির ছত্তিসগড় রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় পারতে। মধ্যপ্রদেশেই প্রথম কেন্দ্রের নয়া শিক্ষা নীতির রূপায়ণ শুরু হয়েছে। সম্মেলনে নয়া শিক্ষা নীতি বিরোধী প্রস্তাব সহ একাধিক জনস্বার্থ সম্পর্কিত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

৩০ সদস্যের রাজ্য কমিটি এবং ২৩তম পার্টি কংগ্রেসের প্রতিনিধি সম্মেলন থেকে সর্বসম্মতিতে নির্বাচিত হয়েছে। নবনির্বাচিত রাজ্য কমিটির প্রথম সভা থেকে যশবিন্দর সিং সম্পাদক হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। বাদল সরোজ, সন্ধ্যা শৈলি, জে কে পিপ্পল, বুধসেন সিং গণ্ড এবং জাহুর খান-কে নিয়ে গঠিত সভাপতিমণ্ডলী সমগ্র সম্মেলন পরিচালনা করেন।