৫৯ বর্ষ ২৫ সংখ্যা / ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ / ২১ মাঘ, ১৪২৮
সংযুক্ত কিষান মোর্চার ডাকে দেশজুড়ে পালিত ‘বিশ্বাসঘাতকতা দিবস’
বিহারে বিশ্বাসঘাতকতা দিবসে বিক্ষোভে শামিল শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুররা।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ কেন্দ্রের সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতিভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ৩১ জানুয়ারি দেশজুড়ে ‘বিশ্বাসঘাতকতা দিবস’ পালন করল সংযুক্ত কিষান মোর্চা। এদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তীব্র প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ধ্বনিত করে কৃষক-খেতমজুররা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সরকারের লিখিত প্রতিশ্রুতিতে দেওয়া দাবিগুলি পূরণ না হলে দেশজুড়ে ফের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন তারা। কেন্দ্রের মোদি সরকারের এই বিশ্বাসভঙ্গের বিরুদ্ধে গোটা দেশে কয়েকশো জেলায়, ব্লক স্তরে সংগঠিত এই কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিলেন শ্রমিক-কর্মচারীরাও।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো গোটা কৃষিক্ষেত্রকে বেসরকারি পুঁজি ও কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিয়ে তাদের মুনাফার পথ প্রশস্ত করতে কৃষি ও কৃষক বিরোধী তিনটি আইন নিয়ে আসে। ‘ফার্মার্স প্রোডিউস, ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) অ্যাক্ট ২০২০; ফার্মার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন) এগ্রিমেন্ট অন প্রাইম অ্যাসিউরেন্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিস অ্যাক্ট ২০২০ এবং এসেন্সিয়াল কমোডিটি (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট ২০২০ - এই তিনটি আইন বিরোধীদের মতামতকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে পাস করিয়ে নেয়। দেশে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের আবর্তে ৫ জুন, ২০২০ কেন্দ্রের সরকার প্রথমে কৃষি সংক্রান্ত তিনটি অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসে। এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করা হয় এবং ১৭ সেপ্টেম্বর কোনোরকম বিতর্ক ছাড়াই এই তিন কৃষি বিল লোকসভায় পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। ২০ সেপ্টেম্বর রাজ্যসভায় কোনো আলোচনার সুযোগ না দিয়ে এই বিল পাশ করানো হয়। আর ২৭ সেপ্টেম্বর বিরোধীদের সমস্ত আবেদন অগ্রাহ্য করে এই তিন কৃষি বিলে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি। এর মধ্য দিয়ে এই তিনটি বিল আইনে পরিণত হয়।
একেবারে শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি ও কৃষক বিরোধী এই তিনটি আইনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদে সোচ্চার হয় কৃষক সংগঠনগুলি। সংসদের ভিতরে বাইরে প্রতিবাদ ধ্বনিত করে সিপিআই(এম) সহ বামপন্থী ও অন্যান্য বিরোধী দল। মূলত পাঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে শুরু হয়ে প্রতিবাদী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দেশের সমস্ত প্রান্তে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, ধরনা, অবস্থান, রাস্তা রোকো ও রেল রোকো ইত্যাদি বিভিন্নভাবে আন্দোলন চলতে থাকে। এই প্রতিবাদ আন্দোলনেরই প্রবহমানতায় দেশের পাঁচশোর বেশি কৃষক সংগঠন সম্মিলিতভাবে গড়ে তোলে আন্দোলনের মঞ্চ ‘সংযুক্ত কিষান মোর্চা’। এই মোর্চার নেতৃত্বেই দিল্লি সীমান্তবর্তী সিঙ্ঘু, টিকরি, শাহজাহানপুর প্রভৃতি অঞ্চলে ট্রাক্টর, ট্রলি নিয়ে এসে ২৭ নভেম্বর ২০২০ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা সহ বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকরা। প্রবল শীত, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ, ঝড়-জলের মধ্যে এবং সরকারের তীব্র দমন-পীড়ন, বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে এই অবস্থান চলতে থাকে। পাশাপাশি উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যেও প্রতিবাদ আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। এই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৭১৫ জন কৃষকের মৃত্যু হয়। তবুও এই আন্দোলনকে দমাতে পারেনি কেন্দ্রের সরকার। এই আন্দোলন চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বেশ কয়েকবার আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কেন্দ্রের অসংবেদনশীল অনমনীয় মনোভাবের জন্য বৈঠকগুলি ফলপ্রসূ হয়নি। ক্রমান্বয়ে এই আন্দোলন ছড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং তা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। বিশাল বিশাল সমাবেশ, মিছিল, অবস্থান বিক্ষোভ ইত্যাদির পাশাপাশি পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে সংগঠিত হয়েছে সুবিশাল মহাপঞ্চায়েত। এই সমস্ত কর্মসূচিতে অংশ নেন হাজার হাজার কৃষক। তাঁরা কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে কেন্দ্রের সর্বনাশা তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকেন।
এভাবেই উত্তুঙ্গ আন্দোলনের শীর্ষে ১৯ নভেম্বর, ২০২১ প্রধানমন্ত্রী মোদি বাধ্য হয়ে এই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেন। ২৯ নভেম্বর সংসদে এই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিল অনুমোদিত হয়। ৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রের সরকার কৃষকদের দাবিগুলি মেনে নেবার লিখিত প্রতিশ্রুতি দেয় সংযুক্ত কিষান মোর্চাকে।
কেন্দ্রের সর্বনাশা তিন কৃষি আইন বাতিল সহ কৃষক আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল - ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে; বিদ্যুৎ বিল (সংশোধনী) ২০২০ বাতিল করতে হবে। এছাড়া কৃষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংক্রান্ত যে সব মামলা হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি ছিল কৃষকদের। তাঁরা দাবি জানিয়েছিল, শস্যের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো নিয়ে আইনের ১৪ এবং ১৫ ধারা প্রত্যাহার করে ফৌজদারি অপরাধ থেকে কৃষকদের অব্যাহতি দিতে হবে। কৃষকরা দাবি তুলেছিলেন শহিদ কৃষক পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল, লখিমপুর খেরির কৃষক হত্যায় অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনিকে বরখাস্ত করতে হবে। এই সমস্ত দাবিই মেনে নিয়ে তা পূরণের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্রের সরকার। হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশের সরকারও সংশ্লিষ্ট দাবিগুলি মেনে নেবার নীতিগত সম্মতি জানিয়েছিল। বিদ্যুৎ সংক্রান্ত বিলও সংযুক্ত কিষান মোর্চা সহ সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরেই আনা হবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রের সরকার।
কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও কৃষকদের দাবি পূরণের কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। তাই গত ১৫ জানুয়ারি সিঙ্ঘুতে আলোচনা করে কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির প্রতিশ্রুতিভঙ্গের প্রতিবাদে ৩১ জানুয়ারি দেশব্যাপী ‘বিশ্বাসঘাতকতা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংযুক্ত কিষান মোর্চা।
এই প্রতিবাদ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই ৩১ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার কৃষক খেতমজুর মিছিল-বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত করেছেন। এদিন সংযুক্ত কিষান মোর্চা এক বিবৃতিতে বলেছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থানের মতো উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে দক্ষিণের তামিলনাডু, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশেও এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন কয়েক হাজার আন্দোলনকারী। এছাড়াও গুজরাট, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরাতেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সারা ভারত কৃষক সভা, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন, সিআইটিইউ-সহ বিভিন্ন শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর সংগঠনগুলি ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন।
এদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ সভা থেকে সংযুক্ত কিষান মোর্চার প্রতিনিধিরা জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকের দপ্তরে গিয়ে রাষ্ট্রপতিকে লেখা এক স্বারকলিপি তুলে দেন। ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, আপনি অবগত আছেন যে, সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতৃত্বে দেশের কৃষক সমাজ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা এবং সমস্ত কৃষক বিরোধী নীতি বাতিলের লক্ষ্যে কেন্দ্রের কৃষক বিরোধী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে নজিরবিহীন আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। এই আন্দোলনের ফলে কৃষক বিরোধী আইন আপনার স্বাক্ষরদানের মাধ্যমে প্রত্যাহৃত হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর সংযুক্ত কিষান মোর্চা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ৬টি বকেয়া ইস্যুর প্রতি দৃষ্টিআকর্ষণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব সংযুক্ত কিষান মোর্চাকে ৯ ডিসেম্বর এক চিঠি দিয়ে সরকারের তরফে দাবি মেনে নেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আন্দোলন তুলে নেবার আবেদন জানান। এই লিখিত প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে সংযুক্ত কিষান মোর্চা ১১ ডিসেম্বর থেকে দিল্লি সীমান্ত সহ অন্যান্য স্থানে অবস্থান-বিক্ষোভ-প্রতিবাদ আন্দোলন স্থগিত রাখে।
ওই স্মারকলিপিতে প্রকৃত বাস্তব অবস্থার কথা তুলে ধরে মোর্চা জানিয়েছে, অত্যন্ত পরিতাপ ও ক্ষোভের সঙ্গে রাষ্ট্রপতিকে জানাচ্ছে যে, দেশের কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের সরকার বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ৯ ডিসেম্বরের চিঠিতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কেন্দ্রের সরকার কোনো প্রতিশ্রুতিই পূরণ করেনি। সেইজন্যই ৩১ জানুয়ারি কৃষক সমাজ দেশজুড়ে ‘বিশ্বাসঘাতকতা দিবস’ পালন করছে। একথা ক্ষোভের সঙ্গে উল্লেখ করে সংযুক্ত কিষান মোর্চা জানিয়েছে, কৃষকদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিচ্ছে বিজেপি সরকার। সরকার যদি নিজের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়িত না করে তাহলে কৃষকরা ফের আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন।
এদিনের কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, মিছিল ইত্যাদির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুলও পোড়ানো হয়েছে। এদিন বিভিন্ন জায়গায় কৃষক-খেতমজুরদের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন।
সংযুক্ত কিষান মোর্চা এদিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত করতে রাজ্যজুড়ে প্রচার আন্দোলনে সম্মিলিতভাবে শামিল হয়েছে বিভিন্ন কৃষক সংগঠন ও খেতমজুর সংগঠন। ‘মিশন উত্তর প্রদেশ’ শীর্ষক এই প্রচার অভিযানকে আরও জোরালো করার কথা উল্লেখ করে মোর্চা জানিয়েছে, আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে আগামী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবাদ কর্মসূচি
৩১ জানুয়ারি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণার প্রতিবাদে দেশের অন্যান্য প্রান্তের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও ‘বিশ্বাসঘাতকতা দিবস’ পালিত হয়েছে। এদিন রাজ্যের ৩২৬টি জায়গায় এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এই কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেবার জন্য রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কৃষক সভার সভাপতি বিপ্লব মজুমদার এবং সম্পাদক অমল হালদার।
বিশ্বাসঘাতকতা দিবসে কলকাতায় এসকেএম’র বিক্ষোভ সভা।
রাজ্যের প্রায় প্রতিটি ব্লকে এদিন কৃষকরা জমায়েত হয়ে বিশ্বাসঘাতকতা দিবস পালন করেন। কোনো কোনো ব্লকে একাধিক জায়গায় এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
কলকাতার ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলে সংযুক্ত কৃষক মোর্চার ডাকে সমবেত হয়ে কৃষকরা বিক্ষোভ সভা করেন এবং নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল পোড়ানো হয়। এখানে এই কর্মসূচিতে অংশ নেন সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতা অভীক সাহা, সারা ভারত কৃষক সভার সভাপতি বিপ্লব মজুমদার, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের সম্পাদক তুষার ঘোষ সহ কার্তিক পাল, হরিপদ বিশ্বাস, গোপাল বিশ্বাস, সমীর পূততুণ্ড, সুশান্ত ঝা, অজিত মুখার্জি প্রমুখ, বিভিন্ন কৃষক সংগঠন ও অন্যান্য গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
হুগলির মশাটে বিক্ষোভ মিছিল।
এছাড়াও এদিন হাওড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর মালদহ সহ রাজ্যের সর্বত্র এই প্রতিবাদী কর্মসূচি সংগঠিত হয়েছে।
ত্রিপুরায় কর্মসূচি
এদিন ত্রিপুরাতেও বিভিন্ন স্থানে ‘বিশ্বাসঘাতকতা দিবস’ পালিত হয়েছে। গণমুক্তি পরিষদের সভাপতি জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন, এই আন্দোলনের মাধ্যমে শুধু সংযুক্ত কিষান মোর্চার দাবি আদায়ই নয়, কৃষক বিরোধী, জুমিয়া বিরোধী, শ্রমিক বিরোধী মোদি সরকারের নীতি পরিবর্তনের আন্দোলনকে তীব্র করতে হবে। যদি সরকার নীতি না বদলায়, তাহলে সরকার বদলের লড়াই তীব্র করতে হবে। তিনি বলেন, ত্রিপুরাতেও বিজেপি সরকার বিভিন্নভাবে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেবার সমস্ত ধরনের চক্রান্ত চলছে। মিথ্যা জোচ্চুরি করে চলছে এই সরকার। কৃষক, খেতমজুর, জুমিয়া, কর্মপ্রার্থী, যুবক, শ্রমজীবী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।
তিনি বলেন, গত ৪৫-৪৬ মাসে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই সরকার। হাটে বাজারে সর্বত্র মানুষ তাদের ক্ষোভপ্রকাশ করছেন। শাসকদল খুব ভালোভাবে অনুমান করতে পারছে তাদের দিন শেষ। তাই গত ৭০-৭৫ দিনে একবার সশরীরে সহ তিনবার প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যে আসতে হয়েছে। শেষরক্ষা করার চেষ্টা করছে।