৫৯ বর্ষ ২৯ সংখ্যা / ৪ মার্চ, ২০২২ / ১৯ ফাল্গুন, ১৪২৮
তামিলনাড়ুর পুর ও পঞ্চায়েত স্তরের ভোটে বিপুলভাবে জয়ী সেকুলার প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্ট
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ডিএমকে নেতৃত্বাধীন সেকুলার প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্ট (এসপিএফ) তামিলনাড়ুর সদ্য অনুষ্ঠিত স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলির ভোটে বিপুলভাবে জয়ী হলো। এই ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল জোটের অংশ সিপিআই, সিপিআই(এম)এবং কংগ্রেস। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এই রাজ্যে প্রায় দশ বছর পরে স্থানীয়স্তরের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। যেখানে রাজ্যের ২১টি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েছে এসপিএফ। এই জোট মিউনিসিপ্যালিটি এবং নগর পঞ্চায়েত পর্যায়ে জিতেছে মোট আসন সংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ আসনে। কর্পোরেশন ও পৌরসভাতে বামদলগুলি যৌথভাবে বিজেপি’র থেকে বেশি আসন জিতেছে।
এই জোটের অংশ হিসেবে সিপিআই(এম) মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন নির্বাচনে ৬৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২৪টিতে জয়ী হয়েছে। রাজ্যের মিউনিসিপ্যালিটিগুলিতে ১৬৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সিপিআই(এম) জিতেছে ৪১টি আসনে। নগর পঞ্চায়েত পর্যায়ে ৩৭৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১০১টি আসন জিতেছে। সিপিআই(এম) প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা জয়ী হয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৫০ শতাংশ মহিলা প্রার্থী।
একুশটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে এবার সিপিআই(এম)’র ১২ জন প্রতিনিধি থাকবেন এবং মিউনিসিপ্যালিটি ও নগর পঞ্চায়েত পর্যায়ে ২১টি জেলায়ও প্রতিনিধিত্বে থাকবে সিপিআই(এম)।
তামিলনাড়ুর এই পুরসভা এবং পুরনিগম পর্যায়ের নির্বাচনে ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল মহিলাদের জন্য। দেখা গেছে, নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যক মহিলারা অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাঁদের মধ্যে কম বয়সীরাও রয়েছেন, যাঁরা রাজনৈতিক কার্যক্রমে প্রথমবার অংশ নিলেন।
অন্যদিকে এআইএডিএমকে বিজেপি’র সঙ্গে তাদের আঁতাত ছিন্ন করে লড়েছে এবারের এই পুর ও পঞ্চায়েত পর্যায়ের নির্বাচনে। ব্যাপক অর্থ এবং ভাড়া করা কর্মীদের ব্যবহার করেও চেন্নাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ৩০৮টি আসনের মধ্যে তারা মাত্র একটিতে জিতেছে। নগর পঞ্চায়েত পর্যায়ে সারা রাজ্য থেকে কন্যাকুমারী জেলায় ২০০টি আসনে জিতেছে তারা ভোট ভাগাভাগির ফলে। ২০১১ সালে তারা পেয়েছিল মাত্র ১.৭ শতাংশ ভোট। টাকা এবং মিডিয়াকে ব্যবহার করে তারা এবারে সারা রাজ্যে সামগ্রিকভাবে ভোট বাড়াতে পেরেছে ২.৪ শতাংশ। কিন্তু গোটা রাজ্যের ১০ টি জেলায় তারা খাতা খুলতে পারেনি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ডিএমকে নেতৃত্বাধীন সেকুলার ফ্রন্ট এমন বেশ কয়েকটি এলাকায় সাফল্য পেয়েছে এই নির্বাচনে, যেখান থেকে গত বিধানসভা নির্বাচনে এআইএডিএমকে-র কাছ থেকে আসন ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছিল। সেকুলার প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্টের এই জয় প্রমাণ করলো যে, সাম্প্রদায়িক শক্তির কার্যকলাপের ওপর চূড়ান্ত নজর রেখে এবং রাজ্যের রাজনৈতিক আবহাওয়াকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত রাখার ক্ষেত্রে সঠিক দায়িত্ব পালনের জন্যই মানুষ এভাবে পাশে থেকেছেন এই ফ্রন্টের। জিতিয়েছেন তাদের। যার ফলে এখানে পৌর ও পঞ্চায়েতস্তরে প্রায় মুছে গেছে বিজেপি।