৫৯ বর্ষ ২৯ সংখ্যা / ৪ মার্চ, ২০২২ / ১৯ ফাল্গুন, ১৪২৮
প্রসঙ্গঃ আন্তর্জাতিক নারী দিবস
আবুবকর সেখ
ক্লারা জেটকিন - জার্মানির কমিউনিস্ট নেত্রী প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনের প্রধান উদ্যোক্তা।
প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়। বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবসটি উদ্যাপন করে থাকেন। নারীদের প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জনই মূল উদ্দেশ্য।
দিবসটি পালনের পিছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস। ১৮৫৭ সালে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা এবং কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। কিন্তু সেই মিছিলে সরকারের লেঠেল বাহিনী তাদের উপর দমন-পীড়ন নামিয়ে এনেছিল। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত হয় নারী সমাবেশ। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে এই সমাবেশ ছিল সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ক্লারা জেটকিন (১৮৫৭-১৯৩৩) ছিলেন জার্মান মার্কসবাদী তাত্ত্বিক, কমিউনিস্ট অ্যাক্টিভিস্ট ও নারী অধিকার বিষয়ক অ্যাডভোকেট।
১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে ১৭টি দেশের ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। এই সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে প্রতি বছর নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সম্মেলনে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হবে। দিবসটি পালন করার জন্য এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করে। ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। জাতিসংঘ দিবসটি পালন করার জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। তখন থেকেই পৃথিবী জুড়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে নারীদের সম-অধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে। সারা বিশ্বের সকল দেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
বিশ্বের প্রায় ১৮-২০টি দেশ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। এই দেশগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো - চীন, নেপাল, তাজিকিস্তান, ভিয়েতনাম, রাশিয়া, কিউবা, লাওস, কম্বোডিয়া প্রভৃতি।
শোষণভিত্তিক শ্রেণি বিভক্ত সমাজে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ শোষণ-বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকে। কিন্তু নারীরা সর্বাধিক বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকেন। আর এর বিরুদ্ধে শুধু নারীরাই সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ করেছেন এমনটা নয়। প্রবহমানকাল থেকে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সমাজ সংস্কারক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এগিয়ে এসেছেন।
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় যার কলমে আগুন ঝড়ত সেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) তাঁর বিখ্যাত নারী কবিতায় বলেন, ‘‘আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।/ বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
আবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) তাঁর অন্যতম ‘সবলা’ কবিতায় অনেকটা আর্তি জানিয়ে নারীদের হয়ে প্রশ্ন করেন, ‘‘নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার/ কেন নাহি দিবে অধিকার/...’’
তার পরেই কিছুটা প্রতিবাদের সুরে বলেন, ‘‘নত করি মাথা/ পথপ্রান্তে কেন রব জাগি/ ক্লান্তধৈর্য প্রত্যাশার পূরণের লাগি/ দৈবাগত দিনে?’’
কিন্তু পরক্ষণেই নারীকে দিয়ে বিদ্রোহের কথা বলিয়েছেন, ‘‘যাব না বাসরকক্ষে বধূবেশে বাজায়ে কিঙ্কিণী -’’
এই কবিতায় নারীর কণ্ঠে আবারো উচ্চারিত হলো, ‘‘..., আমারে রেখো না বাক্যহীনা -/ রক্তে মোর জাগে রুদ্রবীণা।/ উত্তরিয়া জীবনের সর্বোন্নত মুহূর্তের ’পরে/ জীবনের সর্বোত্তম বাণী যেন ঝরে/ কণ্ঠ হতে/ নির্বারিত স্রোতে।’’
আমরা দেখেছি সামন্তযুগীয় রীতিনীতি নারীকে সমানাধিকার দেয়নি, পছন্দমতো স্বামী নির্বাচনের অধিকারও দেয়নি। উইলিয়াম শেকসপিয়র (১৫৬৪-১৬১৬) তাঁর নাটকে নারীর এই অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছেন। ‘‘Othello’’ নাটকে Desdemona’র চরিত্র এই ক্ষেত্রে অনন্য। অভিজাত পরিবারের কন্যা হয়েও একজন কুৎসিত চেহারার কালো আফ্রিকান Othello-কে বিবাহ করেন পিতা Brabantioর’ ইচ্ছার বিরুদ্ধে। রাজ পরিষদে দাঁড়িয়ে তাঁর পছন্দ করা স্বামীর প্রতি কর্তব্যবোধের যে বাণী ডেসডেমোনার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল, তা নারীর অধিকারের প্রশ্নের শুধু নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে নিপীড়িত জনগণের সমানাধিকারের সংগ্রামে অতুলনীয় সাহিত্যর্কীতি হিসেবে ভাস্বর হয়ে থাকবে।
ডিউক ডেসডেমোনাকে প্রশ্ন করেন,‘‘What would you, Desdemona?’’
ডেসডেমোনা প্রত্যুত্তরে দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘‘That I love the Moor to live with him.’’ (Page-45)
শেকসপিয়রের আরেকটি নাটক ‘A Midsummer Night's Dream’- এর নায়িকা Hermia’র চরিত্র এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত উজ্জ্বল। তাঁর পিতা Egeus যখন গর্ব করে বলেন যে তাঁর কন্যাকে পছন্দমতো পাত্র Demetrius-এর হাতে তুলে দেবার অধিকার আছে। তখন হার্মিয়া অবজ্ঞা ও ঘৃণার সঙ্গে জবাব দেন, ‘‘O hell! to choose love by another’s eye’s.’’ (Page: 6) অর্থাৎ ‘‘হায় অন্যের চোখ দিয়ে আমার স্বামীকে আমায় পছন্দ করতে হবে’’! শেষ পর্যন্ত হার্মিয়া তাঁর পছন্দমতো Lysander-কেই বিবাহ করেন।
নিঃসন্দেহে শেকসপিয়র ষোড়শ শতাব্দীর ইংরেজি সাহিত্যের পুনঃজাগরণের যুগে (Renaissance) সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি ছিলেন। তাসত্ত্বেও ঘোর সামন্তবাদী যুগে সেই সময়ে নারীদের সমতার প্রশ্নে কথা বলা খুব সহজ ব্যাপার ছিল না।
আরেক ইংরেজ লেখিকা ম্যারি ওলস্টোনক্র্যাফ্ট (১৭৫৯-১৭৯৭) অষ্টাদশ শতাব্দীর একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখিকা ছিলেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা, ‘‘A vindication of the rights of woman’’ (১৭৯২), যেখানে তিনি যুক্তি দিয়ে দেখান যে নারী প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষ অপেক্ষা হীন, এমনটা নয়। শিক্ষার অভাবেই নারী পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই নারীর শিক্ষার উপর তিনি অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন।
আরেক দার্শনিক ও উচ্চ বুদ্ধিদীপ্ত দার্শনিক, পলিটিক্যাল ইকনমিস্ট ও পার্লামেন্টারিয়ান জন স্টুয়ার্ট মিল নারীর ভোটাধিকারের প্রশ্নে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জোরালো সওয়াল করেছিলেন।
আমাদের দেশের অর্থাৎ ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু তাঁর ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া, অ্যান অটোবায়োগ্রাফি এবং গ্লিম্পসেস অব ওর্য়াল্ড হিস্ট্রি গ্রন্থ তিনটিতে নারীর সমানাধিকারের কথা তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববন্দিত ঐতিহাসিক ইরফান হাবিব তাঁর ‘জাতীয় আন্দোলন, মতাদর্শ ও ইতিহাস চর্চা’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘‘ঘটনাচক্রে তাঁর তিনটি বইতেই নারীমুক্তির নানাদিক (যদিও সুনির্দিষ্টভাবে ‘মুক্তি’ শব্দটি ব্যবহার করেননি) উঠে এসেছে। গ্লিম্পসেস অফ ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি বইতে ৬৬০ পৃষ্ঠাতে লেনিনকে উদ্ধৃত করে নেহরু বলছেন ‘‘কোনো জাতি স্বাধীন হতে পারে না, যদি তাদের অর্ধেক অংশ দাসত্বে বাঁধা থাকে।’’ পর্দা ব্যবস্থা এবং মহিলাদের গৃহবন্দি করে রাখার প্রচেষ্টা সম্পর্কে তাঁর ঘৃণা বহু জায়গায় প্রকাশ করেছেন; এবং এই প্রসঙ্গে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, ১৯৩১ সালে কংগ্রেসের করাচি অধিবেশনের প্রস্তাবে যে মৌলিক অধিকারের কথা বলা ছিল তার খসড়া তিনিই তৈরি করেছিলেন, যেখানে মহিলাদেরও সমান নাগরিক অধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।’’ (পৃষ্ঠাঃ ৫৬)
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১) ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট বাঙালি, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার ছিলেন। তিনি বিধবা বিবাহ ও স্ত্রী শিক্ষার প্রচলন করেন। পাশাপাশি বহু বিবাহ ও বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক অভিশাপ দূরীকরণে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম দেশের মানুষ আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে থাকেন। নারী মুক্তি আন্দোলনের প্রবল সমর্থক ছিলেন তিনি। বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় ১৮৫৬ সালের ২৬ জুলাই বড়লাট লর্ড ক্যানিং আইন প্রণয়ন করে বিধবা বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি প্রদান করেন। নারী শিক্ষার প্রসারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়।
অন্যদিকে রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩) ছিলেন বাংলার নবজাগরণের আদি পুরুষ। তিনি সতীদাহ প্রথা রদ করেছিলেন।
এবিষয়ে মার্কস ও এঙ্গেলস ১৮৪৮ সালে পৃথিবী কাঁপানো তাৎপর্য নিয়েই রাজনৈতিক দলিলের আত্মপ্রকাশ করেন - ‘‘কমিউনিস্ট পার্টির ইস্তাহার’’। বুর্জোয়া সমাজে বুর্জোয়ারা নারীদের কোন দৃষ্টভঙ্গি নিয়ে দেখে থাকেন তার গভীর ও উৎকৃষ্ট বিশ্লেষণ করেছেন বইটিতে। কার্ল মার্কস এ প্রসঙ্গে বলেন,‘‘সমস্ত বুর্জোয়াশ্রেণি সমস্বরে আর্তনাদ করে বলেন - কিন্তু তোমরা কমিউনিস্টরা যে নারীদের উপর যৌথ-ভোগ অধিকার প্রবর্তন করবে’’।
বুর্জোয়ারা নিজের স্ত্রীকে নিতান্ত উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবেই দেখে থাকে। তাই যখন সে শোনে যে, উৎপাদনের যন্ত্রগুলির সর্বজনীন ব্যবহার করার কথা তখন নারীদের ভাগ্যেও অনুরূপ সকলের ভোগ্য হতে হবে, স্বভাবতই এছাড়া আর কোনও সিদ্ধান্তে সে আসতে পারে না। তার মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহ জাগে না যে, আসল লক্ষ্য হলো কেবল উৎপাদনের যন্ত্ররূপে নারীর অবস্থার লোপ-সাধন।
‘‘তাছাড়া, নারীদের উপর সর্বসাধারণের অধিকারটা কমিউনিস্টরা প্রকাশ্যে ও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করবে - এই ভান করে আমাদের বুর্জোয়ারা যে নির্দোষ ক্রোধ দেখায় তার চেয়ে হাস্যকর কিছু নেই। নারীকে সাধারণের সম্পত্তি করার কোনো প্রয়োজন কমিউনিস্টদের নেই; প্রায় স্মরণাতীতকাল থেকে সে প্রথার প্রচলন আছে।
সামান্য বেশ্যার কথা না হয় ছেড়ে দেওয়াই হলো, মজুরদের স্ত্রী-কন্যা হাতে পেয়েও আমাদের বুর্জোয়ারা সন্তুষ্ট নয়, পরস্পরের স্ত্রীকে ফুসলে আনতেই তাদের পরম আনন্দ।
বুর্জোয়া বিবাহ হলো আসলে সাধারণভাবে বহু স্ত্রী রাখার ব্যবস্থা। সুতরাং কমিউনিস্টদের তীব্র ভর্ৎসনা বড়োজোর এই বলে সম্ভব যে, ভণ্ডামির আড়ালে নারীদের উপর সাধারণের যে অধিকার লুকানো রয়েছে তার প্রতিস্থাপনে তারা প্রকাশ্য আইনসম্মত রূপ দিতে চায়। এটুকু ছাড়া এ কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা লোপের সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যবস্থা থেকে উদ্ভূত নারীদের উপর সাধারণ অধিকারের অবসান ঘটবে, অর্থাৎ প্রকাশ্য, ঘরোয়া, দুই ধরনের বেশ্যাবৃত্তিই শেষ হয়ে যাবে।’’ (পৃষ্ঠাঃ ৪৩-৪৪)
উপরের উদ্ধৃতিতে মার্কস যে সূত্রায়ন করেছেন, তাতে সমাজের শুধু নারী নয় সব অংশের মানুষের মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। ‘এ কথা স্বতঃসিদ্ধ যে আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থার লোপের সঙ্গে সঙ্গে’ - অর্থাৎ সম্পত্তির ব্যক্তি মালিকানার সম্পর্কের অবসান ঘটবে। আর যা হবে তাহলো সমাজতন্ত্রের মধ্য দিয়ে সাম্যবাদী সমাজে উত্তরণ। এছাড়া দ্বিতীয় কোনো মতবাদ ও পথ খোলা নেই। এই চেতনার স্তরে সমস্ত অংশের মানুষকে উত্তরণ ঘটাতে পারলেই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যাবে।
আমাদের দেশে বর্তমান আরএসএস পরিচালিত ফ্যাসিস্টধর্মী সাম্প্রদায়িক বিজেপি দল মনুবাদের উপর ভিত্তি করে নারীদের উপর মধ্যযুগীয় বর্বরতা নামিয়ে আনছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাম্প্রদায়িকীকরণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ধর্মকে অজুহাত করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেবার ষড়যন্ত্র চলছে। সমাজ থেকে এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নির্মূল করতে না পারলে নারী সমাজের উপর জুলুমবাজি ক্রমাগত বাড়বে। এই সময়ে এই অপশক্তিকে শাসন ক্ষমতা থেকে তাড়াতে পারলেই নারীসহ সমাজের সব অংশের প্রগতিশীল মানুষের স্বাধীন বিকাশের দাঁড় উন্মোচিত হবে। তাই এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে সচেতন করাও হবে প্রধান কর্তব্য।