৬০ বর্ষ ৩৮ সংখ্যা / ৫ মে, ২০২৩ / ২১ বৈশাখ, ১৪৩০
হ্যারি বেলাফন্টেঃ একজন সম্পূর্ণ শিল্পী
কঙ্কণ ভট্টাচার্য
২৫ এপ্রিল, ২০২৩ ছিয়ানব্বই বছর বয়সে বিদায় নিলেন জনপ্রিয়তায় দুনিয়া কাঁপানো কৃষ্ণাঙ্গ গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা ও প্রযোজক হ্যারি বেলাফন্টে। ১৯৫০-এর দশকের শুরুতে হলিউড থেকে যাত্রা শুরু করে যিনি খুব দ্রুত সারা বিশ্বের ক্যালিপসো গানের সম্রাট হিসাবে খ্যাত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি শুধু বেশ কিছু বক্স অফিস বিস্ফোরণ ঘটানো গান আর ফিল্ম রেখে যাননি, তাঁর জীবনের গ্যালারিতে শোভা পাচ্ছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, যেখানে গানের সঙ্গে মিশে আছে সমাজ চেতনা, কৃষ্ণাঙ্গ তথা নাগরিক অধিকারের আন্দোলন আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুক চেতানো প্রতিবাদ। ১৯৩০-এর দশকের শুরুতে দিকপাল কৃষ্ণাঙ্গ গায়ক ও অভিনেতা পল রোবসন সাহস ও ধৈর্যের যে পথ দেখিয়েছিলেন, তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে হ্যারি বেলাফন্টে হয়ে উঠেছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ তথা নিপীড়িত মানুষের ভরসা ও আশ্রয়স্থল এবং একই সঙ্গে আফ্রো আমেরিকান শিল্পীদের এক আদর্শ অনুপ্রেরণা। মার্টিন লুথার কিংয়ের আজীবন বন্ধু হ্যারি বেলাফন্টে বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে হয়ে উঠেছিলেন সারা পৃথিবীর অগণিত মানুষের ভালবাসার অতি আপনজন। অকপট দুঃসাহসিক সত্যি কথা বলার জন্য তিনি বারবার বিতর্কের শিরোনামে উঠে এসেছেন, কিন্তু প্রত্যেকবারই সমালোচকেরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে, বিজয়ীর হাসি হেসেছেন তিনিই।
নিউইয়র্ক শহরের হারলেম-এ, পশ্চিম ভারতীয় দীপপুঞ্জ থেকে আগত এক নিম্নবিত্ত পরিবারে ১৯২৭ সালের ১ মার্চ হ্যারির জন্ম। তাঁর বাবা জাহাজে পাচকের কাজ করতেন, ফলে মাঝে মাঝেই বাড়ির বাইরে থাকতে হতো। ওদিকে নিউইয়র্ক শহরে কাজ না পেয়ে ১৯৩৬ সালে তাঁর মা হ্যারি ও তাঁর ছোটো ভাইকে নিয়ে জামাইকায় ফিরে যান। কিছুদিন বাদে হ্যারি ও তাঁর ভাইকে ঠাকুরমার কাছে রেখে মা নিউইয়র্কে ফিরে আসেন। হ্যারি জামাইকার স্কুলে ভরতি হন। পাঁচ বছর বাদে হ্যারিও হাইস্কুলে পড়ার জন্য হারলেমে মায়ের কাছে ফেরেন।
কিন্তু জামাইকায় থাকা ওই পাঁচ বছরই হ্যারির জীবন গড়ে দেওয়ার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল। পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের মাটির গান তথা ক্যালিপসো এবং অন্যান্য লোকগীতিতে বালক হ্যারি তখনই মজে গিয়েছিলেন। অসম্ভব সুরেলা সরু গলায় নাটকীয় ভঙ্গিতে নাচের ছন্দে তাঁর গাওয়া গান মুহূর্তে মানুষকে মাতিয়ে তুলতো। প্রচলিত গান গাইতে গাইতে তার মধ্যে দু চারটে সমসাময়িক কথা ঢুকিয়ে চার পাশে গোল হওয়া শ্রোতাদেরও তিনি নাচিয়ে দিতে পারতেন।
১৯৪৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি নৌবাহিনীতে যোগ দেন। তাঁর কাজ ছিল যুদ্ধ জাহাজে গোলা বারুদ তোলা। সেখানে তাঁর কৃষ্ণাঙ্গ বন্ধুরা তাকে আফ্রো আমেরিকান লেখকদের রচনার সঙ্গে পরিচিত করান। এইভাবে তাঁর মধ্যে আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ইতিহাস সম্পর্কে আগ্রহ গড়ে উঠতে থাকে। যুদ্ধের শেষে ফিরে নিজেই নাম লেখান নিউইয়র্কের কৃষ্ণাঙ্গ থিয়েটারে। সেখানে তিনি অভিনয় শিক্ষা করেন। এইভাবেই ধীরে ধীরে ব্রডওয়ের নাটকে জড়িয়ে পড়েন।একবার হ্যারি একটি নিয়মিত নাটকের শো-রবিরতিতে পরিবর্ত শিল্পী হিসাবে দু’সপ্তাহের জন্য গান গাইবার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু শ্রোতাদের দাবিতে সেটা দাঁড়িয়েছিল ত্রিশ সপ্তাহে। এবার আরেক লড়াকু কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা সিডনি পোটিয়ারের সঙ্গে হারলেম আমেরিকান নিগ্রো থিয়েটারে অভিনয় শুরু হলো। সেখানে তিনি বেশ কয়েকটি ছোটো বড়ো নাটকে গায়ক অভিনেতা হিসাবে অংশ নেন। কিন্তু তখনও তিনি জানেন না অভিনেতা হবেন না গায়ক হবেন।
১৯৫০-এর শুরুতেই তিনি হলিউডের চোখে পড়েন। হলিউডের ঝানু প্রযোজকরা শিল্পী চিনতে ভুল করেননি। ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হলো নানা রকম আফ্রো আমেরিকান লোক সুরে গাওয়া হ্যারি’র প্রথম আ্যলবাম ‘মার্কটোয়েন আ্যান্ড আদার ফোক ফেবারিটস্’। প্রকাশেই সুপার হিট। তার পরপরই ১৯৫৬ সালে এলো ক্যারিবিয়ান লোক সুরের আ্যালবাম ‘ক্যালিপসো’। এই আ্যালবামটি এতটাই জনপ্রিয় হলো যে, টানা একত্রিশ সপ্তাহ সবচেয়ে বেশি বিক্রির রেকর্ড ধরে রাখল। এটি ছিল ওই সময়ে কোনো একক শিল্পীর এক লক্ষ কপির বেশি বিক্রি হওয়া একমাত্র আ্যালবাম। ওই অ্যালবামের ‘ম্যান পিয়াবা বা বেনানা সঙ’ আর ‘জামাইকা ফেয়ারওয়েল’ তো চিরকালের হিট, আজও বহু মানুষের স্মৃতিতে গাঁথা। শেষের গানটি যে কত দেশের কত ভাষায় রূপ পেয়েছে তার ইয়ত্তা নেই।
১৯৫৪ থেকে ১৯৮৮ অবধি হ্যারি’র ২৭টি স্টুডিয়ো অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৫০-এর দশকে ১০, ১৯৬০-এর দশকে ১১ এবং পরবর্তী সময়ে ৬টি। যে কোনো শিল্পীর কাছে এটি একটি ঈর্ষনীয় সংখ্যা। এছাড়া সারা শিল্পীজীবনে লাইভ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছিল ৭টি। ক’জন শিল্পীর এত হয়! স্টুডিয়োতে প্রকাশিত গানের সংখ্যা প্রায় ৩০০টি। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি গান চিরকালীন হয়ে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। ১৯৫৬-তে প্রকাশিত গসপেল্ গান ‘নোয়া’ এবং ‘ট্রাবল’, ১৯৫৭-তে প্রকাশিত ‘আইল্যান্ড ইন দ্য সান’, ১৯৫৮-তে প্রকাশিত ব্লুজ ‘এ ফুল ফর ইয়ু’, ১৯৬০-এ প্রকাশিত জেল সংস্কারের দাবিতে গান ‘এনাদার ম্যান ডান গন’, এবং কৃষ্ণাঙ্গ শ্রম সঙ্গীত ‘লেড ম্যান হলার’, ১৯৬২-তে প্রকাশিত বব ডিলান রচিত কৃষ্ণাঙ্গ অধিকারের গান ‘মিডনাইট স্পেশাল’ ইত্যাদি। ১৯৬৩-তে নাগরিক অধিকার আন্দোলনে তিনি গাইলেন উডি গাথরি রচিত ‘দিস ল্যান্ড ইজ ইয়োর ল্যান্ড’, যেটি প্রায় আন্দোলনের টাইটেল সঙ্গীত হয়ে উঠেছিল। আবার ১৯৮৮-তে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধে তিনি গাইলেন ‘প্যারাডাইস ইন গাজানকুলু’। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তাঁর গাওয়া ‘সামারটাইম লাভ’, ‘প্লে মি’, ‘এ হোল ইন দ্য বাকেট’, ‘ফরএভার ইয়ং’, ‘মাই এঞ্জেল’, ‘টার্ন দ্য ওয়াল্ড অ্যারাউন্ড’ ইত্যাদি চিরকালের গানে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে আছে ‘জন হেনরি’, ‘কটন মিল কলিক’ ইত্যাদির মতো বেশ কিছু ঐতিহাসিক লোকগীতি।
হ্যারি বেলাফন্টের মতো এত রকমের সুর আঙ্গিকেও খুব কম শিল্পী গান গাইতে পেরেছেন। পশ্চিম ভারতীয় দীপপুঞ্জের গান তাঁর গলায় জীবন্ত হয়ে উঠতো। তিনি এর সঙ্গে জাজ আঙ্গীকের যন্ত্রানুষঙ্গ ও ছন্দ যুক্ত করে একটা নতুন প্রকাশ ভঙ্গিমা গড়ে তুলেছিলেন। জাজ পপ নামে তা পরিচিত হয়েছিল। লোকসঙ্গীত ছিল তাঁর গানের ভিত্তিভূমি, তিনি তাঁর সঙ্গে জাজ মিশিয়েছেন নৈপুণ্যে। এভাবেই তিনি কখনো গসপেল, আবার কখনো বা ব্লুজ গেয়েছেন। আফ্রো আমেরিকান সঙ্গীত সব সময় তাঁর গলায় নতুনতর হয়ে উপস্থাপিত হতো। ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে তিনিই ছিলেন হলিউডের সবচেয়ে বেশি দামি শিল্পী। লাইভ জলসায়ও তিনি ছিলেন অসাধারণ আকর্ষণ। চমৎকার দীর্ঘদেহী চেহারা, চুম্বকের মতো বাচনভঙ্গি আর নাটকীয় পরিবেশনায় তিনি মুহূর্তে শ্রোতাদের মন জয় করতে পারতেন।
গানে বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে হলিউড থেকে তাঁর অভিনয়ের ডাক আসতে থাকে। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি একজন সফল কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন। অভিনয়ে তাঁর গুরু ছিলেন পল রোবসন। হ্যারি’র দীর্ঘ ছিপছিপে চেহারা ও চমৎকার ব্যক্তিত্ব তাকে খুবই সাহায্য করতো। এইভাবে বিভিন্ন সময়ে তিনি ২৫টি ফিল্মে অভিনয় করেন। তার মধ্যে ‘কারমেন জোনস’, ‘বাক অ্যান্ড দ্য প্রিচার’, ‘আইল্যান্ড ইন দ্য সান’, ‘দ্য এঞ্জেল লেভিন’, ‘আপটাউন স্যাটারডে নাইট’ ইত্যাদি তাকে বিশেষভাবে মনে রাখতে সাহায্য করবে। কিন্তু অভিনয় তাঁর কখনোই প্রথম পছন্দ ছিল না। তাই তাঁর অভিনয় জীবন খুব দীর্ঘ ছিল না।
১৯৫০-এর দশকের শেষদিক থেকেই তিনি নাগরিক অধিকার আন্দোলনে বেশি করে সময় দিতে আরম্ভ করেন। এই সময় থেকে তাঁর জীবনের মুখ্য গতিমুখ হয়ে দাঁড়ায় কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার তথা নাগরিক অধিকার আন্দোলন। এই আন্দোলনের প্রধান নেতা ডঃ মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র-এর সঙ্গে তার প্রগাঢ় এবং সারা জীবনের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর জন্য প্রস্তাবিত ‘ছাত্রদের অহিংস কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ গঠনের প্রয়োজনীয় অর্থের মুখ্য অংশটাই দিয়েছিলেন হ্যারি। জেল থেকে ডঃ কিং ও অন্যান্য নাগরিক অধিকার কর্মীদের বার করার জামিনের অর্থও মূলত তিনিই যুগিয়েছিলেন।
হ্যারি ১৯৬৩ সালে ওয়াশিংটনের চিরস্মরণীয় ‘নাগরিক অধিকার মঞ্চ-এর মিছিলে একজন মুখ্য সংগঠক হিসাবে অংশ নিয়েছিলেন। ম্যানহাটনে হ্যারি’র নিজের ফ্ল্যাট হয়ে উঠেছিল ডঃ কিং-এর দ্বিতীয় বাসা। এমনকী তিনি নিঃশব্দে ডঃ কিং-এর নামে জীবন বিমাও করে দিয়েছিলেন, তার বিপুল পরিমাণ প্রিমিয়াম তিনিই দিতেন। ১৯৬৮ সালে আততায়ীর গুলিতে ডঃ কিং নিহত হবার পরও তাঁর পরিবারের দেখভালের দায়িত্ব স্বেচ্ছায় তিনিই নিয়েছিলেন।
১৯৮০-র দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক বয়কট আন্দোলনে হ্যারি বেলাফন্টে ছিলেন অন্যতম প্রধান মুখ। ১৯৮৫ সালে আফ্রিকার খরা প্রতিরোধের জন্য প্রচার ও অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অন্যতম সংগঠক হিসাবে আমেরিকার শতাধিক শিল্পীকে নিয়ে তিনি এক অসাধারণ সঙ্গীতানুষ্ঠান ও রেকর্ডিংয়ের উদ্যোগ নেন, যা ‘উই আর দ্য ওয়ার্ল্ড’ নামে খ্যাত। এই গানটির বাণী রচনা করেছিলেন মাইকেল জ্যাকসন ও লিওনেল রিচি। মূল অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘ইউ এস এ ফর আফ্রিকা’।
এই অনুষ্ঠানের অসাধারণ সাফল্যের পর দীর্ঘ দশ বছর বাদে ১৯৮৮ সালে বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রকাশিত হয় তাঁর স্টুডিয়ো অ্যালবাম ‘প্যারাডাইস ইন গাজানকুলু’।
২০০২ সালে হ্যারি বেলাফন্টে ‘দ্য লঙ রোড টু ফ্রিডমঃ এন অ্যানথোলজি অফ ব্ল্যাক মিউজিক’ নামে একটি আফ্রিকান ও আফ্রিকান-আমেরিকান সঙ্গীত সংকলনের কাজ শেষ করেন। এটি একটি অত্যন্ত বড়ো মাপের কাজ ছিল। কয়েক দশক ধরে সংগ্রহ, প্রস্তুতি ও রেকর্ডিংয়ের পর অবশেষে পাঁচটি সিডিতে তা প্রকাশিত হয়। এই সংগ্রহে আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ সঙ্গীতের বিস্তারিত ইতিহাস ধরা আছে। অসাধারণ এই কাজটি ‘গ্র্যামি’ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়।
হ্যারি চিরকালই স্পষ্ট বক্তা ছিলেন। নিজের মতামত পরিস্কার করে বলতে তিনি কখনোই সংকুচিত হতেন না। ১৯৫০-এর দশকে ঠান্ডা যুদ্ধের সময় পল রোবসনের উপর নানা রাষ্ট্রীয় আক্রমণ নেমে এলে হ্যারি প্রকাশ্যেই পল’কে সমর্থন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, একদিন আমেরিকা বুঝবে পল রোবসনই সঠিক। আজ আমেরিকা তা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে। ঠিক তেমনই ইরাক যুদ্ধের পর ২০০৬ সালে তিনি বলেছিলেন, “জর্জ বুশই হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো সন্ত্রাসবাদী”। আবার ২০১৬ সালে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘অপরিণত ও মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দিয়ে তাঁকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান।
নানা বিষয়ে খোলাখুলি মন্তব্য করবার জন্য হ্যারি বার বার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছেন, কিন্তু কোনদিন কেউ তাঁর শিল্প যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেননি।
তিনি ১৯৮৯ সালে ‘কেনেডি সেন্টার সম্মান’ লাভ করেন, ১৯৯৪ সালে পান ‘শিল্পীর জাতীয় মেডেল’ আর ২০০০ সালে সারা জীবনের কাজের জন্য পান ‘লাইফটাইম গ্র্যামি পুরস্কার’। ২০১৪ সালে আমেরিকান একাডেমি অফ মোশন পিকচারস্ নাগরিক অধিকার আন্দোলনে সারা জীবনের অবদানের জন্য তাকে ‘জিন হারসল্ট মানবতাবাদী পুরস্কারে’ ভূষিত করেন। হ্যারি বলেন, এটাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি।
২০১১ সালে হ্যারি বেলাফন্টে’র জীবন নিয়ে ‘সিং ইওর সং’ নামে একটি ডকুমেন্টারি প্রকাশিত হয়। ওই একই বছর প্রকাশিত হয় তাঁর আত্মজীবনী ‘মাই সং’।
হ্যারি বেলাফন্টে রেখে গেলেন এক জীবন যা দীর্ঘদিন সংস্কৃতিপ্রেমী, দেশপ্রেমী এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।