৫৮ বর্ষ ৫১ সংখ্যা / ৬ আগস্ট, ২০২১ / ২০ শ্রাবণ, ১৪২৮
১০ আগস্ট বিদ্যুৎ কর্মীদের সারা ভারত ধর্মঘট
সংবিধানবিরোধী নয়া বিদ্যুৎ (সংশোধিত) বিল প্রত্যাহারের দাবিতে বিদ্যুৎ কর্মীদের গণকনভেনশন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নয়া বিদ্যুৎ (সংশোধনী) বিল ২০২১ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংবিধানকে লঙ্ঘন করছে। দেশের বিদ্যুৎ পরিকাঠামো বেসরকারিকরণের মাধ্যমে কর্পোরেট-পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার যাবতীয় আয়োজন সম্পূর্ণ করতে কসুর করছে না আরএসএস-বিজেপি’র সরকার। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে লোকসভার চলতি বাদল অধিবেশনে এই জনস্বার্থবিরোধী বিল পাশ করিয়ে তা চালু করতে আর তর সইছে না আম্বানি-আদানিদের আজ্ঞাবহ মোদী-শাহদের। গরিব মারা এই বিদ্যুৎ বিল রুখতে হবে গণআন্দোলনের জোয়ার তুলে। সেই লক্ষ্যে দেশের বিদ্যুৎ কর্মীদের ডাকা ১০ আগস্টের ভারতজোড়া ধর্মঘটকে সফল করতে হবে। বিল রুখতে শ্রমিকদের পাশে শামিল কৃষকসভা। ২ আগস্ট কলকাতার শ্রমিক ভবনে বিদ্যুৎ কর্মীদের সাতটি সংগঠনের জাতীয় সমন্বয় কমিটি এনসিসিওইই’র পশ্চিমবঙ্গ চ্যাপ্টারের ডাকে আয়োজিত গণকনভেনশনে উচ্চারিত হলো এই দৃঢ় প্রত্যয়।
এই কনভেনশনের উদ্বোধন করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলি। কনভেনশন পরিচালনা করে জিতেন নন্দী, পার্থ মুখার্জি, মানস সিনহা, প্রশান্ত নন্দী চৌধুরীকে নিয়ে গঠিত সম্পাদকমণ্ডলী। কনভেনশনের পক্ষে প্রস্তাব পেশ করেন কাঞ্চন মুখার্জি।
এই প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে খসড়া বিদ্যুৎ বিলের বিভিন্ন জনবিরোধী দিকের। বিলে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ ব্যবসা করতে যে লাইসেন্স প্রথা ছিল তা বিলোপ করা হবে। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ টেনে বলা যেতে পারে, বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বা ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই-এর বর্তমানের লাইসেন্সিং এলাকার বিভাজন উঠে যাবে। সে ক্ষেত্রে সল্টলেক, নিউটাউনের মতো ব্যাণিজ্যিক সম্ভাবনাপূর্ণ এলাকায় একাধিক কোম্পানি বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে। যদিও প্রাইভেট কোম্পানিগুলির পক্ষ থেকে জনসাধারণের কাছে বলা হচ্ছে পারস্পরিক প্রতিযোগিতার ফলে বিদ্যুতের দাম কমবে, যা দেশের বেশ কিছু এলাকার গ্রাহকের অভিজ্ঞতার ঠিক উল্টো। কিন্তু শেষ পরিণতিতে বিদ্যুতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ব্যক্তিমালিকানায় একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। “বিদ্যুৎ আইন ২০০৩”-এর ২৪ ধারার সাথে নতুন ধারা ২৪(এ) যুক্ত করে খসড়া বিলে উল্লিখিত হয়েছেঃ “যে সংস্থা নির্ধারিত যোগ্যতা (কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করবে) পূরণ করবে তারা উপযুক্ত বিদ্যুৎ কমিশনে নাম নথিভুক্ত করার আবেদন করে বর্তমান রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির বিদ্যুৎ বিতরণের লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিক্রির ব্যবসা শুরু করতে পারবে।”
প্রস্তাবে আইন সম্পর্কে বলা হয়েছে, নতুন প্রাইভেট কোম্পানিগুলিকে লাইন ও সাবস্টেশনের জন্য কোনও পরিকাঠামোগত খরচ করতে হবে না। অথচ এদের কাছ থেকে গ্রাহককে বিদ্যুতের দাম আগাম দিয়ে বিদ্যুৎ কিনতে হবে। অর্থাৎ কোম্পানিগুলি কোটি কোটি টাকা আগাম নিয়ে নিলেও বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনরকম ব্যাঘাত ঘটলে তারা দায় এড়াতে পারে, যেখানে গ্রাহক ও কর্মীরা চরম সমস্যায় পড়বে। একাধিক কোম্পানি একই লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে, লাইনের ত্রুটি হলে দায়িত্ব নেবে না তারা। অভিযোগ, অন্যান্য ক্ষেত্রে যেভাবে এই সরকার আইন সংশোধন করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর করছে, সেভাবেই বিদ্যুৎ ক্ষেত্র বেচে দিতে ধাপে ধাপে এগোবে তারা। স্বাধীনতার পর জনগণের টাকায় ও কর্মীদের পরিশ্রমে গড়ে তোলা বিদ্যুতের পরিকাঠামো জলের দরে বিক্রি করে দেওয়ার ফলে দুর্বল হবে রাষ্ট্র। এই পথে ভারত কী করে ‘আত্মনির্ভর’ হতে পারে প্রশ্ন তোলা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।
কনভেনশনের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে এবং খসড়া প্রস্তাবকে সমর্থন করে বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলি বলেন, বিদ্যুৎ বিলের মতো বিভিন্ন বিলের মধ্য দিয়ে এই সরকার দেশের সম্পদ বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে; সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, যা সংবিধানের পরিপন্থী। দেশের সংবিধানের মুখবন্ধে ভারতকে সমাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধানের মূল বক্তব্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এবং সাদৃশ্য রেখেই আইন প্রণয়ন করতে হবে। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংবিধানের মর্মবস্তুর বিরোধী আইন জারি করা সংবিধানবিরোধী। তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধন না করে দেশের আইনগুলিকে এমনভাবে সংশোধন করা হচ্ছে যে, রাষ্ট্রের সমাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক চেহারাটাই পাল্টে দেওয়া হচ্ছে।
সংবিধানের বিভিন্ন ধারার উল্লেখ করে তিনি সরকারের স্বৈরাচারী পদক্ষেপগুলি ব্যাখ্যা করে বলেন, বিদ্যুৎ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদকে উৎস হিসেবে ব্যবহার করে উৎপাদিত। চতুর্থ পরিচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক সম্পদ বণ্টন এমনভাবে করতে হবে যেটা সাধারণ মানুষের কল্যাণের পক্ষে আদর্শ হবে। সংবিধানের ৩৯ এর ‘গ’ ধারায় বলা হয়েছে উৎপাদনের মাধ্যমকে সাধারণের প্রয়োজনের পরিপন্থী করা যাবে না। দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কখনই পুঁজির কেন্দ্রীকরণ করবে না। সংবিধানে আরও বলা হয়েছে, আইন প্রণয়নের সময় চতুর্থ পরিচ্ছেদের রূপায়ণ সরকারের কর্তব্য। তাই প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
তিনি অভিযোগ করেন, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন, শিক্ষার নতুন আইন, নয়া কৃষি আইনসমূহ ইত্যাদি প্রণয়ন করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের চরিত্র বদলে দেবার চেষ্টা হচ্ছে। আর এর বিরুদ্ধে দেশের মানুষ যখনই সোচ্চার হচ্ছেন তখনই নানা দমনমূলক আইনের মাধ্যমে সরকার আস্তে আস্তে চেষ্টা করছে মানুষকে অবদমিত করার। এর সঙ্গে ধর্মীয় বিভাজনের জিগিরকে ব্যবহার করে দেশকে ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কনভেনশনের সাফল্য কামনা করে সিআইটিইউ রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু বলেন, এই সরকারের লক্ষ্য হলো শ্রমজীবী এবং গরিব মানুষের শোষণ বাড়িয়ে ধনীদের মুনাফা বাড়ানো। এরা শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা, নিরাপত্তা কেড়ে নেওয়ার জন্য শ্রম কোড তৈরি করেছে। শুধু বিদ্যুৎ কর্মীরাই নন, দেশের শ্রমিক-কর্মচারীদের সংগঠনগুলিও দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে ধর্মঘট-আন্দোলনে শামিল হয়েছে। তীব্র গণআন্দোলন গড়ে রুখে দিতে হবে এই বিলকে।
কৃষক সভার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সভাপতি সঞ্জয় পূততুণ্ড গণকনভেনশনের প্রস্তাব এবং ১০ আগস্ট বিদ্যুৎ কর্মীদের ধর্মঘটের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, দেশের আন্দোলনরত কৃষকরা তিনটি কালা কৃষি আইন প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতেও আন্দোলন করছে। কৃষক আন্দোলনের পক্ষে বিদ্যুৎ কর্মীদের এই আন্দোলন অত্যন্ত উৎসাহজনক। তিনি বলেন, কৃষিতে যতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন তা পায় না কৃষক। যেটুকু পায় সেটুকুও এই সরকার কেড়ে নিতে চায়। এরা সর্বগ্রাসী। ব্যাঙ্ক-বিমা বিদ্যুৎ কৃষি কোনোটা বাদ যাবেনা। বিদ্যুৎ কর্মীদের এই আন্দোলনের পাশে তাই কৃষকরা আছেন। মানুষের কাছ থেকে এই সরকারকে বিচ্ছিন্ন করা এবং এদের বিতাড়ন করা জরুরি। অতিমারীর সুযোগে কর্পোরেটের পৌষ মাস করতে দেওয়া যাবে না।
এছাড়াও কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন প্রশান্ত নন্দী চৌধুরী, লীলা চক্রবর্তী, সত্যরঞ্জন সিনহা প্রমুখ। আগামী ১০ আগস্টের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে তাঁরা বলেন, ভরতুকি ব্যবস্থা তুলে দিয়ে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার চালু করলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষকরা। তাই কৃষক আন্দোলনের অন্যতম দাবি বিদ্যুৎ বিল বাতিল করো। আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার সময় কেন্দ্রীয় সরকার কথা দিয়েছিল বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু কথার খেলাপ করে সেই বিল পাশ করাতে চলেছে এই সরকার। নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষকে সস্তায় বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে ক্রস সাবসিডি বা পারস্পরিক ভরতুকি পাকাপাকিভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে। ভরতুকি রাজ্য সরকারগুলির সদিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
তাঁরা বলেন, সংবিধান প্রণেতারা বিদ্যুৎ যৌথ তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং সেই মতো রাজ্য সরকারের হাতে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। এই বিলে রাজ্য সরকারের ক্ষমতা সংকুচিত করা হচ্ছে। সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো দুর্বল করা হচ্ছে শুধুমাত্র প্রাইভেট কোম্পানিগুলির ব্যবসার সুবিধা করে দিতে। বিদ্যুৎ আইন ২০০৩ অনুযায়ী রাজ্য সরকারের করণীয় বিষয়গুলির প্রায় সবটাই মুছে ফেলা হচ্ছে। ১৩টি বড়ো বড়ো রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকার এই বিলের বিরোধিতা করেছে। তাদের পরামর্শকে মান্যতা দেওয়া হয়নি।
তাঁরা বলেন, বিদ্যুতের দাম নির্ধারণে আইনে ব্যবস্থা রয়েছে বেসরকারি মালিকরা দাম ঠিক করে গ্রাহকদের ঘাড়ে চাপিয়ে রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের অনুমোদন চাইবে, ৯০ দিনের মধ্যে সেই অনুমতি না পেলেও এই দাম গ্রাহকদের দিয়ে যেতে হবে। বর্তমান রাজ্য সরকারগুলির অধীন বণ্টন কোম্পানিগুলি নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, কৃষক ও ছোটো বাণিজ্যিক গ্রাহকদের নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবেনা। ক্রমশ ধ্বংসের কিনারায় চলে যাবে। যেমনভাবে বিএসএনএল-কে রুগ্ণ করা হয়েছে। সরকারের অধীন বণ্টন কোম্পানি ছাড়া কোনো প্রাইভেট কোম্পানি উক্ত গ্রাহকদের দায়িত্ব নেবে না। ফলে ওই অংশের গ্রাহক এবং কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ ঘিরে অনিশ্চিয়তার অন্ধকার নেমে আসবে।
তাঁরা বলেন, এই বিল পাশ হলে একই অঞ্চলে একের অধিক কোম্পানিকে বিদ্যুৎ বিতরণ করার অনুমতি দেওয়া হলে মুনাফার শিকার হবে কর্মী ও গ্রাহকেরা। প্রতিযোগিতার নামে কর্মী সংকোচন হবে স্থায়ী, অস্থায়ী কোনও স্তরের কর্মীরাই বাদ যাবেন না। কম সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করলে দুর্ঘটনা বাড়তে পারে, সেক্ষেত্রে গ্রাহক এবং কর্মী উভয়ই দুর্ঘটনাগ্রস্ত হবেন। ২০০৩ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকা ছিল, তাই ২০০৩ সালে আইন সংশোধন করা হয়েছিল। বেসরকারিকরণের পথে গিয়ে আজ পুঞ্জিভূত ক্ষতির পরিমাণ ৪.৪৯ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এছাড়াও দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি অনাদায়ী ঋণ পড়ে আছে, যা সবই জনগণের গচ্ছিত আমানত। চলতি আইনে বণ্টন কোম্পানিগুলি বিদ্যুতের দাম দেওয়া নিশ্চিত করলে তবেই তারা গ্রাহককে বিদ্যুৎ দিতে পারে। দাম বকেয়া থাকলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে, যা জাতীয় গ্রিড কন্ট্রোলারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যা নয়া আইনে বাধ্যতামূলক নয়।
তাঁরা বলেন, বিদ্যুৎ আইন ২০০৩-এ পারস্পরিক ভরতুকি এবং গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণকে তুলে দেওয়া হয়েছিল। বামপন্থী সাংসদদের চাপে ইউপিএ সরকার বাধ্য হয়েছিল বিদ্যুৎ আইনের ধারাগুলিকে সংশোধন করে পারস্পরিক ভরতুকি বিদ্যুদ্বয়নের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই বেপরোয়াভাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলিকে বিক্রি শুরু করার পর চণ্ডীগড়, দাদরা নগর হাভেলি, পন্ডিচেরির বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মচারীদের আন্দোলনে কেন্দ্র সরকারকে পিছু হঠতে হয়েছে।
চলতি আইন সম্পর্কে তাঁরা বলেন, বিদ্যুৎ আইন ২০০৩ লাগু হওয়াতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিদ্যুৎ কর্মীরা। নিয়মিত বিদ্যুৎ কর্মীদের একটা বড়ো অংশই ঠিকা শ্রমিকে পরিণত হয়েছে। বিপুলভাবে আউটসোর্সিং করে কন্ট্রাক্টর এবং এজেন্সিদের সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে। কম্পেন্সেটরি বেনিফিট এবং সামাজিক নিরাপত্তামূলক বিধিসম্মত সুবিধাগুলি কমিয়ে বা তুলে দিয়ে কর্মীদের সুবিধাগুলি সংকুচিত করা হয়েছে। এই বিল পাশ হলে গ্রাহকসহ স্থায়ী ও অস্থায়ী সকল কর্মচারীদের ওপর নতুন করে সঙ্কট নেমে আসবে।
তাঁরা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে। একে প্রাইভেট সংস্থার হাতে ছেড়ে দিলে মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, আধুনিক শিল্প ব্যবস্থা সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের ওপর বড়ো আঘাত নেমে আসবে। তাই দেশপ্রেমিক মানুষের কাছে ওই খসড়া প্রস্তাবে আহ্বানের প্রতিধ্বনি করে তাঁরা বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার চূড়ান্ত স্বৈরতান্ত্রিক কেন্দ্রীভবনের সাথে সাথে বেপরোয়া বেসরকারিকরণের ব্যবস্থা গুলিকে বিরোধিতা করতে হবে। এই সর্বনাশা প্রচেষ্টায় বিরুদ্ধেই বিদ্যুৎ কর্মীদের জাতীয় সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে ১০ আগস্ট দেশের বিদ্যুৎ কর্মী অফিসার ইঞ্জিনিয়াররা ধর্মঘট ও কর্মবিরতিতে শামিল হবেন।