৬০ বর্ষ ২১ সংখ্যা / ৬ জানুয়ারি, ২০২৩ / ২১ পৌষ, ১৪২৯
নিকোবরের গাছ মধ্যপ্রদেশেঃ পরিবেশ রক্ষায় এক উর্বর মস্তিষ্কের ভাবনা
তপন মিশ্র
আমাদের চোখের আড়ালে গ্রেট নিকোবর দ্বীপের আদিম বনাঞ্চল এবং মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে ভারত সরকার। বিশ্বের আদিম জনজাতিদের মধ্যে শমপেন এবং নিকোবরিজ এই দ্বীপের বাসিন্দা। শম্পেনরা ভারতে Particularly Vulnerable Tribal Groups (PVTGs) বা বিশেষভাবে দুর্বল উপজাতি গোষ্ঠী। এদের সংরক্ষণের জন্য ভারত সরকারের যে বিশেষ আইন আছে তাকে অমান্য করে এক বিশাল প্রকল্প রূপায়ণের আয়োজন করছে সরকার। ভারত সরকারের পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের হিসাবে গ্রেট নিকোবরে একটি সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের জন্য যে ৮.৫ লক্ষ গাছ কাটা হবে তার ক্ষতিপূরক বৃক্ষরোপণের নিয়মরক্ষার জন্য গাছ লাগানো হবে মধ্যপ্রদেশে। অবিবেচনা প্রসূত এই সিদ্ধান্ত কেবল মূল্যবান অরণ্যের ক্ষতি করবে না পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্রদের কাছে এক হাস্যকর বিষয় হিসাবে বিবেচিত হবে। ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর জনশুনানির ব্যবস্থা হয়। গত ২৭ অক্টোবর, পরিবেশ মন্ত্রক প্রকল্পটির জন্য প্রথম পর্যায় (Stage-1) ছাড়পত্র মঞ্জুর করে এবং তারপরে ৪ নভেম্বর চূড়ান্ত পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়।
ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে নিকোবরের বিচ্ছিন্নতা প্রায় ১.০৮ কোটি বছর আগে মিয়োসিন যুগে। সেই সময় থেকে প্রাকৃতিক নিয়মে অরণ্য চরিত্রের পরিবর্তন হয়েছে। ৯২১ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত এই দ্বীপের প্রায় ৯২ শতাংশ বনাঞ্চলে আবৃত যার মধ্যে ৮১.৪৭ শতাংশ সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এর মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ হলো ঘন বনাঞ্চল।সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য পরিবেশকর্মীরা দ্বীপের আদিবাসী সম্প্রদায়ের এবং এখানকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ
পরিবেশ মন্ত্রক ২০২১ সালের মে মাসে একটি পরিবেশগত অভিঘাত (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট - ইআইএ) এবং তার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান - ইএমপি) সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য টার্মস অফ রেফারেন্স তৈরি করে। এই নথিতে বলা হয় যে, একটি মাল পরিবহণ ব্যবস্থাপনার জন্য টারমিনাল, একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, একটি টাউনশিপ এবং সঙ্গে গ্যাস ও সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১৬৬ বর্গ কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। নীতি (NITI) আয়োগের পরামর্শ মতো এই সমস্ত প্রকল্পের জন্য সরকার ৭২,০০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প রূপায়ণের প্রস্তুতি নিয়েছে।
এই এলাকার মধ্যে ১৩০ বর্গ কিলোমিটার (প্রায় ৭৯শতাংশ) এলাকা প্রজ্ঞাপিত অরণ্যভূমি। প্রকল্পটি গালাথিয়া নদীর মোহানায় হবে এবং বেশ কয়েকটি পাহাড়ও ভাঙতে হবে।এর ফলে কেবল দ্বীপের প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের নয় সমুদ্র বাস্তুতন্ত্রেরও ব্যাপক ক্ষতি হবে। সরকারের ইআইএ আইনের form-1 দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই দ্বীপভূমিকম্পের প্রবণতার দিক থেকে সর্বাধিক সক্রিয় অঞ্চল (Seismic Zone V)এবং অত্যধিক ঘূর্ণিঝড়প্রবণ অঞ্চল। মনে করিয়ে দেওয়া যেতে পারে যে, ২০০৪ সালের সুনামির ফলে এই দ্বীপের প্রচুর ক্ষতি হয়। এই দ্বীপের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল অঞ্চলের ভূমিক্ষয়ের প্রবণতা অনেক বেশি। এমন একটি সংবেদনশীল দ্বীপের ১৮ শতাংশের অধিগ্রহণের ফলে বাস্তুতন্ত্রের ভূমিরূপের ক্ষতিকর পরিবর্তন হতে বাধ্য। সরকারি তথ্য বলছে যে, এই প্রকল্প রূপায়িত হলে দ্বীপের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বর্তমানের তুলনায় প্রায় ৪,০০০ শতাংশ।
দ্বীপের জনজাতি
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ১৭ টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত ৭০৫টি তপশিলি উপজাতির মধ্যে মোট ৭৫টি ‘পিভিটিজি’রয়েছে। এই দ্বীপে শমপেন উপজাতি বাসিন্দাদের সংখ্যা ২০০-র কিছু বেশি এবং নিকোবরিজ উপজাতি মানুষের সংখ্যা প্রায় ১,০০০। এখনও পর্যন্ত শমপেন প্রাক-কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা নির্ভর এক উপজাতি। এরা চকমকি পাথর যুক্ত তীর ধনুকের সাহায্যে শিকার করে।এদের মধ্যে প্রথাগত শিক্ষা নেই এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে ক্রমহ্রাসমান। ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত তারাই গ্রেট নিকোবরের একমাত্র বাসিন্দা ছিলেন। গ্রেট নিকোবরের ৮৫৩ বর্গকিমি (প্রায় ৯৪শতাংশ) আন্দামান ও নিকোবর প্রটেকশন অফ অ্যাবোরিজিনাল ট্রাইবস রেগুলেশন (১৯৫৬)-এর অধীনে একটি উপজাতীয় সংরক্ষিত অঞ্চল হিসাবে নির্ধারিত হয়। এর অর্থ হলো যে, এই অংশটি উপজাতি মানুষদের একচেটিয়া ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত এবং অন্যদের এই অঞ্চলে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
বর্তমানে গ্রেট নিকোবরের জনসংখ্যা প্রায় ৮০০০। ১৯৬০-এর দশকে মূল ভারত ভূখণ্ড থেকে সরকারি উদ্যোগে কিছু মানুষ বসতি স্থাপন করার জন্য এখানে নিয়ে আসা হয়। নৌ বাহিনীর আইএনএস বাজ এয়ার স্টেশন এবং লাইট হাউস ইত্যাদির জন্য মুল ভূখণ্ডের কিছু মানুষ এখানে থাকতে আসেন।
শমপেন এবং নিকোবরিজ, ভারতের মূল ভূখণ্ডের এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অস্ট্রো-এশিয়াটিকদের সাথে জেনেটিক সম্পর্কযুক্ত। এই জেনেটিক বিশ্লেষণগুলি প্রমাণ করে যে, নিকোবরিজের একটি শাখা, শমপেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় বংশোদ্ভূত মেসোলিথিক শিকারী-সংগ্রাহকদের বংশধর (রজনী ত্রিবেদী এবং তাঁর সহগবেষকদের গবেষণা ‘Molecular insights into the origins of the Shompen, a declining population of the Nicobar archipelago,PubMed, 2006)। ১৯৫৬ সালের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের আদিবাসীদের সুরক্ষা আইনে দ্বীপে মূল ভূখণ্ডের মানুষদের প্রবেশ ও ভ্রমণ নিষিদ্ধ করে। এই আইনে বলাহয় যে,দ্বীপের পাঁচ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে অন্যদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। আইনে বলাহয় যে, মূল ভূখণ্ডবাসীদের সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করতে এই আইন, কারণ মুল ভূখণ্ডে যে সংক্রামক রোগগুলি হয় তার বিরুদ্ধে এদের শরীরে কোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠেনি। এই অবস্থায় একবার কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হলে তাঁদের বাঁচানো সহজ হবেনা।
দ্বীপের প্রাকৃতিক সম্পদ
গ্রেট নিকোবরের সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে বনাঞ্চল সাধারণভাবে উপকূলীয় এবং ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ অধ্যুষিত। ভেতরের দিকে চিরহরিৎ এবং স্বল্প পর্ণমোচী বনাঞ্চল দেখতে পাওয়া যায়। বাৎসরিক বৃষ্টিপাত প্রায় ২৯০০ মিলিমিটার অর্থাৎ কলকাতার প্রায় দ্বিগুণ। দ্বীপের বনভূমি মূলত বর্ষাবন (রেন ফরেস্ট)। এই দ্বীপে রয়েছে গ্রেট নিকোবর বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ যার মধ্যে গালাটিয়া জাতীয় উদ্যান, ক্যাম্পবেল-বে জাতীয় উদ্যান এবং বিস্তীর্ণ এলাকারিজার্ভ ফরেস্টের অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭২ সালের আইন অনুযায়ী এই এলাকা বন্যপ্রাণ সংরক্ষিত অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত।
ভূমিরূপের পরিবর্তন হলে পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক যে ক্ষতির কথা বলছে তার মধ্যে কেবল বনভূমি রয়েছে তা নয়, রয়েছে গুরুত্বপুর্ণ সমুদ্র উপকূল (ICRZ আইন অনুযায়ী), পাহাড়ের বাস্তুতন্ত্র ইত্যাদি। এই দ্বীপের গালাথিয়া উপসাগরের তীরভূমিতে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ কচ্ছপ (Leatherbackturtle)-এর বাসা বাঁধা এবং ডিম পাড়ার জায়গা। এই প্রজাতির স্ত্রী কচ্ছপ প্রায় ১০০০ কিলোমিটার সমুদ্রে পাড়ি দিয়ে এখানে আসে ডিম পাড়তে। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপের উপকূল পৃথিবীর অন্যতম একটি সমৃদ্ধ প্রবালের অঞ্চল।
সরকারি তথ্য বলছে - এই দ্বীপে রয়েছে ১১টি স্তন্যপায়ী, ৩২টি পক্ষী, ৭টি সরীসৃপ এবং ৪টি উভয়চর প্রজাতি যেগুলি একইসাথে বিপন্ন (endangered) এবং এন্ডেমিক (যা পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায়না)। এটি নিকোবর শ্রু, নিকোবর লং-টেইল ম্যাকাক, গ্রেট নিকোবর ক্রেস্টেড সর্পেন্ট ঈগল, নিকোবর প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচার ইত্যাদি বিরল প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল। এই দ্বীপে মেগাপড (যে পাখি মাটিতে ডিম পেড়ে তা দায়) বা বন্য মুরগির মতো পাখিদের যে বিভিন্ন প্রজাতির বৈচিত্র্য রয়েছে পৃথিবীর আর কোথাও তা নেই। এরা লুপ্তপ্রায় প্রজাতি। এখানে প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৩৩০ (পোকামাকড় ও সামুদ্রিক প্রাণী বাদ দিয়ে) এবং প্রবাল প্রজাতির সংখ্যা ১৭৯টি। প্রস্তাবিত এরকম একটি প্রকল্প থেকে যে বিশাল পরিমাণ দূষণের সম্ভাবনা রয়েছে এবং জাহাজ যাতায়াতের জন্য সমুদ্রতলে যে উপদ্রব হবে তা প্রবালের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর হবে।
এখানে রয়েছে প্রায় ৬৫০টি প্রজাতির উদ্ভিদ এবং যাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিপন্ন ও এন্ডেমিক প্রজাতি। ১৯৯৯ সালে বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এই দ্বীপের উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের যে তথ্য সংগ্রহ করে তাতে দেখা যায় যে,এখানে Cyathea albosetacea (বৃক্ষাকৃতি ফার্ণ) এবং Phalaenopsis speciosa (অর্কিড)সহ ৪৪টি উদ্ভিদ প্রজাতি পাওয়া যায় যা বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত এবং পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
অনুর্বর মস্তিষ্কের সুপারিশ
কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের নিজস্ব অনুমান অনুসারে, প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য দ্বীপের প্রাকৃতিক এবং সামাজিক ক্ষতির পরিমাণ এতোটাই হবে যে, তা কোনভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়। ইদানীং সময়ে পরিবেশের ক্ষতির কারণে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত অঞ্চলগুলি উন্নয়নের নামে ধ্বংসের বিরুদ্ধাচরণ করা হচ্ছে। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দ্বীপটি বিশ্বের সেরা-সংরক্ষিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জীবের আবাসস্থল। ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরনের সবচেয়ে বড়ো বনভূমির ধ্বংস এখানেই হতে চলেছে। সরকারিভাবে ইআইএ এবং আনুষঙ্গিক কিছু সুপারিশের মাধ্যমে প্রকল্প রূপায়ণের সাথে সাথে পরিবেশ রক্ষার জন্য কিছু বিষয় অবজ্ঞা করা হয়েছে এবং কিছু হাস্যকর সুপারিশ করা হয়েছে।
১। শমপেন এবং নিকোবরিজদের মতো অরণ্য নির্ভর জনজাতিদের অরণ্য অধিকার আইন (২০০৬) লঙ্ঘিত হচ্ছে।
২। এখানে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি বছর প্রায় ৪০টি প্রজাতির পরিযায়ী পাখি পাওয়া গেলেও ইআইএ রিপোর্টে তা নেই।
৩। যে ৮.৫ লক্ষ গাছ কাটা হবে তার ক্ষতিপূরক বৃক্ষরোপণের জন্য মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানায় বনসৃজনের সিদ্ধান্ত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক করেছে। এই সুপারিশটি হাস্যকর কারণ গ্রেট নিকোবরের লবণাম্বু অঞ্চল, উপকূল অঞ্চল এবং বর্ষাবনের উদ্ভিদ প্রজাতি কখনোই মধ্যপ্রদেশে রোপণ সম্ভব নয়। দ্বীপের বৃষ্টিপাত, মৃত্তিকা ইত্যাদি কখনই মধ্যপ্রদেশে বা হরিয়ানাতে পাওয়া যাবে না। এই দুই রাজ্যে সমুদ্র না থাকায় সমুদ্রের উপকূলের ক্ষতিপূরক বৃক্ষরোপণের ভাবনা যার মস্তিষ্কপ্রসূত তাঁকে ধন্যবাদ না দিয়ে উপায় নেই। আরও বলা হয়েছে যে, এই বৃক্ষরোপণ হবে বেসরকারি ও সরকারি যৌথ উদ্যোগে।
২০১৯ সালে এই সংক্রান্ত আইনের কিছু পরিবর্তন এনে বলা হয় যে, কোনো প্রকল্পের কারণে গাছ কাটা হলে তার ক্ষতিপূরক বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা অন্য রাজ্যেও করা যাবে। যুক্তি দেওয়া হয় যে, গাছ কাটার ফলে যে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ ও নির্গমনে যে ক্ষতি হবে তা পূরণ করাই আসল কথা। কিন্তু এখানে যে দুটি প্রশ্ন আসছে তা হলো - প্রথমত, কেবল বৃক্ষরোপণ করলে কিছুটা কার্বন শোষণ হয় ঠিকই কিন্তু যে জৈব বৈচিত্র্য নষ্ট হবে তার ক্ষতিপূরণ কী করে হবে? দ্বিতীয়ত, কেবল যে কটি গাছ কাটা হলো,তার জন্য যে কার্বন নির্গমন হলো তার কিছু অংশ শোষণের ব্যবস্থা হলো ঠিকই কিন্তু এই বিশাল প্রকল্প রূপায়ণ করতে গিয়ে এবং তার পরে প্রতিনিয়ত যে কার্বন নির্গমন হবে তার শোষণের কী হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর সরকারের পোষিত পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের কাছে নেই।