৫৭ বর্ষ ৫০ ও ৫১ সংখ্যা / ৭ আগস্ট ২০২০ / ২২ শ্রাবণ ১৪২৭
কাকাবাবুর সৃষ্ট বিপ্লবী বাহিনীর এক সৈনিক
অরিন্দম কোঙার
শতবর্ষ
২০১৯-২০ সালে ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের শতবর্ষ চলছে। ১৯২০ সালে প্রবাসে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা হয় এবং ১৯২১ সাল থেকে দেশে পার্টি গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সেই সময়ে ভারতে পার্টি গড়ে তোলার জন্য যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন, তাঁদের অন্যতম মজুফ্ফর আহ্মদ। সেই কারণে তিনি ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের একজন পথিকৃৎ। মুজফ্ফর আহ্মদের জন্ম ১৮৮৯ সালের ৫ আগস্ট, মৃত্যু ১৯৭৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর। ১৯২০ সালে রাজনীতিকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন। আমৃত্যু কমিউনিস্ট আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসাবে মার্কসবাদ-লেনিনবাদের ভিত্তিতে সে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
ব্রিটিশ সরকার প্রথম থেকেই কমিউনিস্ট পার্টির ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনে। ১৯৪৭ সাল থেকে ব্রিটিশ শাসন নেই, কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টির উপর আক্রমণ বজায় আছে। ১৯২৯-৩৩ সালে বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক ফৌজদারি মামলা চলে ‘মীরাট কমিউনিস্ট ষড়যন্ত্র মামলা’ নামে। অভিযুক্ত কমিউনিস্টরা আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাম্রাজ্যবাদকেই অভিযুক্ত করেন। মুজফ্ফর আহ্মদ তাঁর বিবৃতিতে বলেনঃ ‘‘যাঁরা ১৯২১ সাল থেকে ভারতের কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের শাখা সংগঠন স্থাপনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে কথিত, মামলায় আমাকে তাদেরই একজন বলে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। যদি সত্যিই কোনো ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে, তাহলে তা বাদীপক্ষকেই প্রমাণ করতে হবে, তবে একথা আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে, আমার সমস্ত ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও এদেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনের আদি পথিকৃৎদের মধ্যে আমিও অন্যতম।’’ প্রকৃত কমিউনিস্টরা এমন গর্ববোধই করে থাকেন।
সৈনিক
মুজফ্ফর আহ্মদের প্রয়াণের পর দেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙার লেখেনঃ ‘‘...সারা জীবন নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁকে (সাম্যবাদের আদর্শ) আঁকড়ে রেখেছিলেন, যিনি নিজের সমগ্র ব্যক্তিসত্তাকে সেই আদর্শের উপযোগী করে গড়ে তুলেছিলেন, যিনি কোনোদিন সে আদর্শ হতে নিজেকে বিচ্যুত হতে দেন নাই, যিনি সেই আদর্শকে চিন্তার স্তর হতে শ্রমিক-কৃষক ও জনগণের সংগঠিত বিপ্লবী আন্দোলনের মধ্যে রূপ দিয়েছেন এবং সারাজীবনের সাধনার মধ্য দিয়ে শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে পরিচালিত গণমুক্তির এক বিপ্লবী বাহিনী সৃষ্টি করে গেছেন, তিনিই হলেন আমাদের শ্রদ্ধেয় মুজফ্ফর আহ্মদ - আমাদের সকলের প্রিয় কাকাবাবু। অন্যান্য অনেকের মতো আমি নিজেও কাকাবাবুর সৃষ্ট সেই বাহিনীর একজন সৈনিক মনে করে গর্ববোধ করি।’’ (কাকাবাবুর কথায় যা মনে আসে)। এই সৈনিকই ক্রমশ হয়ে ওঠেন এক দক্ষ রণকুশলী। হরেকৃষ্ণ কোঙারেরও জন্ম এই ৫ আগস্ট - ১৯১৫ সালের ৫ আগস্ট। তাই এখানে প্রাসঙ্গিক আলোচনা।
কর্মী থেকে নেতা
হরেকৃষ্ণ কোঙার সৈনিক থেকে রণকুশলী হয়েছিলেন অর্থাৎ ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের কর্মী থেকে ধাপে ধাপে নেতৃত্বের নিম্নস্তর থেকে ক্রমশ উচ্চস্তরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। সাংগঠনিক পরিকল্পনায়, মাটেঘাটে আন্দোলন পরিচালনায়, তত্ত্ব ও তার প্রয়োগে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক যথার্থ কমিউনিস্ট নেতা। তাঁর মতেঃ ‘‘নেতৃত্বের কাজ শুধু সঠিক নীতি নির্ধারণই নয়, সেই নীতিকে জনগণের নীতিতে পরিণত করা, সেই মতো জনগণকে সংগঠিত করা ও তাদের সংগ্রাম পরিচালনা করা।’’ (ভিয়েতনাম ও ভারত)।
অবস্থাপন্ন পরিবারের সন্তান হরেকৃষ্ণ কোঙার স্বচ্ছলতার জীবন ত্যাগ করে ১৯৩০ সাল থেকে আমৃত্যু জনগণের মুক্তির সংগ্রামের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখেন। স্বাধীনতার আগে ও পরে বারে বারে কারারুদ্ধ হয়েছেন। আইন অমান্য আন্দোলনে শুরু, কমিউনিস্ট আন্দোলনে শেষ। মাঝে জাতীয়তাবাদী বিপ্লবী আন্দোলনে ৬ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দি থাকেন। ১৯৩৮ সালে জেল থেকে মুক্ত হয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। অবিভক্ত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি থেকে এবং পরে প্রথম থেকেই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৬৮ সালে সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সেই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত সীমান্ত সংঘর্ষের সময় উগ্র জাত্যভিমান যখন মাথাচাড়া দেয়, তখন দমদম সেন্ট্রাল জেলে কারারুদ্ধ অবস্থায় ৩১ ডিসেম্বর রাত ১০.৩০ মিনিটে তিনি লেখেনঃ ‘‘প্রকৃত দেশপ্রেম ও মার্কসবাদ-লেনিনবাদের শক্তি এই সময়ে সংহত হচ্ছে। আমিও আমার ক্ষুদ্র শক্তি নিয়ে এই কাজে সক্রিয় অংশ নিতে পেরেছি। সারা বছরে এটাই আমার বড় গর্বের কথা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস - ভুল করি নাই। দেশের বিপদের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার আক্রমণ, দমননীতি ও সংস্কারবাদীদের কুৎসা প্রচার আমাদের উপর নেমেছে। কিন্তু মার্কসবাদী বিজ্ঞানের অমোঘ নিয়মে এ সবই ব্যর্থ হবে।... আমি গর্বিত যে, আমি এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বেঁচে আছি এবং মার্কসবাদ ও প্রগতির সঙ্গে আছি।’’ (বর্ষশেষ) কী গভীর প্রত্যয় ও আত্মবিশ্বাস! মাত্র ৫৯ বছর বয়সে, ১৯৭৪ সালের ২৩ জুলাই হরেকৃষ্ণ কোঙারের জীবনাবসান হয়।
তত্ত্ব ও প্রয়োগ
মার্কসবাদ বিপ্লবের তত্ত্ব। বিপ্লব করতে হয় দেশের মাটিতে, দেশের মানুষকে নিয়ে। হরেকৃষ্ণ কোঙারের স্পষ্ট অভিমত হচ্ছেঃ ‘‘তাই আমার দেশকে বুঝতে হবে, মাটিকে চিনতে হবে, জানতে হবে আমাদের দেশবাসীকে, তাদের বর্তমান চেতনা ও প্রস্তুতির স্তরকে। এর উপর দাঁড়িয়ে এগুতে হবে। ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে আজ খিদের যন্ত্রণা আমাদের বোঝাতে হবে না। তাদের মনে আমাদের প্রশ্ন জাগাতে হবে - কেন, কেন এই অনাহার, অপমৃত্যু ও শোষণ? (ভিয়েতনামের শিক্ষা ও স্মৃতি)। জনগণ যে ভাষা বোঝে, যে ভাষায় কথা বলে, হরেকৃষ্ণ কোঙার সেই ভাষাতেই এই ‘কেন’ প্রশ্নের উত্তর দিতেন।
মার্কসবাদে দখল, দেশ ও মানুষের সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ছিল বলেই হরেকৃষ্ণ কোঙার খেতমজুর থেকে বুদ্ধিজীবী পর্যন্ত সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের মধ্যে সাবলীলভাবে তাঁর বক্তব্য নিয়ে যেতে পারতেন। খেতমজুরদের সঙ্গে তিনি যেমন ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁদের ঘরের দাওয়ায় বসে আলোচনা করতে পারতেন, তেমনি আবার ভারত সরকারের আইএএস অফিসার ক্যাডারদের কাছেও দীর্ঘ বক্তব্য হাজির করতে পারতেন। সন্দেহ নেই, আমাদের দেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভূমিব্যবস্থা, কৃষিসমস্যা সম্পর্কে তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল প্রশ্নাতীত এবং কৃষকনেতা হিসাবে তিনি সমধিক পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে রাজনীতি, অর্থনীতি, দর্শন, ইতিহাস, সাহিত্য ও শিল্প আর তার সঙ্গে বাস্তব অভিজ্ঞতা বুদ্ধিজীবীদের কাছেও তাঁকে আকর্ষণীয় করে তুলেছিল।
১৯৬৭ সালে তখন সাধারণ নির্বাচন হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গে গঠিত হয়েছে যুক্তফ্রন্ট সরকার। হরেকৃষ্ণ কোঙার ভূমি ও ভূমিরাজস্ব মন্ত্রী। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী ডঃ অশোক মিত্র তখন কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষিপণ্য মূল্য কমিশনের চেয়ারম্যান। সহকর্মীকে নিয়ে কলকাতা মহাকরণে মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি লিখেছেনঃ ‘‘তিনি হাজার হলেও মন্ত্রী, আমরা প্রায় আমলা, অথচ আসলে যেন তা নয়, তিনি শিক্ষক, আমরা অধ্যয়নশীল ছাত্র, তাঁর কাছ থেকে জ্ঞান আহরণ করছি। জীবনের যুদ্ধক্ষেত্রে যা শেখা যায়, সে জ্ঞানের তুলনা নেই। পুঁথিপড়া জ্ঞান নয়, রক্তে-চেতনায়-ধমনীতে যে জ্ঞানের প্রবাহ, তার উৎস হাটে-মাঠে-খেতে-ঘাটে, খালপাড়ে, তার উৎস অত্যাচারী জমিদারের বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে কাতারে কাতারে জোট বাঁধায়, রাষ্ট্রশক্তির শ্রেণিচরিত্রের বিরুদ্ধে সমাজের দরিদ্রতম সম্প্রদায়ের চেতনা সঞ্চারের প্রয়াসে। হরেকৃষ্ণবাবু বলে যাচ্ছেন, আমরা শুনছি, একটা-দুটো প্রাসঙ্গিক তর্ক উত্থাপন করছি, তিনি প্রত্যুত্তর দিচ্ছেন, আমরা সহকর্মী মন্ত্রমুগ্ধ।’’ (হরেকৃষ্ণবাবু)।
বিশ শতকের সাতের দশকে ১৯৬৭ সালে এবং ১৯৬৯-৭০ সালে হরেকৃষ্ণ কোঙার পশ্চিমবঙ্গে যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। সর্বোপরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে ছিলেন জ্যোতি বসু। সরকার ছিল স্বল্পস্থায়ী, কিন্তু গণসংগ্রামের ব্যাপ্তি ছিল বিশাল। এই যুক্তফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্ট সরকারের অভিমুখ কী? এইরকম একটা প্রশ্নে ১৯৭৩ সালে হরেকৃষ্ণ কোঙার দেখান যেঃ ‘‘গণ-সংগ্রামের জন্য ও তার প্রয়োজনে যুক্তফ্রন্ট, কিন্তু মার্কসবাদ-লেনিনবাদের মতে যুক্তফ্রন্ট কোনো স্থিতিশীল ধারণা নয়। জনগণের বিভিন্ন শ্রেণি ও স্তরের বিশেষ ঐক্যের একটা পার্টিগত প্রতিফলন হলো যুক্তফ্রন্ট। যুক্তফ্রন্টের একটা বিশেষ রূপ অবস্থা নির্বিশেষে স্থায়ী হতে পারে না। অবস্থার পরিবর্তনে তার চরিত্রও পরিবর্তিত হয়। যুক্তফ্রন্ট সরকার ছিল সংগ্রামের হাতিয়ার। তাই সঠিকভাবেই গণ-সংগ্রামের কোনো ছোট-খাটো ত্রুটি-বিচ্যুতি হয় না, তা নয়। কোটি কোটি মানুষ সংগ্রামে নামলে এরকম হতে বাধ্য।’’ (গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের বৈপ্লবিক তাৎপর্য) পরিস্থিতি অনুযায়ী যুক্তফ্রন্টের ধারণার কেমন পরিবর্তন হচ্ছে, বাস্তবে আমরা তা উপলব্ধি করতে পারছি।
এই তত্ত্ব প্রয়োগের নানাদিক ব্যাখ্যা করে হরেকৃষ্ণ কোঙার লেখেনঃ ‘‘কিছু ‘নেতা’ বক্তৃতা দিলেই তাদের কথা শুনে জনগণ বিপ্লবী হয়ে ওঠে না। জনগণ শেখে নিজেদের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। নেতৃত্বের কাজ হলো জনগণের দৈনন্দিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাদের সংগঠিত করা এবং সেই সঙ্গে মার্কসবাদী প্রচারের দ্বারা তাদের চেতনাকে ধাপে ধাপে অর্থনৈতিক স্তর হতে রাজনৈতিক স্তরে উন্নীত করা। জনগণ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এর সত্যতা বুঝতে শেখে এবং ধাপে ধাপে নেতৃত্বের চেতনা জনগণের চেতনায় রূপান্তরিত হয়।’’ (বিপ্লব সম্বন্ধে কয়েকটি মার্কসবাদী শিক্ষা)। এই ধারণার বাস্তব দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী হিসাবে তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে।
শিক্ষণীয়
হরেকৃষ্ণ কোঙার মুজফ্ফর আহ্মদের শিক্ষা আত্মস্থ করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর প্রতিফলন ঘটেছে মৃত্যুশয্যাতেও। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র নেতা (বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য) মৃদুল দে লেখেনঃ ‘‘নার্সিং হোমে একমাস ধরে তিনি উচ্চারণ করে গেছেন সবসময়ই পার্টির কথা, কখনও সজ্ঞানে, কখনও অজান্তে। মন পড়ে রয়েছে মানুষকে মুক্ত করার দিকে। ছোটো থেকে বড়ো ঘটনা কোনোটাই তাঁর দৃষ্টি এড়ানোর যো নেই। ২২ জুলাই তিনি সর্বশেষ যে কথা বলেছেন, তা হলো, ‘রেলওয়ে স্ট্রাইকের তাৎপর্য আমাদের বুঝতে হবে। এটা বোঝার প্রয়োজন আছে যে...।’ ঠিক এটাই ছিল তাঁর সমগ্র পার্টিজীবনের গতিধারা।’’ (হরেকেষ্টদাঃ কিছু স্মৃতি-কিছু কথা)। এটাই তো আমাদের কাছে শিক্ষা।