৫৯ বর্ষ ২১ সংখ্যা / ৭ জানুয়ারি, ২০২২ / ২২ পৌষ, ১৪২৮
মৌলবাদীদের কাছে আত্মসমর্পণ খড়গপুর আইআইটি’র
প্রসঙ্গঃ ২০২২-এর ক্যালেন্ডার
তপন মিশ্র
সম্প্রতি ভারতীয় বিদ্যাচর্চা বিশেষ করে প্রাচীনকালে বিজ্ঞানচর্চা পুনরুদ্ধারের এক বড়ো ভূমিকা নিয়েছে খড়গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি)। ২০২২ সালের ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে গিয়ে তারা এমন কিছু কথা বলেছে যা দেখে যে কারুরই মনে হবে এটি আরএসএস, হিন্দু মহাসভা ইত্যাদির মতো একটি সংগঠনের ক্যালেন্ডার। কেবল আইআইটি’র নাম আর লোগো বাদ দিয়ে অনায়াসে আরএসএস বসিয়ে দেওয়া যায়। ক্যালেন্ডারটির নামঃ ‘রিকভারি ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম’ (‘Recovery Foundations of Indian Knowledge Systems’)। আপনার-আমার টাকায় আপনাকে-আমাকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে আইআইটি। খড়্গপুর আইআইটি যা ভারতীয় জ্ঞানচর্চার উৎকর্ষ কেন্দ্র (Centre of Excellence in Indian Knowledge System) এবং নেহরু মিউজিয়ম অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র যৌথ উদ্যোগে এই ক্যালেন্ডারটি তৈরি হয়েছে। ভারতীয় জ্ঞানচর্চার নামে বৈদিক মিথের চর্চা এবং ভারতবর্ষের ঐতিহ্যশালী উন্নত বিজ্ঞানচর্চাকে উপেক্ষা করার জন্যই কী তথাকথিত উৎকর্ষ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা? ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু দেশের স্বাধীনতার ঠিক আগে অর্থাৎ ১৯৪৭ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতীয় সায়েন্স কংগ্রেসের ৩৪তম অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে দেশের বিজ্ঞানীদের সামনে বিজ্ঞান মানসিকতা (scientific temper) ছড়িয়ে দেওয়ার আবেদন করেন। এই ভাষণের বিষয় ছিলঃ ‘সায়েন্স ইন দ্য সার্ভিস অব দ্য নেশন’ (‘Science in the service of the nation’)। ‘ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া’ গ্রন্থেও নেহরু বিজ্ঞান মানসিকতার প্রসারের উপর জোর দেন। যে মানুষটি বার বার বিজ্ঞান মানসিকতা চর্চার কথা বলেছেন, তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত সংগ্রহশালা থেকে এই অপবিজ্ঞানের চর্চা এক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।
যে ইতিহাস অস্বীকার করা হচ্ছে
প্রাচীন ভারতীয় বিদ্যাচর্চার কী কী এতে আছে তা কালেন্ডারটির পাতা ওলটালে দেখা যাবে। পাতা ওলটানোর আগে প্রাচীন ভারতের বিদ্যাচর্চার কী কী নেই তাতে সেটা একবার দেখে নেওয়া যাক। চিকিৎসাশাস্ত্র, জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রাচীন ভারতে উন্নতমানের গবেষণার প্রমাণ রয়েছে। সেই ঐতিহ্য আইআইটি’র মতো প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করতে পারেনি। যা উৎসাহিত করেছে তা হলো তথাকথিত বৈদিক বিজ্ঞানের মিথ, যার কোনো প্রমাণ নেই।
১। চরক প্রাচীন ভারতের একজন চিকিৎসক। তাঁর সৃষ্টির সময়কাল আনুমানিক ১০০ খ্রিস্টপূর্ব। চরক ছিলেন তৎকালীন ভারতবর্ষের রাজা কনিষ্ক’র চিকিৎসক। তিনি আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতির সর্বপ্রথম সংকলনগ্রন্থ রচনা করেন, যা ‘চরক সংহিতা’ নামে পরিচিত। এই গ্রন্থ আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সোপান। মানবদেহে পাচনক্রিয়া, বিপাকক্রিয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয় এই বই।
২। আর্যভট্ট প্রাচীন ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত গণিতবিদদের মধ্যে একজন। ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম তাঁর নামে ‘আর্যভট্ট’ রাখা হয় । তাঁর কাজের সময়কাল ৪৭৬-৫৫০ খ্রিস্টাব্দ। পাই (Pi)-র মান নির্ধারণ এবং শূন্যের গাণিতিক মান এবং এর পর ঋণাত্মক সংখ্যার ধারণা ছাড়াও শূন্যের সামগ্রিক ধারণা তিনি দেন।
৩। বরাহমিহির প্রাচীন ভারতের গুপ্ত সাম্রাজ্যের সমসাময়িক (আনুমানিক ৫০৫-৫৮৭ খ্রিস্টাব্দ) একজন বিখ্যাত দার্শনিক, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতবিদ এবং কবি। তিনি ‘পঞ্চসিদ্ধান্তিকা’ নামের একটি মহাসংকলনগ্রন্থ রচনা করেন, যাতে তাঁর জীবদ্দশার সময়কার গ্রিক, মিশরীয়, রোমান ও ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের সার লিপিবদ্ধ হয়েছে। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় বিজ্ঞানীদের অন্যতম। জ্যোতির্বিজ্ঞান ছাড়াও গণিতশাস্ত্র, পূর্তবিদ্যা এবং স্থাপত্যবিদ্যায় বিশেষজ্ঞ ছিলেন তিনি।
৪। শ্রীধরাচার্য ছিলেন দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধানের পদ্ধতির আবিষ্কারক এবং ‘গণিত সার সংগ্রহ’ নামে গণিতের এক প্রামাণ্য গ্রন্থের লেখক। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণার সময়কাল ছিল ১০০০ খ্রিস্টাব্দ উত্তর-সময়। লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক সম্পর্কে ধারণা ও ব্যবহার পদ্ধতি নিয়ে তাঁর মৌলিক চিন্তা ছিল। সমান্তর প্রগতি এবং গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়েও তাঁর তত্ত্ব ছিল।
৫। সুশ্রুত একজন প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসক ছিলেন এবং ‘সুশ্রুত সংহিতা’ গ্রন্থটির মূল লেখক হিসাবে পরিচিত। এই গ্রন্থের রচনার সময়কাল ৭০০ খ্রিস্টপূর্ব।
৬। কণাদ ছিলেন ভারতের একজন দার্শনিক। ‘বৈশেষিক সূত্র’ নামক দর্শন-গ্রন্থের রচয়িতা। তিনি সম্ভবত দ্বিতীয় শতকে (খ্রিস্টাব্দ) জীবিত ছিলেন। যদিও কিছু সূত্রমতে তিনি ষষ্ঠ শতকে জীবিত ছিলেন। পরমাণুর ধারণার স্রষ্টা ছিলেন তিনি। পদার্থতত্ত্বের দার্শনিক ধারণার স্রষ্টাও ছিলেন তিনি।
৭। বরাহমিহির ভূতত্ত্ববিদ্যা, গণিত, বাস্তুতন্ত্র (ecology), জলানুসন্ধান বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। উইপোকা, উদ্ভিদ ও মাটির নিচের জল ইত্যদির আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে তাঁর গবেষণা ছিল অভিনব। তাঁর লেখা ‘বৃহৎ-সংহিতা’য় ভূমিকম্পের কারণ সম্পর্কে আলোচনা বৈজ্ঞানিক তথ্য সমৃদ্ধ। চন্দ্র এবং গ্রহগুলির ঔজ্জ্বল্য যে নিজস্ব নয়, বরং তারা সূর্যের আলোকে আলোকিত - একথা তিনিই বলেন। তাঁর বই ‘পঞ্চসিদ্ধান্ত’ জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার এক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। ত্রিকোণমিতি নিয়ে তাঁর বেশ কিছু উদ্ভাবনী চিন্তা ছিল।
আইআইটি’র ক্যালেন্ডারে ভারতীয় জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার উপরে উল্লেখিত এই ঐতিহাসিক চরিত্রদের কোনো ভূমিকাই স্বীকার করা হয়নি। এঁরা সবাই হিন্দু ছিলেন কী না জানা নেই, অর্থাৎ সেই সময়ে হিন্দু ধর্মের বর্তমান চরিত্রের কোনো অস্তিত্ব ছিল কী না তাও জানা নেই তবে এঁরা প্রত্যেকেই ঈশ্বর বিশ্বাসী ছিলেন। তা সত্ত্বেও আইআইটি’র একটা অংশের মতে, ভারতীয় জ্ঞানচর্চায় এঁদের স্থান নেই কারণ তাঁরা জ্ঞানচর্চায় যুক্তিবাদের সামান্যতম ছোঁয়া সহ্য করতে মনে হয় অপারগ।
ইতিহাস নয় মিথ
ক্যালেন্ডারটি ১৮ পাতার। এই পাতাগুলির বিভিন্ন স্থানে উল্লেখিত আছে যে, আর্যসভ্যতা বিশাল ক্যানভাসের উপর আঁকা এক বিশাল ল্যান্ডস্কেপের মতো। আর্য ঋষিরা ছিলেন দয়ালু এবং উদার, তাঁদের লক্ষ্য ছিল সার্বভৌম এবং গণতান্ত্রিক। কিন্তু আর্য আক্রমণের (Aryan invasion) উদ্দেশ্য ছিল আগ্রাসন। জাতি এবং চামড়ার রঙের দ্বারা জেনেটিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করাই কী তত্ত্বের লক্ষ্য। বলা হয়েছে, বেদ অভিযোজন, গ্রহণযোগ্যতা এবং আত্তীকরণ নীতির উপর ভিত্তি করে লিখিত; যেখানে আর্য আক্রমণের তত্ত্ব আগ্রাসন এবং অন্যান্য জাতিদের ধ্বংসের উপর ভিত্তি করে আলোচিত।
এখানে তিনটি মূল বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে। যেমন, ১) বৈদিক সভ্যতার প্রাচীনত্বকে খ্রিস্টপূর্বাব্দ ২০০০-র মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা এবং ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পূর্বের সমস্ত কিছুকে ভারতের প্রাক্-আর্য ঘটনা (যাকে সভ্যতা হিসাবে ওরা স্বীকৃতি দিতে চায়নি) হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। সেসময়ের বাসিন্দাদের দ্রাবিড় অঞ্চলের (মূলত বর্তমানের দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা) আদিবাসী হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে এবং ২) সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা বৈদিক সংস্কৃতি ও সভ্যতার অংশবিশেষ, ৩) ‘আর্য আক্রমণ তত্ত্ব’ (Aryan Invasion Theory) এক ভ্রান্ত তত্ত্ব এবং এই তত্ত্ব হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে।
ভারতবর্ষের ইতিহাসকে হিন্দুত্বের রঙে রঞ্জিত করে নতুনভাবে লেখার চেষ্টা করছে এদেশের সরকার। প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছে যে, এদেশের সংস্কৃত-ভিত্তিক বৈদিক সমাজব্যবস্থা ভারতের নিজস্ব সংস্কৃতি যা সিন্ধু সভ্যতা এবং পশ্চিম থেকে আক্রমণকারীরা প্রবেশ করার আগে থেকে ছিল।
২০০০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশে এশীয়ার স্টেপ্প অঞ্চল থেকে পরিব্রাজকদের আগমনের ঘটনা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত সত্য ঘটনা। জিন গবেষণার উপর ভিত্তি করে ‘দ্য ফরমেশন অব হিউম্যান পপুলেশন ইন সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়া’ (‘The formation of human populations in South and Central Asia’) নামে একটি গবেষণাপত্র ২০১৯ সালে বিশ্ববিখ্যাত ‘সায়েন্স’ (‘Science’) পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই গবেষণার সঙ্গে ১৭৭ জন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী এবং অনেক ভারতীয় গবেষক এবং প্রতিষ্ঠান যুক্ত ছিল। এই গবেষণার উপাদান ছিল ৮৩৭টি প্রাচীন মানবের ফসিল থেকে সংগৃহীত জিন। মধ্য এশিয়া, ইরান, আফগানিস্তান এবং দক্ষিণ এশিয়া থেকে এই মানবদেহগুলি সংগৃহীত হয়।
অনেক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গবেষকরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনঃ “Earlier work recorded massive population movement from the Steppe into Europe early in the 3rd millennium BCE, likely spreading Indo-European languages. We reveal a parallel series of events leading to the spread of Steppe ancestry to South Asia, thereby documenting movements of people that were likely conduits for the spread of Indo-European languages.” (Science. 2019 Sep 6; 365)।
ঐতিহাসিক তথ্য প্রমাণ (historiography) এবং বৈজ্ঞানিক তথ্য বলছে যে, সিন্ধু সভ্যতার সময়কাল প্রায় ২৫০০ থেকে ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ এবং বৈদিক সংস্কৃতি বিকাশের সময়কাল প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। অতএব সিন্ধু সভ্যতা বেদের যুগের চেয়ে পুরনো। আর্যরা ছিল হরপ্পানদের থেকে একটি ভিন্ন সভ্যতা এবং সংস্কৃতির অংশ। হিন্দুধর্ম বৈদিক সময় বা আরও নির্দিষ্টভাবে ঋগ্বেদিক সময়ের সাথে সম্পর্কিত। প্রায় সমস্ত প্রধান সাহিত্য, স্তোত্র, আচার-অনুষ্ঠান এই সময়ে রচিত হয়েছিল। বিভিন্ন দেবতা ও দেবীর নাম যা আমরা আজকে হিন্দু দেবতা ও দেবী হিসাবে জানি তা এই সময়েই সৃষ্টি হয়েছে। সিন্ধু সভ্যতার মানুষ মূলত প্রকৃতি পূজারী ছিলেন। সেখানে কোনো বিগ্রহকে মন্দিরে পুজো করার কোনো প্রমাণ নেই। হরপ্পা সভ্যতায় উৎপাদনশীলতার অংশ হিসাবে মাতৃদেবীর উপাসনার চল ছিল কিন্তু এই পদ্ধতি ছিল হিন্দুদের পদ্ধতি থেকে একেবারেই আলাদা।
ভাবলে অবাক লাগে যে, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম অধিকর্তা। ভারতে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণার বিকাশ যাঁদের হাত ধরে হয়েছিল তাঁর মধ্যে জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ ছিলেন অন্যতম। প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের কৃতিছাত্র রসায়ন বিজ্ঞানী জ্ঞানচন্দ্র ঘোষকে ১৯৫০ সালে ইস্টার্ন হায়ার টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট (Eastern Higher Technical Institute) নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানই পরবর্তীকালে খডগপুর আইআইটি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। অপবিজ্ঞানের চর্চাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকারি মদতপুষ্ট জ্ঞানচর্চার এই উৎকর্ষ কেন্দ্র।
আইআইটি সহ অন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে ভারতীয় জ্ঞানচর্চার উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হিসাবে বলা হয়েছিলঃ “ভারত ও বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা কেন্দ্রের শীর্ষ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি ব্যাপক জ্ঞানের ভিত্তি তৈরি করার জন্য এই কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।” কিন্তু এখন আসল উদ্দেশ্য হলো - আরএসএস এবং অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের যুক্তিবাদ বিরোধী চিন্তাকে বৈধতা দান করে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া।
সংবাদসংস্থা ‘দ্য ওয়ার’ (‘The Wire’) লিখছে ‘Vedic Calendar’ Is Worse Than Ordinary Pseudoscience’। সাধারণ অপবিজ্ঞান চর্চা থেকে অনেক পরিকল্পিতভাবে যুক্তিবাদের চর্চার উপর আক্রমণ হানতে চাইছে হিন্দুত্ববাদীরা। আইআইটি’র এই প্রয়াস একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং আমাদের উৎস সম্পর্কে একটি বৃহত্তর প্রকল্পের অংশ যা সব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং জিনগত প্রমাণকে অস্বীকার করে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। এই প্রয়াসের বিরুদ্ধাচরণই আসল দেশাত্মবোধ।