৫৯ বর্ষ ২১ সংখ্যা / ৭ জানুয়ারি, ২০২২ / ২২ পৌষ, ১৪২৮
শুধু, ভূমিকম্পটার অপেক্ষায় আছি!
পল্লব সেনগুপ্ত
মুখচলতি বাংলা কথাবার্তায় একটা গালাগালি-তুল্য অপভাষণ শোনা যায়, ‘‘মেরে বাপের নাম ভুলিয়ে দেব!’’ এরই একটা স্থানীয় রূপান্তর ছোটোবেলায় আমাদের কালীঘাট পাড়ায় শুনতাম, ‘‘বাপের নাম ‘খগেন’ করে দেব!’’ কে খগেন, কেন কারুর পিতৃনাম বদলে দিয়ে ওই অনুক্ত-পরিচয় ‘খগেন’-বাবুকে সেখানে ব্যবহার করা হবে - এতশত কিছুই জানা ছিল না, তবে ক্রোধের ওই অভিব্যক্তিটা (না-কি বিদ্রুপের?) বেশ চালু ছিল ওখানে। এত বচ্ছরবাদে আবার ওটা স্মরণে এল অতি-সাম্প্রতিক একটি খবর পত্রান্তরের পৃষ্ঠায় চোখে পড়ার বাবদে।
ব্যাপারটা হয়ত অনেকেরই নজর এড়িয়ে গেছে, তাই খুলেই বলি ঘটনাটা। একালের উর্দু সাহিত্যের ক’জন খ্যাতনামা কবি হলেন, আকবর এলাহাবাদি, রশিদ এলাহাবাদি এবং তেগ এলাহাবাদি। এখন যেহেতু উত্তর প্রদেশের এই যোগী-আমলে (মান্যবর প্রধানমন্ত্রীর বয়ানে ‘উপ-যোগী’! ...এই নামায়নের বিষয়ে পরে বলছি!) প্রবলভাবে স্থাননামের বদল ঘটানো হচ্ছে ইসলামি-ছোঁয়া মুছে ফেলার জন্য। তারই সূত্রে ইতিহাস-প্রসিদ্ধ এলাহাবাদ শহরের নামও-পালটিয়ে দিয়ে করা হয়েছে ‘প্রয়াগরাজ’। ব্যাপারটা বাঞ্ছনীয় নয় অবশ্যই - তবু যা করেছে বিজেপি সরকার, তাকে তো আর এই মুহুর্তেই ফের অন্য কিছু করা যাচ্ছে না! তো, এই তিনজন খ্যাতনামা কবির নামের সঙ্গে ‘এলাহাবাদি’ শব্দটি যুক্ত থাকায়, উত্তর প্রদেশের সরকারি উচ্চশিক্ষা দপ্তর তাদের ওয়েবসাইটে ওটিকে সরিয়ে দিয়ে নামের সঙ্গে ‘প্রয়াগরাজ’ জুড়ে দিয়েছেন! ভারতের অনেক জায়গাতেই নিজের নামের সঙ্গে জন্মস্থানের নামটাও জুড়ে দেবার রেওয়াজ আছে। এটা কবি-কথাসাহিত্যিকদের ক্ষেত্রে খুব বেশিই দেখা যায়। যেমন, জোশ মালিহাবাদি, হাসরৎ জয়পুরি, সালেখ লক্ষ্ণৌভি। এরকম অজস্র উদাহরণ দেওয়া যায়। অনেকেরই হয়ত মনে পড়বে, অকালি দলের বিখ্যাত নেতা মনজিৎ সিং কলকাত্তার নামও।
এখন প্রশ্নটা হচ্ছে, যত ইতিহাস-প্রসিদ্ধই হোক, জায়গার নাম হয়তো বদলানো যায় (গায়ের জোরে বা ভোটের জোরে) - কিন্তু সেইভাবে কারুর নামটাও কি পালটানো যায় ‘পরম পবিত্র’ সনাতন হিন্দুয়ানির বিমূঢ় (না-কি ‘মূঢ়’-ই বলব?) আবেগে? এ অধিকার আদিত্য যোগীর সরকারকে কে দিয়েছে?... ধরুন, কেউ যদি ‘আদিত্য’ নামটা এরকমই আচমকা পালটাতে চান ‘আফতাব’ (সূর্য=আদিত্য) লিখে, সেটা যেমন অসঙ্গত, অনুচিত এবং হাস্যকর হবে - এটাও তো ঠিক তাই নয় কি? হ্যাঁ এই ফাঁকে ওই ‘উপ-যোগী’ নামটার প্রসঙ্গে কিছু বলিঃ
মোদিবাবুর মতে, আদিত্যযোগী=উপ-যোগী (UPYOGI), কারণ ইউপি অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশের শাসন ব্যবস্থার প্রধান হিসেবে তাঁর চেয়ে উপযুক্ত কেউ নেই! তা তো বটেই। সেই জন্যেই সরকারি বয়ানেই, ওই রাজ্য নারী ধর্ষণ ও সংখ্যালঘু নির্যাতনে দেশের মধ্যে একনম্বরে!! ‘উপ’ দিয়ে কিন্তু ‘উপদেবতা’ ‘উপদ্রব’ - এসবও হয় বন্ধুগণ!
।। দুই ।।
আসলে, নামের ব্যাপারটা খুব স্পর্শকাতর একটা ভাবাবেগ সম্পর্ক বিষয়, অর্থাৎ ‘ইমোশ্যনাল’। পরশুরামের ‘জাবালি’ গল্পে আছে, ‘ঘৃতাচী’-কে তাঁর প্রণয়-প্রতিদ্বন্দ্বিনী ‘ঘেঁচি’ বলে সম্বোধন করায় কী হুজ্জোত হয়েছিল তার মজাদার বিবরণ! পাঠকদের ক্ষেত্রে মজার হলেও, ওই ‘ঘৃতাচী’ ওরফে ‘ঘেঁচি’ ঠাকুরানির ক্ষেত্রে মোটেই তা ছিল না। প্রায় সময়েই কারুর নামকে ওইভাবে খাস্তা করে দিলে, যার নাম সে আদৌ প্রীত হয় না যে, সে তো বলাইবাহুল্য। নাম বদলের পিছনে অবশ্য নানা রকমের মানসিকতা কাজ করে। স্নেহ-প্রীতিবশত অনেক ক্ষেত্রেই কোনও প্রিয়জনের নামটাকে উলটেপালটে নেওয়া হয়। আবার, রাগ-হিংসে-বিরক্তি-ঘৃণা-স্বার্থবুদ্ধি ইত্যাদি কারণেও বিচিত্র সব নামের উদ্ভব হয় ওইসবের উপলক্ষ্য যে-মানুষটা তার জন্যে। তবে, অধুনা বিজেপি-ওয়ালারা যে দুমদাম নানা ঐতিহাসিক স্থানের নাম পালটে দিচ্ছে, তার কারণ অবশ্য ধর্মান্ধতা, যদিও সেটা শত্রুতা, অপছন্দ, ঘৃণা প্রভৃতি মানসিক প্রবণতারই এক ধরনের ‘সংঘ’বদ্ধ শয়তানির বহিঃপ্রকাশ বলেই বুঝতে হবে! এবং এই বাবদে বহু সময়েই মিথ্যের এবং/ কিংবা কল্পনারও আশ্রয় নেওয়া হয়। যেমন, বিশ্ববিখ্যাত সমাধি সৌধ তাজমহলকেও নাম পালটিয়ে ‘তেজমহল’ বলে প্রচার করার একটা চেষ্টা করেছিল কিছুদিন আগেই ‘বিজু’বাবুদের দলভুক্ত জনাকতক ‘স্বঘোষিত’ পণ্ডিত!! ওটা নাকি আসলে ছিল শিবের মন্দির ইত্যাদি-ইত্যাদি! যদিও ওই সৌধের প্রায় ৯৯.৫% ভাগই মধ্যপ্রাচ্য-থেকে-আসা ‘ইসলামি’ স্থাপত্যের চিহ্ন বহন করছে!
।। তিন ।।
কোনও স্থানের বা ব্যক্তির নাম বদলে দেওয়ার পিছনে যে মানসিকতাগুলো কাজ করে, তাদের বাইরেও আরও কিছু প্রবণতা আছে, যেমন অসহায়তার বোধ বা অনিচ্ছার অভিব্যক্তি, ভয় ইত্যাদি, ইত্যাদি। এটা বিশেষভাবে দেখা যায় (আমাদের সমাজে অন্তত) মেয়েদের সম্পর্কে। যে সামাজিক মানসিকতা থেকে শঙ্করাচার্য কথিত বলে প্রচলিত ‘‘নারী নরকের দ্বার,’’ কিংবা প্রবাদবচন ‘‘পুড়বে নারী উড়বে ছাই, তবেই নারীর গুণ গাই’’ - জাতীয় দুর্ভাষণ গড়ে উঠেছে, তার পরিচয় নাম-টামের ক্ষেত্রেও হরহামেশাই পাওয়া যায়। এটা বিশেষভাবে দেখা যায়, কোনও পরিবারে যদি পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষা সত্ত্বেও পরের-পর কন্যার জন্ম হতে থাকে, তখন সর্বশেষটির নাম দেওয়া হয় বহুসময়েই ‘‘আন্নাকালী’’ (অস্যার্থঃ আর না, কালী!), ‘‘রক্ষেকালী’’, অথবা ‘‘থাকোমণি’’ (অর্থাৎ ইংরেজিতে যাকে বলে - ‘‘দাস্ ফার নো ফারদার’’ - এই অব্দিই, আর নয়!) ইত্যাদি কিছু। এগুলো অবশ্য আগের আমলে খুবই দেখা যেত। তবে, মানসিকতার কিছু বদল ঘটেনি যে, তার প্রমাণ একালীন পরিশীলিত-প্রলেপে অনুরূপ ক্ষেত্রে ‘‘ইতি’’, ‘‘সম্পূর্ণা’’, ‘‘সমাপ্তি’’ ইত্যাদি নামের আবির্ভাব হওয়া।
এই বিশেষ একটি প্রসঙ্গেই সাম্প্রতিক একটা খবর মিলেছে রাজস্থান থেকে। এদেশের সর্বত্রই এমন ব্যাপারটা প্রবহমান - তাই রাজস্থানের খবরটায় সচকিত হবার কিছু নেই! তবু বলি বরংঃ পত্রান্তরে প্রকাশিত ওই নিবন্ধটিতে দেখা গেল যে, ওখানের কোনো- কোনো গ্রামে পরিবারে পরপর মেয়ে জন্মালেই সর্বশেষটির নাম দেওয়া হয় ‘‘ধাপু’’ (যার মর্মার্থঃ ‘ফের! আর পারিনে বাপু!’) ‘‘রামঘনি’’ (হে রামচন্দ্র, আর মেয়ে দিও না!), ‘‘হাইচুকি’’ (যথেষ্ট হয়েছে, আর না!), ‘‘অন্তিমা’’ (আশা করছি, এই শেষ!), ‘‘রামনারী’’ (রামজি, আপনে বহুৎ সারে লেড়কি ভেজ দিয়া)। এর পরেও সাংবাদিক পারুল কুলশ্রেষ্ঠর ওই সমাচার-নিবন্ধে আরও যা-যা নামের খোঁজ পাওয়া গেল, সেগুলোও কম তাৎপর্যপূর্ণ নয়। যেমন, ‘‘মিসড্ কল’’ (অর্থাৎ, ছেলে না হয়ে, ফসকে গিয়ে মেয়ে জন্মানো!!) ‘‘নারাজি’’ (বলাইবাহুল্য, অনিচ্ছাসূচক), ‘‘ফালতু’’ (ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন!) প্রভৃতি। এমনকি ‘‘মাফি’’ (অর্থাৎ, আর না, এবারে ‘ক্ষ্যামা’ দাও ঠাকুর) নামও দেখা যাচ্ছে ইতি-উতি।
বিশেষ করে মেয়েদের নাম নিয়ে এমনটা করার অবশ্য আর্থ-সামাজিক কারণ আছে। মেয়ের বিয়ে দিতে প্রচুর খরচ হবে - যৌতুক, পণ এবং আপ্যায়ন - ইত্যাদি অজস্র ব্যাপার আছে; এবং ছেলে হলে বাপ-মাকে বুড়ো বয়সে দেখাশোনা করবে, মেয়ে তো দেখবে না! - এমন একটা বিচিত্র ধারণা আমাদের এই পুরুষ প্রাবল্যময় সমাজে প্রায় চিরস্থায়ী, তাই মেয়ে জন্মালে - অমন নামায়নের রেওয়াজ। কিন্তু এর বাইরেও নাম দেওয়ার আরও কিছু-কিছু উপলক্ষ্য আছে। এক নম্বরে আছে, কারুর শারীরিক বা চারিত্রিক বা স্থানিক কোনও বৈশিষ্ট্যর জন্যে নামের আছে একটা বিশেষণধর্মী কিছু কথা বসানো - যা প্রায়শই হয় নিন্দাধর্মী। যেমন ‘ট্যারা পাঁচু,’ ‘কেলে মদনা,’ ‘কিপটে ঠাকুর্দা,’ ‘একাদশী বৈরাগী,’ (যার মুখ দেখলে বা নাম করলে একাদশী তথা অনাহার অনিবার্য!) ইত্যাদি। আর আছে সমাজবিরোধীদের বাবদে তৈরি নাম (অর্থাৎ, বদনাম) বিশেষণ, ‘বোম গণশা’, ‘বেলাক্’ (অর্থাৎ, সিনেমার টিকিট ব্ল্যাক-করা) ‘পটলা’, ‘হাতকাটা দেবা’, ‘নেপালা’ (অর্থাৎ, ভোজালি) ‘ঝন্টু’ ইত্যাদি, ইত্যাদি!
।। চার ।।
নিশ্চয়ই আপনারা মনে-মনে বলছেন, যে প্রসঙ্গ নিয়ে লেখাটা শুরু হয়েছিল, সেটা কোথায় হারিয়ে গেল? ... হারায়নি ভাই, এতক্ষণ যা-যা বললাম তারই মধ্যে সেই শুরুর কথার সুতোটাও লুকিয়ে আছে কোথাও-কোথাও। বিজেপি-শাসনে - বিশেষত দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশে - যেভাবে নাম বদলানো হচ্ছে, তার পিছনেও একটা ঘৃণা-অপছন্দ-মিথ্যার উচাটন আছে। যেটা আবার এতক্ষণ ধরে যা বললাম, তারও মূল কথা। তো, বিজেপি- শাসনে দেশের যে যে অধঃপতন ঘটছে - অর্থনৈতিক এবং নৈতিক ক্ষেত্র ছাড়াও - তা হলো ইতিহাস এবং সত্যের অপহ্নব। মানুষের ব্যক্তিগত বা পরিবারগত পরিসরেও ‘বিজু’- সর্দারদের কুৎসিত হস্তক্ষেপও হলো সেই অধোগামিতার আরেকটি প্রকাশ। এবং সমস্ত রকম অপদার্থতা-মূঢ়তা-নষ্টামির খামতি ঢাকতে হিন্দুয়ানির জিগির তুলে অন্য ধর্মে বিশ্বাসীদের ওপর হামলা - মুসলিম-লাঞ্ছনা তো ছিলই, এখন শুরু হয়েছে খ্রিস্টানদের ওপরও আক্রমণ।
ঠিক এই সঙ্ঘবদ্ধ রাষ্ট্রীয় গুন্ডামিরই একটা জঘন্য নমুনা হলো এভাবে আচমকা কোনও বিশেষ-বিশেষ জায়গার নাম বদলে দেওয়া - এখন সেই সূত্রে মানুষের নামের ওপরও সেই ইতরতার হস্তাবলেপ পড়ছে। ‘এলাহাবাদি’ থেকে ‘প্রয়াগরাজ’ করাটাও তার একটা সম্প্রতিকালীন উদাহরণ বলেই বুঝতে হবে।
অনেকে হয়ত বলবেন যে, এরকম তো এ রাজ্যেও হয়েছে - ব্রিটিশ আমলের অনেক নাম তো পালটানো হয়েছে। ড্যালহাউসি স্কোয়ার হয়েছে বিবাদী বাগ, ওয়েলিংটন স্কোয়ার হয়েছে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, অক্টার্লোনি মনুমেন্ট হয়েছে শহিদ মিনার। হ্যাঁ, হয়েছে। কিন্তু প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই (এই তিনটি বদল ছাড়াও) সাম্রাজ্যবাদী অপশাসকদের -চিহ্নবাহী নাম ছিল সেসব। সেখানে কোনও ধর্মীয় বিদ্বেষ বা মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদগ্রতা ছিল না। তাই দুটো ব্যাপারকে মেলানো যায় না।
মোট কথা, দেশের সমস্ত ক্ষেত্রেই একটা সাম্প্রদায়িক উন্মার্গগামিতাকে বিজেপি জিইয়ে রাখতে চাইছে নিজেদের ব্যর্থতা এবং অপকীর্তির ঢাল হিসাবে। এইসব নাম বদলও তারই অন্যতম অভিব্যক্তি!
লেখাটা সাঙ্গ করার আগে ইঠাৎ নামবদলানো নিয়ে প্রায় ধ্রুপদী একটা বইয়ের কথা মনে পড়ে গেলঃ সুকুমার রায়ের ‘হ য ব র ল’! এই বিরাট মাপের লেখককে তো আমাদের দেশে শুধুমাত্র শিশু-কিশোরদের লেখক বলেই গণ্য করা হয় - যেটা বস্তুত ভ্রান্ত! তাঁর প্রয়াণেরও শতবর্ষপূর্তি আগামী বছরে। তাঁর বিখ্যাত বই ‘হ য ব র ল’-তে একটি চরিত্র আছে, যার নাম কখনও হয় ‘হিজিবিজবিজ’ (গুষ্টিশুদ্ধু সবার তখন ওই নাম হয়), কখনও হয় ‘তকাই’ (পূর্ববৎ)। আবার সকালে তার নাম থাকে ‘‘আলু নারকোল’’ আর বিকেল হলেই হয়ে যায় সেটা ‘‘রামতাড়ু’’। কিন্তু তার চেয়েও আকর্ষণীয় ছিল আরেকজন - সে সব জিনিসের নাম দিত অদ্ভুত-অদ্ভুতঃ জুতোর নাম ‘‘অবিমৃষ্যকারিতা’’, ছাতার নাম ‘‘প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব’’, গাড়ুর নাম ‘‘পরমকল্যাণবরেষু’’ ইত্যাদি। কিন্তু যেই সে বাড়ির নাম দিয়েছে ‘‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’’ অমনি ভূমিকম্প হয়ে সেটা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েছিল! তা, বিজেপি’রও তো এখন ওই ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ অবস্থা! আমরা শুধু ভূমিকম্পের অপেক্ষায় আছি আর কি...!
অনেকে হয়ত বলবেন যে, এরকম তো এ রাজ্যেও হয়েছে - ব্রিটিশ আমলের অনেক নাম তো পালটানো হয়েছে। ড্যালহাউসি স্কোয়ার হয়েছে বিবাদী বাগ, ওয়েলিংটন স্কোয়ার হয়েছে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, অক্টার্লোনি মনুমেন্ট হয়েছে শহিদ মিনার। হ্যাঁ, হয়েছে। কিন্তু প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই (এই তিনটি বদল ছাড়াও) সাম্রাজ্যবাদী অপশাসকদের -চিহ্নবাহী নাম ছিল সেসব। সেখানে কোনও ধর্মীয় বিদ্বেষ বা মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদগ্রতা ছিল না। তাই দুটো ব্যাপারকে মেলানো যায় না।