E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৪৭ সংখ্যা / ৭ জুলাই, ২০২৩ / ২১ আষাঢ়, ১৪৩০

কমরেড জ্যোতি বসু’র জন্মদিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য

‘‘মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক আমি তোমাদেরই লোক’’

শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায়


এ বছরের ৮ই জুলাই ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রবাদপ্রতিম নেতা কমরেড জ্যোতি বসুর ১০৯তম জন্মদিন। ওই দিনটা শুধুমাত্র জ্যোতি বসুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্যই পালন করা হয় না, এদেশের কমিউনিস্ট, শ্রমিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি যে অবদান রেখে গেছেন তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথও গ্রহণ করা হয়।

উচ্চবিত্ত সম্ভ্রান্ত ঘরের সন্তান, সেন্ট জেভিয়ার্স ও প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র চলে গেলেন লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়তে। সহপাঠী স্নেহাংশুকান্ত আচার্য, ভূপেশ গুপ্ত প্রমুখ। গ্রেট ব্রিটেনের কমিউনিস্ট নেতা রজনী পাম দত্তের কাছে মার্কসবাদের পাঠ। দেশে ফিরে বিলাস ও বৈভবের হাতছানি উপেক্ষা করে পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে বন্দর শ্রমিক, রেল শ্রমিকদের মধ্যে কাজ শুরু করলেন। ছিলেন এআইটিইউসি পরে সিআইটিইউ’র অন্যতম নেতা।

১৯৪৭-এ এলো দেশের স্বাধীনতা। ৪৮-এ পার্টি বেআইনি, চলছে তেলেঙ্গানার ঐতিহাসিক কৃষক সংগ্রাম, পশ্চিমবঙ্গে কাকদ্বীপ ও বড়া কমলাপুরের কৃষক সংগ্রাম, তেভাগার বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম। জ্যোতি বাবু বিনাবিচারে গ্রেফতার হলেন। ১৯৫০ সালে প্রবর্তিত হলো স্বাধীন ভারতের প্রথম সংবিধান। হাইকোর্টের নির্দেশে পার্টির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে ১৯৫২ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচন। তার আগে ১৯৪৬ সালে সীমাবদ্ধ ভোটাধিকারের ভিত্তিতে রেল কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়ে জ্যোতি বসুর আইন সভায় প্রবেশ। ১৯৫২ থেকে ২০০১ সাল (১৯৭২-৭৭ বাদে) একটানা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য। ৫২-৬৭ বিরোধীদলের নেতা হিসাবে অসামান্য ভূমিকা। ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ সালের দুটি যুক্তফ্রন্ট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী। ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ সাল - নয় মাস ও ১৩ মাস দুটি যুক্তফ্রন্ট সরকার পশ্চিমবঙ্গের শাসন ক্ষমতায় ছিল। মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে আসা বাংলা কংগ্রেসের অজয় মুখার্জি আর উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। যুক্তফ্রন্টের মধ্যে বহু দল ছিল, আমাদের পার্টি ছিল সবথেকে বড়ো দল। যুক্তফ্রন্টের কৌশলকে কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা হাতে কলমে জ্যোতিবাবু প্রয়োগ করেছিলেন। একজন সুদক্ষ প্রশাসক হিসাবে এই অল্প সময়ে তিনি তাঁর যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট সরকারের সময়ে উন্মত্ত পুলিশবাহিনীর বিধানসভায় তাণ্ডবকে যেভাবে দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন তা ভাবা যায় না। ’৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গে মধ্যবর্তী নির্বাচনে সার্বিক বাম ঐক্য না হলেও আমাদের পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও সিপিআই(এম)-কে সরকার গড়তে ডাকা হয়নি। যুক্তফ্রন্ট ভেঙে যাবার পর পার্টি সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি’র সাথে বোঝাপড়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ফলে অজয় মুখার্জি কংগ্রেস ও সিপিআই এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হন - অবশ্য তা ছিল ক্ষণস্থায়ী।

’৭২-’৭৭ ছিল পশ্চিমবঙ্গে আধা-ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসের এক অন্ধকার যুগ। ১৯৭৫-’৭৭ ছিল সারা ভারতে অভ্যন্তরীণ জরুরি অবস্থা। ’৭৭ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম গঠিত হলো বিভিন্ন অ-কংগ্রেসী বুর্জোয়া দলের মিলিত সরকার। আর তারপরেই হলো পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আমাদের পার্টি এককভাবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। তখন যুক্তফ্রন্ট থেকে গড়ে উঠেছে বামফ্রন্ট (তখনো সিপিআই এই ফ্রন্টে ছিল না, পরে যুক্ত হয়)। সব দলকে নিয়ে তিনি যেভাবে দক্ষতার সাথে সরকার চালিয়েছেন, সাড়ে ২৩ বছর একাদিক্রমে মুখ্যমন্ত্রী - ইতিহাসে বিরল ঘটনা। ঠিক সময়মতো উত্তরসূরী বেছে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে তিনি অব্যাহতি নিলেন।

সংসদীয় গণতন্ত্রে কীভাবে কাজ করতে হয় তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ জ্যোতি বসু। ১৯৮৭ সালে যখন তৃতীয়বার বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এলো তখন বিরোধীদলের নেতা ছিলেন শ্রী সিদ্ধার্থ শংকর রায়। বিধানসভায় তাঁর বক্তব্য ছিল অত্যন্ত সুন্দর এবং তাঁর শানিত ভাষণে যখন বামফ্রন্ট সরকারকে বিব্রত করছেন, জ্যোতি বাবু জবাব দিতে উঠে একটি বাক্য খরচ করলেন তাঁর পুরাতন বন্ধুর উদ্দেশে - ‘‘১৪ বছর তুমি কোথায় ছিলে?’’ জয়নাল আবেদিন সাহেব বিরোধীপক্ষের আরেকজন সুবক্তা। তিনি যখন সরকারের কঠোর সমালোচনা করছেন তখন জ্যোতিবাবু বিরোধী দলের নেতা হিসাবে তাঁর উদ্দেশে একটি কথা বললেন যে, ‘‘আপনি এত কথা আমাদের বিরুদ্ধে বললেন অথচ এই তো কিছু আগে আপনার আত্মীয়রা আমার সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করলেন যে, আপনি তাদের কীভাবে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছেন।’’ জয়নাল সাহেব চুপসে গেলেন।

অধ্যাপক সৌগত রায় একদিন বক্তৃতার সময় জ্যোতিবাবুর পুত্র চন্দন সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করেন। জ্যোতিবাবু ব্যাপারটাকে হালকা করে এককথায় বললেন ‘‘When you go dance and drink with him don't you remember?’’ সুবক্তা দক্ষ সাংসদ সৌগত রায় একেবারে নীরব হয়ে গেলেন।

কমরেড জ্যোতি বসুর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা সারা দেশে এমন ছিল েয, সকল অ-বিজেপি দল ১৯৯৬ সালে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হবার জন্য অনুরোধ করেছিল। কংগ্রেসও সমর্থন করেছিল। আমাদের পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে নি, পার্টির মধ্যে বিতর্ক হয়েছিল। ইউ পি এ-১ সরকার গঠনে, মূল ভূমিকা ছিল তাঁর ও কমরেড হরকিষান সিং সুরজিতের।

অবিভক্ত পার্টিতে যখন মতাদর্শগত বিরোধ তীব্র হয়, যখন সংশোধনবাদী চিন্তা পার্টিকে সর্বনাশের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তখন তার বিরুদ্ধে পার্টির অভ্যন্তরে যে মতাদর্শগত সংগ্রাম হয়েছিল সেই সংগ্রামের অন্যতম নেতা ছিলেন কমরেড জ্যোতি বসু। ১৯৬১ সালে বেজওয়াদায় পার্টির যে ষষ্ঠ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় তাতে মতাদর্শগত বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে।

রাজনৈতিক প্রস্তাবের দুটি দলিল ওই পার্টি কংগ্রেসে উপস্থাপন করা হয়। আজকের যারা সিপিআই(এম) তাঁরাই একটি দলিল পেশ করেন যাতে স্বাক্ষরকারী হিসেবে ছিলেন মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ, পি সুন্দরাইয়া, এম বাসবপুন্নাইয়া, হরকিষান সিং সুরজিত, িপ রামমূর্তি, প্রমোদ দাশগুপ্ত, জ্যোতি বসু প্রমুখ। এই কংগ্রেসে কোনক্রমে ঐক্য রক্ষা হলেও দীর্ঘদিন মতাদর্শগত বিতর্কের পরিণতিতে সপ্তম কংগ্রেসের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)। প্রথম ৯ জন পলিট ব্যুরো সদস্যকে বলা হতো নবরত্ন। সংশোধনবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জয়ের পর পার্টিতে এলো সংকীর্ণতাবাদী মতাদর্শ যা নকশালবাড়ি আন্দোলন নামে পরিচিত। তার বিরুদ্ধেও মতাদর্শগত সংগ্রাম পরিচালনায় জ্যোতি বসুর ছিল অগ্রণী ভূমিকা।

১৯৬৮ সালে বর্ধমান প্লেনামে যে মতাদর্শগত দলিল গ্রহণ করা হয় যা পরে ২০তম কংগ্রেসে আরও সময়োপযোগী করা হয় সেখানে তীব্র বিতর্ক হয়। ১৯৬৮ সালের প্লেনামে অন্ধ্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ পার্টি লাইনকে প্রকৃতপক্ষে চ্যালেঞ্জ করেন। দুই বিপদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পার্টিকে আন্দোলন-সংগ্রামের পথে এগিয়ে যেতে হয়েছে।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জ্যোতি বসুেক বহুবার কারাবরণ বা আত্মগোপন করতে হয়েছে। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ১৯৬৬ সালে কয়েক মাস প্রেসিডেন্সি জেলে তার সান্নিধ্য পাওয়ার। এ যেন এক অন্য জ্যোতি বসু। আপাত গাম্ভীর্য পরিহার করে ছাত্রদের সাথে ক্রিকেট খেলেছেন, সকলের সাথে মেলামেশা করেছেন। কারামন্ত্রী জগন্নাথ কোলে মাঝে মাঝে জেল পরিদর্শনে এলে তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতেন এবং মন্ত্রী কিছু বিশেষ সুযোগ সুবিধার প্রস্তাব করতেন যা তিনি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করতেন। বলতেন আমার কমরেডরা যে সুযোগ পান তার বাইরে অতিরিক্ত আমি কিছু চাই না।

আজকের তৃণমূলের নেতারা দুর্নীতি করে জেলে গেছেন আর নির্লজ্জের মতো ভিআইপি সুযোগ গ্রহণ করছেন। অবাধে সংবাদপত্রের কাছে মুখ খুলছেন। মুজফ্‌ফর আহ্‌মদের মতো নেতারা যাঁদের যৌবন কেটেছে ব্রিটিশের কারাগারে, বৃদ্ধ বয়সে তাঁদেরও নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছিল।

আমি রাজনৈতিক জীবনে অনেক বড়ো মাপের নেতাদের সান্নিধ্য পেয়েছি। তাঁরা হলেন পি সুন্দরাইয়া, বি টি রণদিভে, পশ্চিমবঙ্গের জ্যোতি বসু, প্রমোদ দাশগুপ্ত বিনয় চৌধুরী প্রমুখ। সকলের সস্নেহ প্রশ্রয় পেয়েছি। তাঁদের জীবন থেকে শিখবার চেষ্টা করেছি। একবার বিধানসভায় Appropriation Bill-এর উপর সরকার পক্ষ থেকে আমাকে বলতে বলা হয়েছিল। এই বিলটির মানে হচ্ছে - বাজেট প্রস্তাব অনুমোদনের পর সরকারি অর্থ ব্যয় এই বিলের মাধ্যমে মঞ্জুরি করতে হয়। এই বিলের আলোচনায় সব বিষয় উল্লেখ করা যায়। জ্যোতি বাবু ওই বিষয়ে কীভাবে বলতে হয় তা আমায় শিখিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে পার্টি, ট্রেড ইউনিয়ন এবং বিধানসভায় অনেকদিন কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।

অত্যন্ত আনন্দ ও গৌরবের বিষয় যে, কমরেড জ্যোতি বসুর নামে একটি গবেষণা কেন্দ্র রাজারহাট বা নিউটাউনে স্থাপিত হতে চলেছে। বামফ্রন্ট সরকার নিউটাউনকে জ্যোতি বসু নগর হিসেবে নামাঙ্কিত করতে চেয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার তা বাতিল করে দিয়েছে। অনেক টানাপোড়েনের পর ওই কেন্দ্রের জমির মালিকানা হস্তান্তরিত হয়েছে। এই গবেষণা কেন্দ্র রাজনৈতিক বৃত্তকে অতিক্রম করে আরও অনেক কাজ করবে। যেমন অন্ধ্রে, তেলেঙ্গানায় এম বি, সুন্দরাইয়ার নামে, কেরালায় ই এম এস, এ কে নায়ানারের নামে এই ধরনের কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। হায়দরাবাদে সুন্দরাইয়া বিজ্ঞান কেন্দ্র দেখার সুযোগ আমার হয়েছে।

ভারতে আজ যে ফ্যাসিবাদী শক্তির পদচারণা, দেশের ঐক্য সংহতি ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি আক্রান্ত, আক্রান্ত শ্রমিক, কৃষক, মধ্যবিত্ত সহ সর্বস্তরের মানুষ। তার বিরুদ্ধে গড়ে উঠছে বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্য। জ্যোতি বসু সারাজীবন সে কাজ করে গেছেন। তিনি বামফ্রন্টের পরাজয় দেখে যান নি। কিন্তু তাঁর জীবনচর্যা আজও অনুকরণীয়। কমরেড স্টালিন লেনিনের স্মৃতির উদ্দেশে বক্তৃতা করতে গিয়ে বলেছিলেন যে, আমরা কমিউনিস্টরা এক বিশেষ ধাতুতে গড়া মানুষ। জ্যোতি বসুর সম্পর্কে এই কথাটি একশতভাগ সঠিক।

কমরেড জ্যোতি বসু বেঁচে আছেন লড়াই-সংগ্রামের নানা বাঁক ও মোড়ে, নানা রক্তাক্ত সংগ্রামের পথে পথে। তিনিই বলেছিলেন - ‘‘কমিউনিস্টদের লড়াইয়ের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়। অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে, সেসব অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি কাজে মানুষকে যুক্ত করতে হবে, তাদের পরামর্শ নিতে হবে। অসংখ্য মানুষকে এখনো টেনে আনার কাজ বাকি, তাদের চেতনার মান বাড়াতে হবে। জনগণের সঙ্গে নিত্য ঘনিষ্ঠ যোগাযোগই আমাদের এগিয়ে চলার মূল কথা। জনগণই শেষ কথা বলার মালিক। সত্যকে চেপে রাখার সাধ্য কারো নেই।’’ জ্যোতি বসু বলতেনঃ ‘‘মানুষই ইতিহাস সৃষ্টি করে’’, - সেই মানুষের প্রতি আস্থা রেখেই আমাদের পথ চলতে হবে।