E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৩৮ সংখ্যা / ৭ মে, ২০২১ / ২৩ বৈশাখ, ১৪২৮

চাই ধৈর্য ত্যাগ তিতিক্ষা আর আত্মবিশ্বাস

শমীক লাহিড়ী


ফেসবুকে একজন লিখেছেন - কি লাভ হলো রাত জেগে কাঁধে অক্সিজেন সিলিন্ডার বয়ে? করোনা সংক্রমণের খাঁড়া মাথায় নিয়ে দোরে দোরে দৌড়ে কি লাভ হলো? কেউ বলছেন - শ্রমজীবী মানুষকে ৩৯২ দিন খাবার তুলে দিয়ে কি হলো? ঝড়ের আগে পৌঁছানো কান্তি গাঙ্গুলী, ভোটের ঝড়ে উড়ে গেলেন!

কেউ বলছেন - তাহলে চাল চুরি, ত্রিপল চুরি, ঘরের টাকা চুরি সব আইনসিদ্ধ? বালি, কয়লা, সোনা পাচার কি তাহলে ঠিক?

লড়াই হচ্ছিল ঠেকাতেই হবে বিজেপি-কে। হঠাতে হবে তৃণমূলকে।

অনেকেই বলছিলেন, বিজেপি ঠেকাতে তৃণমূল চাই, অনেকে বলছিলেন, তৃণমূল হঠাতে বিজেপি চাই।

আমরা সংযুক্ত মোর্চা বলেছিলাম - দুর্নীতি, বেকারত্ব, সাম্প্রদায়িকতা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রুখতে তৃণমূল, বিজেপি দু’জনকেই সরাতে হবে। কারণ এরাই এইসবের মূল কেন্দ্র।

মানুষ গ্রহণ করেনি আমাদের কথা, নাকি কথাগুলো সঠিক মনে করলেও, আমাদের ওপর ভরসা রাখতে পারেনি? মানুষ আমাদের প্রত্যাখ্যান করলো নাকি এই দুই শক্তিকে একসাথে হারাবার শক্তি সংযুক্ত মোর্চার নেই - তাই আমাদের কথাগুলো বিশ্বাস করতে চাইলেও, নিরুপায় হয়ে কোনো একজনকে বেছে নিলো? নাকি বামপন্থীদের লাগাতার মিডিয়া ব্ল্যাক আউট করায় সব মানুষের মাঝে কথাগুলোই পৌঁছালো না জোরালোভাবে? একা লড়লেই ভালো হতো। ডেড হর্স বা সদ্যোজাত ঘোড়া, এ দুটোর কোনোটার পিঠে সওয়ার হওয়ার কি দরকার ছিল?

এসবের চুলচেরা বিশ্লেষণ তাৎক্ষণিকভাবে করা যায় না। অভিমানে কিছু মন্তব্য করে হয়তো বা মনটা হাল্কা করা যায়, কিন্তু ভবিষ্যতের পথ চলার রাস্তা তৈরি করা যায় না। নির্বাচন সংসদীয় গণতন্ত্রে অত্যন্ত জরুরি বিষয়। বিধানসভা বা সংসদের ভেতরে আমাদের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একথাগুলো অস্বীকার করা আত্মহত্যার শামিল।

আপাতত রুটিরুজি, মজুরি, শিক্ষা, চাকরি, জীবন-জীবিকার লড়াই ক্রমান্বয়ে পিছু হঠছে বাংলায়। এই প্রশ্নে বামপন্থী, যারা এই লড়াইটাকেই শ্রেণিবিভক্ত সমাজের মূল লড়াই বলে মনে করে, তারাও অনেকটাই পিছু হঠে এখন বাংলায় কোণঠাসা। এই বিষয়ে বামপন্থীরা নিজেদের দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেনা।

কেরালা পারলো একদিকে বিজেপি-কে ধরাশায়ী করে দিতে, অন্যদিকে বামপন্থীদের বিকল্প নীতির পেছনে কোটি কোটি মানুষকে জড়ো করতে। ওরা ভালো, বাংলার বামপন্থীরা খারাপ - এই গোছের বাজারি মন্তব্য না করে শিখতে হবে আমাদেরও, জানতেও হবে অনেক কিছু। অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে হবে।

মানুষ জাত-ধর্মের ভিত্তিতে ভোট দিচ্ছে, বা চোরদের ভোট দিচ্ছে - এইসব কথা বলে তাদের সমালোচনা করাটা খুব সহজ, কিন্তু সেটা কমিউনিস্টদের কাজ হতে পারেনা। এক সময়ে মানুষের উপর সব দোষ চাপিয়ে একদল অতিবাম স্লোগান দিয়েছিল - ‘অমুকের বাচ্চা জনগণ, রইল তোর নির্বাচন, চললাম বৃন্দাবন’। তারাই আবার এরাজ্যে এখন তৃণমূলের মধ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিপ্লবী স্পৃহা খুঁজে পেয়েছে। তারা একবারও এই প্রশ্নটা করছে না, বিজেপি এই রাজ্যে এলো কীভাবে? কারা আনলো? কারা এই রাজ্যে বিজেপি-কে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় পরিণত করলো?

কেউ আনন্দিত, কেউ বিষণ্ণ, কেউ হতাশ - বামপন্থীরা শূন্য হওয়ায়। কেউ ভাবছেন - ব্যস এবার শেষ করা গেছে। কেউ ভাবছেন আর কিছু হবেনা। কেউ রেগে গিয়ে গালমন্দ করছেন নেতাদের, কেউ বা ব্যঙ্গ করছেন। এসবের কোনোটাই অস্বাভাবিক নয়।

ইতিহাসকে কেমনভাবে দেখব, তার উপর নির্ভর করে প্রতিক্রিয়া। ই এইচ কার নামে একজন ঐতিহাসিক বার বার বলতেন - ইতিহাসকে স্বল্প সময়ের নিরিখে বিচার করলে ভুল হবে। ইতিহাস মানে একটা লম্বা সময়। অনেকগুলো ঘটনার সমষ্টি মানেই সমাজের চূড়ান্ত অভিমুখ নয়।

আমাদের দেশের ১৯৭১-৭৬ সাল, এই সময়কে বিচ্ছিন্ন করে দেখলে, দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রকৃত দীর্ঘস্থায়ী অভিমুখ কি বিচার করা যায়! একইভাবে ১৯৩৩-৪৪, এই কয়েক বছরের ইতিহাস কি সমগ্র ইয়োরোপ বা পৃথিবীর ইতিহাসের চিরস্থায়ী অভিমুখ? না, তা নয়।

ইতিহাস বারেবারে নানা কারণে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়। কিন্তু সেটাই সমগ্র মানব সভ্যতার অভিমুখ নির্ণয় করেনা। বরং উল্টোটাই হয়। অন্ধকারের বুক চিরেই আলো আসে। তবে হ্যাঁ কাল-মহাকালের হিসাবে তা ক্ষণস্থায়ী হলেও, পল-অনুপলের হিসাবে সময়টা নিঃসন্দেহে বড়ো। ইতিহাসের গহ্বরে হয়ত ১২/১৫ বছর মানে খুবই কম সময়, কিন্তু একজন ব্যক্তির জীবনে সময়টার মানে - সমগ্র কৈশোর বা যৌবন বা প্রৌঢ়ত্ব।

ঠিকই, এই সময়ে তাঁর ব্যক্তি জীবনের অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়ে যায়। নাজিম হিকমতের লেখা কয়েকটা শব্দ অনেক কিছুই শিখিয়ে দেয়।

‘‘জেলে এলাম সেই কবে,
তারপর দশবার সূর্য্যকে প্রদক্ষিণ করেছে পৃথিবী।
পৃথিবীকে যদি বলো, সে বলবে
কিছুই নয়, অনুমাত্র কাল।
আমি বলবো - আমার জীবনের দশটা বছর।
যে বছর জেলে এলাম
একটা পেন্সিল ছিলো,
লিখে লিখে ক্ষইয়ে ফেলতে এক সপ্তাহও লাগেনি।
পেন্সিলকে জিগ্যেস করলে সে বলবে
গোটা একটা জীবন।
আমি বলব,
এ আর এমনকি, একটা মাত্র সপ্তাহ।’’


তাই এই লম্বা লড়াইতে ধৈর্য হারানো অস্বাভাবিক নয়, সাধারণ মানুষের। কিন্তু আমরা বামপন্থী কর্মীরা কি বুঝতে চাইবো না ইতিহাসের গতিধারা!

আমাদের এখানেও জাত-ধর্মের মেরুকরণ প্রবলভাবেই ঘটছে, যা বাংলায় ছিল না, গোটা দেশে থাকলেও। তৃণমূল-বিজেপি এই কাজে আপাতভাবে অনেকটাই সফল।

এটা ঠিক বিজেপি আটকেছে এই রাজ্যে। প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করে, হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে, নির্বাচন কমিশনকে পকেটে পুরেও সরকার করতে পারেনি। একটু নিশ্চিন্ত হচ্ছেন অনেকেই। গাড়ি থেকে নামিয়ে বা বাড়ি থেকে বের করে জোর করে পিটিয়ে জয় শ্রীরাম ধ্বনি বলানোর চেষ্টা হয়তো হবেনা। কেউ ভাবছেন, না চিনতে পেরে, বিদ্যাসাগরের মাথা ভাঙার সম্ভাবনা কমলো হয়তো। কিংবা মোদী-শাহ-নাগপুরের বাংলাবিদ্বেষী সংস্কৃতির আমদানি আর হবে না।

ঠিকই ‘বিদিয়াসাগর’ নামের ডাক শোনার বিভীষিকা থেকে কিছুটা রেহাই হয়তো পেলাম, কিন্তু ‘ডহরবাবু’কে খোঁজা কি বন্ধ হবে? নাগপুরের নির্দেশে দাঙ্গা বাঁধিয়ে সরকার একপক্ষকে কচুকাটা করবে, সেই সম্ভাবনা হয়তো বা ঠেকানো গেল, কিন্তু ধূলাগড়, খাগরাগড়, বসিরহাট বা ক্যানিং-এর মতো দাঙ্গার পুনরাবৃত্তি হবেনা, সেই গ্যারান্টি কি তৈরি করা গেল?

আখলাকের মতো ধর্মের কারণে মরতে হবে না হয়তো, কিন্তু সুদীপ্ত, সাইফুদ্দিন, মইদুলদের মতো আরও অনেককে স্বল্পমূল্যে শিক্ষা বা শিক্ষান্তে চাকরির দাবিতে আবার মরতে হবেনা - এই গ্যারান্টি কি এই ভোটে পাওয়া গেল?

সব বেচে দাও - এই নীতি জোর ধাক্কা খেলো এই নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু রাজ্যের যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের কি হবে - সেই উত্তর কি ভোটের ফলাফলে পাওয়া গেল?

আম্বানি-আদানি জুটির অশ্বমেধ দুই ঘোড়া, মোদী-শাহ-র বাংলা দখলের দৌড় আপাতত থামলো ঠিকই, কিন্তু বাংলার কৃষকদের জমি এই লুঠেরা কর্পোরেটদের হাত থেকে বাঁচবে - সেই নিশ্চয়তা কি পাওয়া গেল এই ভোটে?

বিজেপি’র নীতি, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব বেসরকারিকরণের বিকল্প কি দেখতে পাবে বাংলা? সেই আশার পক্ষে কেউ আছেন? কে রুখবে? যারা ঘুষের বিনিময়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতির ব্যবসা করে, তারা রুখবে?

প্রশ্নগুলো সহজ, আর উত্তরও তো জানা।

অনেকেই হয়তো বলবেন, একবারে দুই শক্তির সাথে লড়াই করা যায় না। একটা হারুক, তারপর দেখা যাবে। কিন্তু দুই-এর মানুষ বিরোধী নীতিগুলো কি হেরেছে? হারেনি। ওগুলোই কি আবার আগামীর বাংলার ‘উন্নয়ন’-এর রাস্তা হবে?

‘‘দেখ খুলে তোর তিন নয়ন
রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।’’


এ লেখার মানুষটিও তো চলে গেছেন। কিন্তু তা’বলে লেখা কি থেমে যাবে?

এগুলো নিয়ে কি নীরব-নিশ্চুপ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকবে বাংলা?

রুটি-রুজি-জীবন-জীবিকার ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তাই কি হবে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত?

রুটিরুজি, জীবন-জীবিকার লড়াই আপাতত মানুষের মননের পিছনের আসনে। কেউ বলছে- হিন্দু বিপদে, কেউ বলছে ইসলাম খতরে মে। মানুষের জীবনের যন্ত্রণার কথা বলবে কে?

বামপন্থীরা ছাড়া আর কে এই লড়াই চালিয়ে যাবে? অন্ধকারে লড়াই চালানো কঠিন, খুবই কঠিন। জাত-ধর্ম-তোলাবাজি-কাটমানি-কমিশনের নেশায় নেশাচ্ছন্ন সমাজের সামনে রুটি-রুজি, জীবন-জীবিকার লড়াই তুলে ধরতে গেলে, কঠিন দীর্ঘস্থায়ী লড়াই-এর প্রয়োজন। ধৈর্য লাগে অনেক।

তবে পথ অলঙ্ঘনীয় নয়। গোটা দেশ বিজেপি-কে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে, তাদের অভিজ্ঞতার নিরিখে। বাংলাতেও একই কারণে সঙ্গতভাবেই ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।

দেশের নানা প্রান্তের মানুষের বিজেপি’র শাসনে দিন কাটানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেক। সেই অভিজ্ঞতাই এদের শিখিয়েছে, জাত-ধর্মের লড়াইতে মার খায় রুটি-রুজি, জীবন-জীবিকার লড়াই। ব্যাঙ্কের টাকা লুট হচ্ছে, জিনিসের দাম বাড়ছে - এই সবকিছু গোমুত্রে ধোয়া যায়না - এটা বিজেপি-কে বুঝিয়ে দিয়েছে দেশের মানুষ ২০১৯ এর পর হওয়া সবক’টা নির্বাচনে। মেরুকরণের রাজনীতি কত ক্ষতিকর সেটা দেশের মানুষ বুঝেছে। হিন্দু-মুসলমান মারপিটে ব্যস্ত থাকুক, আর সেই ফাঁকে লুঠ চালাবে শাসকদল - এই কেরামতি ধরা পড়ে গেছে।

বাংলার মানুষ আগে বিজেপি-কে দেখেনি। অনেকেই ভাবছিলেন, বিজেপি বোধহয় তৃণমূলের এই দুর্বিসহ শাসনের অবসান ঘটাতে পারবে। আমরা বলেছিলাম সেটা হবেনা। ২৯৩টা আসনের মধ্যে ১৫৯টা আসন সদ্যপ্রাক্তন তৃণমূলের হাতে তুলে দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই হয়? মানুষ নোটবই পড়বে কেন, যেখানে টেক্সট বই আছে!

আর বিজেপি তৃণমূল বিরোধী লড়াইটা অনেকদূর পর্যন্ত নিয়ে যেতে চায়না বলেই তো সারদা-নারদার তদন্ত ধামাচাপা দিয়ে, বিজেপি তৃণমূলের সরকারটাকে রক্ষা করেছিল।

পেট্রোল -ডিজেলে ট্যাক্স দুই শাসকদলই একই হারে বাড়িয়ে চলেছে। আসলে এই প্রশ্নগুলোকে পেছনের সারিতে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্যই জাত-ধর্মের মেরুকরণের রাজনীতি আমদানি করেছে হাতে হাত ধরে দুই শাসকদল, তৃণমূল-বিজেপি।

এই বোঝাপড়াটা বোঝানো যায়নি।

অনেকেরই স্বাভাবিক প্রশ্ন - বামেরা কি করছে? কেন আটকাতে পারছেনা? কেন বোঝাতে পারছে না?

একদিকে মানুষের অভিজ্ঞতায় আসতে হবে এই বিপদ, অপরদিকে মাটি কামড়ে লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে। কোনো শর্টকার্ট রাস্তা নেই। রুটি-রুজি, জীবন-জীবিকার লড়াই মানুষের অস্তিত্বের সাথে যুক্ত, তাই এই লড়াই সামনের সারিতে আজ-কাল-পরশু আসবেই। কেউ আটকাতে পারবেনা। কিছুটা সময়ের জন্য হয়ত বা আটকে দিতে পারে। এই আটকে যাওয়া সময়টা খুব কঠিন, খুব অন্ধকার। এই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা এখন চলছি।

অনেকে ৩৪ বছরের সরকারটাকেই শুধু দেখেন। কিন্তু এর পেছনে দীর্ঘ ৫০ বছরের রক্ত-ঘাম-অশ্রু- আত্মত্যাগের এক বিশাল ইতিহাস আছে। ১৯২৯ মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ-দের জেলযাত্রা, স্বাধীনতার লড়াইয়ে জেল-ফাঁসি, তেভাগার অহল্যা-বাতাসী, খাদ্য আন্দোলনে ৬৬ জন শহিদ, শহিদ নুরুল-আনন্দ হাইত - এই লম্বা রাস্তা পেরিয়ে ’৬৭ আর ’৬৯ এর স্বল্প সময়ের যুক্তফ্রন্ট। আবার ’৭২-’৭৭ ১২০০ শহিদ। ৫/১০ বছর নয়, ৫ দশক অনেক লড়াই-আন্দোলনের সিঁড়ি বেয়ে এসেছিল ’৭৭ সাল - ৩৪ বছর।

কেউ জিতে গেলেই চুরি-দাঙ্গা-কাটমানি সব আইনসিদ্ধ হয়ে যায়না। ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব মিথ্যা হয়ে যায় না। কেউ বিরোধী দল হয়ে গেলেই তার হাত থেকে দাঙ্গার চক্রান্তের রেখা মুছে যায় না। মানুষকে জাত-ধর্ম-ভাষার নামে ভাগ করার চক্রান্তও ঢাকা পড়ে যায়না।

তাই আমাদের মানুষের দাবি নিয়ে লড়াই চালিয়েই যেতে হবে। বিপন্ন অসহায় মানুষের পাশে সাধ্যমতো দাঁড়াবার কাজে বিরতি টানার প্রশ্নই ওঠেনা। বরং তাদের অধিকার নিয়ে সচেতন করার কাজ ক্লান্তিহীন ভাবেই চালিয়ে যেতে হবে। কাল-পরশু হয়তো বা প্রকৃতির নিয়মেই আমাকে চলে যেতে হতে পারে, কিন্তু ব্যাটনটা যোগ্যতরদের হাতে তুলে দিয়ে। লড়াই লড়তে লড়তেই মুক্তির রাস্তার ঠিকানা ঠিক খুঁজে পাওয়া যাবেই।

স্পার্টাকাস জিতেছিল না হেরেছিল? ধৈর্য ধরে দেখলে ইতিহাস বলবে স্পার্টাকাসেরা জিতেছিল, আর শুধু ওই যুদ্ধ-এর দিকে তাকালে - স্পার্টাকাসেরা হেরেছিল।

আজকের লড়াইটাকে কেমনভাবে দেখবেন আপনি?


- ২ মে, ২০২১