৫৮ বর্ষ ৩৮ সংখ্যা / ৭ মে, ২০২১ / ২৩ বৈশাখ, ১৪২৮
ভিন্ন দৃষ্টিকোণে
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
২১৩-৭৭-১-১। সপ্তদশ বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর রাজ্য বিধানসভায় দলগত অবস্থানের ছবি। স্বাধীনতা পরবর্তী ৭৩ বছরে এই প্রথম বিধানসভায় কোনো বাম, কংগ্রেস প্রতিনিধি নেই। হিন্দু, মুসলিম, ফ্যাসিস্ট শক্তি, বিজেমূল, কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি, করোনা, লেসার এভিল, মিডিয়া বাইনারির জগাখিচুড়িতে গত ১০ বছর বারবার প্রতিবাদে সরব হওয়া বামেরা ফলাফলের বিচারে আপাতত শূন্য। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৬০ আসনে জয়ী হওয়া বাম শক্তির উত্থান দেখে যে প্রমাদ গোনা পর্বের শুরু, সাধারণ মানুষের রুটি-রুজি নিয়ন্ত্রণকারী সেই সমস্ত ‘হর্তা কর্তা বিধাতা’দের আপাতত সাময়িক স্বস্তি পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যার বিচারে বাম শূন্যতায়।
৪৫ শতাংশ হোক বা ৭ শতাংশ কিংবা ৫.৬৭ শতাংশ অথবা শূন্য - বামেদের উদ্দেশ্যে আক্রমণ, তির্যক উক্তি, ব্যঙ্গ, তর্ক, আলোচনা, দেশদ্রোহী তকমা লাগানো - এসব অবশ্য চলতেই থাকে। এবারের নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের পরেও সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে বামেদের উদ্দেশ্য করে বাম বিরোধী, বাম সেজে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ‘ব্যক্তি’দের ট্রোল কারোরই নজর এড়ায়নি। এর পাশাপাশি বহু বাম কর্মী, সমর্থক – যাঁরা নির্বাচন পর্বে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নির্বাচনের কাজে যুক্ত থেকেছেন তাঁরা এবং বামমনস্করাও পরাজয়ের যন্ত্রণা, হতাশা, রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ উগরে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়ালে দেয়ালে। সবকিছুকে দাঁড়িপাল্লায় তুলে সত্যি, মিথ্যে, ঠিক, ভুলের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা এই মুহূর্তে ঠিক হবেনা। তবে একথা ঠিক - কোনো আসন না পেয়েও, মিডিয়া বাইনারিতে ঠাঁই না মেলা ‘অপ্রাসঙ্গিক বাম’ এখনও দেশের রাজনীতিতে, মানুষের মনে কতটা প্রাসঙ্গিক তা এসব আলোচনা থেকেই স্পষ্ট। খারাপ হোক, ভালো হোক - আগ্রহ, গুরুত্ব আছে বলেই আলোচনা আছে। আশা আছে। ভরসা আছে। বিশ্বাস আছে। আর এই আশা-ভরসা-বিশ্বাসে ধাক্কা খেলে কিছু মানুষের হতাশা আসাও খুব স্বাভাবিক। পথ চলা এসব কিছু সঙ্গে নিয়েই।
শূন্য-র ‘গুরুত্ব’ তো গাণিতিকভাবে স্বীকৃত। আর ‘মাহাত্ম্য’ বুঝতে গেলে ২ মে নির্বাচনী ফল প্রকাশের দিন থেকে আজ ৬ তারিখ সকাল পর্যন্ত ঘটনাক্রমে একটু চোখ বুলিয়ে নিলেই হবে। যদিও বিক্রিত মিডিয়া বিকৃত খবর পরিবেশনকে বেশ জলভাত করে নিয়েছে, তবু ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ার দাপটে সবটুকু আর চেপে রাখতে পারছে না। ফাঁক গলে গলে মাঝেমাঝেই অনেক কিছু বেরিয়ে আসছে। ঠিক যেমন গত দু’তিন দিনে আম পাবলিকের নজর এড়িয়ে যাওয়া কিছু ঘটনাও সামনে এসেছে। যেখানে বেমালুম জামালপুর নবগ্রামের নিহত সিপিআই(এম) এজি সদস্য কাকলী ক্ষেত্রপাল হয়ে গেছেন বিজেপি কর্মী। ‘জেঠু’ যখন বলেছে তা নিশ্চই ঠিক ভেবে খবর খেয়ে হজম করার পর জানতে পারবেন ‘ওটা বিজেপি নয়, সিপিএম ছিল’। দেগঙ্গায় খুন হয়ে গেছেন আইএসএফ কর্মী হাসানুর জামান। শূন্য হলেও বাইনারিতে কোনো অদল বদল নেই। শত্রু চিহ্নিত করাই আছে। সেখানে ৭ বা ০ তে কিছু রকমফের হয় না।
‘বিজ্ঞ’জনের ঠিক করে দেওয়া ‘লেসার এভিল’-এর তাণ্ডব শুরু হয়ে গেছে ২ মে থেকেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লক্ষ্য ‘শূন্য’ হওয়া বাম এবং ১ আসন পাওয়া আইএসএফ। বেছে বেছে বাড়ি ভাঙচুর, বোমাবাজি, লুটপাট, পার্টি কার্যালয়ে আগুন ধরানো, পার্টি অফিস দখল সবই চলেছে। ঘরছাড়া বহু বাম কর্মী সমর্থক। বিভিন্ন দলের ১৩ জন কর্মী সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। হাওড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, কোচবিহার, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, কলকাতা - এলাকায় এলাকায় লেসার এভিলরা ‘খেলা হবে’ ডিজে চালিয়ে একটু প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলে নিয়েছেন। আগামী ৫ বছর ধরে খেলার আগে এটুকু গা গরম না করলে হয়! আর ‘গ্রেটার এভিল’দের পরিকল্পিত প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে - ‘সব তাণ্ডবই চালাচ্ছে লুঙ্গি বাহিনী’। যারা ট্যুইটারে ঘোরাফেরা করেন তাঁদের নজর এড়ায়নি আইটি সেলের বিভিন্ন হ্যাসট্যাগ। সেখানে যাদবপুর অঞ্চলে সিপিআই(এম) পার্টি অফিস ভাঙার ছবিও হয়ে গেছে ‘হিন্দুদের ওপর লুঙ্গি বাহিনীর তাণ্ডব’। ওডিশা, অন্ধপ্রদেশের বিভিন্ন ঘটনার (সাম্প্রদায়িক নয়) পুরোনো ভিডিয়ো শেয়ার করে আইটি সেল বোঝাতে চেয়েছে ফলাফল-পরবর্তী সন্ত্রাসের দায় তৃণমূলের নয়, ‘অন্য কারোর’। আর বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় দ্য হিন্দুতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন – সিপিএম-কংগ্রেস ভোট স্যুইং করে তৃণমূলকে জিতিয়ে দিয়েছে। নাহলে বিজেপ-ই সরকার গড়তো। ২০১৯এ মিডিয়া প্রচার করেছিল ‘বামের ভোট রামে গেছে’ বলেই বিজেপি জিতেছে। আর ২০২১-এর প্রচার ‘জোটের ভোট জোড়াফুলে গেছে বলেই তৃণমূলের জয়’। মানুষ ভিড় করে বামেদের সভায় উপস্থিত হয়েছে। রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছে মীনাক্ষীর বক্তৃতা শোনার জন্য। আর ভোট দিতে গিয়ে নাকি অন্য দলকে ভোট দিয়ে এসেছে। বিষয়টা বেশ অদ্ভুত তাতে সন্দেহ নেই। দূরবিন দিয়ে দেখতে পাওয়া যায় না যাদের, তাদের এতটাই ক্ষমতা যে তারা নিজেদের শূন্য করে একবার বিজেপি-কে জিতিয়ে দিচ্ছে, একবার তৃণমূলকে। বামেদের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করার পরিকল্পিত এই প্রচারের পেছনে কত কোটি টাকার গোপন লেনদেন - তার জবাব গোদী মিডিয়া কোনোদিনই দেবেনা। তবে অপারেশন হয়েছে মসৃণ ভাবেই। দোদুল্যমান, কিংকর্তব্যবিমূঢ় মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করে দেওয়ার খেলা সফল। এই সময়েই এসএফআই হাওড়া জেলা সভাপতি শিল্পা মণ্ডল আক্রান্ত হবার পর তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন - “কয়েকদিনে অজস্র কমরেড আমায় ফোন করেছেন, তারা আমায় নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আমি জানি এসব পার্টিকে ভালোবাসেন বলেই আপনারা করেছেন, কিন্তু অনেক জায়গায় প্রচার হচ্ছে যে পার্টি আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। এই ধারণা একদমই ভুল ধারণা। এই বিপদের সময়ে পার্টি নেতৃত্ব আমাদেরকে সাহস জুগিয়েছেন এবং আমরা সাহস বুকে নিয়েই বাড়িতে আছি, সবাই সুস্থ আছি।’’
নির্বাচন, নির্বাচনী ফলাফল - সবই হয়ে গেছে। তৃণমূলের এই বিরাট জয়ের পরে যদি মনে হয় সব অতীত, সব প্রশ্ন চাপা পড়ে গেল, সব দুর্নীতি, কুশাসন ২১৩ দিয়ে ঢেকে দেওয়া গেল তা যেমন ভুল তেমনই এই পরাজয়ের পরে আন্দোলন সংগ্রামের আর কোনো জায়গা খোলা নেই তা ভেবে নেওয়াও ভুল। সংগ্রাম দানা বাঁধে ধাপে ধাপে। কোনো ঘটনায় কিছুটা পিছিয়ে পড়লে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের আগে একটু সময় দিতে হয়। আপাতত সেই সময়টুকু ছেড়ে দিতেই হবে। এটা তো ঠিক যে, এবারের পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে কেরালা, তামিলনাড়ুতে দাঁত ফোটাতে পারেনি বিজেপি। আসামে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলেও আসন বেড়েছে বিরোধী মহাজোটের। দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটি আসনে জয়ী হয়েছে সিপিআই(এম)। যে আসনে সিপিআই(এম) প্রার্থীর নাম শোনার পর তড়িঘড়ি নিজের কেন্দ্র বদল করেছিলেন বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি। উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বেহাল দশা বিজেপি’র। ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে ফলাফল নিয়ে চিন্তিত যোগী আদিত্যনাথের বিজেপি সরকার।
নির্বাচন ছাড়াও দেশে এই মুহূর্তে সবথেকে বড়ো বিপদ সম্ভবত করোনা। আর করোনার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিদিন সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে আসছে আরও বড়ো বিপর্যয়। যে বিপর্যয় সামাল দেবার থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সময়মতো সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রোজেক্ট শেষ করা। তাই দিল্লিতে লকডাউন চললেও ২০ হাজার কোটি টাকার সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের জন্য জোগাড় করা হয়েছে ‘জরুরি পরিষেবা’র ছাড়পত্র। সেখানে কাজ চলছে তিন শিফটে। দিল্লিতে লকডাউন জারি থাকলেও সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পে কাজ করানোর শ্রমিক আনার জন্য ১৮০ টি গাড়িকে বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ঠিক এই সময়েই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আকাল চলছে অক্সিজেনের, ভ্যাকসিনের। প্রায় প্রতিদিন একবার করে দেশের বিভিন্ন আদালতের তিরস্কারের মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি সিদ্ধার্থ ভার্মা ও বিচারপতি অজিত কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘‘কেবলমাত্র অক্সিজেনের অভাবে হাসপাতালে কোভিড রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা দেখে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। এটি অপরাধমূলক কাজ। তরল মেডিক্যাল অক্সিজেনের লাগাতার সংগ্রহ এবং তা সরবরাহের দায়িত্ব যাঁদের ওপর দেওয়া হয়েছিল তাঁরা গণহত্যার চেয়ে কম কিছু করছেন না। বিজ্ঞান এখন এতো উন্নত হয়েছে যে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে, মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। সেখানে কেবল অক্সিজেনের অভাবে আমরা কীভাবে মানুষকে মরতে দিতে পারি?’’ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন - দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির জন্য দায়ী কেন্দ্রের অদূরদর্শিতা, নেতৃত্বের অভাব।
৬ মে সকালে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৪ লক্ষ ১২ হাজার ২৬২ জন, গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ৩.৮২ লক্ষ। আজকের পরিসংখ্যান নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ কোটি ১০ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪১০। ২৪ ঘণ্টায় দেশে মারা গেছেন ৩,৯৮০ জন, গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ৩,৭৮০। অর্থাৎ একদিনে মৃত্যু সংখ্যা বেড়েছে ২০০। এখনও পর্যন্ত দেশে কোভিডে মোট মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার ১৬৮ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় কেস ৭৯ হাজার বেড়ে দেশে মোট সক্রিয় কেসের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩৯৮। পশ্চিমবঙ্গে গতকাল রাতে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে শেষ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজারের বেশি মানুষ। মৃত্যু শতাধিক।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পরই দেশে বাড়তে শুরু করেছে বেকারত্বের হারও। এপ্রিল মাসেই দেশে বেকারত্বের হার ৪ মাসে সর্বোচ্চ ছিল। সংক্রমণে রাশ টানতে রাজ্য প্রশাসনগুলো লকডাউনের পথে হাঁটতেই বেকারত্বের হার আবারও বাড়তে শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়া ইকনমি-র তরফে প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মার্চ মাসে যেখানে বেকারত্বের হার ৬.৫ শতাংশ ছিল, তা বৃদ্ধি পেয়ে ৭.৯৭ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। প্রায় ৭০ লাখ মানুষ গত মাসে কাজ হারিয়েছেন।
অথচ রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস, করোনা সংক্রমণ নিয়ে যেমন এখনও রাজ্য প্রশাসনের হুঁশ ফেরেনি, তেমনই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ-এ বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রের হুঁশ ফেরেনি। অক্সিজেন সঙ্কট নিয়ে হুঁশ ফেরেনি। ভ্যাকসিন সঙ্কট নিয়ে হুঁশ ফেরেনি। দুই পক্ষই নিজের নিজের তালে ব্যস্ত। একপক্ষ ব্যস্ত সরকার গঠন নিয়ে, অন্য পক্ষ ব্যস্ত এই সুযোগে আরও কিছুটা সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার দিকে। যেন তেন প্রকারেণ সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রোজেক্ট শেষ করার দিকে।
আর এসবের বাইরে আপাতত শূন্য পাওয়া যে তৃতীয় পক্ষ মাঠের বাইরে তাঁরা রেড ভলান্টিয়ারস তৈরি করে সরকারের অপদার্থতা, অকর্মণ্যতা সামাল দিতে ব্যস্ত। নির্বাচনী ফল প্রকাশের পর তাণ্ডবের শিকার, আক্রান্ত হয়েও দিন রাত এক করে বাড়ি বাড়ি অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া, অসুস্থ মানুষকে খাবার পৌঁছে দেওয়া, হাসপাতালে ভরতির ব্যবস্থা করাই এখন তাদের প্রধান কাজ। হ্যাঁ, তথাকথিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, সংখ্যার বিচারে শূন্য হয়ে যাবার পরেও। একটা নির্বাচনে পরাজয় মানেই সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। একটা নির্বাচনে কোনো আসন না পাওয়া মানেও সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। লড়াই সংগ্রামের দীর্ঘ কয়েক দশকের ইতিহাস পেরিয়েই ’৭৭ এসেছিলো। লড়াই সংগ্রামের রাস্তা ধরেই আবারও নতুন ইতিহাস তৈরি হবে।