E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৩৪ সংখ্যা / ৮ এপ্রিল, ২০২২ / ২৪ চৈত্র, ১৪২৮

বর্তমান ফ্যাসিপন্থী স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে বাম এবং গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়তে উপযুক্ত ভূমিকা নেবে সিপিআই(এম)

পার্টি কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি মানিক সরকার


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন মানিক সরকার।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সিপিআই(এম)-র ত্রয়োবিংশতিতম কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে পলিট ব্যুরো সদস্য মানিক সরকার বলেন, কান্নুর হচ্ছে কেরালার উত্তর মালাবার অঞ্চলে কমিউনিস্ট আন্দোলনের উৎস স্থল। আমরা গর্বের সঙ্গে স্মরণ করছি কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে প্রথম চার শহিদ কায়ুর সংগ্রামের মাদাথিল আপ্পু, কুনহামবু নায়ার, চিরুকানদন এবং আবু বক্করকে। ১৯৪৩ সালে সিপিআই’র প্রথম কংগ্রেসের মাত্র দু’মাস আগে ব্রিটিশ শাসকরা তাঁদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ছিল। তারপর থেকে অগণিত শহিদ হয়েছেন। আমি তাঁদের সকলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তিনি কেরালার কয়েক লক্ষ পার্টি সদস্য, সমর্থক এবং শ্রমজীবী মানুষকে পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানি‍‌য়ে বলেন, একটা জটিল সন্ধিক্ষণে পার্টির ২৩তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্বাধীনতার পর দেশের গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সামনে এমন চ্যালেঞ্জ আসেনি। বিজেপি এবং আরএসএস রাষ্ট্রের ক্ষমতায় এসে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশের গণতন্ত্রকে খর্ব করছে এবং ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। হিন্দুত্ব এবং কর্পোরেট শক্তির আঁতাত তৈরি হয়েছে। তার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রে স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করছে।

তিনি বলেন, কেন্দ্রের নয়া উদারবাদী এবং কর্পোরেটমুখী নীতির ফলে সাধারণ মানুষের অবস্থা সঙ্গীন হয়ে উঠেছে। ব্যাপক বেকারি বাড়ছে, আয় কমছে এবং অসাম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। বি‍‌জেপি হিন্দুত্বের ভাবাদর্শে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের লক্ষ্যে বিভাজনের অ্যাজেন্ডা নিয়ে ভারতীয় জনগণের ওপর শোষণকে সহজতর করে তুলছে। সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসাবে অবদমিত করে রাখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দুত্ব-কর্পোরেট শাসন এবং তার নীতির বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধ লক্ষ করা যাচ্ছে। সিএএ বিরোধী আন্দোলন, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক কৃষক সংগ্রাম, শ্রমিকশ্রেণির সাধারণ ধর্মঘট, সর্বশেষ ২৮-২৯ মার্চ দু’দিনের ধর্মঘট সহ শ্রমিকদের অন্যান্য অজস্র আন্দোলন ইত্যাদি প্রতিভাত করছে যে, মানুষ তাঁদের অধিকার রক্ষায় এবং সরকারকে তাঁদের ন্যায্য দাবি আদায়ে বাধ্য করাতে প্রস্তুত।

তিনি উল্লেখ করেন, শাসক‍‌শ্রেণির দ্বারা দেশের গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা যখন আক্রান্ত, তখন শ্রমজীবী মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াইকে সম্প্রসারিত করা অত্যন্ত জরুরি।

তিনি আরও বলেন, সিপিআই (এম) এবং বামপন্থী শক্তি হিন্দুত্ব-কর্পোরেটরাজের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে প্রতিনিধিরা এই কংগ্রেসে উপস্থিত হয়েছেন, তাঁরা শ্রমিক, কৃষক এবং অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রামের সামনের সারিতে রয়েছেন। বিজেপি এবং আরএসএস’র-বিরুদ্ধে লড়াই-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্যকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে পার্টি কংগ্রেসে আ‍‌লোচনা ও উপযুক্ত রণকৌশল নির্ধারিত হবে। এছাড়াও পার্টি কংগ্রেসে পার্টির সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলোচনা হবে। যার মধ্য দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের বৃহত্তর অংশকে সমবেত করা সম্ভব হবে।

পরিশেষে তিনি বলেন, বর্তমানের অন্যায় ও স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে বাম এবং গণতান্ত্রিক বিকল্প তৈরিতে উপযুক্ত ভূমিকা পালন করবে সিপিআই(এম)।