E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৩৪ সংখ্যা / ৮ এপ্রিল, ২০২২ / ২৪ চৈত্র, ১৪২৮

সব উন্নয়ন কাল্পনিক

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


‘কি মুশকিল। ছিল রুমাল, হয়ে গেল একটা বেড়াল।’ অমনি বেড়ালটা বলে উঠল, ‘মুশকিল আবার কি? ছিল একটা ডিম, হয়ে গেল দিব্যি একটা প্যাঁকপ্যাঁকে হাঁস। এ তো হামেশাই হচ্ছে।’ এর পরের অংশটুকু সুকুমার ‘হ য ব র ল’-পার্ট টু-তে লিখবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত লেখা হয়নি। সে গল্প অন্য। লিখলে অনেকটা এরকম হতো। ‘কি মুশকিল। ছিল বেড়াল, হয়ে গেল একটা রঙচঙে বাঘ।’ অমনি বাঘ বলে উঠলো, মুশকিল আবার কি? ছিল একটা মুদি দোকানের সামান্য কর্মচারী। হয়ে গেল দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজনৈতিক নেতা। এ তো হামেশাই হচ্ছে। মাথায় অক্সিজেন কম ঢুকলে ওরকম মাঝে মাঝে হয়। কিন্তু আসল মুশকিলটা হলো এর পরে। মানুষ বুঝে উঠতে পারছিল না তাকে এখন কী নামে ডাকবে। সে তো আর সত্যিকারের বাঘ নয়। আসলে একটা বেড়াল। তাই শুনে বাঘ বলল - “আমাকে ‘অক্সিজেনের অভাব’ও বলতে পারো, ‘গুড় বাতাসা’ও বলতে পারো, আবার ‘চড়াম চড়াম’ও বলতে পারো। ‘নকুলদানা’ও বলতে পারো। সে তোমার ব্যাপার। তবে কিছু একটা বলতেই হবে। নাহলে তোমার বাড়িতে বোম মেরে দেব।” বেচারা মানুষ আর কী করে! ঘোর কলি। নব কেষ্টার আবির্ভাবে ভক্তি গদগদ চিত্তে সমস্বরে বলে উঠল, জয় গুড় বাতাসার জয়, জয় চড়াম চড়ামের জয়, জয় কেষ্টার জয়। চলতে লাগল ব্যাজস্তুতি। আর ফুলতে লাগল বেড়াল। হুঙ্কারের চোটে মানুষও একসময় বেড়ালকেই বাঘ ভাবতে শুরু করল। কেমন করে? সে প্রশ্ন আমাকে কোরো না।

সাত সকালে ‘আজাইরা’ কথার ঝাঁপি খুলে বসার কোনও ইচ্ছে ছিল না। কোনও এক আঞ্চলিক স্তরের নেতা, যার বিরুদ্ধে গোরু চুরি থেকে শুরু করে হাজারো অভিযোগ-তার উত্থান, পতন–দেশের রাজনীতি, রাজ্যের রাজনীতি, দেশ রাজ্যের পরিস্থিতির নিরিখে খুবই তুচ্ছ। কারণ দেশে, রাজ্যে তো বিষয়ের খামতি নেই। সেখানে পেট্রোল ডিজেলের দামবৃদ্ধি আছে, ওষুধের দাম একধাক্কায় বেড়ে যাওয়া আছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের নাভিশ্বাস আছে, ভাইপো আছে, সিবিআই আছে, ইডি আছে, কয়লা পাচার আছে, গোরু পাচার আছে, রাজ্যের পাহাড় প্রমাণ দেনা আছে, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দুর্নীতি আছে। আছে আরও অনেক কিছু। একাধিক বিষয় যেমন আছে, বিষয় থেকে নজর ঘুরিয়ে দেবার বিষয়ও আছে, বিষয়ের ধারে কাছে যাতে আপনি না পৌঁছাতে পারেন সেই বিষয়ের অবতারণা আছে। এরকম হাজারো ঘূর্ণিপাকে ঘুরতে ঘুরতে দিনের শেষে কোন্্‌টা বিষয়, কোন্‌টা বিষয় নয়, আর কোন্‌ বিষয়ে থাকা উচিত-সেটা বেমালুম গুলিয়ে যায়। নিষ্কৃতি পাবার চটজলদি কোনও উপায়ও সহজলভ্য নয়। অতএব সঠিক বিষয় বেছে নেওয়াটাও এখন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

গতকাল রাতে আমার এক সাংবাদিক বন্ধু রাজ্যের দেনা প্রসঙ্গে কিছু তথ্য আমার কাছে পাঠিয়েছে। স্মৃতি দৌর্বল্যের মাঝেও অনেকেরই নিশ্চই ২০১০-১১-র কিছু কথা মনে আছে। যখন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একগুচ্ছ ফাইল নিয়ে এ সভা সে সভা করতেন, আর মঞ্চে সাজিয়ে রাখতেন। সেইসব ফাইলে নাকি বাম সরকারের মন্ত্রীদের দুর্নীতির অভিযোগ বন্দি ছিল। আর তিনি বারবারই যেকথা বলতেন, তা হলো ঋণ করে করে রাজ্যটাকে ৩৪ বছরে শেষ করে দিয়েছে বামফ্রন্ট। সে বক্তব্যের যে কোনও সারবত্তা ছিল না তা বারবার তথ্য সহ জানিয়েও মানুষকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বাম নেতৃত্ব। মানুষ ভেবেছিল, সত্যিই বাম সরকার ১ লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকা দেনা করে রাজ্যকে, রাজ্যের মানুষকে ডুবিয়ে দিয়েছে। যদিও নন্দীগ্রামের শেষ বাম বিধায়ক ইলিয়াস মহম্মদ-এর বিরুদ্ধে ঘুষ নেবার অভিযোগ যেমন ছিল প্রাক্তন তৃণমূল, বর্তমান বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পন্ডার ভুয়ো অভিযোগ, তেমনই রাজ্যের ঘাড়ে দেনার বোঝা শীর্ষক ভুয়ো তথ্য প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তদানীন্তন বিরোধী নেত্রী, আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের মেজ, সেজ, ছোটো, বড়ো নেতারা। সে সব এখন যদিও ইতিহাস।

২০১১ থেকে ২০২২। মাঝখানে তিনটে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। যার প্রথমটাতে সরকার বদলে গেছে। তিনটেতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীত্বের হ্যাটট্রিক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু টালার জলে কে বিষ মেশাতে গেছিল সেই তদন্ত যেমন এখনও তিনি করে উঠতে পারেননি, তেমনই বাম নেতা মন্ত্রীদের নামে নামে তাঁর কাছে থাকা সেইসব গণ্ডা গণ্ডা ফাইল কোথায় লোপাট হয়ে গেল তার কোনও সদুত্তরও তিনি আজ পর্যন্ত দেননি। তবু এসব কথা নাহয় থাক। এসব আলোচনায় বার বার বড়ো ব্যক্তি চলে আসে। আমাদের রাজনীতি বার বারই শেখায়, ব্যক্তি নয়, লড়াই নীতির বিরুদ্ধে। তাই...

মার্চ ২০২২-এ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ মন্ত্রক মিডিয়াম টার্ম ফিসক্যাল পলিসি স্টেটমেন্ট অ্যান্ড ফিসক্যাল পলিসি স্ট্র্যাটেজি স্টেটমেন্ট ফর ২০২২-২৩ প্রকাশ করেছে। যে তথ্য অনুসারে রাজ্যে ২০১১-১২-কে ভিত্তি বছর ধরে ২০১৯-২০ তে ম্যানুফাকচারিং শিল্পের অগ্রগতির হার ছিল ৫.৮ এবং সাধারণ শিল্প ক্ষেত্রে ২.৪। ২০২০-২১-এ তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে (-)৭.৬ এবং (-)৩.৪-এ। অর্থাৎ মোট পতনের হার কিন্তু (-)১৩.৪ এবং (-)৫.৮। যেখান থেকে ২০২১-২২-এর এপ্রিল থেকে অক্টোবর প্রোজেক্টেড অগ্রগতি দেখানো হয়েছে ২৯.৮ এবং ২৪.৮। অর্থাৎ সরল পাটিগণিতের হিসেব মতো প্রোজেক্টেড হারে অগ্রগতি ঘটাতে গেলে প্রয়োজন ৪৩.২ এবং ৩০.৬ হারে অগ্রগতি। যদিও তা ঠিক কোন্‌ জাদুবলে তা কেউ জানেনা।

ওই রিপোর্টেরই ১৬ নম্বর পাতায় রাজ্যের দেনা সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া আছে। যেখানে বলা আছে ২০১০-১১ সালের রাজ্যের দেনা ছিল ১,৮৭,৩৮৭.৪০ কোটি টাকা। ২০১১-১২ সালে ২,০৭,৭০২.০৪ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ সালে ২,২৯,৭৭৮.৭৬ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ সালে ২,৫১,৯৯৬.৫৯ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ সালে ২,৭৭,৫৭৯.১৫ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ সালে ৩,০৬,০৪২.৫৮ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ সালে ৩,৩৭,৬৮২.৪১ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ সালে ৩,৬০,৯৬১.০৭ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ সালে ৩,৯৩,২৯৯.৭১ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালে ৪,৩৩,৪৭৫ কোটি টাকা। ২০২০-২১ সালে ৪,৮১,৯৯৮.৮১ কোটি টাকা। ২০২১-২২ (আর ই) সালে ৫,২৮,৮৩৩.০৫ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ (বি ই) সালে ৫,৮৬,৪৩৮.০৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি বছর ধাপে ধাপে বেড়েছে দেনার পরিমাণ। ২০১০-১১ সালে যে দেনা ছিলো ১,৮৭,৩৮৭.৪০ কোটি টাকা সেই দেনা ২০২২-২৩ সালে গিয়ে দাঁড়াতে চলেছে ৫,৮৬,৪৩৮.০৫ কোটি টাকায়। ১১ বছরে রাজ্যের দেনা বেড়েছে ৩,৯৯,০৫০.৬৫ কোটি টাকা বা প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা। আগামী দিনে রাজ্যে যে সরকারই আসুক বিপুল এই দেনার ভার সেই সরকারের মাথাতেই চাপবে।

সম্প্রতি সিএজি জানিয়েছে, রাজ্য সরকার বাজার থেকে যে ধার করছে তার সামান্য অংশই উন্নয়নের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। উলটে ঋণের বেশিভাগ টাকা খরচ করা হচ্ছে আগের বছরের ঋণ শোধ করতে। হিসেব অনুসারে ২০২০-২১ সালে রাজ্য যত টাকা ধার করেছে তার ৭১.৫৩ শতাংশ খরচ করেছে আগের বছরের ধার মেটাতে। ফলে ধারের পর ধার। সেই ধার মেটাতে আরও ধার। ক্রমশ ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছে রাজ্য। একাধিক প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ থাকলেও সে টাকা দেওয়া হচ্ছেনা। মেলা, খেলা, উৎসব আর খয়রাতির টাকার তাতে অভাব হচ্ছে না। কাজের সুযোগ তৈরি হয় অথবা সম্পদ সৃষ্টি হয় এমন কাজে বরাদ্দর বদলে রাজ্য অনেক বেশি উৎসাহী অন্য খাতে খরচে। পপুলিস্ট রাজনীতির দায় সামলাতে ‘ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ’ এই দশার সৌজন্য রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের এবং যেহেতু সেই দলে একজনই সুপ্রিমো, তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্যের এই বেহাল দশার জন্য নিজের দায় অস্বীকার করতে পারবেন না। রাজ্যের মানুষের অক্সিজেনের অভাব হতে আরও খুব দেরি আছে কি?

কী নিয়ে লিখতে শুরু করেছিলাম আর অজান্তেই কোথায় চলে এসেছি। চিন্তাসূত্র ছিঁড়ে যাওয়া বড়ো খারাপ জিনিস। কোনো বিষয়ে স্টিক করে থাকতে না পারাও। তাই বেড়াল, রুমাল, বাঘ, দেনা, অক্সিজেন – হাজারো গোলোকধাঁধায় পথ হারিয়ে ফেলা। ‘মাহেশের রথের মেলায় গিয়ে নবকুমার’ যেরকম পথ হারিয়ে ফেলেছিল আর কী। এবার নাহয় বিষয়ে ফেরা যাক। মাঝে মাঝে মনে হয় সবই ইন্টার রিলেটেড। তাই একটু ‘আজাইরা’ কথাই কই।

২০১৩ সালে পুলিশকে বোম মারতে বলা অনুব্রত মণ্ডলের ২০১৮ সালে এসে মনে হয়েছিল তাঁর সেই কথা বলা ভুল হয়েছে। অনুব্রত বলেছিলেন, ‘যদি কোনো নির্দল প্রার্থী হুমকি দেয় তাঁর বাড়িটা ভেঙে জ্বালিয়ে দিন।’ ‘যদি কোনও প্রশাসন ভাবেন নির্দলকে সমর্থন করব, সেই প্রশাসনের পুলিশদের ওপর বোম মারুন। আমি বলছি বোমা মারতে।’ যদিও পাঁচ বছর পর অনুব্রত জানিয়েছিলেন, ‘ওটা স্লিপ অফ টাং ছিল’। এই ঘটনার আগেই ২০১৮-র মে মাস নাগাদ কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন, “যথার্থ এই বীরভূমি-/ উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে/ পেয়েছি শেষ তীরভূমি।/ দেখ্ খুলে তোর তিন নয়ন/ রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে/ দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।” যে কবিতার উত্তরে পুরুলিয়ার এক জনসভায় অষ্টম শ্রেণির গণ্ডি টপকানো অনুব্রত জানিয়েছিলেন, ‘এক কবি আছে, কবি। আমরা জানতাম রবীন্দ্রনাথ কবি, আমরা জানি নজরুল কবি। উনি নাকি বলছেন আমাকে, রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে।... এক কবি। তুমি দেখতে পাও না। নাম তোমার শঙ্খ রাখাটা ভুল হয়েছে, শঙ্খের অপমান করা হয়।... তুমি যা খুশি বলো, আমার কিছু বয়ে যায় না...”। যে অনুব্রত সম্পর্কে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের তৎকালীন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্ল্যাকমেল করছেন। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় নলহাটি কেন্দ্রের প্রার্থী নিয়ে একথা নাকি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।

নিয়ম না থাকলেও লাল বাতি গাড়ি চেপে ঘুরে বেড়ানো, ধাপে ধাপে বীরভূমের বেতাজ বাদশা তৈরি হওয়া তৃণমূলের এই নেতার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে অভিযোগ ওঠে হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তির। গোরু পাচারের। আয়কর বিভাগ নোটিশ পাঠায় তাঁকে। সেবার ভোটের অজুহাত দেখিয়ে হাজিরা এড়ান অনুব্রত। এরপর নির্বাচনী হিংসা সহ বিভিন্ন মামলায় দফায় দফায় জেরার জন্য ডেকে পাঠায় সিবিআই। যদিও প্রতিবারই তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে গেছেন হাজিরা। গত ১৪ এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি গোরু পাচার কাণ্ডে নিজাম প্যালেসে তাঁর ডাক পড়ে। দুবারই শারীরিক অসুস্থতার অজুহাতে তিনি হাজিরা এড়ান। ভোট-পরবর্তী হিংসায় দুবার সিবিআই’র তলব এড়িয়ে গিয়েছিলেন অনুব্রত। সেবারও তিনি শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান। যদিও তা মানতে চায়নি সিবিআই। যার মধ্যে বার দুয়েক তাঁকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে এসএসকেএম হসপিটাল। তবে বগটুই গণহত্যার পর তাঁর নাম উঠে আসায় ভালোরকম বিপাকে তিনি। যে ঘটনা প্রসঙ্গে আগ বাড়িয়ে জানিয়েছিলেন, টিভি ফেটে শর্ট সার্কিট হয়ে মারা গেছে। যদিও তদন্ত বলছে সম্পূর্ণ অন্য কথা। বীরভূমের কাটমানির বিরাট সাম্রাজ্য, বালি খাদান, বেআইনি নির্মাণ, দেউচা পাচামি থেকে আদিবাসীদের হটানোর চেষ্টা–সবেতেই নাকি অনুব্রতর হাত। সত্যি কথা বলতে কী, সিবিআই-কে যে এভাবে কথায় কথায় বুড়ো আঙুল দেখানো যায়, তা তৃণমূল না থাকলে রাজ্যের মানুষ, দেশের মানুষ হয়তো কোনোদিনই জানতে পারতো না।

হিতোপদেশের গল্প অনুসারে, এক মুনির অনুগ্রহে এক ইঁদুর ক্রমে বেড়াল, তারপর কুকুর এবং তারপর সিংহে রূপান্তরিত হয়েছিল। এরপর ক্ষমতার দম্ভে সেই মুনিকেই খাবে বলে মনস্থির করে সিংহরূপী ইঁদুর। সেই কুমতলব বুঝতে পেরে মুনি বলেন, “পুনর্মুষিক ভব”। মুনি বলেছিলেন, যত বড়ই হও না কেন, নিজের আসল অবস্থান ভুলো না। আজকের সময় দাঁড়িয়ে একা অনুব্রতকে দোষী করে লাভ নেই। পাড়ায় পাড়ায় সিংহরূপী ইঁদুরদের ভিড়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস। মানুষ যতক্ষণ না শক্তি সঞ্চয় করে “পুনর্মুষিক ভব” বলতে পারবে এ দৌরাত্ম্য চলবেই। কাজেই...