৫৮ বর্ষ ২১শ সংখ্যা / ৮ জানুয়ারি ২০২১ / ২৩ পৌষ ১৪২৭
গণনাট্য শিল্পী শুভ হালদারের জীবনাবসান
প্রয়াত গণনাট্য শিল্পী ও সংগঠক শুভ হালদার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৩ জানুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বয়স হয়েছিল ৬৮বছর। তাঁর স্ত্রী বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সীমা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অসংখ্য গণনাট্য সাথিকে রেখে গিয়েছেন।
কলকাতার ভবানীপুর অঞ্চলে ১৯৫২ সালে শুভ হালদারের জন্ম। ভবানীপুরে হালদার পরিবারে সাংস্কৃতিক ও বামপন্থী পরিমণ্ডলে তিনি বড়ো হয়ে ওঠেন। সেই সূত্রে মাত্র সতেরো বছর বয়সে ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের প্রান্তিক শাখায় যুক্ত হন এবং ‘রাহুমুক্ত’ নাটকে অংশগ্রহণ করেন। সেইসময় গণনাট্যে অভিনয় করেছেন শিশির সেন, জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায় সহ বহু বিশিষ্ট অভিনেতা। এরপর ‘ইস্পাতের ফলা’, ‘গুলশন’, ‘তারাস শেভচেঙ্কো’, ‘মহাজাগরণ’, ‘সাদা পায়রার জন্য’, ‘পথে নামার সময়’, ‘নতুন ইহুদি’ সহ অগণিত মঞ্চ ও পথ নাটকে অভিনয় করেন। গণনাট্যের কলকাতা জেলার কেন্দ্রীয় প্রযোজনা ‘চলচিত্ত চঞ্চরি’তেও অভিনয় করেন। দীর্ঘদিন তিনি গণনাট্য সঙ্ঘের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও আজীবন কলকাতা জেলার সভাপতি ছিলেন।
কর্মজীবনে তিনি সিইএসসি’র কর্মী ছিলেন। গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি ১৯৭১ সালে সিপিআই(এম)’র সদস্যপদ অর্জন করেন। আজীবন তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র কলকাতা জেলা কমিটির অন্তর্ভুক্ত সাংস্কৃতিক এরিয়া কমিটির সদস্য ছিলেন। শিল্পীর প্রয়াণে গণনাট্য সঙ্ঘের রাজ্য সভাপতি ডাঃ হিরন্ময় ঘোষাল ও রাজ্য সম্পাদক দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়, সংগঠনের কলকাতা জেলা সম্পাদক সমুদ্র গুহ, পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘের রাজ্য সম্পাদক রজত বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করেছেন।
৪ জানুয়ারি কমরেড শুভ হালদারের মরদেহ প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় গণনাট্য সঙ্ঘ-র রাজ্য দপ্তরে। সেখানে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর মরদেহ সিপিআই(এম) কলকাতা জেলা পার্টির দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হলে লাল পতাকায় আচ্ছাদিত করা হয়। সেখানে নেতৃবৃন্দ, অগণিত পার্টি কর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মীরা মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর প্রয়াত কমরেডের মরদেহ কুঁদঘাটে তাঁর বাড়ি হয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কেওড়াতলা শ্মশানে। সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।