৫৮ বর্ষ ২১শ সংখ্যা / ৮ জানুয়ারি ২০২১ / ২৩ পৌষ ১৪২৭
আলো আছে আবডালে - পর্ব ১
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
মঙ্গলে ঊষা বুধে পা, যথা ইচ্ছা তথা যা। চালু প্রবচন। এ কথা নাকি সংস্কার(কু) বশে অনেকেই মেনে চলেন। আর কিছু বেয়াড়া মানুষ, যাঁরা এসব মানেন টানেন না, তাঁদের কথা আলাদা। তাঁরা এসবের তোয়াক্কা করেন না। সে কথা থাক। দিনের হিসেবে ২০২০-র ১ জানুয়ারি ভারতবাসীর যাত্রা শুরু হয়েছিল এক বুধবারে। সংস্কারীদের হিসেব অনুসারে শুভ যাত্রা...
‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’ টা সেদিন নেহাত মন্দ হয়নি ভারতবাসীর। তখনও করোনা ত্রাস বাজারে আসেনি। কিন্তু লিপইয়ার বিশবিশের প্রথম সপ্তাহই জানান দিয়েছিল - সময়টা একটু অন্যরকম। নতুন বছরের প্রথম দিনেই ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে ট্যুইট করে, বিবৃতি দিয়ে বাড়ানো হয়েছিল দূরপাল্লার ট্রেনের ভাড়া। রেলের হিসেবে কিলোমিটার পিছু ১ পয়সা, ২ পয়সা ভাড়া বাড়ানোর হিসেব দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেবেই কলকাতা দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের ভাড়া বেড়েছিল ৫৮ টাকা। ওইদিনই ভরতুকিহীন গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় সিলিন্ডার পিছু প্রায় ২০ টাকা। সবথেকে বেশি দাম বেড়েছিল এ রাজ্যের ‘লন্ডন’ শহরে। ২১ টাকা ৫০ পয়সা। সেই সময় শেষ পাঁচ মাসে সিলিন্ডার পিছু দাম বেড়েছিল ১৪০ টাকা। দিল্লির শাহিনবাগে সিএএ, এনআরসি, এনপিআর বিরোধী বিক্ষোভের সেদিন ১৮তম দিন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে সিএএ, এনআরসি, এনপিআর বিরোধী বিক্ষোভ। ওইদিনই সীতারাম ইয়েচুরি এক ট্যুইট করে জানান - ‘‘মোদী সরকার নতুন বছর শুরু করেছে। রেলের যাত্রীভাড়া বাড়ানোর পর এবার মানুষের জীবনযাত্রায় আক্রমণ। এই সবকিছুর মূল কারণ কর্ম সংকোচন, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি এবং গ্রামীণ মজুরিতে রেকর্ড পরিমাণ হ্রাস।’’ আর ওইদিনই বিহারের বেগুসরাইতে এক জনসভায় কেন্দ্রীয় পশুপালন ও ডেয়ারি মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং বলেন, ‘‘যে সমস্ত ছেলেমেয়েরা মিশনারি স্কুলে যায়, তারা আইআইটি থেকে যোগ্যতা অর্জন করে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যায় কিন্তু বিদেশে গিয়ে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই গোমাংস খাওয়া শুরু করে। তারা আমাদের দেশের সংস্কার ও সংস্কৃতি কিছুই জানেনা।’’
১ জানুয়ারির মূল্য বৃদ্ধি, আন্দোলনের কথার মাঝে হঠাৎ করে বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং ঢুকে পড়ায় একটু কেমন কেমন লাগল তো? ক্রোনোলজি বুঝতে কেমন কেমন লাগাগুলো আপাতত একটু দূরে সরিয়ে রাখা যাক। ৫ জানুয়ারি গুজরাট বিধানসভার স্পিকার রাজেন্দ্র ত্রিবেদী আহমেদাবাদের এক কেন্দ্রীয় সরকারি বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের শপথ পাঠ করিয়েছিলেন জীবনে কখনও আমিষ না খাবার। ওই বিজেপি নেতার বক্তব্য অনুসারে - ‘‘ভারতীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী আমাদের কখনো আমিষ খাবার খাওয়া উচিত নয়। আমাদের নিরামিষাশী থাকা উচিত।’’ আর ৫ জানুয়ারির রাতেই দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কোয়না হোস্টেল, পেরিয়ার হোস্টেল, সবরমতী হোস্টেল, মাহি মান্ডবী হোস্টেলে মুখোশধারী কয়েকজন ব্যক্তি প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে। লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারতে থাকে তাদের। হোস্টেলের মধ্যে ও ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। আহত হন ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ সহ প্রায় ৩৪জন ছাত্রছাত্রী। অভিযোগ ছিল এবিভিপি আশ্রিত গুন্ডারাই এই হামলা চালিয়েছে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে হামলা চললেও পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও পুলিশ আসেনি বলে অভিযোগ উঠেছিল। কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও আহত ঐশী ঘোষ সহ আরও ১৯ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে ৪ জানুয়ারির অন্য এক ঘটনায় পুলিশ এফআইআর দায়ের করে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন জানান - বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আক্রমণকারী বহিরাগতদের আটকানোর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ইয়েচুরি বলেছিলেন - ‘সারা দেশকে এমনই রক্তাক্ত করতে চাইছে আরএসএস-বিজেপির বাহিনী। এদের রুখে দিতে হবে।’ ২০২০ সাল কেমন হবে তার আগাম আঁচ পাওয়া গেছিল বছরের প্রথম সপ্তাহেই।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো, ন্যূনতম বেতন ২১ হাজার টাকা, বেকারদের কর্মসংস্থান, ঠিকা প্রথা বাতিল, সম কাজে সম বেতন, কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ বন্ধ সহ ১২ দফা এবং সঙ্গে নো এনআরসি, নো সিএএ, নো এনপিআর দাবি নিয়ে ৮ জানুয়ারি হলো ঐতিহাসিক ধর্মঘট। বিজেপি এবং তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া সারা দেশের ১৭৫টি কৃষক ও খেতমজুর সংগঠন, ৬০টির বেশি ছাত্র সংগঠন এবং ১০ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা এই ধর্মঘটে রাজ্যের দাবি হিসেবে যুক্ত হয়েছিল রুগ্ন শিল্পের পুনরুজ্জীবন, জেশপ ডানলপ হিন্দমোটর খোলা সহ কলকাতা ও হলদিয়া ডকের পুনরুজ্জীবন। এই ধর্মঘট প্রসঙ্গে ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী’ জানিয়েছিলেন - ‘‘ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে সিপিএম। সিপিএম কবে আন্দোলন করেছে? এটা আন্দোলন নয়।... যারা গুন্ডামি করে বনধের রাজনীতি করে তাদের ক্ষমা নয়।’’ যার উত্তরে মহম্মদ সেলিম জানিয়েছিলেন - ‘‘এ তো ভূতের মুখে রাম নাম। যে সিপিএম’কে তিনি দূরবীন দিয়ে দেখতে পান না আজ তিনি সব আক্রমণ করেছেন সিপিএম-এর বিরুদ্ধে। তিনি ভুলে গিয়েছেন আজকে গোটা দেশের ধর্মঘট ডেকেছিল আরএসএস এবং তার সহযোগী ছাড়া সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন। আর আরএসএস-এর সহযোগী হিসেবে তিনি এই ধর্মঘটকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিলেন। এবিভিপি এবং টিএমসি ছাড়া দেশের সমস্ত ছাত্র সংগঠন আজকের ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল তা তাঁর জানা ছিল না। তিনি যে বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে নেই আজ তিনি প্রমাণ করেছেন।’’ আক্রমণ, লড়াই, পক্ষ বেছে নেওয়ার ক্রোনোলজি বছরের প্রথম ৮ দিনেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। যদিও দেশজুড়ে চলা প্রবল বিক্ষোভের মধ্যেই ১০ জানুয়ারি থেকে দেশে কার্যকর করা হয় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯ (২০১৯ এর ৪৭)-এর ধারা ১-এর উপধারা (২) দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতার প্রয়োগ ২০২০ সালের ১০ তারিখ থেকে কার্যকর হলো।’’ আর ১৪ জানুয়ারি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেরলের বাম সরকার। যেখানে বলা হয় - নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংবিধান প্রদত্ত সাম্যের অধিকারকে লঙ্ঘন করে। এই আইন দেশের ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থী। সংবিধানের ১৪, ২১ ও ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করে এই আইন। জানুয়ারি মাসেই কেরল, পাঞ্জাব, রাজস্থান বিধানসভায় পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী প্রস্তাব। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ৬২০ কিমি দীর্ঘ মানববন্ধন গঠন করে নজির সৃষ্টি করে কেরলের সিপিআই(এম) নেতৃত্বাধীন এলডিএফ সরকার। উত্তরে কাসরগড় থেকে শুরু হয়ে রাজ্যের দক্ষিণতম প্রান্ত কালিয়াক্কাভিলাইয়ে শেষ হয় এই মানববন্ধন।
দেশে করোনা নিয়ে নড়াচড়া শুরু হয়েছিল অনেক পরে। ফলে করোনা আগামীদিনে দেশের বুকে কী প্রভাব ফেলবে জানুয়ারি মাসে তা জানা ছিলো না। যদিও জানুয়ারি মাসেই স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এক সমীক্ষায় জানিয়েছিল চলতি বছরে চাকরি কমতে পারে ১৬ লক্ষ। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের অর্থনৈতিক মন্দার কারণই চাকরির বাজারে এমন বেহাল অবস্থার জন্য দায়ী।
দেশে নিয়ম করে ‘মন কী বাত’ ‘চায়ে পে চর্চা’ ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ গোছের অনুষ্ঠানে ভারি ভারি কথা বলা হলেও ‘নোকরি পে চর্চা’ জাতীয় কোনো কোনো অনুষ্ঠান হয়না। ২১ জানুয়ারি সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর ট্যুইটে বলেন - ‘‘প্রধানমন্ত্রীর উচিত ‘নকরি পে চর্চা’ করা এবং লক্ষ লক্ষ বেকার যুবক-যুবতীর মন কী বাত শোনা, যে বেকারত্ব উনি অপরিকল্পিত জিএসটি এবং নোটবন্দীর ফলে সৃষ্টি করেছেন।’’
দেশে যখন সরকার বিরোধী, বিজেপি বিরোধী বিক্ষোভ ক্রমশ দানা বাঁধছে, প্রতিদিনই এনআরসি, এনপিআর, সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের মানচিত্রে নতুন নতুন অঞ্চল যুক্ত হচ্ছে সেই সময়েই দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র এক ট্যুইটে লেখেন - পাকিস্তান শাহিনবাগ দিয়ে দেশে ঢুকছে। দিল্লিকে মিনি পাকিস্তান বানানো হয়েছে - শাহিনবাগ, চাঁদবাগ, ইন্দ্রলোক। এখানে আইন মানা হচ্ছে না এবং পাকিস্তানের দাঙ্গাকারীরা রাস্তা দখল করে আছে। ৮ ফেব্রুয়ারির দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনকে উল্লেখ করে তিনি ট্যুইট করেন - ৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লির রাস্তায় হিন্দুস্তান এবং পাকিস্তানের মোকাবিলা হবে। যে ট্যুইট ঘিরে প্রবল বিতর্ক হয়। জল গড়ায় নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত। কমিশন নির্দেশ দেয় ট্যুইট মোছার। যদিও কমিশনের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঘটনার এক বছর পর ২০২১-এর ৭ জানুয়ারি বেলা ১২টা পর্যন্ত সেই ট্যুইট মোছা হয়নি।
২৭ জানুয়ারি বিজেপি প্রার্থী মনীষ চৌধুরীর প্রচারে গিয়ে এক জনসভায় কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, ‘‘দেশ কো গদ্দারো কো’’, সামনে থাকা জনতা এর উত্তরে বলে ওঠে, ‘‘গোলি মারো সালো কো।’’ ২৮ জানুয়ারি দিল্লির বিকাশপুরীতে এক নির্বাচনী প্রচারে পশ্চিম দিল্লির বিজেপি সাংসদ পরবেশ সাহেব সিং ভার্মা জানান - ‘‘১১ ফেব্রুয়ারি বিজেপি ক্ষমতায় এলে এক ঘন্টার মধ্যে রাজ্যে আর কোনো প্রতিবাদীকে দেখতে পাবেন না আপনারা এবং আগামী এক মাসের মধ্যে সরকারি জমিতে নির্মিত সমস্ত মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেব আমরা।’’ অবশ্য মধ্যপ্রদেশের মাইহারের বিজেপি বিধায়ক নারায়ণ ত্রিপাঠী এই সময় জানিয়েছিলেন - ‘‘নাগরিকত্ব আইন ভোট-ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে আনা হয়েছে। এই আইনে কেবলমাত্র বিজেপি’র লাভ হবে, দেশের কোনো উপকার হবে না এই আইনে।’’ আর এই সবের মাঝেই সিএএ বিরোধী মন্তব্য করার জেরে ২৯ জানুয়ারি রাতে মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ডাঃ কাফিল খানকে। যিনি আলিগড়ের এক জনসভায় প্রায় এক মাস আগে সিএএ বিরোধী মন্তব্য করেছিলেন।
৩০ জানুয়ারি বিকেলে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী মিছিলে ‘রামভক্ত গোপাল’ নামের এক যুবক গুলি চালায়। যে ঘটনার ভিডিয়োতে দেখা গেছিল তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বলছেন ‘ইয়ে লো আজাদী’। ঘটনায় আহত হন সাদাব ফারুক নামের এক আন্দোলনকারী ছাত্র। এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশের সদর দপ্তরের সামনে অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদেরই গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। আর ৩১ জানুয়ারি সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন - আন্দোলনের নামে হিংসা দেশকে দুর্বল করে। তবে আমাদের সরকার বিশ্বাস করে যে বিতর্ক গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।’’ তিনি আরও বলেন মহাত্মা গান্ধীর স্বপ্নকে সত্যি করতে সংসদের উভয় কক্ষে এই আইন পাস হয়েছে, আমি খুব খুশি হয়েছি এতে।
ধরাবাঁধা শব্দ সংখ্যা, পাতা বা এক পর্বে ঘটনাবহুল ২০২০-কে বাঁধা অসম্ভব। এ লেখা তাই চলবে। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি থেকে যে ঘটনাপ্রবাহ শুরু হয়েছিলো শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেও সেই দড়ি টানাটানি থামেনি। মাঝখানে করোনার থাবা দেশের সবকিছু স্তব্ধ করে দিলেও, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ‘এই সময় রাজনীতি করবেন না’ জাতীয় বাণী ছড়িয়ে দেওয়া হলেও ২০২০ সালই ইদানীংকালের মধ্যে সবথেকে বেশি রাজনীতি দেখেছে। যার একদিকে আছে একের পর এক শাসকের মুখোশ খুলে পড়ার ঘৃণ্য রাজনীতি, তেমনই এই বছরেই গাঁথা হয়েছে একের পর এক প্রতিরোধের রাজনীতি, লড়াই, সংগ্রামের ইতিহাস। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় বসার পর এই বছরই প্রথম আসমুদ্র হিমাচল প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছে বিজেপি তথা শাসক দলকে। যা আগামীদিনে আরও ব্যাপক আকার ধারণ করার প্রত্যাশা জাগিয়েছে। ২০২০ প্রমাণ করেছে - হতাশা নয়। এই বছর লড়াকু মানুষের অক্সিজেন খুঁজে পাবার বছর। বিষে বিষে বিষক্ষয়ের সূচনাপর্ব। যা অবশ্যই প্রমাণ করবে ভবিষ্যৎ।