E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৪৭ সংখ্যা / ৮ জুলাই, ২০২২ / ২৩ আষাঢ়, ১৪২৯

সোচ্চার চিন্তা

ধর্মাধর্ম-বিনিশ্চয়ঃ নূপুর শর্মার প্ররোচনা বনাম বঙ্গ সংস্কৃতির পরিহসনা

পল্লব সেনগুপ্ত


বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা অতি-অনুচিত একটি মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে তিরষ্কৃত হওয়ায় তাঁর রাজনৈতিক মুরুব্বিরা প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়েছেন। সেই খ্যাপামি এতদূর বেড়েছে যে, তাঁরা ভারতের বিচার ব্যবস্থার সম্বন্ধেই কটুকাটব্য শুরু করেছেন। নূপুর শর্মার কুটিল অপভাষণের জন্যে তাঁকে তৎক্ষণাৎ গ্রেপ্তার করা‍‌ই প্রত্যাশিত ছিল। তা না করে কচি বাচ্চাকে ‘‘ও-ও চোপ্‌’’ বলে আদুরে-শাসন করার ভঙ্গিতে তাঁরা মামুলি একটা সাসপেনশন করলেন দল থেকে। ব্যস দায়িত্ব খালাস! এদিকে ওই ধুরন্ধরবাচী মহিলার হিসেব করে হজরত মহম্মদকে অসম্মান করার সূত্রে সমস্ত ইসলামি জগৎ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে, এবং তাদের সমবেত প্রতিবাদের মুখে দাঁড়িয়ে ভারত সরকারের মুখিয়ারা ‘‘তো-তো’’ করা ছাড়া আর কিছু করে ব্যাপারটা সামলাতে পারছেন না, এবং দেশের মধ্যেও একটা ধিকি-ধিকি অগ্নিগর্ভ সমস্যার উদ্ভবও ঘটছে বলে মনে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ একটি এফআইআর-এর সূত্রে শর্মা ঠাকরুনের নামে ‘লুক আউট নোটিশ’ জারি করেছে, তবে অন্যান্য রাজ্যে বিজেপি সরকারের অলক্ষ্য নির্দেশে এফআইআর সত্ত্বেও পুলিশ থম্‌ মেরে বসে আছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন যে, ‘‘নূপুর শর্মা দেশে আগুন লাগিয়েছেন।’’ আর তাতেই বিজেপি-র নেতাদের হয়েছে চূড়ান্ত গোঁসা! ওই সাম্প্রদায়িকতায় উস্‌কানি-মূলক নষ্টামির বাবদে দেশে সত্যিই একটা সিঁদুরে মেঘ দেখা দিচ্ছে সন্দেহ নেই। নূপুর ঠাকরুনের কথার নিন্দা করায় ইতিমধ্যে কয়েকটা খুনখারাপিও করেছে ধর্মান্ধরা। এবং পুলিশ সে ব্যাপারে ধৃতরাষ্ট্রসুলভ হয়ে থাকলেও, প্রতিবাদীদের গ্রেপ্তার-টেপ্তার কিন্তু করছে।

।। দুই ।।

নূপুর শর্মার ওই অসভ্যতাপূর্ণ শয়তানি মন্তব্য টিভি-তে যাঁরা শুনেছেন, তাঁদের কারুকে কারুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এটুকু বোঝা গেছে যে, কথাগুলো আন্তরিক ধর্মান্ধতা এবং অসহিষ্ণু ঘৃণা থেকে উদ্‌গীরিত হয়। অথচ দেখুন, কোনোরকম আচ্ছন্নতা থেকে মুক্ত হয়ে যখন দেবতা, অবতার, ধর্ম, ধর্মাচার ও সংস্কার ইত্যাদি নিয়ে যদি অসূয়া বা ঘৃণাবিহীনভাবে হাস্য-পরিহাস করা হয়, তখন কিন্তু এমনটা ঘটে না। যে হজরত মহম্মদকে বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ ‘মহানবী’ বলে মনে করেন, কেউ যদি তাঁর প্রতি অসম্মান দেখান তাহলে তো সুস্থবুদ্ধি অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও অধিকাংশই প্রতিবাদ করবেন। এমনকি এই কলমচির মতো শুধুমাত্র মানব ধর্মে-প্রত্যয়ীরাও (যাঁদেরকে ধার্মিকরা নাস্তিক-টাস্তিক বলে ‘অপচ্ছেদা’ করেন) তাঁরাও অবশ্যই আপত্তি করবেন। তুমি থাকো তোমার ধর্মবিশ্বাস নিয়ে, অন্যের ধর্মের প্রতীতিতে আঘাত করার কী অধিকার আছে তোমার? - কোটি কোটি সুস্থবুদ্ধি ভারতবাসীর আজ নূপুর শর্মা এবং তাঁর গার্জেন অ্যাঞ্জেল - তথা রক্ষক-মুরুব্বিদের কাছে এটাই কঠিন এবং তীব্র জিজ্ঞাসা। কিন্তু এই প্রশ্নের কোনও উত্তর তাঁরা দেবেন না জানি। দিতে চাইবেনও না।

।। তিন ।।

এই অবাঞ্ছনীয় সাম্প্রদায়িক পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যেই হঠাৎ মনে হলো, আচ্ছা আমাদের এই বাংলা ভাষাতেই তো প্রবাদ-প্রবচন-বাগ্‌রীতি-উপমা-প্রয়োগ ইত্যাদিতে এমন তো কত পরিহাস কিংবা তির্যক বিদ্রূপ সঞ্চিত আছে, যেগুলো দেবতা-ধর্ম-অবতার প্রমুখকে সংশ্লিষ্ট করে গড়ে উঠেছে। পুঁথিপত্তর ঘেঁটেঘুঁটে দেখা গেল যে, সে সবের সংখ্যা খুব কম নয়। এবং হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান সর্ব ধর্মকেই ছুঁয়ে গেছে সেগুলো, অথচ কারুরই আঁতে-ঘা লাগেনা সেই বাবদে। লোকায়ত কৃষ্টির ওইখানেই তো শক্তি এবং বিরাটত্ব, যা তথাকথিত ওপরতলার সংস্কৃতিতে সুলভ্য নয়। লোকসংস্কৃতির জগতে পরিহাস আছে, শ্লেষ আছে, মিঠে বিদ্রূপও আছে - কিন্তু অবমাননার প্রবণতা নেই, এটা দীর্ঘদিন তার সঙ্গে জড়িয়ে থেকে আন্তরিকভাবেই বুঝি।

কথাটা যখন উঠলই, তখন কিছু কিছু উদাহরণ বরং সংকলনই করি না হয় এখানে। ওই যে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছিলেন না, ‘‘দেবতারে মোরা আত্মীয় জানি’’ - তো, দেবতাকে মানুন আর না-ই মানুন - কথাটার মর্মস্থলে পৌঁছুতে কোনও বাঙালিরই অসুবিধে হয় না। যেমন ধরুন না কেন (প্রবাদ-প্রবচন নিয়েই শুরু করি): ‘‘গণেশ উল্টেছে’’ (মানে, ব্যবসা লাটে উঠেছে) বা ‘‘গণেশদাদা পেটটি নাদা’’ (মানে, কোনও নাদুস-নুদুস একটু ভুঁড়ি থাকা বাচ্চাকে আদর করে বলা) - এসব শুনলে কোনও ‘‘গণপতি বাপ্পা‍‌ মোরিয়া’’ - বলা গণেশ-উপাসক কিন্তু রাগ করেন না! বোকাসোকা কাউকে তো আড়ালে ‘‘গোবর গণেশ’’ অনেকেই বলে! কিংবা ‘‘দুষ্টু সরস্বতী’’ (অর্থাৎ, কথায় কুযুক্তির সাহায্যে অন্যকে যে কাবু করতে পারে)। শুধু গণেশ বা সরস্বতীই নয়, শিব-দুর্গার অন্য দুই সন্তানও এই প্রবাদীয়-পরিহাসের হাত এড়াতে পারেননি। ‘‘হাতে পায়ে লক্ষ্মী’’ (দুরন্ত স্বভাবের/ছট্‌ফটে্‌ মেয়ে সম্পর্কে বলা হয়) বা ‘‘লক্ষ্মীট্যারা’’ (এটা না-কি সৌন্দর্যসূচক কথা! অবশ্য লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, লক্ষ্মী ঠাকরুন না-কি কিঞ্চিৎ তির্যক অর্থাৎ ট্যারা চোখের দৃষ্টিতে কারুকে পর্যবেক্ষণ করে তার প্রতি সদয় বা নির্দয় হন!) ‘‘লক্ষ্মীছাড়া’’ তো মৃদু গালাগালি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। ‘‘হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা’’ বললে কোনও গোঁড়া হিন্দুও অবশ্য দেবীর অসম্মান হলো - সেটা মনে করেন না কিন্তু। ‘‘এসো লক্ষ্মী, যাও বালাই’’ - এতেও দেবীর অবমাননা হয়, কেউ ভাবেন না। কার্তিকও বেশ নিন্দিত প্রবাদের এলাকায়ঃ ‘‘আইবুড়ো কার্তিক’’ (অবিবাহিত বয়স্ক পুরুষ সম্পর্কে শ্লেষ), কিংবা ‘‘কার্তিক ঠাকুর হ্যাংলা, একবার আসেন মায়ের সঙ্গে, একবার আসেন একলা’’ (সে তো তাঁর অন্য ভাই বোনরাও আসেন, তবে শুধু তাঁরই এই বদনাম কেন, কে জানে!); ‘‘আহা, একেবারে কার্তিক ঠাকুরটি’’ (বেশ সাজগোজ করা বিলাসী পুরুষের প্রতি বিদ্রূপ) - এসব তো সবারই শোনা। ‘লব (অর্থাৎ, ‘নব’) কাত্তিক’ - দুশ্চরিত্র পুরুষের বিশেষণ এটি।

এই ধরনের টিপ্পনীকাটা প্রবাদ অন্যান্য দেবদেবীদের নিয়েও মৌখিক বাংলা‌য় অঢেল। যেমনঃ ‘‘সাক্ষাৎ যেন রণচণ্ডী’’; ‘‘লোভে লোভে শ্রীবিষ্ণু’’; ‘‘ঠুঁটো জগন্নাথ’’; ‘‘ল্যাজকাটা হনুমান’’; ‘‘লজ্জায় যেন কলাবউ’’। এই রকম বিদ্রূপাত্মক টিপ্পনী খুব বেশি পাওয়া যায় কৃষ্ণ আর রাধাকে নিয়ে, তার পরেই নাম করতে হয় রামের। রাধা-কৃষ্ণ-রাম নিয়ে গড়ে-ওঠা কয়েকটি প্রবাদ একটু বিশ্লেষণ করি বরং এখানেঃ ‘‘কলির কেষ্ট’’, ‘‘মানুষের বেলায় পাপের রেলা, কেষ্টর বেলা লীলাখেলা’’, ‘‘কেষ্টলীলা’’, ‘‘বৃন্দাবন লীলা’’, ‘‘রাসলীলা’’, ‘‘বৃন্দাবনে সবাই সতী, ধরা পড়েছে রাধা’’ (অপরাধী যেখানে বহুজনেই, সেখানে শুধু একজনকেই দোষী করলে এই চিপ্‌টেন কাটা হয়)। আর ‘‘রাম’’ দিয়ে যে কোনও ধরনের বড়োসড়ো কিছুর উপমা দেওয়া তো বহুল-প্রচলিতঃ ‘‘রামছাগল’’, ‘‘রামক্যাবলা’’, ‘‘রামদা’’ আবার কোনও কিছুতে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে অস্বীকৃতি জানাতে ব্যবহৃত হয় ‘‘রামোচন্দ্র’’। দোরোখা বিপদে পড়লে (ইংরেজিতে যাকে ক্যাচ টুয়েন্টি টু’ প্রবলেম বলে) লোকে হামেশাই বলে, ‘‘রামে মারলেও মরব, রাবণে মারলেও মরব’’ - জানিনে তাবৎ রামভক্ত, কৃষ্ণরাধা ভক্তরা এসব শুনে কতটা রাগঝাল করবে!

।। চার ।।

এই ধরনের বিদ্রূপধর্মী প্রবচন আরও পাওয়া যায় দেবদেবীদের ‍‌শিখণ্ডী করে। যেমন ধরুন, ‘‘বুদ্ধির বৃহস্পতি’’ (‘মূর্খ’ বোঝাতে): ‘‘শনির দৃষ্টি’’ (কোনও ক্ষতিকারী ব্যক্তির কাজকর্ম, বা পরের পর বিপদ এসে পড়লে), ‘‘জলজ্যান্ত শনিঠাকুর’’ (কোনও অপকারী ব্যক্তির বিশেষণ), ‘‘যমের দক্ষিণ দুয়ার’’ (যেখানে ঘোর বিপদের আশঙ্কা আছে)। এরকম ঢের আছে। যেমন, ‘‘একে মা মনসা, তায় ধুনোর গন্ধ’’ - কোনও কুটিল লোককে উস্‌কে দেওয়ার উপমা। দেবতা বা অবতার নিয়ে সরাসরি গালমন্দও শোনা যায়। যেমন, পুরুলিয়ায় শোনা একটি ঝমুর গানে আছেঃ ‘‘গাছের উপর বইস্যে আছে কানু হারামজাদা’’ (কানু অর্থে কৃষ্ণ)। গাঁয়ের মেয়েদের উত্যক্ত-করা বখাটে ছেলের উদ্দেশে এই গান রচিত বৃন্দাবনলীলার কৃষ্ণর সঙ্গে তাঁ‍‌কে উপমিত করে। কিন্তু ‘হারামজাদা’ শব্দটা শুনে অদ্যাবধি কেউ ক্ষিপ্ত হয়েছে - কোনও কৃষ্ণভক্ত চটেছে - এমনটা কোথাও শুনিনি কিন্তু। মায়, সেদিনই একটি গানের রিয়ালিটি শোয়ের টেলিকাস্টে গান শোনা গেছে - এবং তা নিষ্প্রতিবাদে, নিষ্প্রতিক্রিয়ায়!

দিব্যি গালার বেলাতেও এইভাবে বিভিন্ন ধর্মকে সম্পৃক্ত করে বাগ্‌রীতি গড়ে বাংলা মৌখিক-লৌকিক ভাষায়। ‘‘বিসমিল্লায় (অর্থাৎ, শুরুতেই) গলদ’’, বা ‘‘কল্লাকে (মানে, অতীব বদমাইসকে) আল্লা ডরায়’’ - এতো আকছারই বলা হয় এবং তাতে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা কখনও প্রতিবাদ করেছেন বলে জানা যায় না। কারুকে কোনও কিছুতে বিশ্বাস করানোর জন্য ‘‘মাইরি’’ বলাটা ‘স্ল্যাং’ হলেও ব্যাপক প্রচলিত। এই শব্দটি প্রকৃতপক্ষে খ্রিস্টিয় শপথ ‘‘আভে মারিয়া’’ এই লাতিন ভাষার শব্দযুগলের ইংরেজি রূপান্তর ‘‘বাই দ্য নেম অব মেরি’’ - ‘‘বাই মারি’’-র অপভ্রংশ-ঘটা বঙ্গীয় রূপ। ‘‘ভগবান জানেন’’ বলে নিরূপায়তা প্রকাশ করার বদলে ‘‘খোদায় মালুম’’ এই আরবি শব্দগুচ্ছ শুনেও কারুর ধর্মে আঘাত লাগে না।

আবার দেবদেবীদের সঙ্গে মানুষের তুলনাও কম নয়। বরং, ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরাই সেটা বেশি করেন। যথা, ‘‘মানিয়েছে যেন লক্ষ্মী-নারায়ণ’’, ‘‘এ যেন একেবারে হর-পার্বতী’’, ‘‘শিবের মতো বর জুটেছে কপালে’’, ‘‘সাক্ষাৎ লক্ষ্মী এসেছেন ঘরে’’, ‘‘বউমা তো আমাদের ঘরের লক্ষ্মী’’। ‘‘আবার একি কাটার মুকুট’’ (স্পষ্টতই ক্রুশবিদ্ধ জিশুর স্মৃতিবাহী এই বিপন্নতাবাচক কথাটি)।

শুধু মুখের ভাষাতেই নয়, বাংলার লিখিত সাহিত্যের ঐতিহ্যেও এমনটা হরদম দেখা যায়। মঙ্গলকাব্যের দেবদেবীরা তো হাবেভাবে ব্যবহারে বহুক্ষেত্রে একেবারে গৃহস্থ বাঙালি। বৈষ্ণব কাব্যের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা ভুলে যদি রাধা-কৃষ্ণ-যশোদা-বলরাম-গোপবালক-গোপিনী - এদেরকে গ্রামীণ নরনারী বলে বিচার করা হয়, কোনও দৈবী মহিমাই সেখানে নেই। বাৎসল্য-প্রেম-মিলন-বিরহ ইত্যাদি তাবৎ মানবীয় প্রবণতা যেখানে দৈবিতার চিহ্নও রাখে না। শাক্ত পদাবলির মাতা-পুত্র, পিতা-কন্যা - ইত্যাদি ইমেজও বাঙালির একান্ত ঘরোয়া পরিবেশ সৃষ্টি করে।

বঙ্কিমচন্দ্রে ‘লোকরহস্য’-এর ‘হনুমদ্বাবু সংবাদ’, রবীন্দ্রনাথের ‘স্বর্গীয় প্রহসন’ এবং ‘স্বর্গে গোলটেবিল বৈঠক’, সুকুমার রায়ের ‘লক্ষ্মণের শক্তিশেল’ কি রাজশেখর বসু-তথা-পরশুরামের ‘হনুমানের স্বপ্ন’ ও আরও কিছু লেখায় যেভাবে মিথকথাকে খাস্তা করে দেবতা, অবতার - প্রমুখকে নিয়ে পরিহাস করা হয়েছে, সেখানেও কিন্তু তা নিতান্ত, নিবিড় হাস্যরস - যা নিরসূয়া কিন্তু নূপুর শর্মার ব্যাপারটা তো তা নয়ঃ একটা ফেটে বেরোনো আক্রোশ এবং উস্‌কানি তাতে উত্তপ্ত। বাঙালির কালচারের দেব-অবতার-পরিহাস ইত্যাদির সঙ্গে সেটার তুলনা হয় না। তাই দেশে ‘আগুন’ ধরানো এই ঠাকুরানির যথার্থ বিচার তো চাই অবশ্যই।