৫৯ বর্ষ ৯ সংখ্যা / ৮ অক্টোবর, ২০২১ / ২১ আশ্বিন, ১৪২৮
সিআইটিইউ রাজ্য দ্বাদশ সম্মেলন
ভালো লাগা ও আশা জাগানোর প্রাণভরা অভিজ্ঞতা
অমলেন্দু ভট্টাচার্য
রাজ্য সম্মেলন মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শ্রমজীবী মানুষ। যাঁদের কাছে এখনো যাওয়া হয়নি, তাঁদের কাছে যাও। ওঁদের কথা শোনো। নিজেদের কথা বলো। সংগঠিত করো। আন্দোলন গড়ে তোলো। এই স্লোগানকে সামনে রেখে সংগঠনকে আরও মজবুত ও শক্তিশালী করে তোলার শপথ নিয়ে শেষ হলো সিআইটিইউ’র রাজ্য দ্বাদশ সম্মেলন।
তিন দিন ধরে জামুড়িয়ার মতন এক কয়লা খনি অঞ্চলে এত সফল সম্মেলন যে সম্ভব, তা না আসলে বোঝা যেত না। কয়লা পাচারকারী, তৃণমূলী কয়লা মাফিয়া, মাওবাদী মিলিঝুলি যোগাযোগের এই অঞ্চল। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ, জামুরিয়ার গোটা অঞ্চলের রাস্তায় সিআইটিইউ’র লাল পতাকায় মোড়া। প্রয়াত নানা নেতৃত্বের নামে সুসজ্জিত গেট। শহিদদের নামে স্তম্ভ। বিরোধীদের কোনো সভা করতে দিওনা। স্টেজ ভেঙে দাও। পতাকা ছিঁড়ে ফেলো। মারধর করো। এই যাদের দস্তুর সেই তৃণমূলী গুন্ডা কয়লা মাফিয়াদের চোখের সামনে সগৌরবে সিআইটিইউ’র তিনদিনের সম্মেলন চলেছে। নিশ্চিন্তে। কারুর দাঁত ফোটানোর সাহস হয়নি। রাস্তাঘাটে, আসা-যাওয়ার পথে কোনো সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়নি প্রতিনিধিদের। জেলাজুড়ে সম্মেলনকে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে হয়েছে নানা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। সম্মেলন শুরুর আগে তিনদিন ধরে লাগাতার ভারি বৃষ্টি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রচণ্ড সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার মতন অবস্থা হয়। এরমধ্যে দাঁড়িয়ে অমানুষিক পরিশ্রম করে স্বেচ্ছাসেবকরা সম্মেলনের কোনো বিঘ্ন ঘটতে দেননি। এসএফআই’র সর্বভারতীয় নেত্রী এবং একজন প্রাক্তন এমএলএ-কে চোখে পড়ল, দেখলাম তাঁরা স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায়।
বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বদের সঙ্গে নিয়ে এক ঝাঁক বিশাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দিনরাত পরিশ্রম করেছেন সম্মেলন সফল করার জন্য। ভালো লাগল দেখে এঁদের বেশিরভাগই তরুণ। এবং খুবই শৃঙ্খলাবদ্ধ। দু’টো পা নেই - এমন এক স্বেচ্ছাসেবককে দেখলাম কী গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করছেন। জামুড়িয়ার মতন জায়গায়, নিশ্চিন্তে চোখে চোখ রেখে সম্মেলন সফল করার কৃতিত্ব অবশ্যই অভ্যর্থনা সমিতির সংগঠক, কর্মীদের দিতে হবে। আরেকটা কথা আমাকে বলতেই হবে - সম্মেলনের মধ্যে গণসঙ্গীত, কবিতা পাঠ ইত্যাদি নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। খুব ভালো লেগেছে এসব পরিবেশনা।
এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও শিল্পীরা চর্চা বজায় রেখেছেন। মিশ্র ভাষা জাতি উপজাতিদের বাস এই অঞ্চলে। এখানকার মিশ্র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ওরা ধরে রেখেছেন।
এই নাকি জামুরিয়া একটা মফস্বল শহর। আগে মিউনিসিপ্যালিটি ছিল। এখন আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মধ্যে পড়ে।আগে যা দেখেছি তাতে বলতে পারি কোনো উন্নতিই হয়নি জামুড়িয়াতে। আসানসোল ও রানিগঞ্জ থেকে জামুরিয়া ঢোকার রাস্তা খুবই খারাপ। বৃষ্টি পড়ে তো খুবই খারাপ অবস্থা হয়েছিল। জামুরিয়া বাজার মোড়। সরু রাস্তা এখান দিয়ে বাস চলে। বাজারও বসে। বাস মোড় থেকে ডানদিক ঘোরাতে হলে হকারদের দোকানপাট সরাতে হচ্ছে। যাতায়াতের খুবই অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। পানীয় জলের সমস্যা আছে। রাস্তার ধারে কলে দেখলাম জল নেওয়ার জন্য মহিলাদের বিশাল লাইন। বাজার ছাড়া অন্যত্র দোকানপাট পেলাম না। সম্মেলনস্থলের আশেপাশের স্থানীয় সাধারণ মানুষদের দেখে, কথা বলে মনে হলো - বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের মানুষ। আমাদের নিয়ে বিরক্ত না হলেও রাজ্যের তৃণমূল সরকার ও তাদের দল সংক্রান্ত কোনো কথা জিজ্ঞাসা করলে মুখে কুলুপ। ভয় ভীতি কাজ করছে বলে মনে হলো। তবে অন্যরকম অভিজ্ঞতাও হয়েছে। আমাদের স্থানীয় মানুষ সাহায্য করেছেন। সম্মেলন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জামুড়িয়ার মতো একটি জায়গায় এত মানুষের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার কোনো সুযোগই নেই। তাই প্রতিনিধিদের থাকতে দেওয়া হয়েছিল রানিগঞ্জ, আসানসোল সংলগ্ন বিভিন্ন অঞ্চলে। সুন্দর ব্যবস্থা। প্রতিদিন যাতায়াতের ব্যবস্থা ছিল সম্মেলনে। পথে-ঘাটে কেউ বিদ্রূপ করেছেন এমন কথা শোনা যায় নি। বরঞ্চ আমার অভিজ্ঞতা হলো - গাড়িতে দুর্গাপুর ফেরার পথে একজন স্থানীয় মানুষের কাছে রাস্তার পথনির্দেশ জিজ্ঞাসা করেছিলাম। বলেও দেন। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর দেখি মোটর সাইকেল নিয়ে সেই ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আমাদের বললেন, “আপনাদের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। সোজা রাস্তা ধরে যেতে বলেছিলাম। যাবেন না। বাঁ দিকের রাস্তা ধরে চলে যান। ৮ কিলোমিটার রাস্তা কম হবে। সম্মেলনের থেকে ফিরছেন তো। কেমন হচ্ছে সম্মেলন”। কলকাতা জেলার এক প্রতিনিধি আমায় বললেন, তার কাছে জামুরিয়া বাজারের এক দোকানদার সম্মেলন নিয়ে নানা কথা জিজ্ঞাসা করেছেন। আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এটা একটা ভালো দিক।
সাগর থেকে পাহাড়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জেলা ও শিল্পভিত্তিক ইউনিয়নের এবং রাজ্য কমিটির কর্মকর্তা নিয়ে মোট ৯২৩ জন প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশ নেন। এবারই প্রথম অনলাইনে প্রতিনিধিদের পরিচয়পত্র জমা নেওয়া হয়। সব চাইতে কম বয়সের প্রতিনিধি ছিলেন ২৮বছরের স্বাতীকা কুজুর। সবচেয়ে বয়স্ক দুই প্রতিনিধি - ৮২ বছরের নিরঞ্জন চ্যাটার্জি ও শান্তশ্রী চ্যাটার্জি। সম্পাদকীয় রিপোর্ট পেশ করেন বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু। রিপোর্টের ওপরে ৬২ জন প্রতিনিধি আলোচনা করেন।
সম্মেলনে আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার আর্থিক সংস্কারের নামে দেশবিরোধী শ্রমিক-কৃষক জনবিরোধী একের পর এক আগ্রাসী পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। দেশের স্বনির্ভর অর্থনীতিকে জলাঞ্জলি দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পগুলিকে বেসরকারিকরণের পথে পুঁজিপতিদের কাছে যেকোনো মূল্যে তুলে দিতে ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ধর্মের নামে বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে শুধু নয় গণতন্ত্রকে পদদলিত করে ফ্যাসিবাদের পথে আক্রমণ শুরু করেছে। পার্লামেন্টে বিরোধীদের বক্তব্যকে উপেক্ষা করে একের পর এক বিল পাশ করছে। প্রতিরক্ষা শিল্পে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করে আইন তৈরি করছে। দশ মাসের বেশি সময় হয়ে গেল কালা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন চলছে। ২৭ সেপ্টেম্বর সারাদেশে হয়েছে ভারত বন্ধ। সে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো হেলদোল নেই।
রাজ্যের তৃণমূল সরকারও একইপথে চলছে। সরকারি মদতে গুন্ডামি, সন্ত্রাস, মিথ্যা মামলা, দুর্নীতি লুটের রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে। এর আগে রাজ্যের ৪৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বিক্রি বা বন্ধ করা হয়েছিল। এবার মাদার ডেয়ারি বিক্রি, দুর্গাপুরের বিপিএল’র জমি বিক্রি তথা বেসরকারিকরণের পথেই সরকার চলছে। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারি জনজীবনের সমস্যা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম প্রতিবাদ করতে হবে। সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রে সংগঠনকে আরও প্রসারিত ও শক্তিশালী করতে হবে। সিআইটিইউ’র নিজস্ব স্বাধীন কর্মসূচি, ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ কর্মসূচি ও শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুরের ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি বৃদ্ধি করতে হবে। রাজনীতি ও মতাদর্শগতভাবে নিজেদের সচেতন ও উন্নত করতে হবে। শ্রমিকশ্রেণিকেও রাজনৈতিকভাবে সচেতন করতে হবে। এই লক্ষ্যে সকলকে কাজ করতে হবে। এসব দায়িত্ব পালন করতে হলে সিআইটিইউ-কে অবশ্যই রাজ্যে আরও সক্রিয়, আরও শক্তিশালী করতে হবে। আরও উন্নত চেতনার ও মতাদর্শের সংগঠনে পরিণত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নতুন উৎসাহে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানানো হয় সম্মেলনে।
রাজ্য সম্মেলনের তোরণের সামনে প্রতিনিধিরা।
বেশ কয়েকটা সিআইটিইউ’র রাজ্য সম্মেলনে উপস্থিত থাকার অভিজ্ঞতার নিরিখে বলতে পারি এবারের সম্মেলন অন্যগুলোর থেকে অনেকটাই আলাদা। ছিল দারুণ প্রাণবন্ত। এই সম্মেলনে প্রতিনিধিরা আলোচনা করার সময় শুধু নিজেদের সংগঠন নিয়ে রিপোর্ট করেননি। এখনকার পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। আলোচনা করেছেন সাংগঠনিক বিষয় ও আন্দোলন-সংগ্রামের নানা দিক নিয়ে। এসব বিষয় তুলে ধরার ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও সমালোচনা থাকলেও সঙ্গে বলেছেন তার বিকল্প কী হতে পারে তার কথাও। যা বলেছেন মন খুলে। দৃঢ়তার সঙ্গে মনোরঞ্জন রায় বলতেন, শিল্পকে ঠিকভাবে না জানলে পরে সেখানে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের কাজ করা যায় না। সুন্দরভাবে নিজেদের শিল্প ও তার সমস্যার বিষয়গুলি উঠে এসেছে বেশকিছু প্রতিনিধির বক্তব্যর মধ্যে থেকে। চা, ইস্পাত, চটকল, কয়লা, স্পঞ্জ আয়রন এরকম আরও কয়েকটি শিল্পের অবস্থা, আন্দোলন-সংগ্রাম, করণীয় কাজ, নতুন কিছু ভাবনা এসব বিষয় সুন্দরভাবে সম্মেলন মঞ্চে পরিবেশিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিশেষকরে, ধর্মঘটের ক্ষেত্রে যৌথ আন্দোলনের অসুবিধা ও অন্য ইউনিয়নগুলির ভূমিকা সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কথা প্রতিনিধিদের বক্তব্য থেকে উঠে এসেছে। আলোচনায় উঠেছে, শিল্পের জমিতে শিল্প করার দাবি নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের। পরিচিতিসত্তার রাজনীতির বিপরীতে শক্তিশালী শ্রেণিআন্দোলনই পারে বিভাজনের রাজনীতি রুখতে। আলোচনায় এসেছে - ‘‘রিচ টু আন রিচ’’ এই স্লোগান কার্যকর করতে হলে নেতৃত্বকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। নিচে নেমে কাজ করলে কর্মীরা উৎসাহিত হবেন। কথা উঠেছে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি পালন নয়, সংগঠন শক্তিশালী করতে হলে বেশি সংখ্যক শ্রমিককে যুক্ত করে চাই লাগাতার আন্দোলন। প্রতিনিধিদের বক্তব্য থেকে বেরিয়ে এসেছে ত্রুটি দুর্বলতা কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলার দিশা।
এবারের সম্মেলনের ছবিটা একটু অন্যরকম মনে হয়েছে। প্রতিনিধিদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যা কিছুটা হলেও অন্যবারের তুলনায় বেশি ছিল বলেই মনে হয়েছে। সদ্য প্রাক্তন বেশ কিছু যুব ছাত্র নেতৃত্বকে দেখলাম প্রতিনিধি হিসেবে এসেছেন। মহিলা প্রতিনিধি ছিলেন ১২৯ জন। সম্মেলনে আইসিডিএস, আশা, মিড ডে মিল ছাড়াও অন্য সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্র থেকেও বেশ কিছু মহিলা এবারের সম্মেলনে প্রতিনিধি হিসেবে এসেছেন। এঁদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাভাষী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাকেও দেখলাম। বেকারি বেড়েই চলেছে। সংগঠিত ক্ষেত্রে চাকরির বাজার প্রতিনিয়ত সংকুচিত হয়ে চলেছে। বাড়ছে অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সংখ্যা। ব্যবসার ধরন পাল্টাচ্ছে। কর্পোরেট সর্বক্ষেত্রে ঢুকে পড়ছে। শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা চাকরি না পাওয়ায় অল্প বেতনে কাজ করছেন বিভিন্ন কোম্পানির শপিং মল, খাবার ডেলিভারি সংস্থা, কুরিয়ার, কল সেন্টার - এ ধরনের নানা ক্ষেত্রে। এরকম নতুন নতুন ক্ষেত্রে কোথাও হয়তো সিআইটিইউ পৌঁছতে পেরেছে। কোথাও বা পৌঁছতে হবে। এরকম নানা সম্ভাবনার কথা উঠে এলো এবারের সম্মেলনে। আমরা হার মানছি না। আমরা করব জয়। এই মানসিকতা থেকেই প্রতিনিধিরা আলোচনা করেছেন। সম্মেলনে কথা হলো গৃহ সহায়িকাদের নিয়ে সংগঠনের ব্যাপারে। ওলা, উবের অন্যান্যদের নিয়ে গড়ে উঠেছে নতুন সিআইটিইউ’র ইউনিয়ন। তাঁরাও রয়েছেন লড়াইয়ে। বিগবাজারের কর্মীরা অন্য দলের প্রভাবিত সংগঠন ছেড়ে যোগ দিয়েছেন সিআইটিইউ ইউনিয়নে। শুনলাম ওদের আন্দোলন-সংগ্রাম ও জয়ের কথা। ভালো লাগল শুনে অটোমোবাইল ডিলারদের কর্মীদেরও সংগঠন গড়ে উঠেছে। গিগ শ্রমিকদের সংগঠন হচ্ছে। আশার কথা শোনালেন আইটি সেক্টরের প্রতিনিধি। আগে এই সেক্টরে ইউনিয়নের কথা বললেই চাকরি যাওয়ার ভয়ে সবাই মুখ ঘুরিয়ে রাখত। এখন অবস্থা পাল্টেছে। আইটি সেক্টরে সিআইটিইউ’র সংগঠন গড়ে উঠেছে। আওয়াজ উঠেছে আর এনজিও’র মাধ্যমে চলা নয়, সিআইটিইউ -ই আমাদের পথ দেখাবে। এভাবেই সারাদেশে নতুন জায়গা বা যেখানে ইউনিয়ন ছিল না সেখানে সিআইটিইউ’র সদস্য সংগ্রহ, ইউনিয়ন গড়ে তোলার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে যা সদস্য হয়েছে তাতে এ বছরে সারাদেশে এরকম নতুন নতুন ক্ষেত্রে সদস্য সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপন সেন।
সম্মেলনের শেষ দিনে অভ্যর্থনা সমিতির পক্ষ থেকে একটি স্মরণিকা প্রকাশিত হয়। তপন সেন, সুভাষ মুখার্জি, অনাদি সাহুর হাত ধরে। পাশে ছিলেন সফল সম্মেলনের অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি বংশগোপাল চৌধুরী ও সম্পাদক মনোজ দত্ত। সম্মেলন মঞ্চ থেকে সংগঠনের সর্বভারতীয় সভানেত্রী হেমলতার উদ্বোধনী ভাষণ আপলোড করে সিআইটিইউ ওয়েস্ট বেঙ্গল নামে ইউটিউব চ্যানেলের উদ্বোধন হয়। সবাইকে এই চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করার জন্য অনুরোধ করা হয়। এর জন্য কোনো খরচ লাগে না।