৫৯ বর্ষ ৯ সংখ্যা / ৮ অক্টোবর, ২০২১ / ২১ আশ্বিন, ১৪২৮
সিআইটিইউ রাজ্য দ্বাদশ সম্মেলনের বার্তা
সৌম্যজিৎ রজক
রাজ্য সম্মেলন উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখছেন কে হেমলতা।
নয়া উদারবাদের তিনটে দশক শেষে ইংরাজ আমলের চেয়েও গভীর আজ শ্রেণি বৈষম্য। গোদের উপর কোভিড, লকডাউন। রুটিরুজি খুইয়ে সর্বস্বান্ত কোটি কোটি শ্রমিক-কর্মচারী। আয় কমে যাওয়ায় গরিব মানুষ আরও গভীর অভাবে নিক্ষিপ্ত। দারিদ্র্যে নিক্ষিপ্ত মধ্যবিত্তেরও একটা বড়ো অংশ। আর কোভিডের এক বছরেই দেশের ১ শতাংশ অতিধনীর সম্পদ বেড়েছে ৩৫ শতাংশ হারে। অভূতপূর্ব মাত্রায় পুঁজি কেন্দ্রীভূত হয়েছে কর্পোরেটের লকারে, আর সমানুপাতেই শ্রমজীবীর ঘরে পুঞ্জীভূত হয়েছে দুর্দশা।
ঘরে জমাট বেঁধেছে আঁধার, চোখের জল, বুকের ক্ষোভ। কিন্তু সে ক্ষোভকে প্রতিরোধে পরিণত করার ক্ষমতা? দেশের গণআন্দোলনের অগ্রবর্তী ঘাঁটি এ বাংলাতে দুর্বল হয়েছে বামপন্থীরা। শাসকশ্রেণির হামলা বেড়েছে, রাজনৈতিক সংগ্রাম পরিচালনার শক্তি কমেছে শ্রমিকশ্রেণির। অস্বীকার করবে কে? করেই বা কী লাভ? মোদ্দা কথাটা হলো, আপাদমস্তক হতাশায় মোড়া এক সময়! বিপ্লবী বাহিনীর সামনে রয়েছে বিভ্রান্তিরও নানা উপাদান। এখনই তো আয়নার সামনে দাঁড়ানোর শ্রেষ্ঠ সময়।
এমনই সময় অনুষ্ঠিত হলো সিআইটিইউ’র পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ রাজ্য সম্মেলন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ১-২ অক্টোবর তারিখে। পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ায়; খনি মজদুরদের ঘামে লেখা কমরেড মহম্মদ আমিন নগরে। কমরেড শ্যামল চক্রবর্তী মঞ্চে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সর্বভারতীয় সভাপতি কে হেমলতা। শাসকশ্রেণির আক্রমণের তীব্রতা বেড়েছে এসময়, বেড়েছে শ্রেণি বৈষম্য, সাথে সামাজিক নিপীড়নও। এই সামগ্রিক প্রেক্ষাপটেই আজকের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের নির্দিষ্ট অভিমুখ ঠিক করার দায়িত্ব সম্পর্কে প্রতিনিধিদের অবগত করেন তিনি। বলেন, “যৌথ ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন এই সময় অত্যন্ত জরুরি কিন্তু যৌথ আন্দোলনে অংশ নিয়েও মনে রাখতে হবে যে, অন্য ট্রেড ইউনিয়নগুলির থেকে সিআইটিইউ’র রাজনৈতিক বোঝাপড়া পৃথক।” সিআইটিইউ মনে করে শ্রেণি শোষণের অবসান ঘটাতে এই সমাজের বদল প্রয়োজন। আর সে কাজ শ্রেণি-সমঝোতার লাইনে, শত্রুশ্রেণির হাত ধরায় সম্ভব নয়। নিছক অনুরোধ উপরোধে শ্রমিকদের কিছু তাৎক্ষণিক অর্থনৈতিক দাবি আদায় করে নেওয়াতেও সম্ভব নয়। কেবল শ্রেণি সংগ্রামকে তীব্র করার মাধ্যমেই রাজনৈতিক ভারসাম্যে বদল আনা সম্ভব।” মনে করিয়ে দেন হেমলতা তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যেই।
“নতুন এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রয়োজন তিনটি রণকৌশল। এক, সিআইটিইউ’র স্বাধীন শক্তিবৃদ্ধি। দুই, যৌথ ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের শক্তিবৃদ্ধি অর্থাৎ যে শ্রমিকেরা সিআইটিইউ’র সংগঠনের বাইরে আছেন, অন্য ইউনিয়নের প্রভাবে আছেন বা কোনো ইউনিয়নের সঙ্গেই নেই তাঁদের মধ্যে শ্রমিক একতা তৈরি করা। যৌথ সংগ্রামের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব। তিন, উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুর এই মৌলিক শ্রেণিশক্তিগুলির ঐক্যকে সংহত করা।” এই তিন কাজ সমাধা করার উপযোগী সংগঠন ও আন্দোলন পরিচালনার জন্য প্রতিনিধিদের খোলামেলা মত বিনিময়ের আহ্বান জানান তিনি।
বিদায়ী সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায় সভাপতির ভাষণে জোরের সাথেই বলেন, “ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে সৌখিন মজদুরির পর্যায়ে নামিয়ে আনা নয়, অবাধ্য আন্দোলন পরিচালনার উপযোগী সংগঠন গড়ে তোলাই এই মুহূর্তের চাহিদা।”
সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক অনাদিকুমার সাহু। সিআইটিইউ’র বিভিন্ন ইউনিয়নে সদস্যদের সক্রিয়তা বাড়ানোর, ইউনিয়নগুলি পরিচালনায় গণতান্ত্রিক কাজের ধারাকে বিস্তৃত করার, গ্রামে গ্রামে-ব্লকে ব্লকে সিআইটিইউ’র সমন্বয় কমিটিগুলিকে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “বিগত বছরগুলিতে রাজ্যে কমতে থাকা সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই হবে। এখনো যে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনো যায়নি, পৌঁছতেই হবে তাঁদের কাছে।”
৬২ জন প্রতিনিধির মোট ৯ ঘণ্টা ৫০ মিনিটের আলোচনায় সমৃদ্ধ হয়েছে সম্মেলন। জেলাভিত্তিক ও শিল্পভিত্তিক রিপোর্টিংয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অন্যান্য সমস্যা এবং সম্ভাবনার কথা যেমন উঠে আসে, তেমনই কিছু সাধারণ উপলব্ধির কথাও উঠে আসে। ‘রিচ দ্য আনরিচ’ স্লোগানকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে কিয়দংশে যে সাফল্য মিলেছে তার অভিজ্ঞতা বাকিদের সাথে ভাগ করে নেন প্রতিনিধিরা। আবার এই কাজে যেসকল সমস্যা দেখা দিচ্ছে সেগুলিকেও সম্মেলনের সামনে উপস্থিত করেন। চা, চটকল, খনি, বন্দর, বিদ্যুৎ, ইস্পাতের মতো শিল্পের শ্রমিকদের আন্দোলন এই সময়কালে স্তব্ধ ছিল না। বহুলাংশে আগের চেয়ে বড়ো আকারের লড়াই হয়েছে সিআইটিইউ’র নেতৃত্বে। গুরুত্বপূর্ণ লড়াই হয়েছে নির্মাণ, বিড়ি, পরিবহণ, আশা-মিড ডে মিল, মুটিয়া মজদুর, পৌর কর্মচারী, এলআইসি, বিএসএনএল ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলোতেও। বহুক্ষেত্রে দাবি আদায়ও করা গেছে। বহুক্ষেত্রে লড়াই আরও উচ্চস্তরে নিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।
এই সময়কালে সংকটাপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছনো সহ নানাবিধ ত্রাণমূলক কর্মসূচিতে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে সিআইটিইউ। মানুষের বিপদের দিনে তরুণ রেড ভলান্টিয়ার্সের সাথে ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীরাও পালন করেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। গৃহসহায়িকা, ওলা-উবেরের অপারেটার-চালক, বিগবাজারের শ্রমিক-কর্মচারী, গিগ ওয়ার্কার, তথ্যপ্রযুক্তি সহ একাধিক নতুন নতুন ক্ষেত্রে সিআইটিইউ’র সংগঠন গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত হয়েছে। ইউনিয়ন গড়ে উঠেছে কিছু ক্ষেত্রে, এবং আন্দোলনও সংগঠিত হয়েছে। এই সমস্ত অভিজ্ঞতাতেই সিঞ্চিত হয়েছে সম্মেলন। তবে এই সকল অগ্রগতির মধ্যেও উদ্বেগের যেসব চিহ্ন বর্তমান তাও উঠে এসেছে প্রতিনিধিদের আলোচনায়।
উত্তরের চা বাগানে যখনই ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের রাস্তা চওড়া হচ্ছে, ঠিক তখনই পরিচিতি সত্তার প্রশ্নটিকে সামনে এনে ভাঙন ধরানো হচ্ছে শ্রেণি ঐক্যে। জাতিসত্তার গায়ে লেগে থাকা শ্রেণির চিহ্নগুলিকে কীভাবে খুঁজে বের করে আনা হবে, কীভাবেই বা মোকাবিলা করা হবে পরিচিতি সত্তার রাজনীতিকে? ইস্পাত কিংবা খনিতে শ্রমিকদের যৌথ আন্দোলনের নানান বাঁকে মোড়ে সামনে চলে আসছে অ-সিআইটিইউ ইউনিয়নগুলির দোদুল্যমানতা। অর্ডনান্স কারখানাগুলির কর্পোরেটিকরণের যে সিদ্ধান্ত মোদী-সরকার নিয়েছে, আজ তাকে খোলামেলাই সমর্থন করছে আইএনটিইউসি। নয়াউদারবাদ বিরোধী সংগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ে পা ঘষছে অপরাপর ট্রেড ইউনিয়নগুলি। কীভাবে এই সমস্যার সামধান করা হবে? লড়াই-আন্দোলনের মাত্রা বাড়লেও সদস্যপদ কমছে কেন? শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করা হলেও শ্রমিক মহল্লায় বামপন্থীদের গণভিত্তি হ্রাস পাচ্ছে কীভাবে? যে নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে শ্রমিকরা লড়াই করছেন, নির্বাচনের সময় সেই নীতির ধারক-বাহক পার্টিগুলিকেই সেই শ্রমিকরা সমর্থন করছেন কেন? শ্রমিকদের সামনে তাদের শত্রু-মিত্র চিনিয়ে দিতে কোথায় গলদ থেকে যাচ্ছে আমাদের?
এমন হাজারো প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সম্মেলনে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন বাংলার প্রান্ত প্রান্তর থেকে আগত শ্রমিকনেতারা। প্রতিনিধিদের সামগ্রিক আলোচনার শেষে বক্তৃতা করতে উঠেই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, “নেতারা পথ দেখায় না, আমাদের সংগঠন দাঁড়িয়ে আছে গণতান্ত্রিক কার্যপ্রণালীর ওপর। আপনাদের পুরো আলোচনা শোনার ভিত্তিতে আমি শুধু নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিতে চাই এবং তার সাথে কিছু সাজেশনও দিতে চাই।” পর্যবেক্ষণমূলক বক্তৃতায় তপন সেন বলেন, “ইউনিয়ন সম্পর্কে শ্রমিকদের মধ্যে ‘sense of ownership’ (‘এটা আমাদের সংগঠন’ এই বোধ) গড়ে তুলতেই হবে।” তিনি যোগ করেন, “নেতৃত্বে শ্রমজীবী মানুষের অংশগ্রহণ সচেতনভাবে বাড়াতে হবে। শ্রমিকশ্রেণির ‘ownership’-এর বোধ ছাড়া পরিস্থিতির রাজনৈতিক ভারসাম্য বদলানো যাবে না।”
আত্মত্যাগ ও আত্মবিশ্বাসে ভর করেই পরিস্থিতির চাহিদা মেটানোর মতো আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি বলেন, “জমিনি স্থিতিকে পর্যালোচনা করেই পরিবেশ উত্তপ্ত করতে হবে। এই অবস্থাকে ভাঙা যায়, ভাঙা সম্ভব। তবে সেটা সচেতনভাবে।”
অর্থনৈতিক দাবিদাওয়ার লড়াইতে শ্রমিক-কর্মচারীদের সংগঠিত করতে পারলেও রাজনৈতিক চেতনার স্তরে উন্নীত করতে না পারার যে দুর্বলতার কথা প্রতিনিধিদের আলোচনায় বারংবার উঠে এসেছে সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তপন সেন বলেন, “যাঁদের কাছে পৌঁছতে পারিনি তাঁদের কাছে পৌঁছনোর কাজ খানিকটা পেরেছি আমরা। কিন্তু ইস্যুর সাথে নীতিকে সংযুক্ত করে শ্রমিকদের সামনে উপস্থিত করতে পারিনি, যে নীতি তার ক্ষতি করছে সেই নীতির পেছনের রাজনীতিটাকে বেআব্রু করে দিতে পারিনি শ্রমিকদের সামনে। শত্রু মিত্র চিনিয়ে দিতে পারিনি। সে কারণেই যে নীতির জন্য তার দুরবস্থা সেই নীতিতে চলা রাজনৈতিক দলকে শ্রমিকরা ভোটে সমর্থন করছেন। শত্রুকে চিহ্নিতকরণ না করতে পারলে ‘আনরিচড’কে ‘রিচ’ করেও লাভ নেই।” তিনি যোগ করেন, “পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে নাঙ্গা করো, শ্রেণিকে সামনে নিয়ে এসো। রাজনৈতিক ভারসাম্যে বদল ঘটাতে এর কোনো শর্টকাট নেই।”
নয়াউদার যুগে শ্রমিকশ্রেণির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সংগঠিত করার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই সিআইটিইউ’র কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। এই প্রসঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কথার অবতারণা করেন তিনি, সংগঠিত/অসংগঠিত ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারভিত্তিক সংগঠন পরিচালনার প্রশ্নে দ্বান্দ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের পরামর্শ দেন। তপন সেন বলেন, “অসংগঠিত ক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, ঠিক, কিন্তু সংগঠিত ক্ষেত্র ছেড়ে দেওয়া যাবে না। এই ক্ষেত্রের লড়াইতেই এরাজ্যে সিআইটিইউ’র পরিচিতি গড়ে উঠেছে। যাঁরা উৎপাদন প্রক্রিয়ার এবং শ্রম-পুঁজির দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, আমরা সেই সংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ছেড়ে দিতে পারি না। বরং সংগঠিত ক্ষেত্রকে আধার করেই তার বাইরে ছড়াতে হবে।”
জবাবি ভাষণে পশ্চিমবঙ্গ কমিটির বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু বলেন, “বিগত দিনগুলোতে সংগঠিত-অসংগঠিত দু’ক্ষেত্রেই আমাদের নেতৃত্বে বহু সংগ্রাম হয়েছে। এবার লড়াই-আন্দোলনকে দাবি আদায়ের স্তরে উন্নীত করতে হবে।”
উদ্বোধনী বক্তৃতা থেকে সভাপতির ভাষণ, প্রতিনিধিদের আলোচনা এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে যে কথা বারংবার উঠেছে, সেই গণতান্ত্রিক কার্যপ্রণালী নিশ্চিত করার উপরে জবাবি ভাষণেও জোর দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, “আন্দোলন-সংগ্রামে শ্রমিকদের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই শ্রমিকশ্রেণির মধ্যে সংগঠনকে মজবুত করা যায়। আর ‘গণতান্ত্রিক কার্যপ্রণালী’ ছাড়া তা করা যায় না। গণতান্ত্রিকভাবে ইউনিয়নগুলির ‘Regular functioning’ নিশ্চিত করতে হবে।”
চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বর জুড়ে ইউনিয়নগুলির নেতৃত্বে নিজস্ব দাবিদাওয়ার লড়াই সংগঠিত করতে হবে, সদস্য সংগ্রহে জোর দিতে হবে এবং একইসাথে কেন্দ্রীয় সরকারের ই-শ্রম সুবিধা পোর্টালে শ্রমিকদের তথ্য নিবন্ধীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক তাঁর জবাবি ভাষণে আশু এই কাজগুলির কথা বলেন।
দ্বাদশ সম্মেলন থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে অনাদিকুমার সাহু এবং সভাপতি পদে সুভাষ মুখোপাধ্যায় পুনর্নির্বাচিত হন। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন তরুণ ভরদ্বাজ। সম্মেলনের প্রতিনিধিদের দ্বারা ৩৫ জনের সম্পাদকমণ্ডলী ও ৩৪৫ জনের রাজ্য কাউন্সিল নির্বাচিত হয়। কাউন্সিল সদস্যরা ১৩৫ জনের ওয়ার্কিং কমিটি নির্বাচন করেন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেরালা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যসভার সাংসদ এলামারাম করিম। সম্মেলনকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তৃতা করেছেন তিনি। এআইটিইউসি, আইএনটিইউসি, এআইসিসিটিইউ, টিইউসিসি, ইউটিইউসি, এআইইউটিইউসি এবং ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশন ও প্রতিরক্ষা কর্মচারী সংগঠনের নেতৃত্ব সম্মেলনকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তৃতা করেছেন। উপস্থিত থেকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তৃতা করেছেন বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দও।
বাংলার মাটিতে শ্রমিকশ্রেণির আন্দোলনের এক বিশেষ বাঁকে অনুষ্ঠিত হলো এ সম্মেলন। আগামীর ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের ক্ষেত্রে নির্ণায়ক দিক নির্দেশ করেছে এ সম্মেলন। ভবিষ্যতের সংগ্রামে এ সম্মেলন তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব রাখবে।