৫৯ বর্ষ ৯ সংখ্যা / ৮ অক্টোবর, ২০২১ / ২১ আশ্বিন, ১৪২৮
সংসদ ও রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ হবে কি?
সুপ্রতীপ রায়
স্বাধীনতার ৭৫। সারা বছর আলোচনা চলবে, চর্চা হবে। আমাদের দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস, দেশপ্রেমিকদের বীরত্বের লড়াইয়ের কাহিনি আমরা স্মরণ করবো। স্বাধীনতা লাভের সময় আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম তা কতটা বাস্তবায়িত হলো? আমরা অর্থনৈতিক, সামাজিক ক্ষেত্রে কোন্ জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি? আমরা কি বৈষম্যমুক্ত হতে পারলাম? এ বিষয়গুলি সম্পর্কে গভীরভাবে চর্চা হওয়া দরকার। আমাদের দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য আছে ও এই বৈষম্য বাড়ছে। নারী-পুরুষ সমানাধিকার নিয়ে সংবিধানে বলা আছে আবার দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে অন্যান্য মন্ত্রীরা নারীদের সমানাধিকার নিয়ে লম্বা-চওড়া বক্তৃতাও করেন। কিন্তু আমাদের সংসদ ও বিধানসভাগুলিতে এখনও মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয়নি।
আইনসভায় মহিলাদের আসন সংরক্ষণের সঙ্গে সমতার প্রশ্ন যুক্ত। ১৯৯৫ সালে বেজিঙ সম্মেলন জীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের ব্যাপক অংশীদারিত্বের দাবি তুলেছিল। ওই সম্মেলনে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থাগুলিতে নারীদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যাতে রাখার কথা বলেছিল। বিগত বছরগুলিতে আমাদের দেশের সংসদ ও বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের জন্য আলোচনা হলেও, বিভিন্ন নির্বাচনে বড়ো রাজনৈতিক দলগুলি মহিলাদের আসন সংরক্ষণের জন্য প্রতিশ্রুতি দিলেও সংসদে মহিলাদের এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণের বিষয়টি আইনে পরিণত হয়নি।
১৯৭৪ সালে স্ট্যাটাস কমিটি তার রিপোর্টে ‘টু-ওয়ার্ডস ইক্যুয়ালিটি’তে আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। ১৯৮৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার নারীদের জন্য দলিল এনপিপি-তে ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। ১৯৯৩ সালে সংবিধানের ৭৩ এবং ৭৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে পঞ্চায়েত ও পৌরসভায় মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষিত হয়েছে। যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হবার পর তৎকালীন সরকার নীতিগতভাবে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিষয়টিতে স্বীকৃতিদানও করেছিল। সংসদে বিতর্ক হয়। কিন্তু মূল বিষয় আসন সংরক্ষণ নিয়ে আইন লাগু হয়নি।
গণতন্ত্র মানে কেবলমাত্র পাঁচ বছর অন্তর ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়া নয়। গণতন্ত্র তখনই সার্থক হতে পারে যখন রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে ব্যাপক মানুষকে যুক্ত করা সম্ভব হয়। স্বভাবতই মহিলাদের রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে ব্যাপকভাবে যুক্ত না করলে গণতন্ত্র কখনই সার্থক হতে পারে না।
আইনসভায় মহিলাদের আসন সংরক্ষণের বিষয়টি কখনই নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ নয়। আমরা নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ কেন চাই? এটা ঠিক স্বাধীন ভারতের সংবিধানে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের সর্বজনীন ভোটাধিকারের নীতি অনুযায়ী নারী-পুরুষ সমানভাবেই ভোট দিতে পারেন আবার নির্বাচনেও দাঁড়াতে পারেন। ১৯৫২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচনগুলিতে মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা নগন্য এবং সংসদ ও বিধানসভাগুলিতে নারীরা স্বাভাবিকভাবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রতিনিধিত্ব পায়নি।
আমাদের সমাজ শ্রেণিবিভক্ত। শ্রেণিবিভক্ত সমাজে নারীরা শোষিত হন। নারীরা শোষিত হন দু’ভাবে। একবার শোষিত হন মানুষ হিসাবে আর দ্বিতীয়বার শোষিত হন নারী হিসাবে। সামগ্রিক বিষয়টিকে শ্রেণি দৃষ্টির আলোকে দেখতে হবে। এটা কখনই ভাবা উচিত নয় সমাজ নারী ও পুরুষের মধ্যে ভাগ হয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত শ্রেণি রাজনীতি।
মহিলাদের ভোটাধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ লড়াই করতে হয়েছে। ফরাসি বিপ্লবের সময় ‘মানব অধিকার’ ঘোষণাপত্র রচিত হয়। ওই সময় মাদাম গুৎজ দাবি করেছিলেন, ‘নারীদের যদি ফাঁসিকাঠে যাবার অধিকার থাকে তবে পার্লামেন্টেই বা অধিকার থাকবে না কেন?’ ইংল্যান্ডে চার্টিস্ট আন্দোলনে বিভিন্ন দাবিগুলির সঙ্গে মহিলাদের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের দাবি যুক্ত হয়। ১৯১৯ সালে ইংল্যান্ডে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলাদের ভোটাধিকার স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯২০ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ১৯তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভোটাধিকার স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৪৪ সালে ফ্রান্সে কমিউনিস্ট পার্টির কোয়ালিশন সরকার নারীদের ভোটাধিকারের আইন পাশ করে। ১৯১৭ সালে সোভিয়েত সরকার নারীর সর্বজনীন ভোটাধিকারের স্বীকৃতি দেয়।
১৮৯৩ সালে ক্লারা জেটকিনের উদ্যোগে জার্মান সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি বিভিন্ন প্রদেশ সরকার ও জাতীয় সরকারের কাছে নারীদের ভোটাধিকারের দাবি জানায়। ১৯০৭ সালে জার্মানির স্টুটগার্টে প্রথম আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলনে নারীর ভোটাধিকারের দাবি জানানো হয়। ১৯০৮ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্কের দরজি শ্রমিক মহিলারা এই দাবিতে ধর্মঘট করেন। ১৯০৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের বিভিন্ন মহিলা শ্রমিকরা ভোটাধিকারের দাবিতে মিছিল করেন। ১৯০৮ সালে অল রাশিয়ান উইমেন কংগ্রেসের প্রথম সম্মেলনে নারীদের রাজনৈতিক অধিকার ও পৌর অধিকার নিয়ে আলোচনা হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে মহিলাদের ভোটাধিকারের আন্দোলনের ফলে বিভিন্ন দেশের নারীরা একের পর এক ভোটাধিকার অর্জন করে।
আমাদের দেশে মহিলাদের ভোটাধিকার অর্জন করতে হয়েছে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ১৯১৭-২৮ সালের মধ্যে নারীর ভোটাধিকার এবং আইনসভায় যোগদানের সম্পর্কের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। ১৯২৮-৩৭ সালের মধ্যে বেশিসংখ্যক মহিলার ভোটদানের দাবি ও মহিলা প্রতিনিধিত্বের উপর জোর দেওয়া হয়।
১৯১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর সরোজিনী নাইডুর নেতৃত্বে ১৮জন ভারতীয় ও ইয়োরোপীয় মহিলা প্রতিনিধির একটি দল মহিলাদের ভোটাধিকারের দাবিতে মন্টেগুর সঙ্গে দেখা করেন। ‘‘The women’s Indian Association’’ নারীর ভোটাধিকারের বিষয়টি জোরালোভাবে উত্থাপন করেছিল। বোম্বাইতে ‘সাউথ বরো কমিটি’তে ৮০০জন শিক্ষিতা মহিলার দাবিপত্র ও ভারতীয় মহিলাদের ভোটাধিকারের দাবিতে বক্তব্য উত্থাপন করা হয়েছিল।
১৯২০ সালে মাদ্রাজ প্রথম মহিলাদের ভোটাধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে বোম্বাই ভোটাধিকার দিয়েছিল। ১৯২৩ সালে রাজকোটে ও ১৯২৪ সালে কোচিন এবং ত্রিবাঙ্কুরে মহিলাদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়েছিল। ১৯২৫ সালে বাংলায় এই বিল পাশ করা হয়েছিল। ১৯২১ থেকে ১৯২৯ সালের মধ্যে ভারতের সমস্ত প্রাদেশিক আইনসভায় মহিলাদের ভোটাধিকার সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ হয়। ১৯৩৭ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে ৫৬ জন মহিলা আইনসভায় প্রবেশ করেন। যদিও পরাধীন ভারতবর্ষে নারী ও পুরুষের একই প্রকার ভোটাধিকারের দাবি পূরণ হয়নি।
স্বাধীনতার পর মহিলাদের সর্বজনীন ভোটাধিকার স্বীকৃতি হলেও আইনসভায় আসন সংরক্ষণ এখনও অধরা। লোকসভা-বিধানসভায় এক-তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের উদ্দেশে ৮১তম সংবিধান সংশোধন বিলের সমর্থনে ১৯৯৬ সাল থেকে আন্দোলন বিশেষ গতি লাভ করেছিল। এবিষয়ে বামপন্থীদের বিশেষ ভূমিকা ছিল। সাংসদ গীতা মুখার্জির মৃত্যুর পর লোকসভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছিল - নারীর আসন সংরক্ষণ বিল পাশ করাটাই হবে তাঁর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানোর শ্রেষ্ঠ উপায়। কিন্তু এরপর অনেকগুলি বছর পেরিয়ে গেলেও মহিলাদের আসন সংরক্ষণ নিয়ে আইন হয়নি।
আমাদের দেশে লিঙ্গ বৈষম্য কমানোর বিষয়ে ভারত সরকারের অনীহা বারেবারে প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৭৪ সালে ‘টুওয়ার্ডস ইক্যুয়ালিটি’ রিপোর্টের প্রধান সুপারিশ ছিল উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বশাসিত জাতীয় নারী কমিশন গঠনের। এটি কার্যকর করতে সময় লেগেছিল ১৬ বছর। যদিও ‘স্ট্যাটাস কমিটি’ যেভাবে জাতীয় মহিলা কমিশন গঠনের কথা বলেছিল সেভাবে হয়নি।
দীর্ঘ আন্দোলনের চাপে কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৯৩ সালে ৭৩ ও ৭৪তম সংবিধান সংশোধন করে পৌর ও পঞ্চায়েতে নারীদের জন্য ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করে। যদিও ১৯৯২ সালেই পশ্চিমবাংলায় বামফ্রন্ট সরকার মহিলাদের জন্য ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ করেছিল।
যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে সিলেক্ট কমিটির সুপারিশকে যুক্ত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী একটি বিল পেশ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে বিলটি পাশ করার পক্ষে থাকলেও তৎকালীন জনতা দলের কার্যকরী সভাপতি বিলটির তীব্র বিরোধিতা করে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছিলেন।
বিভিন্ন সময় নানা প্রশ্ন তুলে বিজেপি মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ বিষয়ে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যেমন বিজেপি দাবি করেছিল ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের মধ্যে ওবিসি পর্যায়ভুক্ত মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ২০০০ সালের ২১ ডিসেম্বর মহিলা আসন সংরক্ষণ বিল পুনরায় আলোচনার জন্য লোকসভায় পেশ করা হয়। বিজেপি চাইলে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন সহ বিলটি পাশ হতো। বাজপেয়ী সরকারের একজন মন্ত্রী প্রয়াত সুষমা স্বরাজ বিলের সমর্থক ছিলেন আর অন্য এক মন্ত্রী উমা ভারতী এর বিরোধী ছিলেন।
বাজপেয়ী আমলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি আর এক অদ্ভুত প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন সংবিধান সংশোধন না করে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন সংশোধন করে প্রত্যেক রেজিস্টার্ড পার্টিকে বাধ্য করা যেতে পারে দলীয় প্রার্থী তালিকায় ২০ বা ২৫ শতাংশ মহিলা প্রার্থী মনোনয়ন করতে। তাঁর এই প্রস্তাবের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবের মিল ছিল। তৃণমূল কংগ্রেস দলটিই স্ববিরোধিতায় পরিপূর্ণ। তৃণমূল মহিলা সংরক্ষণ বিলের পক্ষে ঘোষণা করলেও ২০০১ সালের মার্চ মাসে কলকাতা দূরদর্শনের ‘যুক্তি তক্কো’ অনুষ্ঠানে প্রয়াত কৃষ্ণা বসু নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবের পক্ষেই বক্তব্য রেখেছিলেন।
কংগ্রেস দল মহিলাদের দেশের প্রথম নির্বাচনেই ১৫ শতাংশ নির্বাচনী প্রার্থী করবে বলেছিল। কিন্তু কথা রাখেনি। বিভিন্ন বুর্জোয়া দলগুলির কমিটি, সাংগঠনিক দায়িত্ব প্রভৃতি ক্ষেত্রে মহিলা প্রতিনিধির সংখ্যা কম। মহিলাদের সংরক্ষণের প্রশ্নটি দেশের পুরুষ আধিপত্য বজায় রাখতে চাওয়া দক্ষিণপন্থী দলগুলির অপছন্দ।
নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে অনেক বক্তৃতা, নিবন্ধ, আলোচনা হয়। কিন্তু মহিলাদের আসন সংরক্ষণের বিষয়ে অনেকেই সোচ্চার হন। মহিলাদের আসন সংরক্ষণের সঙ্গে ক্ষমতায়নের প্রশ্ন যুক্ত। পঞ্চায়েতে ‘সংরক্ষণ’ মহিলাদের ক্ষমতায়নের প্রশ্নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। সংবিধানের ৭৩তম সংশোধনের পর কয়েক লক্ষ মহিলা পঞ্চায়েতের সঙ্গে যুক্ত হন। এই মহিলাদের একটা বড়ো অংশ ছিলেন প্রান্তিক, নিরক্ষর ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাবিহীন। অনেকেই সংশয় প্রকাশ করে বলেছিলেন, এইসব মহিলারা পুরুষদের দ্বারা পরিচালিত হবেন। বাস্তবে তা হয়নি।
২০১২ সালে পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রক ও একটি বেসরকারি সংস্থা দ্বারা গৃহীত একটি যৌথ সমীক্ষায় মেয়েদের সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছেঃ
‘‘...নির্বাচিত মহিলা প্রতিনিধিদের মধ্যে ৬০ শতাংশই স্বীকার করেন যে, পঞ্চায়েতে তাদের প্রতি কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়নি। আবার ৯৪ শতাংশ মহিলা জানান যে, পঞ্চায়েত বৈঠকে তাঁরা নির্দ্বিধায়, স্বাধীনভাবে নানা বিষয়ে আলোচনা করতে পেরেছেন, কোনোরকম বিধিনিষেধ ছাড়াই। ৬০-৬৪ শতাংশ মহিলা প্রতিনিধি এও জানান যে, বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে তাদের কথাবার্তা, আলাপ-আলোচনার সংখ্যা ক্রমশই বাড়তে থাকে। উপযুক্ত কাজের পরিবেশ এবং স্বাধীনভাবে কাজ করবার সুযোগ না পেলে কিন্তু কখনওই তা হতে পারত না। গ্রামসভায় বৈঠকেও সাধারণ মহিলা নাগরিকদের অংশগ্রহণ আগের তুলনায় বেড়েছে।...’’ (সূত্রঃ পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থা ও নারীর ক্ষমতায়ন; নূপুর তিওয়ারি - যোজনাঃ জুন, ২০১২, পৃষ্ঠা-৩৬)।
আমাদের দেশের মহিলারা ব্যাপক সমস্যার মধ্যে। যা দেশের অগ্রগতির প্রতিবন্ধক। মহিলাদের ক্ষমতায়ন ব্যতীত কোনো দেশের সুষম উন্নয়ন হতে পারে না। মহিলাদের ক্ষমতায়নের পথে অন্যতম ধাপ রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদান। আর সংসদ ও বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের আসন সংরক্ষণের মধ্যে দিয়েই মহিলাদের ক্ষমতা প্রদান করা সম্ভব।