E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৩৪ সংখ্যা / ৯ এপ্রিল, ২০২১ / ২৬ চৈত্র, ১৪২৭

রাফালে বরাতে সত্য লুকোতে চায় কেন্দ্র

তদন্তের দাবি জানালো পলিট ব্যুরো


ফরাসি তদন্ত সংস্থার রিপোর্টে ধরা পড়েছে ভারতে রাফালে বিক্রি করার সময় সাড়ে ৮ কোটি টাকারও বেশি দেওয়া হয়েছে এক মধ্যস্থতাকারীকে। কেন দেওয়া হয়েছে, তার যুক্তিগ্রাহ্য কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি রাফালের নির্মাতা সংস্থা দাসাউ। ৬ এপ্রিল, মঙ্গলবার, সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো এই ঘটনার তদন্ত দাবি করে বলেছে, ৩৬টি রাফালে বিমান বিক্রির সময়ে এক ‘মধ্যস্থতাকারীকে’ দশ লক্ষ ইউরো কমিশন দেওয়া হয়েছে বলে খবর ফরাসি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। দাসাউ সংস্থার ২০১৭ সালের অডিট রিপোর্ট থেকেই এই তথ্য পাওয়া গেছে। এই প্রশ্ন রাফালে বরাতে উৎকোচ ও অন্যান্য বেনিয়মের ঘটনাকে আবার সামনে নিয়ে এসেছে। মোদী সরকার কিছুতেই এই বরাতের তদন্ত করাতে রাজি নয়। এখানেই সন্দেহের কারণ আছে যে, সরকার কিছু আড়াল করতে চায়। সিএজি’র অডিট রিপোর্টে বেআইনি উৎকোচ প্রদানের অনুসন্ধানের কোনো সুযোগই ছিল না। কেন পূর্বেকার প্রক্রিয়া বাতিল করে ৩৬টি রাফালে বিমানের বরাত দেওয়া হলো, কেন তা বেশি দামে দেওয়া হলো এই সমগ্র ঘটনার স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

আইন অনুযায়ী, ভারতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনায় কোনো মধ্যস্থতাকারী থাকতে পারেন না। থাকলে তা দুর্নীতি বলেই অভিহিত হবে। উপরন্তু ভারত সরকার ও ফরাসি সরকারের মধ্যে চুক্তিতে এহেন দালাল ঢুকলেন কীভাবে, তাঁকে টাকাই বা দেওয়া হলো কেন - এই প্রশ্নের কোনো ন্যায়সঙ্গত উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠেছে, বেশি দামে বিমান কেনার চুক্তি করিয়েই কী এই টাকা পেয়েছেন ওই দালাল সংস্থা?

৬০ হাজার কোটি টাকার রাফালে বরাতের পুরো প্রক্রিয়াই অস্বচ্ছ। নতুন তথ্যে সামনে এসেছে বেআইনি উৎকোচের প্রসঙ্গ। এই টাকা কে পেলেন, কেন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। কেননা তিনিই এই বরাতের জন্য বাড়তি উদ্যোগ দেখিয়েছিলেন। রাফালে বিমান কেনার জন্য ভারত সরকারের কথাবার্তা চলছিল মোদী সরকারে আসার আগেই। কিন্তু মোদী সরকার আসার কিছুদিন পর থেকে সেই আলোচনার গতিপ্রকৃতি সম্পূর্ণ বদলে যায়। ২০১৫’র এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী মোদী ফ্রান্স সফরে গিয়ে হঠাৎই ঘোষণা করেন আগের আলোচনার বদলে ৩৬টি রাফালে বিমান কেনা হবে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মোদী সরকার ফরাসি সংস্থার কাছ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকায় ৩৬টি বিমান কেনার চুক্তি করে। সেই চুক্তি দু’দেশের সরকারের মধ্যে হয়েছে বলেও জানানো হয়। বিমানপিছু দর বহুগুণ বৃদ্ধি, ভারতে বিমানের একাংশ তৈরি করার আগেকার শর্ত বাতিল, ভারতীয় বেসরকারি সংস্থাকে ‘অফসেট’ মূল্য দেওয়ার পিছনে আসল কারণ কী - তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।