৫৮ বর্ষ ৩৪ সংখ্যা / ৯ এপ্রিল, ২০২১ / ২৬ চৈত্র, ১৪২৭
খড়দহে সিপিআই(এম) প্রার্থীর প্রচারে মানুষের ঢল
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে গত ১০ বছরে কোনো গণতান্ত্রিক কার্যকলাপ করবার মতো পরিস্থিতি ছিল না। প্রতিটি নির্বাচনে ভোট লুট হয়েছে। বেছে বেছে বামপন্থী সহ বিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রামে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং মারধর করা হয়েছে। এই বিধানসভা ক্ষেত্রের অন্তর্গত পঞ্চায়েত এলাকা বিলকান্দা ১ এবং ২ এবং বন্দিপুর ১ এবং ২ প্রত্যেকটিতেই তীব্র সন্ত্রাস ছিল। ধীরে ধীরে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই পরিস্থিতি র পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে।
তৃণমূলী সংস্কৃতি অনুযায়ী তোলাবাজি অবৈধ নির্মাণ এবং অত্যাচার ধারাবাহিকভাবে মানুষের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে। এই দশ বছরে এখানকার বিধায়ক তথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে পায়নি এলাকার মানুষ। তিনি এলাকায় এলেও থেকেছেন মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কখনো দুর্গাপূজা উদ্বোধনের ফিতে কেটেছেন। আবার কখনো সুলভ শৌচালয় উদ্বোধন করেছেন। নিয়ম করে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও এই বিধানসভার বেকার যুবকদের জন্য রুজিহীন মানুষের জন্য কিছুই করেননি তিনি বলে অভিযোগ।
এখানে ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে বহু কলকারখানা। তার মধ্যে রয়েছে হিন্দুস্তান হেভি কেমিক্যালস, ইসার ইন্ডিয়া, খড়দহ জুটমিল, ইনসান জুট মিল, ক্যাল সিল্ক প্রভৃতি। এখানকার প্রাক্তন বিধায়ক এবং বাম আমলে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তের সময়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে যতগুলো ছোট শিল্প গড়া হয়েছিল সেগুলি সব বন্ধ হয়ে গেছে এখন। তোলাবাজি আর অত্যাচারের জেরে এই কারখানাগুলির ৫০ শতাংশ তাদের ঝাঁপ ফেলতে বাধ্য হয়। অন্যগুলো বন্ধ হয় কেন্দ্র-রাজ্যের নীতিতে।
এই পরিস্থিতিতে সেখানকার কর্মহীন মানুষ এবং অটো-টোটো চালানো ভিড় জমিয়েছেন। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী সিপিআই(এম) এর দেবজ্যোতি দাস-এর কাছে এই বিষয়গুলো তুলে ধরছেন এলাকার মানুষ।
ছাত্র যুব আন্দোলনের অন্যতম নেতা কৃতি ছাত্র দেবজ্যোতির কাছে মানুষ বলছেন কিভাবে পঞ্চায়েতে পুকুর চুরি করেছে তৃণমূল। অস্ত্র আর পুলিশ নিয়ে কীভাবে গরিব মানুষের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কীভাবে অত্যাচার করা হয়েছে সংখ্যালঘু মানুষকেও।
খড়দহের মানুষের অভিজ্ঞতা হলো নির্বাচন এলেই রাস্তায় পিচ পড়ে এখানকার। যা ঘড়ি ধরে ছয় মাস টেঁকে। এখানে বা রাজ্যে কাজ নেই। এখানকার ভাল ছাত্ররা পাড়ি দিচ্ছেন অন্যত্র-বিদেশে বা ব্যাঙ্গালোরে। তাদের কথা শোনার কেউ নেই। তারা দেবজ্যোতিকে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে বলছেন অবস্থা পরিবর্তনের জন্য তারা তাকেই চান।
এলাকায় স্বাধীনভাবে প্রোমোটারি ব্যবসা করেন এমন মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ তৃণমূলের বিভিন্ন গ্রুপের এক একজন এক এক মেলায় যাচ্ছেন তোলা তুলতে তাদের কাছে। কাটমানি আর তোলাবাজির জ্বালায় তিতিবিরক্ত এলাকার ছোটো মাঝারি সব ধরনের ব্যবসায়ী।
দেবজ্যোতি দাসকে তারা বলছেন আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। বামফ্রন্ট আমলে এই উপদ্রব ছিল না। তাদের আশ্বস্ত করে দেবজ্যোতি বলছেন, আপনারা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন সেই প্রশ্নে আমরা যথাযথ ভূমিকা পালন করব। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা প্রশ্নে কোনো আপস করব না আমরা। এই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে এলাকার মানুষও পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বারবার।