৫৮ বর্ষ ৩৪ সংখ্যা / ৯ এপ্রিল, ২০২১ / ২৬ চৈত্র, ১৪২৭
নদীয়া জেলার ১৭টি আসনেই প্রচারে এগিয়ে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা
সুপ্রতীপ রায়
হরিণঘাটা কেন্দ্রে প্রচারে সংযুক্ত মোর্চার মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী অলকেশ দাস।
গত ১০ বছরে নদীয়া জেলা সব দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। স্থায়ী কোনো প্রকল্প রাজ্য সরকার গড়ে তোলেনি। যদিও ২০১১’র নির্বাচনে তৃণমূল জেলাবাসীকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সে প্রতিশ্রুতির কিছুই রক্ষা করেনি শাসকদল। বামফ্রন্ট আমলে কৃষিতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি এ জেলায় হয়েছিল। গ্রামের ছবি পুরো পালটে গিয়েছিল। উদ্বাস্তু অধ্যুষিত এলাকা নদীয়া। ৩৪ বছরে উদ্বাস্তু কলোনিগুলির ব্যাপক উন্নতি ঘটেছিল। নির্বাচনের পূর্বে মানুষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নদীয়া জেলার মোট আসন ১৭। ২০১৬’র নির্বাচনে বামফ্রন্ট ও জাতীয় কংগ্রেস মোট ৪টি আসনে জিতেছিল। বেশকিছু আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। সেবারের নির্বাচন হয়েছিল চড়া সন্ত্রাসের মধ্যে। ২০১৮’র পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট হয়নি। নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছিল তৃণমূল।
এ জেলার অন্যতম বিধানসভা কেন্দ্র কল্যাণী (তপঃ) বিধানসভা কেন্দ্র। ২০১১’র পর সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছে তৃণমূল। কল্যাণীর পাশেই কাঁচরাপাড়া। নব্য বিজেপি আর প্রাক্তন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের নেতৃত্বে ধারাবাহিক সন্ত্রাস চলেছে কল্যাণী বিধানসভা এলাকায়। এই বিধানসভা এলাকায় যেমন কল্যাণী শিল্পাঞ্চল আছে তেমনি কৃষি অধ্যুষিত এলাকাও আছে। আছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কল্যাণী বিধানসভার মধ্যে ২টি পৌরসভা ও সাতটি পঞ্চায়েত আছে। গত ১০ বছরে গয়েশপুর পৌরসভা, কাঁচরাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত, সগুনা গ্রাম পঞ্চায়েত ও মদনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সিপিআই(এম) প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি নিতে পারেনি। গত ছয় মাসে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। মানুষের ভয় ভাঙছে। তৃণমূল যে পার্টি অফিসগুলি দখল করেছিল তা উদ্ধার করেছেন পার্টি কর্মীরা।
কল্যাণী (তপঃ) বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সবুজ দাস। সবুজ দাস বর্তমানে এসএফআই নদীয়া জেলা কমিটির সভাপতি। উদ্যমী, সমাজসেবী, সাহসী। প্রার্থীকে ঘিরে এলাকাবাসীর যথেষ্ট উৎসাহ আছে। নির্বাচনী প্রচারে ভালো সাড়া পাচ্ছেন সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী। বিজেপি এবং তৃণমূল মানুষের কোনো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারছে না। গত দশ বছরে কল্যাণী শিল্পাঞ্চল শ্মশানে পরিণত হয়েছে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে নেমে এসেছে নৈরাজ্য। তোলাবাজদের মৃগয়াক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এই বিধানসভা কেন্দ্রে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। প্রতিদিন নতুন মানুষ যুক্ত হচ্ছেন সিপিআই(এম)’র প্রচারে।
হরিণঘাটা (তপঃ) বিধানসভা কেন্দ্রে এবারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিপিআই(এম) প্রার্থী অলকেশ দাস। জনপ্রিয়, লড়াকু ইমেজ প্রার্থীর প্লাস পয়েন্ট। প্রার্থীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আছে। বিরোধী বিজেপি এবং তৃণমূল প্রার্থীদের প্রতি সাধারণ মানুষের ভরসা বা আস্থা কোনটিই নেই। সিপিআই(এম)’র প্রার্থীকে এক ডাকেই এলাকার মানুষ চেনেন।
মোট ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হরিনঘাটা বিধানসভা কেন্দ্র। মূলত কৃষি অধ্যুষিত এলাকা। প্রচুর তফশিলি ও সংখ্যালঘু মানুষ এই বিধানসভা কেন্দ্রে বসবাস করেন। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত হরিনঘাটা বিধানসভা এলাকায়। বাংলাদেশ সীমানা লাগোয়া এই বিধানসভা কেন্দ্রটি। গত ১০ বছরে নৈরাজ্য নেমে এসেছে। ২০১৩ ও ২০১৮’র পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০১৫’র হরিনঘাটা পৌরসভা নির্বাচনে মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। লুটেরাদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। হরিণঘাটা।
বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়েই বিভাজনের রাজনীতি করছে। নির্বাচনী প্রচারেও সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াচ্ছে উভয় দল। এবারের নির্বাচনী প্রচারে সংযুক্ত মোর্চা বিপুল সাড়া পাচ্ছে। নগরউখরা বাজারে প্রচারের ফাঁকেই কথা হলো প্রার্থী অলকেশ দাসের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘‘হরিণঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার জয় নিশ্চিত’’। বাস্তবে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে গোটা বিধানসভা এলাকা জুড়ে।
চাকদহ বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নারায়ণ দাশগুপ্ত। তিনি চাকদহ কলেজের আংশিক সময়ের অধ্যাপক। ছাত্র-যুব সংগঠনের প্রাক্তন নেতা নারায়ণ দাশগুপ্ত ভাল বাচিক শিল্পী। খুবই জনপ্রিয় এই শিক্ষক এলাকায় ‘এনডি’ স্যার নামে পরিচিত।
২০১১ সাল থেকেই চাকদহ বিধানসভা কেন্দ্র সন্ত্রাস কবলিত। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে তৃণমূল। চাকদহ বিধানসভা এলাকার মধ্যে প্রতিটি পার্টি অফিস বারংবার আক্রান্ত হয়েছে তৃণমূল গুন্ডাদের দ্বারা। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিআই(এম)’র এজেন্ট হওয়ার জন্য তৃণমূল প্রার্থী নারায়ণ দাশগুপ্তকে আক্রমণ করেছিল। রক্তাক্ত অবস্থাতেই তিনি পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নদীয়া জেলায় যে এলাকাগুলিতে ধারাবাহিক সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল তারমধ্যে অন্যতম চাকদহ বিধানসভা কেন্দ্র।
নির্বাচনী প্রচারে সিপিআই(এম) ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা সিপিআই(এম)’র প্রচারে মুখ্য ভূমিকা নিচ্ছেন। অধ্যাপক-শিক্ষক ও প্রবীণ মানুষেরা সিপিআই(এম)’র পক্ষে প্রচার করছেন। ২০১১’র পর কোনো নির্বাচনে চাকদহ গ্রাম ও শহরের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। এবার মানুষ নিজের ভোট নিজে দেওয়ার শপথ নিয়েছেন। বিরোধী বিজেপি এবং তৃণমূল অঢেল টাকা খরচ করছে। এই আসনে বিজেপি’র হয়ে প্রার্থী বঙ্কিম ঘোষ - যিনি সিপিআই(এম) নেতা ছিলেন। তৃণমূলের প্রার্থী শঙ্কর সিং-এর পুত্র। উভয় প্রার্থীই দলবদলু হিসাবে পরিচিত। চাকদহ বিধানসভা এলাকায় আওয়াজ উঠেছে, ‘‘দলবদলুদের ঠাঁই নেই’’। বিজেপি এই কেন্দ্রে এখনও প্রচারে নামতে পারেনি।
রানাঘাট দক্ষিণ (তপঃ) বিধানসভা কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রমা বিশ্বাস। ২০১৬ সালের নির্বাচনে রমা বিশ্বাস এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পাঁচ বছর বিধায়ক হিসাবে সবসময় মানুষের পাশে রমা বিশ্বাস ছিলেন। বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের অর্থে প্রচুর কাজ করেছেন। লকডাউনের সময় রমা বিশ্বাসের পরিষেবা বিরোধীরাও স্বীকার করছেন। এই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পৌরসভা আছে। রানাঘাট দক্ষিণেও তৃণমূল গত ১০ বছর ধারাবাহিক সন্ত্রাস চালিয়েছে। মানুষ এর জবাব দিতে প্রস্তুত।
রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজয়েন্দু বিশ্বাস। ২০১৬ সালে এই কেন্দ্রটিতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করেছিলেন শঙ্কর সিংহ। এক বছরের মাথায় তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। শঙ্কর সিংহ এবছর তৃণমূলের প্রার্থী। বিজেপি’র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পার্থসারথী চ্যাটার্জি। তিনি ২০১১ সালে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন। ২০১৬ সালেও তিনি এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন।
বিজয়েন্দু বিশ্বাস বর্তমানে পায়রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। মোট সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও তিনটি পৌরসভা এই বিধানসভা কেন্দ্রে আছে। প্রচুর উদ্বাস্তু মানুষের বাস। অনৈতিক রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রচার করছে সংযুক্ত মোর্চা।
রানাঘাট উত্তর-পূর্ব (তপঃ) কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দীনেশচন্দ্র বিশ্বাস। এলাকার পরিচিত মুখ দীনেশ বিশ্বাস। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আর লড়াকু ইমেজের প্রার্থী। প্রার্থী ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বামফ্রন্টের কর্মীরা ময়দানে নেমে পড়েছেন। এই বিধানসভা কেন্দ্রটি সন্ত্রাস কবলিত।
২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিক সন্ত্রাস চলছে। ২০১১ সালে দুর্গাপূজার শোভাযাত্রা চলাকালীন বগুলাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন গৃহবধূ রাজেশ্বরী মল্লিক। ২০১৬’র নির্বাচনেও তৃণমূল বুথের পর বুথ দখল করেছিল। এই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বগুলাতেই ২০১৭ সালে ভরসন্ধ্যাতে দলীয় অফিসেই খুন হন হাঁসখালি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ও বগুলা ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দুলাল বিশ্বাস। এই খুনের কিনারা এখনও পর্যন্ত হয়নি। বাংলাদেশ সীমানা লাগোয়া এই বিধানসভা কেন্দ্র। তৃণমূলের গুন্ডারাই এখন বিজেপি’র মুখ। ফলে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যে পরিমাণ ভোট পেয়েছিল এবার তা পাবে না। সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশে ভোট করানোই সংযুক্ত মোর্চার কর্মীদের কাছে চ্যালেঞ্জ।
কৃষ্ণগঞ্জ (তপঃ) বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঝুনু বৈদ্য। ২৯ বছর বয়সী ঝুনু বৈদ্য ডিওয়াইএফআই নেত্রী। মোট ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে এই বিধানসভা কেন্দ্রটি। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী লাগোয়া এই বিধানসভা অঞ্চলটি।
কৃষ্ণগঞ্জ (তপঃ) বিধানসভা এলাকায় ২০০৯ সাল থেকেই সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছে তৃণমূল। ২০১৪ সালে জয়ঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘুঘরাগাছি গ্রামে খেতমজুর রমনী অপর্ণা বাগকে গুলি করে হত্যা করে তৃণমূলীরা। ২০১৯ সালে বাদকুল্লায় দিনমজুর সিপিআই(এম) নেতা বাবুলাল বিশ্বাসকে খুন করে তৃণমূল। তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বে প্রকাশ্যে খুন হন এই কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। সিপিআই(এম)’র একাধিক নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা থেকে জেল সবই হয়েছে। তৃণমূলী সমাজবিরোধীরাই এখন বিজেপি’র সামনের সারিতে। তৃণমূল এবং বিজেপি’র প্রচারে কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নেই। এই কেন্দ্রে সিপিআই(এম)’র পক্ষে নতুন নতুন মানুষ আসছেন।
কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রটির মধ্যে কৃষ্ণনগর শহর আছে। সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিলভি সাহা। বিজেপি’র প্রার্থী মুকুল রায়। প্রচারে বিপুল অর্থ ব্যয় করছেন। ইতিমধ্যেই প্রচারের ঝড় তুলেছেন সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী বছর চল্লিশের শিক্ষিকা প্রার্থী। মোট পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পৌরসভা এই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে।
কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সুমিত বিশ্বাস। এলাকায় পরিচিত মুখ। এই কেন্দ্রে মোট ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত। এই বিধানসভা কেন্দ্রে ৩৪ শতাংশ সংখ্যালঘু মুসলিম ও ১ শতাংশ সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। ৫৮টি বুথ সন্ত্রাস কবলিত। সংযুক্ত মোর্চা ইতিমধ্যেই এই এলাকায় মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রটিতে সিপিআই(এম)’র জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
নবদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হিসাবে সিপিআই(এম)’র তরুণ প্রার্থী স্বর্ণেন্দু সিংহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পৌরসভা এই কেন্দ্রটিতে আছে। পেশায় উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবারে সিপিআই(এম) প্রার্থী। প্রার্থীকে ঘিরে মানুষের আগ্রহ ও উৎসাহ লক্ষণীয়।
শান্তিপুর ও কালীগঞ্জ আসন দুটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে জাতীয় কংগ্রেস। শান্তিপুরে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী ঋজু ঘোষাল ও কালীগঞ্জে আবুল কাশেম মণ্ডল। শান্তিপুর বিধানসভায় ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ১টি পৌরসভা। এই আসনে বিজেপি’র প্রার্থী রানাঘাটের বিজেপি’র সাংসদ। বিজেপি’র মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব তীব্র। দু’টি আসনেই সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা প্রচারে এগিয়ে আছেন। নাকাশীপাড়া আসনে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শুক্লা সাহা চক্রবর্তী। মোট ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এই বিধানসভা কেন্দ্রে। বিজেপি এবং তৃণমূলের থেকে প্রচারে অনেক এগিয়ে সিপিআই(এম)।
পলাশীপাড়া আসনে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এসএম সাদি। যিনি ২০১১ সালে এই আসনে জিতেছিলেন। ১৩টি পঞ্চায়েত এই বিধানসভা কেন্দ্রে। প্রার্থী ইতিমধ্যে দু’দফা প্রচার সেরে ফেলেছেন। বিজেপি’র মধ্যে তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্ব। তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সুবোধ বিশ্বাস। পেশায় স্কুল শিক্ষক, জেলা পরিষদ সদস্যও ছিলেন। ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এই বিধানসভায়। তেহট্ট ও পলাশীপাড়া দু’টি কেন্দ্রেই সিপিআই(এম)’র জয় অনেকটাই নিশ্চিত।
করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রভাস মজুমদার। ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এই বিধানসভার মধ্যে। চাপড়া বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের অন্তদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে।
সব মিলিয়ে নদীয়া জেলার ১৭টি আসনেই সংযুক্ত মোর্চা প্রচারে অনেক এগিয়ে। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সুমিত দে বলেছেন, ‘‘প্রতিদিন মানুষের সমর্থন বাড়ছে সংযুক্ত মোর্চার পক্ষে। ভয় ভাঙছে, বিভ্রান্তি কাটছে’’।