E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৫ সংখ্যা / ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ / ২৩ ভাদ্র, ১৪২৯

তৃণমূলের আরএসএস প্রেম কি আকস্মিক?

সুপ্রতীপ রায়


আরএসএস সম্পর্কে অতি সম্প্রতি মমতা ব্যানার্জি যে সার্টিফিকেট দিয়েছেন তাতে কি খুব অবাক হওয়ার কিছু আছে? উনি কি এই প্রথম আরএসএস সম্পর্কে প্রশংসা করলেন? ৩১ আগস্ট নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আরএসএস এত খারাপ ছিল না। এখনও ওঁদের মধ্যে কিছু ভদ্রলোক আছে। যাঁরা বিজেপি-কে এইভাবে সাপোর্ট করে না। তারাও একদিন বাধ ভাঙবে”। তিনি আরও বলেছেন, “আরএসএস এত খারাপ বলে আমি বিশ্বাসই করি না”।

গত মে মাসে আমাদের রাজ্যে এসেছিলেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। মোহন ভাগবতের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তা দেখবার নির্দেশ তিনি প্রশাসনকে দিয়েছিলেন। কেশিয়ারি থানার ওসি-কে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, “আপনাদের এখানে আরএসএস চিফ আসছেন। প্রশাসনের তরফে ওঁকে ফল-মিষ্টি পাঠাবেন। যাতে বুঝতে পারেন, আমরা সবাইকে স্বাগত জানাই। ভালো করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবেন”।

কিন্তু মমতা ব্যানার্জির সংঘ প্রেম কি নতুন? এক সময় আরএসএস-কে তিনি প্রকৃত দেশপ্রেমিক সংগঠন বলেছিলেন। উত্তরে আরএসএস তাঁকে ‘সাক্ষাৎ দুর্গা’ বলেছিল। আরএসএস-র সঙ্গে মমতা ব্যানার্জির মধুর সম্পর্ক বিষয়ে বামপন্থীদের মূল্যায়ন বারংবার মিলে যাচ্ছে।

আজ এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার তৃণমূল দলটি আসলে ক্ষমতালোভী, দুর্নীতিগ্রস্ত । এই দল আইনের শাসন, সংবিধান, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মানে না। প্রতারণা, দুর্নীতি, ঘুষ, তোলাবাজি, চমক, ধমক তৃণমূলের অঙ্গের ভূষণ। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ধর্ম, জাত-পাত কে ব্যবহার করে। আপাদমস্তক কর্পোরেটপন্থী একটি দল তৃণমূল। স্বভাবতই তৃণমূল আরএসএস-র স্বাভাবিক মিত্র।

১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তৃণমূলের জন্মের পিছনে আরএসএস-র অবদান ছিল। জন্মের পর তৃণমূল হাঁটতে শিখেছে বিজেপি’র হাত ধরে। পশ্চিমবাংলা থেকে বামপন্থীদের হটাতে তৃণমূল আরএসএস-র সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতায় থাকতে গেলে আরএসএস-র সহযোগিতা প্রয়োজন। সংঘকে খুশি না রাখা গেলে মমতা ব্যানার্জি বিপদে পড়বেন।

মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে আরএসএস-র সম্পর্ক অনেক পুরনো। ১৯৯২ সালের ৪ ডিসেম্বর বামফ্রন্ট শহিদ মিনারে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একটি সমাবেশ করে। একই দিনে মমতা ব্যানার্জি সিধো-কানহু ডহরে একটি সভা করেন। তিনি সেই সভায় বলেছিলেন, “সিপিএম ষড়যন্ত্র করছে”। ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর কলকাতায় সাংবাদিকদের কাছে বলেছিলেন, “বিজেপি একটি গণতান্ত্রিক দল এবং জনসাধারণই তাদের নির্বাচিত করেছে। সেই বিজেপি-কে কীভাবে অস্পৃশ্য বলবো।” তিনি আরও বলেছিলেন, “বিজেপি অচ্ছুত নয়”।

১৯৯৮ সালে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিজেপি’র সঙ্গী হয়েছিল। এরপর পঞ্চায়েত নির্বাচন, কর্পোরেশন নির্বাচনেও তৃণমূল বিজেপি’র হাত ধরেছিল। ১৯৯৮ সালের ১৯ মার্চ বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী হন। তৃণমূল তখন বিজেপি’র জোটসঙ্গী ছিল। একথা স্মরণীয় কেন্দ্রে বাজপেয়ী গঠিত হওয়ার পরই তৃণমূল মেদিনীপুরের কেশপুর সহ অন্যান্য অঞ্চলে চড়া সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছিল। ২০১৮ সালের ‘জাগো বাংলা’র শারদ সংখ্যাতে মমতা ব্যানার্জি লিখেছিলেন, “অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রথম যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখন তাঁর সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য আমাদের তৃণমূল কংগ্রেসের একটা ভূমিকা ছিল”।

২০০০ সালের ৩০ মে আমাদের রাজ্যে ৭৯টি পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল-বিজেপি’র জোট হয়েছিল। ২৫ জুন কলকাতা কর্পোরেশন নির্বাচন হয়। এখানেও তৃণমূল-বিজেপি’র জোট হয়েছিল। তৃণমূল-বিজেপি জোট পাঁচ বছর কলকাতা কর্পোরেশন পরিচালনা করেছিল। ওই বছরের ৫ জুন পাঁশকুড়া লোকসভার উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি’র মদতে তৃণমূল বেপরোয়া সন্ত্রাস তৈরি করে উপনির্বাচনে জয়ী হয়।

গুজরাটের গণহত্যার কোনো প্রতিবাদ মমতা ব্যানার্জি করেননি। ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায় সবরমতী এক্সপ্রেসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হিন্দুত্ববাদীরা মুসলিমদের হত্যা করতে থাকে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। গুজরাট গণহত্যা সম্পর্কে মমতা ব্যানার্জির মন্তব্য ছিল, ‘‘এটা বিজেপি’র অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’’ ২০০২ সালের ১মে গুজরাট গণহত্যা নিয়ে লোকসভায় বিরোধীদের আনা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে তৃণমূল বিজেপি’র পক্ষে ছিল। ২০০২ সালে অনুষ্ঠিত গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়। সেই নির্বাচনী প্রচার ছিল সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষে পরিপূর্ণ। ২২ ডিসেম্বর মোদি পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী হন। মমতা ব্যানার্জি ফুলের তোড়া পাঠিয়ে মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।

১৫ সেপ্টেম্বর ’০৩ দিল্লিতে আরএসএস মুখপত্র ‘পাঞ্চজন্য’র সম্পাদক তরুণ বিজয়ের বই ‘কমিউনিস্ট টেররিজম’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, “কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমি আপনাদের পাশে আছি। যদি আপনারা আমাকে এক শতাংশ সাহায্য করেন, আমরা কমিউনিস্টদের সরাতে পারব”। তিনি ওই সভাতে উপস্থিত আরএসএস নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “...আপনারা সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। আমি জানি আপনারা দেশকে কতটা ভালোবাসেন...”। ওই সভাতে উপস্থিত বিজেপি সাংসদ বলবীর পুঞ্জ বলেন, “আমাদের প্রিয় মমতা দিদি সাক্ষাৎ দুর্গা”।

১৯৯১ সালের পর থেকেই আমাদের দেশের শাসকশ্রেণি নয়া উদারবাদী নীতি বাস্তবায়িত করতে থাকে। বাজপেয়ী সরকারের আমলে নয়া আর্থিক নীতি রূপায়িত হয়েছে। আরএসএস নয়া উদারবাদী নীতির উগ্র সমর্থক। নয়া আর্থিক নীতির পথেই ১৯৯৯ সালে টেলিকম পলিসি ঘোষিত হয়, ২০০৩ সালে বিদ্যুৎ আইন আনা হয়েছিল, ১৯৯৯ সালে পেটেন্ট আইনের সংশোধন করা হয়েছিল, ২০০০ সালে প্রথম ঘোষিত হয়েছিল ‘সেজ’, ১৯৯৯ সালে বিমা ব্যবসার ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে বিমা সংশোধনী আইন সংসদে পাশ করানো হয়েছিল, ১৯৯৯ সালে চালু হয়েছিল ‘বিলগ্নিকরণ দপ্তর’, ২০০৩ সালে আনা হয়েছিল পেনশন ফান্ড রেগুলেটরি অ্যান্ড অথরিটি বিল। বাজপেয়ী আমলের সমস্ত আর্থিক নীতির সমর্থক ছিল তৃণমূল।

২০০৪-র লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূল বিজেপি’র সঙ্গী ছিল। বলা বাহুল্য, ২০০৪ সালে বিজেপি’র নির্বাচনী ইস্তাহারে রামমন্দির, গোহত্যা বন্ধ প্রভৃতি বিষয়গুলি লিপিবদ্ধ ছিল। ওই ইস্তাহার প্রকাশিত হওয়ার আগেই তাতে সম্মতি জানিয়ে মমতা ব্যানার্জি সই করেছিলেন।

বামফ্রন্ট সরকারের শিল্পনীতির বিরোধিতা করে ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ধর্মতলায় মঞ্চ বেঁধে অনশন শুরু করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। ২৫ ডিসেম্বর মমতার অনশন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা রাজনাথ সিং। ২০০৭ সালে বেশ কয়েকবার নন্দীগ্রামে বেজেপি নেতারা গিয়ে মমতার সমর্থনে বক্তব্য রেখেছিলেন।

২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি মমতার সুরেই বামফ্রন্ট সরকার বিরোধী কুৎসা সংগঠিত করেছিল। ১৩ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হয়েছিল। মোদির মমতার প্রতি আহ্বান ছিল - “প্রথম রাতেই বিড়াল মেরে দিন”। ২০১১-র ২৩ মে ‘স্বস্তিকা’র সম্পাদকীয়র শিরোনাম ছিলঃ “দুঃশাসনের অবসান”।

২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বিজেপি’র ব্রিগেড সমাবেশে মোদি বলেছিলেন, “...মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের জন্য উন্নতি করবেন। কেন্দ্র থেকে আমি এই রাজ্যের উন্নতি করব। আমাদের মাথার উপর প্রণবদা আছেন, উনিও করবেন”। ২০১৪ সালের ১২ জুন লোকসভায় নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, “৩৫ বছরের বাম অপশাসন থেকে রাজ্যকে বার করে আনতে কী পরিশ্রমই না করেছেন মমতাজি”!

২০১৬-র নির্বাচনে বিজেপি তৃণমূলকে সহায়তা করেছিল। ২০১৫-র ৭ জুলাই অমিত শাহ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “২০১৬ নয়, এরাজ্যে বিজেপি’র লক্ষ্য ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচন”। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ী হবার পর সংঘ-মুখপত্রের প্রচ্ছদ নিবন্ধের শিরোনাম ছিল - “কমিউনিজমের শোকযাত্রায় শাপমুক্তি বাংলার’’। ওই নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর কলকাতায় উমাভারতী বলেছিলেন - ‘‘২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ১০০টা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীরা বিরোধী ভোট কেটে তৃণমূলকে সহযোগিতা করেছে।’’

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন, ২০১৫-র ২ ডিসেম্বর আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে এমন কিছু করতে পারেন না যাতে কমিউনিস্টদের সুবিধা হয়। তৃণমূলের সৌজন্যে ২০১১ সালের পর বাংলায় আরএসএস-র বিস্তার ঘটেছে। উভয় বঙ্গেই আরএসএস-র বিস্তার ঘটেছে। উত্তরবঙ্গে এবং দক্ষিণবঙ্গে আরএসএস-র শাখা বেড়েছে। বজরং দল, সিংহবাহিনী, দুর্গাবাহিনী, রাষ্ট্রসেবিকা সমিতি প্রভৃতি সংগঠনের শক্তি বেড়েছে। হিন্দুত্ববাদীরা তৃণমূলের আমলে তাদের সাংগঠনিক শক্তি বাড়িয়েছে। রামনবমী, হনুমানজয়ন্তী-র মতো অনুষ্ঠানগুলিতে বিজেপি’র সঙ্গে তৃণমূলকে দেখা গেছে। তৃণমূল পুরোহিত সম্মেলন যেমন করেছে, তেমনি দক্ষিণেশ্বরে পুরোহিত সভাতেও তৃণমূলের এক প্রাক্তন মন্ত্রী উপস্থিত থেকেছেন। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনও পালিত হয়েছে।

আরএসএস-র রাজনৈতিক মুখ বিজেপি। বিজেপি এবং তৃণমূল দুটি দলই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত। বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি, মেহুল চোকসিদের আড়াল করেছে বিজেপি। কর্পোরেটদের লুট করা অর্থের ভাগ কারা পায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিজেপি আমলে যেমন অপরাধমূলক অর্থনীতি পরিচালিত হচ্ছে, তেমনি আমাদের রাজ্যেও তৃণমূলের নেতৃত্বে আর্থিক দুর্নীতির অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। বৃহৎ কর্পোরেট আর রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজসে পরিচালিত হচ্ছে অপরাধমূলক অর্থনীতি। যে অর্থনীতিকে বলা হচ্ছে ধান্দার ধনতন্ত্র। বিজেপি আর তৃণমূল উভয় দলই ধান্দার ধনতন্ত্রের অংশীদার।

দুর্নীতির প্রশ্নে বিজেপি এবং তৃণমূল উভয় দলই একই নৌকার যাত্রী। এই কারণেই সিবিআই-র তদন্তে ধীরগতি। আর্থিক লুটকে আড়াল করতে সাম্প্রদায়িকতা একটি অস্ত্র। যা বিজেপি বাস্তবায়িত করে দেখাচ্ছে। তৃণমূলও এ রাজ্যে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করে চলেছে।

আরএসএস সম্পর্কে মমতার দরাজ সার্টিফিকেট বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। ধান্দার ধনতন্ত্রকে উৎসাহ দেয় চরম প্রতিক্রিয়াশীল ও বিভেদকামী রাজনৈতিক দলগুলি। এই কারণেই মমতার আরএসএস প্রেম আকস্মিক বিষয় নয়। এই লুটের অর্থনীতিকে বহাল রাখতে গণতান্ত্রিক অধিকারও হরণ করা হয়।

“কিন্তু সাম্প্রদায়িক প্রতিপক্ষকে প্রধান শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করে অর্থনৈতিক অপরাধীদের এবং তাদের সহযোগী রাজনৈতিক অপরাধীদের আড়াল করার প্রচেষ্টা দীর্ঘদিন সমান কার্যকরী থাকতে পারেনা। কাজেই সর্বশেষ ‘গায়ের জোর’ প্রয়োগ হবে। এ গায়ের জোরের রাজনৈতিক নাম স্বৈরাচারী প্রবণতা। ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের জন্ম যদি ফারদিনান্দ মার্কোসের ফিলিপিন্স হয় তার একটিই হাতিয়ার ছিল তা ছিল রাজনৈতিক স্বৈরাচার। কোনো প্রতিবাদই অনুমোদিত ছিল না। মানুষের মত স্বাধীনভাবে প্রকাশিত হবার মতো কোনো গণতান্ত্রিক কাঠামো সেখানে ছিল না। শেষমেশ ক্রোনি ক্যাপিটালিজম- এর শেষ হাতিয়ার খুল্লামখুল্লা স্বৈরাচার। আমাদের দেশেও বিষয়টা তাই। উদাহরণ হিসাবে দুটি রাজ্যের কথা বলা যায়। পশ্চিমবাংলা এবং ত্রিপুরা। প্রথম রাজ্য তৃণমূল শাসিত, দ্বিতীয় রাজ্যটি বিজেপি শাসিত। এই দুটি দল তথাকথিত ‘পরস্পর বিরোধী’। পশ্চিমবাংলার মানুষ ভোটের বাক্সে মত দিতে পারে না, গোটা তৃণমূল রাজত্বেই এই সুযোগ তারা পায়নি। গণতান্ত্রিক অধিকারের ন্যূনতম প্রকাশ নেই ত্রিপুরায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ আসনে বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। দেশের ইতিহাসে স্বৈরাচারের সবচেয়ে কুৎসিত প্রকাশ হয়েছে ত্রিপুরায়। তৃণমূল আর বিজেপি’র মৌখিক সম্পর্ক যাই হোক ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের স্বার্থে এরা যে এক, এটা নতুন করে প্রমাণ করার দরকার নেই”। (পুস্তিকাঃ বিজেপি-তৃণমূল রাজনৈতিক সম্পর্কের আসল রূপ - সিপিআই(এম), পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি, ২৫ জানুয়ারি ’১৯, পৃঃ ৯-১০)