৫৯ বর্ষ ১৭ সংখ্যা / ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ / ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮
নির্মাণ শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টা দেশব্যাপী ধর্মঘটে উল্লেখযোগ্য সাড়া
ধর্মঘটের দিন কাশ্মীরে নির্মাণ শ্রমিকরা।
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সারা ভারত নির্মাণ শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে গত ২ ও ৩ ডিসেম্বর নির্মাণ শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে দেশের ১৫ টি রাজ্যে নির্মাণকাজ প্রায় স্তব্ধ হলো। দেশের অন্যান্য রাজ্যেও এই ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব পড়েছে। দু’দিনের ধর্মঘটে সারা দেশে ১৩ লক্ষেরও বেশি নির্মাণ শ্রমিক যোগ দিয়ছেন বলে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই ধর্মঘট সফল করার জন্য নির্মাণ শ্রমিকদের অভিনন্দন জানিয়েছে সারা ভারত নির্মাণ শ্রমিক ফেডারেশন। অভিনন্দন জানিয়েছেন সিআইটিইউ’র সাধারণ সম্পাদক তপন সেন। প্রসঙ্গত, সারা ভারত নির্মাণ শ্রমিক ফেডারেশন নির্মাণ শ্রমিকদের অন্যতম বৃহৎ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন এবং সিআইটিইউ অনুমোদিত।
জম্মু ও কাশ্মীরের ৫টি, হিমাচল প্রদেশের ৪টি এবং মহারাষ্ট্রের ৩টি বৃহৎ নির্মাণ প্রকল্পে কর্মরত সমস্ত নির্মাণ শ্রমিক ধর্মঘটে অংশ নেওয়ায় ৪৮ ঘণ্টা কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। দেশের ১৭টি রাজ্যের ২৩৯ জেলায় প্রায় ১০৫০টি স্থানে ধর্মঘটের দু'দিনে নির্মাণ শ্রমিকরা অবস্থান-বিক্ষোভ সংঘটিত করেছেন। এই অবস্থান-বিক্ষোভগুলি হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শ্রম দপ্তরের সামনে। নির্মাণ শ্রমিকরা দাবিসনদ সংবলিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম কমিশনারের দপ্তরে, পঞ্চায়েত ও বিডিও দপ্তরে।
ধর্মঘটে সারা ভারত নির্মাণ শ্রমিক ফেডারেশনের উত্থাপিত দাবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলি হলো -
১) কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্মাণ শ্রমিকদের পেনশন বাবদ ব্যয়তে সহায়তা প্রদানের মধ্য দিয়ে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য গঠিত রাজ্য কল্যাণ বোর্ডকে শক্তিশালী করতে হবে।
২) ইন্টার-স্টেট মাইগ্রান্ট ওয়ার্কমেন (রেগুলেশন অব এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড কনডিশনস অব সার্ভিস) অ্যাক্ট, ১৯৭৯ ; দ্য বিল্ডিং অ্যান্ড আদার কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার্স (রেগুলেশন অব এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড কনডিশনস অব সার্ভিস) অ্যাক্ট, ১৯৯৬ এবং সেস অ্যাক্ট ১৯৯৮-কে রক্ষা করতে হবে। প্রসঙ্গত, এই তিনটি আইনকে বাতিল করে সংশ্লিষ্ট সমস্ত বিষয়কে কেন্দ্রীয় সরকার অকুপেশনাল সেফটি, হেল্থ অ্যান্ড ওয়ার্কিং কন্ডিশনস কোড, ২০২০-তে মিশিয়ে দিয়েছে।
৩) নির্মাণ সামগ্রীর দাম ও জিএসটি হ্রাস করতে হবে।
৪) নির্মাণ ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ চলবে না প্রভৃতি।
যে রাজ্যগুলিতে নির্মাণ শ্রমিকদের ধর্মঘটের ভালো প্রভাব পড়েছে সেগুলি হলোঃ অসম, পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাডু, রাজস্থান, পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, হরিয়ানা, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড। এ রাজ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর, বীরভূম প্রভৃতি জেলাতে নির্মাণ শ্রমিকরা ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল, অবস্থান-বিক্ষোভ সংগঠিত করেন।