৫৯ বর্ষ ১৭ সংখ্যা / ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ / ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮
সিপিআই(এম) পাঞ্জাব রাজ্য ২৩-তম সম্মেলন
রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখছেন সীতারাম ইয়েচুরি। মঞ্চে নীলোৎপল বসু সহ নেতৃবৃন্দ।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সিপিআই(এম) পাঞ্জাব রাজ্য ২৩ তম সম্মেলন লুধিয়ানাতে গত ২৪-২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। পার্টির রক্তপতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের সূচনা করেন প্রবীণ নেতা গুরচেতন সিং বাসসি। সম্মেলনে রাজনৈতিক-সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী রাজ্য সম্পাদক সুখবিন্দর সিং শেখয়া। ২২৯ জন প্রতিনিধি ও দর্শক উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে। পলিট ব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এবং অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, কৃষক আন্দোলন ইতিহাস তৈরি করেছে। তারা বাধ্য করেছে, মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে কৃষকবিরোধী করপোরেটমুখী তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিতে। এটা গত এক বছর ধরে চলা ভারতীয় কৃষকদের আন্দোলনের বড়ো জয়। এই কৃষক আন্দোলনে ৭০০ শহিদের জন্য দায়ী বিজেপি সরকারই। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার, শহিদ কৃষক পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের কৃষক আন্দোলনের দাবিগুলিকে তিনি পূর্ণ সমর্থন করেন। তিনি বলেন, ৭০ বছর ধরে দেশের জনগণ যা গড়ে তুলেছে মোদি তার করপোরেট বন্ধুদের সে-সব বেচে দিচ্ছে।
রাজনৈতিক-সাংগঠনিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছেঃ সমগ্র পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় করতে ধারাবাহিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সমস্ত অংশেই আন্দোলন-সংগ্রামে পার্টি সদস্য-কর্মীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। বিগত সময়ে ছাত্র, যুব ও মহিলা ফ্রন্ট পরিচালনা ও কাজকর্মে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি ঘটেছে। খসড়া প্রতিবেদনের ওপর আলোচনায় ৪২ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। প্রতিনিধিদের আলোচনার ওপর জবাবী ভাষণ দেন সুখবিন্দর সিং শেখয়া। কিছু সংযোজনী সংশোধনী সহ প্রতিবেদনটি সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়।
নীলোৎপল বসু তাঁর বক্তব্যে, পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় করতে এবং আন্দোলন-সংগ্রামের ময়দানে সমগ্র পার্টিকে নিয়ে আসতে রাজ্য কমিটি যে দুঃসাধ্য কাজ সম্পাদন করেছে তার জন্য অভিনন্দন জানান। দিল্লির কৃষক আন্দোলনে কৃষকদের সমবেত করার পাশাপাশি এই আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে সিআইটিইউ, খেতমজুর ইউনিয়ন, ডিওয়াইএফআই, এসএফআই সহ গণসংগঠনগুলির জাঠা সিঙ্ঘু ও টিকরি-তে পার্টির উদ্যোগে নিয়মিতভাবে পাঠানো হয়েছে। এটাও একটা বিরাট সাংগঠনিক কাজ সম্পাদন করেছে পার্টি। পাঞ্জাবের পার্টি শীঘ্রই তার পুরনো ঐতিহ্য ফিরে পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সম্মেলন থেকে ৩৬ সদস্যের রাজ্য কমিটি সর্বসম্মতিতে নির্বাচিত হয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিলে কেরালায় অনুষ্ঠিতব্য পার্টির ২৩ তম কংগ্রেসের জন্য ১২ জন প্রতিনিধি এবং ৩ জন বিকল্প প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। সম্মেলন মঞ্চে অনুষ্ঠিত রাজ্য কমিটির প্রথম সভা থেকে সুখবিন্দর সিং শেখয়া দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন; ৪ জনের রাজ্য কন্ট্রোল কমিশন গঠিত হয়েছে। সম্মেলনে সমাপ্তি ভাষণ দেন সীতারাম ইয়েচুরি।